প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 02 OCT 2024 4:37PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২ অক্টোবর, ২০২৪

 

জোহার!

ঝাড়খণ্ডের মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ারজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী জুয়েল ওরামজি, এই রাজ্য থেকে যাঁরা মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছেন, সেই অন্নপূর্ণা দেবীজি, শ্রী সঞ্জয় শেঠজি, শ্রী দুর্গদাস ইউকেজি, এই সংসদীয় নির্বাচন কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত সাংসদ শ্রী মনীশ জয়সওয়ালজি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং এখানে উপস্থিত আমার ভাই ও বোনেরা!

আমি আজ আরও একবার ঝাড়খণ্ডের উন্নয়নের যাত্রাপথে সঙ্গী হওয়ার সুযোগ লাভ করলাম। এজন্য আমি নিজেকে আশীর্বাদধন্য মনে করছি। মাত্র কয়েক দিন আগেই আমি জামশেদপুর সফর করে এসেছি। সেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের আমি উদ্বোধনও করেছি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ঝাড়খণ্ডের হাজার হাজার দরিদ্র মানুষ একটি করে বাসস্থান লাভের সুযোগও পেয়েছেন। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই আমি আরও একবার এই রাজ্যে এসে উপস্থিত হলাম। আজ এখানে ৮০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রকল্পগুলির লক্ষ্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণ ও উন্নয়ন। ভারত সরকারের কর্মসূচিতে দেশের আদিবাসী সম্প্রদায়গুলি যে অগ্রাধিকারের তালিকাতেই রয়েছে, একথা আরও একবার প্রমাণিত হল। তাই, সকল ঝাড়খণ্ডবাসীকেই জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। সেইসঙ্গে, এই ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির জন্য সমগ্র জাতিকেও জানাই আমার হৃদ্য অভিনন্দন।

বন্ধুগণ,

পূজ্য বাপু মোহনদাস গান্ধীর আজ জন্মবার্ষিকী। আদিবাসী উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গী আমাদের কাছে সম্পদ বিশেষ। গান্ধীজি বিশ্বাস করতেন যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের দ্রুত উন্নয়নের মাধ্যমেই ভারতের উন্নয়ন সম্ভব। আমি একথা ঘোষণা করতে পেরে খুবই আনন্দিত যে অতীতের তুলনায় আমাদের সরকার আদিবাসী সম্প্রদায়গুলির উন্নয়নে বরাবরই বিশেষ জোর দিয়ে আসছে। আমি সদ্যই ধরতী আবা জনজাতীয় গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান নামে একটি বড় ধরনের কর্মসূচির সূচনা করেছি। এর রূপায়ণে বিনিয়োগ করা হবে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। ধরতী আবা জনজাতীয় গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানের আওতায় আদিবাসী প্রধান ৬৩ হাজার গ্রামের উন্নয়নকে আমরা বাস্তবায়িত করব। এই গ্রামগুলি দেশের ৫৫০টি জেলায় অবস্থিত। আদিবাসী প্রধান ও আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলির আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যেই আমাদের এই প্রচেষ্টা নিয়োজিত। এর ফলে উপকৃত হবেন দেশের ৫ কোটিরও বেশি আদিবাসী ভাই-বোন। ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী সম্প্রদায়ও এই কর্মসূচির সুফল ভোগ করতে পারবেন।

বন্ধুগণ,

আমি আনন্দিত আরও একটি কারণে। তা হল এই যে, ধরতী আবা জনজাতীয় গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান শুরু হচ্ছে ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মস্থানেই। প্রধানমন্ত্রী জনমন যোজনা ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকীতেই শুরু হয়েছে ঝাড়খণ্ডে। পরের মাসে জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপনের দিনটিতে আমরা প্রধানমন্ত্রী জনমন যোজনার প্রথম বর্ষপূর্তি পালনে নিয়োজিত হব। ওই দিনটি হল ১৫ নভেম্বর। প্রধানমন্ত্রী জনমন যোজনার মাধ্যমে উন্নয়নের কাজ রূপায়িত হবে সেইসব আদিবাসী এলাকা ও অঞ্চলগুলিতে যা একদা ছিল খুবই অনগ্রসর। সত্যি কথা বলতে কি, ওই অঞ্চলগুলির উন্নয়নে অতীতে কেউই সেভাবে দৃষ্টি দেয়নি। কিন্তু বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী জনমন যোজনার আওতায় ১,৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে উন্নয়ন কর্মসূচির সূচনা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় দেশের সবচেয়ে বেশি অনগ্রসর আদিবাসী এলাকাগুলিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং সড়ক সংযোগের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কিত কর্মসূচি রূপায়িত হবে। 

আমার ভাই ও বোনেরা,

মাত্র এক বছরের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী জনমন যোজনা ঝাড়খণ্ডে অনেকগুলি মাইলফলকই অতিক্রম করে এসেছে। সর্বাপেক্ষা অনগ্রসর গ্রামগুলির মধ্যে ৯৫০টিরও বেশি গ্রামে বাড়ি বাড়ি জলের যোগান দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এই রাজ্যের জন্য ৩৫টি বন ধন বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাবেও আমরা অনুমোদন দিয়েছি। এছাড়াও, প্রত্যন্ত এলাকার আদিবাসী অঞ্চলগুলিতে মোবাইল সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কাজও এখন চলছে। এই উন্নয়ন এবং এই পরিবর্তন দেশের আদিবাসী মানুষদের কাছেও উন্নয়নের সমান সুযোগ পৌঁছে দেবে। 

বন্ধুগণ,

মনে রাখতে হবে যে তরুণ ও যুবকদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য প্রয়োজন উন্নতমানের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং এর মধ্য দিয়েই আদিবাসী সমাজ আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। আদিবাসী অঞ্চলগুলিতে একলব্য আবাসিক বিদ্যালয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। আজ এখান থেকেই উদ্বোধন করা হয়েছে ৪০টি একলব্য আবাসিক বিদ্যালয়ের। এছাড়াও, শিলান্যাস করা হয়েছে আরও ২৫টি নতুন একলব্য বিদ্যালয়ের। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যাতে উন্নতমানের শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমাদের বাজেট বরাদ্দও আমরা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছি।

ভাই ও বোনেরা,

যখন আমাদের প্রচেষ্টা সঠিক লক্ষ্যে ধাবিত হয়, তখন তার সুফলও পাওয়া সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি যে আমাদের আদিবাসী যুব সমাজ অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে এবং তাঁদের মধ্যে জাগ্রত হবে এমন এক সম্ভাবনা যা দেশের কল্যাণকেও নিশ্চিত করবে। 

বন্ধুগণ,

আমি এখানে আমার বক্তব্যকে আরও দীর্ঘ করে তুলতে চাই না। কারণ, এখান থেকে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার দূরে আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটি বড় ধরনের মেলায় আমি এখন রওয়ানা হব। সেখানেও আমি আমার অন্তরের কথা তুলে ধরব এবং আবেগের সঙ্গেই আমি বক্তব্য রাখব সেখানে। তাই, এই সরকারি কর্মসূচির মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি কখনই আমার ভাষণকে দীর্ঘায়ত করব না। তবে, এই ধরনের একটি সরকারি কর্মসূচিতে যখন অনেক মানুষের সমাগম ঘটে, তখন তাঁরা অবশ্যই বলবেন, সত্যিই, এই কর্মসূচিটি কিন্তু ছিল অনেক বড়।  আপনারা অপেক্ষা করুন আরও বড় ধরনের কর্মসূচির মতো ঘটনা খুব শীঘ্রই ঘটতে চলেছে। এই কর্মসূচিকে যদি আমরা বড় বলি, তাহলে আপনারা চিন্তা করুন, যে কর্মসূচির কথা আমি এখন বললাম তা আকারে আয়তনে আরও কত বড় হতে পারে। আজ আমি যখন এখানে প্রথম পদার্পণ করলাম, তখন ঝাড়খণ্ডের ভাই-বোনেদের আমার প্রতি সমর্থন ও ভালোবাসা লক্ষ্য করে আমি আপ্লুত হলাম। তাঁদের এই ভালোবাসা ও আশীর্বাদ আমাকে আরও বেশি করে শক্তি যোগাবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাজকে আরও, আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে। একথা মাথায় রেখেই আমি আরও একবার এই উন্নয়নমূলক কর্মসূচির জন্য আপনাদের অভিনন্দন জানাই। আমি অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনাদের সকলকেই। আমি আশা করব যে আপনারা সকলেই এই মেলায় উপস্থিত হবেন এবং সেখানে আমি আরও অনেক কিছু বিষয় তুলে ধরার মতো সুযোগও পাব।

জয় জোহার!


PG/SKD/DM


(Release ID: 2066321) Visitor Counter : 33