প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
জার্মানির চ্যান্সেলরের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস বিবৃতি
Posted On:
25 OCT 2024 4:33PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
মাননীয় চ্যান্সেলর স্কোলজ্,
দু’দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ,
সংবাদমাধ্যমের বন্ধুগণ,
নমস্কার!
গুতেন তাগ!
প্রথমেই আমি চ্যান্সেলর স্কোলজ্ এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে আন্তরিকভাবে ভারতে স্বাগত জানাই। গত দু’বছরের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয়বার আপনাদের ভারতে স্বাগত জানানোর সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।
গত ২-৩ বছর ধরে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার নিরিখে ভারত ও জার্মানির মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতার মাত্রা কোন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে, তা আপনারা খুব সহজেই অনুমান করতে পারছেন। আজ সকালেই জার্মানির বাণিজ্যিক কাজকর্ম সম্পর্কে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সুযোগ আমাদের হয়েছিল। আমার তৃতীয় মেয়াদকালে প্রথম আন্তঃসরকারি পর্যায়ের সম্মেলন মাত্র কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে। আমরা এইমাত্র সিইও ফোরামের বৈঠক থেকে ফিরেছি। আবার, ওই একই সময়ে জার্মানির নৌ-জাহাজগুলি গোয়ায় এসে উপস্থিত। এমনকি, ক্রীড়াজগৎও এখন খুব একটা পিছিয়ে নেই। কারণ, দু’দেশের হকি টিমের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
চ্যান্সেলর স্কোলজ্-এর নেতৃত্বে আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এক নতুন মাত্রা ও লক্ষ্য স্থির করার কাজে সফল হয়েছে। ‘ভারতের প্রতি বিশেষ নজর’ - জার্মানির এই কৌশল অবলম্বনের সুবাদে চ্যান্সেলর স্কোলকে আমি অভিনন্দনযোগ্য বলে মনে করি। কারণ, জার্মানির এই বিশেষ কৌশল বিশ্বের দুটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে সুসংবদ্ধভাবে আরও উন্নত ও আধুনিক করে তোলার একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।
আজ আমাদের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত একটি রোডম্যাপের সূচনা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি, দক্ষতা বিকাশ তথা উদ্ভাবন ক্ষেত্রে পুরোপুরিভাবে সরকারি পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুকূলে আমরা সহমতও প্রকাশ করেছি। কৃত্রিম মেধাশক্তি, সেমি-কন্ডাক্টর এবং বিশুদ্ধ জ্বালানির মতো ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের সহযোগিতাকে তা আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলেই আমরা মনে করি। শুধু তাই নয়, এর মধ্য দিয়ে এক সুরক্ষিত, বিশ্বাসযোগ্য এবং সহনশীল বিশ্ব যোগান শৃঙ্খল গড়ে ওঠার কাজ আরও সহজ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
বন্ধুগণ,
প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আমাদের ক্রমপ্রসারমান সহযোগিতার মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসেরই প্রতিফলন ঘটেছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য বিনিময় চুক্তি এই লক্ষ্যেই এক নতুন পদক্ষেপ বলে আমরা মনে করি। পারস্পরিক আইনি সহায়তা সম্পর্কিত যে চুক্তিটি আজ স্বাক্ষরিত হল, তা সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির মোকাবিলায় আমাদের যৌথ প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
পরিবেশ-বান্ধব এবং নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি দেশই মিলিতভাবে অঙ্গীকারবদ্ধতার মধ্য দিয়ে কাজ করে চলেছে। পরিবেশ-বান্ধব তথা নিরন্তর উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে শহরাঞ্চলের পরিবেশ-বান্ধব যান চলাচলের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজকর্মেও আমরা সহমত প্রকাশ করেছি। এছাড়াও, সূচনা হয়েছে গ্রিন হাইড্রোজেন রোডম্যাপের।
বন্ধুগণ,
ইউক্রেন এবং পশ্চিম এশিয়ায় বর্তমান সংঘাত ও সংঘর্ষ আমাদের দুটি দেশের পক্ষেই যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়। ভারত বরাবর একথাই বলে এসেছে যে যুদ্ধ কখনই কোনো সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। তাই, শান্তির পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় সম্ভাব্য সকলরকমভাবে সহযোগিতার জন্য আমরা প্রস্তুত।
আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে এবং আইনগত যাবতীয় বিধি-নিয়মের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নৌ-চলাচল নিশ্চিত করতেও আমাদের দুটি দেশ সহমত পোষণ করেছে।
বিংশ শতাব্দীতে যে বিশ্বমঞ্চগুলি গড়ে তোলা হয়েছিল, তা যে কোনভাবেই একুশ শতকের চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করতে পারে না, সে বিষয়ে আমরা দুটি দেশই সহমত পোষণ করি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ সহ বহুপাক্ষিক বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সংস্কার প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথাও আমরা নিশ্চিতভাবেই স্বীকার করি।
এই লক্ষ্যে ভারত ও জার্মানি পরস্পরের সঙ্গে সক্রিয় সহযোগিতার মধ্য দিয়ে কাজ করে যাবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হল দু’দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক। আজ দক্ষতা বিকাশ এবং বৃত্তিগত প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও একযোগে কাজ করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেছি। এ বিষয়ে আইআইটি চেন্নাই এবং ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে যার আওতায় দু’দেশের ছাত্রছাত্রীরা দ্বৈত ডিগ্রি অর্জনের এক বিশেষ সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন।
জার্মানির সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভারতের তরুণ মেধাশক্তির অবদান রয়েছে যথেষ্ট। ভারতের জন্য যে দক্ষ শ্রম কৌশল প্রকাশ করা হয়েছে জার্মানির পক্ষ থেকে, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। এর ফলে, জার্মানির উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের দেশের তরুণ মেধাশক্তি যে আরও ভালোভাবে কাজ করার সুযোগ লাভ করবে, এ বিষয়ে আমি স্থির প্রত্যয়ী। ভারতের মেধাশক্তির ক্ষমতা ও দক্ষতার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপনের জন্য চ্যান্সেলর স্কোলকে আমি অভিনন্দন জানাই।
মাননীয় চ্যান্সেলর,
আপনার এই ভারত সফর দু’দেশের সহযোগিতার সম্পর্কে এক নতুন মাত্রা, শক্তি ও উৎসাহ এনে দিয়েছে। আমি একথা গভীর আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গে ব্যক্ত করতে পারি যে আমাদের এই অংশীদারিত্বের সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট স্বচ্ছতা যা আমাদের মিলিত ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে তুলতে সাহায্য করবে।
তাই, জার্মান ভাষায় আমি উচ্চারণ করি – অ্যালেস ক্লার, অ্যালেস গাট!’
অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডাঙ্কে শ্যন।
প্রধানমন্ত্রীর মূল বিবৃতিটি ছিল হিন্দিতে
PG/SKD/DM/
(Release ID: 2068570)
Read this release in:
Odia
,
Telugu
,
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Marathi
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Tamil
,
Kannada
,
Malayalam