প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

জম্মু ও কাশ্মীরে ৪৬ হাজার কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী, উদ্বোধন হ’ল বিশ্বের উচ্চতম খিলান রেলসেতু চন্দ্রভাগা ব্রিজ এবং ভারতে প্রথম কেবল-নির্ভর রেলসেতু আঞ্জি ব্রিজের

সন্ত্রাসবাদের সামনে মাথা নত করবে না ভারত, জম্মু ও কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্ম জঙ্গীদের উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 06 JUN 2025 3:34PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৬ জুন, ২০২৫ 

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জম্মু ও কাশ্মীরের কাটরা থেকে মোট ৪৬ হাজার কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। তিনি বলেন, কাশ্মীর উপত্যকা এখন দেশের বিস্তৃত রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত। উধমপুর – শ্রীনগর – বারামুলা রেল প্রকল্প শুধুমাত্র জম্মু ও কাশ্মীরের নতুন শক্তির প্রতীকই নয়, দেশের ধারাবাহিক বিকাশের প্রতিফলন। প্রধানমন্ত্রী আজ বিশ্বের উচ্চতম খিলান রেলসেতু চন্দ্রভাগা ব্রিজ এবং ভারতে প্রথম কেবল-নির্ভর রেলসেতু আঞ্জি ব্রিজের উদ্বোধন করেন। জম্মু ও কাশ্মীরে সংযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে বেশ কয়েকটি বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রারও সূচনা করেন তিনি। এছাড়াও, জম্মুতে একটি মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। ৪৬ হাজার কোটি টাকার এইসব প্রকল্প জম্মু ও কাশ্মীরের বিকাশের কাজ ত্বরান্বিত করবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল সেখানে রেল পরিষেবা চালু হওয়া। ঐ অঞ্চলের পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নে একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি চালু হয়েছে সোনমার্গ সুড়ঙ্গ। নবনির্মিত চন্দ্রভাগা এবং আঞ্জি সেতু ভারতের প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রতিফলন। 
চন্দ্রভাগা এবং আঞ্জি সেতু জম্মু ও কাশ্মীরের বিকাশ যাত্রায় অন্যতম অনুঘটক হয়ে উঠবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এই সমস্ত প্রকল্প পর্যটনে গতি আনার পাশাপাশি বাণিজ্যেও প্রসার ঘটাবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর হ’ল – ভারতের মুকুট। এই অঞ্চল সাংস্কৃতিক, প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদে পরিপূর্ণ। সেখানকার ধর্মীয় তাৎপর্যও অনেকটাই। জম্মু ও কাশ্মীরে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসারে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি। ঐ অঞ্চলে এমবিবিএস পাঠক্রমে আসন সংখ্যা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৩০০ করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল এক্সেলেন্সের কর্মকাণ্ডের বিষয়টি উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, ঐ প্রতিষ্ঠান কেবলমাত্র একটি হাসপাতাল নয়, মানবসেবার কেন্দ্র হিসেবেও দৃষ্টান্তমূলক কাজ করে চলেছে। 
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন বিগত ১১ বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্যের খতিয়ান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় দেশের ৪ কোটি গরীব পরিবার পাকা বাড়ি পেয়েছেন। উজ্জ্বলা যোজনায় উপকৃত ১০ কোটি পরিবার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প সুলভে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছে দরিদ্র মানুষের কাছে। প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে চলেছে। জন ধন যোজনার আওতায় ৫০ কোটি দরিদ্র মানুষ ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় এসেছেন। সৌভাগ্য যোজনা বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে ২.৫ কোটি পরিবারের কাছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের আওতায় ১২ কোটি শৌচালয় নির্মিত হয়েছে। জল জীবন মিশনের আওতায় নলবাহিত জল পরিষেবা পৌঁছে গেছে ১২ কোটি পরিবারে। পিএম কিষাণ সম্মান নিধি সরাসরি আর্থিক সহায়তা দিয়ে চলেছে ১০ কোটি ক্ষুদ্র কৃষককে। বিগত ১১ বছরে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের গ্রাস থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং একটি নব্য-মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। মধ্যবিত্ত বর্গের কল্যাণে গৃহীত নানা উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। 
জম্মু ও কাশ্মীরের বিকাশে ঈর্ষান্বিত পাকিস্তান ২২ এপ্রিল পহলগাঁও – এ যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তা মানবতার উপর চরম আঘাত বলে পুনরায় বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন আদিলের কথা, যিনি সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। কঠোর পরিশ্রমী ঐ যুবকের প্রচেষ্টা জঙ্গী তৎপরতায় ব্যর্থ হতে পারে না বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্ম সন্ত্রাসবাদীদের যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত। সেখানে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যেভাবে সাড়া মিলেছে, তা এই বিষয়টিকেও স্পষ্ট করে। 
বছরের পর বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের স্বপ্ন পূরণে তাঁর সরকার ধারাবাহিকভাবে উদ্যোগী বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। আগামী অমরনাথ যাত্রা এবং ঈদ উপলক্ষে সেখানে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে, তা ঐ অঞ্চলের বিকাশমুখী চিন্তাভাবনাকে তুলে ধরে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন।
তিনি বলেন, ঠিক এক মাস আগেই পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদীদের জবাব দিতে ভারত অপারেশন সিঁদুর শুরু করে। এই অপারেশন সিঁদুর পাকিস্তানের কাছে বরাবর লজ্জাজনক পরাজয়ের বার্তা হয়ে থাকবে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে জঙ্গীদের পরিকাঠামো যেভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, তা পাক সেনাবাহিনী এবং সেখানে থাকা জঙ্গীদের কল্পনারও অতীত ছিল। বেপরোয়া পাকিস্তান এরপরও জম্মু, পুঞ্চ ও অন্য অঞ্চলে সাধারণ নাগরিকদের উপর ঘৃণ্য হামলা চালিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এই নক্কারজনক কাজের বিরুদ্ধে জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ বলেও তিনি জানান। সীমান্তের ওপার থেকে ছোড়া গোলাগুলিতে যাঁরা স্বজনহারা, সরকারের তরফে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পূর্বে ঘোষিত সহায়তার অতিরিক্ত বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আরও ২ লক্ষ টাকা করে এবং আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আরও ১ লক্ষ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে বলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা দেশের প্রথমসারির রক্ষাকর্তা। এই অঞ্চলগুলির নিরাপত্তায় আরও জোর দিচ্ছে সরকার। এরই অঙ্গ হিসেবে প্রায় ১০ হাজার নতুন বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য দুটি নতুন সীমান্ত ব্যাটেলিয়ান তৈরির কথা ঘোষণা করেন তিনি। এছাড়াও, ২টি মহিলা ব্যাটেলিয়ান গড়ে তোলার কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন। 
জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ অপেক্ষমান বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিকাশ ও সহযোগিতার মূল ভিত্তি হ’ল – শান্তি ও সুস্থিতি। বিকশিত ভারতের অন্যতম চাবিকাঠি হ’ল – বিকশিত জম্মু ও কাশ্মীর। 
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল শ্রী মনোজ সিনহা, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ওমর আব্দুল্লা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব প্রমুখ। 

 


SC/AC/SB


(Release ID: 2134736)