প্রতিরক্ষামন্ত্রক
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেঙ্গালুরুতে বিমান বাহিনী এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এশিয়ার বৃহত্তম প্রদর্শনী পঞ্চদশ এয়ারো ইন্ডিয়া ২০২৫-এর উদ্বোধন করেছেন
Posted On:
10 FEB 2025 11:57AM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১০ ফেব্রুয়ারি , ২০২৫
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং বেঙ্গালুরুর ইয়েলেহাঙ্কা বিমান ঘাঁটিতে পঞ্চদশ এয়ারো ইন্ডিয়ার উদ্বোধন করে বলেন, এই প্রদর্শনীতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন নিদর্শন স্থান পেয়েছে। বর্তমান অনিশ্চয়তার যুগে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমমনা দেশগুলির মধ্যে আস্থা অর্জনের মঞ্চ হয়ে উঠবে এটি। বিশ্বের কাছে ভারতের প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অগ্রগতির বিভিন্ন উদাহরণ উপস্থাপিত করতে এয়ারো ইন্ডিয়া ২০২৫ গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ৫ দিনের এই প্রদর্শনীতে সরকারি প্রতিনিধি, শিল্প জগতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, বিমান বাহিনীর আধিকারিক, বৈজ্ঞানিক, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা, স্টার্টআপ সংস্থার প্রতিনিধিরা এবং দেশে-বিদেশের শিক্ষা জগতের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন। এই প্রদর্শনীতে ভারতের অংশীদার হওয়ার মধ্য দিয়ে সকলেই উপকৃত হবেন।
শ্রী সিং বলেন, “আমার প্রায়শই দেখি, ক্রেতা এবং বিক্রেতারা নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করছেন। এখানে সেই সম্পর্কটি বাণিজ্যিক আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু অনেক সময় আমরা শিল্প জগতের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করি। কোন পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সমমনা দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার বিভিন্ন সফল উদাহরণ রয়েছে। আমরা মনে করি ভারতের নিরাপত্তার বা শান্তির বিষয়টি একটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জাতীয় সীমানার পাশে যে দেশগুলি রয়েছে, তাদের সুরক্ষা, স্থিতিশীলতা এবং শান্তির বিষয়টিও আমরা বিবেচনা করে থাকি। এই অনুষ্ঠানে আমাদের বিদেশী বন্ধুদের উপস্থিতি এক বিশ্ব, এক পরিবার এক ভবিষ্যতের বিষয়ে আমাদের অংশীদারিত্বের ভাবনার প্রতিফলন।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগে অনিশ্চয়তার বাতাবরনের মধ্যে ভারত এমন একটি বৃহৎ দেশ, যেখানে শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজ করছে। ভারত কখনও কোন দেশকে আক্রমণ করেনি। আমরা সবসময়ই শান্তি এবং স্থিতিশীলতার পক্ষে মতপ্রকাশ করে এসেছি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, বিদেশী সংস্থার প্রতিনিধিদের এক্ষেত্রে তিনি ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানান- যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ। তিনি বলেন, ভারত এখন নতুন এক যুগের সন্ধিক্ষণে রয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের থেকে বেড়িয়ে দ্রুত উন্নত রাষ্ট্রের দিকে এগোচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকার প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য একটি উন্নত ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে। অতীতে জাতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা শিল্পকে বিবেচনা করা হত না। কিন্তু বর্তমানে অর্থনীতির মধ্যে এটিকে এক গুরুত্বপূ্র্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভারতীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে প্রতিরক্ষা শিল্প নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে।
শ্রী সিং বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ৬ লক্ষ ৮১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে যা এক রেকর্ড। এর মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রটিকে সরকার যে অগ্রাধিকার দিচ্ছে তা স্পষ্ট। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত শিল্পে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সামিল করা হয়েছে। টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস লিমিটেড এবং এয়ারবাস যৌথ উদ্যোগে গুজরাটে সি-২৯৫ বিমান উৎপাদন করবে।
সর্বশেষ এয়ারো ইন্ডিয়া প্রদর্শনীর সাফল্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অ্যাসট্রা মিসাইল, উন্নতি প্রযুক্তির আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র, জলের নীচে স্বয়ংক্রিয় যান, মনুষ্যবিহীন সারফেস ভেসেল, পিনাকা গাইডেড রকেটের মতো অত্যাধুনিক সামগ্রী দেশে উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ২৭,০০০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন এবং ২১,০০০ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানী করার যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে, তা পূরণে দেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এয়ারো ইন্ডিয়া ২০২৫-এর প্রস্তুতি সম্পর্কে গতকাল যে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই সম্মেলনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের মধ্যে দেশে প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের পরিমান ১ লক্ষ ৬০,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে এবং প্রতিরক্ষা সামগ্রী রপ্তানির পরিমানও ৩০,০০০ কোটি টাকা অতিক্রম করবে।
২০২৫-কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংস্কারের বর্ষ হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটি শুধুমাত্র ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এর দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। এর আগে মন্ত্রী দেশ-বিদেশের অতিথি-অভ্যাগতদের স্বাগত জানিয়ে ভারতের ‘অতিথি দেব ভব’ ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, প্রয়াগরাজে এখন মহাকুম্ভ মেলা চলছে। মহাকুম্ভ শাশ্বত শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে, আর এয়ারো ইন্ডিয়া বর্হিশক্তির মিলনকেন্দ্র হয়ে উঠবে। ‘আত্মনির্ভর ভারত’, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ কর্মসূচির মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার ভাবনাকে বাস্তবায়িত করা হবে বলে তিনি জানান।
এই প্রদর্শনীতে ১০-১২ তারিখ পর্যন্ত শুধুমাত্র বাণিজ্যিক লেনদেন চলবে। ১৩ এবং ১৪ই ফেব্রুয়ারি তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রী সঞ্জয় শেঠ, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নেইফিও রিও, কর্ণাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ডি কে শিবকুমার, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, কর্ণাটকের মুখ্য সচিব ডঃ শালিনী রজনীশ, প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী রাজেশ কুমার সিং, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন বিভাগের সচিব শ্রী সঞ্জীব কুমার, বিমান বাহিনীর উপপ্রধান এয়ারমার্শাল এস পি ধরখর সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
SC/CB/NS
(Release ID: 2101382)
Visitor Counter : 16