স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৪
Posted On:
11 JUL 2024 3:28PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১১ জুলাই , ২০২৪
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী জগৎ প্রকাশ নাড্ডা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে আজ ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতি অনুপ্রিয়া প্যাটেল উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার বিষয় ছিল “মা ও শিশুর কল্যাণের স্বার্থে গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য স্বাস্থ্যকর সময় ও পরিসর।”
বিশ্ব জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশই ভারতে, এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী নাড্ডা জনসংখ্যার স্থিতাবস্থা রক্ষার লক্ষ্যে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে সকলকে তাদের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ভারতের পরিবারগুলির সুস্বাস্থ্য রক্ষার মাধ্যমে এবং ছোট পরিবার গড়ে তোলার মধ্যেই বিকশিত ভারতের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে মেয়েদের পছন্দকে মর্যাদা দিতে হবে এবং তা করতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। মেয়েদেরকে কোনোভাবেই যাতে অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার ভার বহন করতে না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। এজন্য জনবহুল রাজ্য, জেলা এবং ব্লক স্তরে গর্ভাবস্থা নিরোধক ব্যবস্থাকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ সুনিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির উদ্দেশ্য এবং চাহিদা হল শিশুর জন্ম যেন মায়ের সম্মতিতে এবং তাঁর জ্ঞাতসারেই হতে পারে। সকলের জন্য উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে সরকারের এই উদ্দেশ্যের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, যুবক, কিশোর-কিশোরী, মহিলা এবং প্রবীণ সকলেই এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পরিবার পরিকল্পনা এবং প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়টি যে অত্যন্ত মৌলিক চাহিদা তাকে যথাযথ স্বীকৃতি দিতে আশু কর্তব্য হিসেবে সহযোগিতা ও যৌথ সমন্বয়ের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। ছোট পরিবার গড়ার লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে প্রথম শিশুর জন্মের পর দ্বিতীয় শিশুর ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ সময়ের ব্যবধান থাকা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর এবং সুখী পরিবার গড়তে হলে গর্ভ নিরোধক ব্যবস্থা জোরালো করতে হবে এবং তা সম্ভব হলে রাষ্ট্রের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।
“মিশন পরিবার বিকাশ” (এমপিভি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা হিসাবে এই প্রকল্প অত্যন্ত সফল। সাতটি জনবহুল রাজ্যের ১৪৬ টি উচ্চ অগ্রাধিকার জেলায় প্রাথমিকভাবে এই পরিকল্পনার সূত্রপাত। পরবর্তীকালে তা এই জেলাগুলির সর্বত্র এবং ৬টি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শ্রী নাড্ডা বলেন, এটার ফলে এই সব জায়গায় এক উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে দেখা যায়। এর ফলে গর্ভ নিরোধক পণ্য যাতে সহজে পাওয়া যায় তা সুনিশ্চিত করা গেছে। এর ফলে শিশু এবং অনুর্ধ্ব ৫ –এর মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। জেলাগুলিকে প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়ে এই প্রকল্প সমস্ত রাজ্যজুড়েই মোট প্রজনন হার কমিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে। মিশন পরিবার বিকাশ কেবলমাত্র রাজ্যগুলির ক্ষেত্রেই মোট প্রজনন হার কমাতে সফল হয়েছে তা নয়, জাতীয় মোট প্রজনন হারের ক্ষেত্রেও তা সহায়ক হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে মোট প্রজনন হার কমিয়ে আনার লক্ষ্য আমরা ইতিমধ্যে অর্জন করেছি। অন্য সমস্ত রাজ্যগুলিতেই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে যাতে এই সফলতাতেই আত্মসন্তোষের মনোভাব তৈরি না হয় সেই ব্যাপারে তিনি সকলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, দেশ জুড়ে সমস্ত অঞ্চল ভিত্তিতেই এই মোট প্রজনন হার কমিয়ে আনার লক্ষ্য সফল করতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, রাজ্যগুলিকে কৌশলভিত্তিক এই পথে অগ্রসর হতে হবে। এনএফএইচএস-এর পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে যেসমস্ত জায়গায় মোট প্রজনন হার কমে নি, সেই সব জায়গাতে বিশেষ নজর দিতে হবে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি একেবারে দেশের শেষতম প্রান্তে পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যকর্মী, বিভিন্ন দফতর এবং অগ্রবর্তী কর্মীদের নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে কাজ করতে হবে বলে তিনি জানান।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতি অনুপ্রিয়া প্যাটেল বলেন, ভারতের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশেরও বেশি প্রজননক্ষম জনসংখ্যার অন্তর্ভুক্ত। ফলে অপরিকল্পিত পরিবার বৃদ্ধি যাতে কোনোভাবে মহিলাদের ক্ষেত্রে বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়, সেজন্য তাদের নিজেদের পছন্দকে মর্যাদা দিতে হবে আমাদের। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির বিষয়টির ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, অতীতে এটি দু-দফার কর্মসূচি ছিল এখন তাকে ৩ দফার কর্মসূচি করা হয়েছে। এগুলি হল, প্রস্তুতি পর্ব, সম্প্রদায়গত যোগদান এবং সেবা প্রদান। তিনি বলেন, সাত দশক ধরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিতে ৩৬ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৩১ টিতেই মোট প্রজনন হারের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জন করা গেছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড, মেঘালয় এবং মণিপুরকে তিনি মোট প্রজনন হার কমিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৪৬ উচ্চকাঙ্খী জেলার প্রাথমিক এমপিভি কর্মসূচি বর্তমানে ৩৪০ জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আধুনিক গর্ভ নিরোধক ব্যবস্থা দেশের প্রায় ৫৬ শতাংশ বেশি মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা গড়ে তুলেছে।
অনুষ্ঠানে উদ্ভাবনী পরিবার পরিকল্পনা মডেল ‘সুগম’কে তুলে ধরা হয়। এছাড়াও ২০২৪-এর বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের থিমকে তুলে ধরে হিন্দি, ইংরেজী এবং আঞ্চলিক ভাষায় পরিবার পরিকল্পনা পোস্টার প্রদর্শন করা হয়। সুগম-এর লক্ষ্যই হল পরিবার পরিকল্পনার স্বার্থে অনুকূল পরিবেশ এবং জনমত গড়ে তোলা। নতুন রেডিও স্পট এবং জিনগেলস-এর মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সেই লক্ষ্যে সহায়ক সরঞ্জামেরও আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব শ্রী অপূর্ব চন্দ্র,স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব ও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রীমতী আরাধনা পট্টনায়েক,জন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি,রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
PG/ AB /SG
(Release ID: 2032683)
Visitor Counter : 114