প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের আমেদাবাদে ৮০০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী

আমেদাবাদ ও ভুজের মধ্যে নমো ভারত র্যা পিড রেল চলাচলের সূচনা

বিভিন্ন বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রার সূচনা

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ-এর আওতায় ৩০,০০০-এরও বেশি বাড়ির নির্মাণের অনুমোদন

আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিষেবা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের এক জানালা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা (এসডাব্লুআইটিএস)-এর সূচনা

Posted On: 16 SEP 2024 6:21PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬  সেপ্টেম্বর, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের আমেদাবাদে ৮০০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস করেছেন। এরমধ্যে রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ, আবাসন ও আর্থিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে। এর আগে শ্রী মোদী আমেদাবাদ ও ভুজের মধ্যে দেশের প্রথম নমো ভারত র্যা পিড রেল চলাচলের সূচনা করেন। নাগপুর-সেকেন্দ্রাবাদ, কোলহাপুর-পুনে, আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট-বেনারস, দুর্গ-বিশাখাপত্তনম, পুনে-হুবাল্লি এবং বারাণসী ও দিল্লির মধ্যে প্রথম ২০ কামরার বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রারও সূচনা করেছেন তিনি। এছাড়া আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিষেবা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের এক জানালা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা (এসডাব্লুআইটিএস)-এর সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। 

এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী গণপতি মহোৎসব ও মিলাদ-উন-নবি সহ বিভিন্ন উৎসবের উল্লেখ করে বলেন, সারা দেশ যখন উৎসবে মেতেছে তখন ভারতের উন্নয়নের উৎসবও চলছে। নমো ভারত র্যা পিড রেলকে গুজরাটের মুকুটের নতুন পালক বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরফলে দেশের শহরাঞ্চলে সংযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক অর্জন করা সম্ভব হল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাজার হাজার পরিবার আজ তাদের নতুন বাড়িতে প্রবেশ করতে চলেছেন। আবার আজই হাজার হাজার পরিবারকে তাদের আবাসন তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। তাদের সবার কাছে এই উৎসব স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

গুজরাটের বিভিন্ন অংশে বন্যার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য উৎসবের মধ্যেও বিষাদের ছায়া পড়েছে। এই প্রথম এতো কম সময়ে গুজরাটে এতো ভারি বৃষ্টি হল। বন্যায় প্রাণহানির জন্য শোকপ্রকাশ করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও পুনর্বাসনে সর্বতো সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই তাঁর প্রথম গুজরাট সফর। গুজরাট তার জন্মভূমি, এখানেই তিনি জীবনের সমস্ত শিক্ষা লাভ করেছেন। গুজরাটের মানুষ তাদের ভালোবাসা তাঁকে উজাড় করে দিয়েছেন। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলে যেমন অনুভূতি হয়, তাঁরও তেমন মনে হচ্ছে। এখান থেকে নতুন শক্তি ও উৎসাহ নিয়ে তিনি ফিরবেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬০ বছরের মধ্যে এই প্রথম দেশের মানুষ কোনো সরকারকে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এনে ইতিহাস তৈরি করেছেন। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে নির্বাচনী প্রচারের সময় যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, তা রক্ষা করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে ১৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ৩ কোটি নতুন বাড়ি নির্মাণের যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, তার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। গুজরাটের হাজার হাজার পরিবারও পাকা বাড়ি পেয়েছেন। শহরাঞ্চলের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আর্থিক সহায়তায় তাঁর সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। শহরে শ্রমিকদের জন্য ন্যায্য ভাড়ায় বাসস্থানের ব্যবস্থা, কারখানার শ্রমিকদের জন্য বিশেষ আবাসন নির্মাণ, কর্মরতা মহিলাদের জন্য হস্টেল নির্মাণ- সব ক্ষেত্রেই কাজ চলছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সরকার বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে। কয়েকদিন আগেই সত্তরোর্ধ সব ব্যক্তিকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা বিমার আওতায় আনা হয়েছে। এবার থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের তাদের বাবা-মায়ের চিকিৎসা নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। 

কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়নের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই ৪ কোটি যুবক-যুবতীর জন্য ২ লক্ষ কোটি টাকার বিশেষ প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো সংস্থা নতুন কাউকে নিয়োগ করলে সরকার তার প্রথম মাসের বেতন দেবে বলে জানিয়েছে। মুদ্রা ঋণের ঊর্ধ্বসীমা ১০ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।

মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ৩ কোটি লাখপতি দিদি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আগেই ১ কোটি লাখপতি দিদি ছিলেন, প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে আরও ১১ লক্ষ নতুন লাখপতি দিদি হয়েছেন। তৈলবীজ চাষিদের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানো হয়েছে। কৃষকদের সয়াবিন ও সূর্যমুখী চাষে উৎসাহ দিতে বিদেশ থেকে তেল আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। বিদেশে ভারতীয় ধান ও পেঁয়াজের চাহিদা বাড়তে থাকায় সরকার বাসমতি চাল ও পেঁয়াজের রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১০০ দিনে রেল, সড়ক, বন্দর, বিমান বন্দর ও মেট্রোর কয়েক ডজন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজও গুজরাটের বহু সংযোগ প্রকল্পের শিলান্যাস করা হল। তিনি নিজে গিফ্ট সিটি স্টেশন থেকে মেট্রোয় সফর করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। গত ১০০ দিনে দেশের বহু শহরে মেট্রো সম্প্রসারণের প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। 

গুজরাটের জন্য আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমেদাবাদ ও ভুজের মধ্যে নমো ভারত র্যা পিড রেল চলাচলের সূচনা হল। মধ্যবিত্ত পরিবারের যাদের কাজ, ব্যবসা বা লেখাপড়ার জন্য প্রতিদিন এক শহর থেকে অন্য শহরে যাতায়াত করতে হয়, এর ফলে তাঁদের ব্যাপক সুবিধা হবে। আগামীদিনে দেশের অন্যান্য শহরেও এই পরিষেবা সম্প্রসারিত হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ১০০ দিনে বন্দে ভারত নেটওয়ার্কের যে সম্প্রসারণ ঘটেছে তা নজিরবিহীন। আজ ১৫টিরও বেশি রুটে বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রার সূচনা হয়েছে। বর্তমানে দেশে ১২৫টিরও বেশি বন্দে ভারত ট্রেন যাতায়াত করছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এর থেকে উপকৃত হচ্ছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময় দেশের পক্ষে এক সুবর্ণ সময়, অমৃতকাল। আগামী ২৫ বছরের মধ্যে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। এক্ষেত্রে গুজরাটের মানুষকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেদিন আর বেশি দূরে নেই যেদিন গুজরাট ভারতকে প্রথম মেড ইন ইন্ডিয়া সি ২৯৫ এয়ারক্রাফ্ট উপহার দেবে। সেমিকন্ডাক্টর মিশনেও গুজরাটের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। পেট্রোলিয়াম, ফরেন্সিক থেকে শুরু করে প্রতিটি আধুনিক বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য গুজরাটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বিভিন্ন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ও গুজরাটে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে চাইছে। সংস্কৃতি থেকে শুরু করে কৃষি ক্ষেত্র- সব জায়গাতেই গুজরাট বিশ্বে একটা ছাপ রাখছে। গুজরাট এখন খাদ্যশস্য রপ্তানী করছে যা একসময় অভাবনীয় ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা গোটা প্রজন্ম গুজরাটের উন্নয়নে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছে। লালকেল্লা থেকে তাঁর দেওয়া ভাষণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে না সেগুলি খারাপ গুণমানের, এমন ধারণা থেকে মানুষকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভারত সহ গোটা বিশ্বে উচ্চ গুণমানের পণ্য উৎপাদনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে গুজরাটের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেভাবে নতুন সংকল্প নিয়ে ভারত এগিয়ে চলেছে, সারা বিশ্ব তা দেখছে। তিনি বলেন, “আজ সারা বিশ্ব ভারত এবং ভারতীয়দের দু-হাত বাড়িয়ে আলিঙ্গন করে। সবাই ভারতের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখতে চায়। সঙ্কটের সময় সমাধানের জন্য সারা বিশ্ব এখন ভারতের দিকে চেয়ে থাকে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রতি আস্থা বৃদ্ধির ফলে সরাসরি উপকৃত হয়েছেন দেশের কৃষকরা ও যুব সম্প্রদায়। প্রশিক্ষিত যুব শক্তির চাহিদা বেড়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে যেমন দেশের প্রতিটি নাগরিক দেশের শক্তি বৃদ্ধিতে উৎসাহ দিয়ে বিশ্বের কাছে দেশের দূত হয়ে উঠছেন, তেমনি অন্যদিকে একদল মানুষ আছেন যারা নেতিবাচকতায় ভরপুর। এরা দেশের ঐক্যকে আঘাত করছেন। ক্ষমতার লোভে মত্ত কিছু মানুষ ভারতকে খণ্ড-বিখণ্ড করে দিতে চাইছে বলে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন। এদের থেকে সাবধানে থাকতে গুজরাটের মানুষকে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের কাছে এখন নষ্ট করার মতো সময় নেই। আমাদের ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বাড়াতে হবে। প্রতিটি ভারতবাসীকে মর্যাদাসম্পন্ন জীবন দিতে হবে।” সবার সম্মিলিত প্রয়াসে আমাদের সব সংকল্প পূরণ হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন।

গুজরাটের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

 

PG/SD/NS…


(Release ID: 2055720) Visitor Counter : 40