প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপম-এ ২৫৫০তম ভগবান মহাবীর নির্বাণ মহোৎসবের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

এই উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট ও স্মারক মুদ্রাও প্রকাশ করেন তিনি

Posted On: 21 APR 2024 12:04PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২১ এপ্রিল, ২০২৪

 

মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে আজ নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপম-এ ২৫৫০তম ভগবান মহাবীরের নির্বাণ মহোৎসবের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ভগবান মহাবীরের মূর্তিতে চাল ও ফুলের পাঁপড়ি নিবেদনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভগবান মহাবীর স্বামীর স্মরণে স্কুলের ছেলে-মেয়েদের একটি নৃত্যনাট্যও প্রত্যক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট এবং স্মারক মুদ্রাও প্রকাশ করেন তিনি।

এই উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ২৫৫০তম ভগবান মহাবীর নির্বাণ মহোৎসবের সাক্ষী রইল ভারত মণ্ডপম। স্কুলের ছেলে-মেয়েদের পরিবেশনায় যে নৃত্যনাট্যটি তিনি আজ প্রত্যক্ষ করেন তার উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, দেশ যে সঠিক দিশার পথে এগিয়ে চলেছে, ভগবান মহাবীরের মূল্যবোধ তাতে প্রেরণা যোগায়। তিনি আরও বলেন যে একটি স্মারক ডাকটিকিট ও স্মারক মুদ্রা প্রকাশের মাধ্যমে ভগবান মহাবীরকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত জৈন সাধুদের সামনে নতমস্তকে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের প্রণাম জানান। মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে দেশের সকল নাগরিককে শুভেচ্ছাও জানান তিনি। আচার্য শ্রী বিদ্যাসাগরজি মহারাজের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি তাঁর সঙ্গে তাঁর এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তাঁর আশীর্বাদ আমার পাথেয় হয়ে রয়েছে।

২৫৫০তম ভগবান মহাবীর নির্বাণ মহোৎসবের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে অমৃতকালের লক্ষ্যে দেশের যাত্রাপথের সূচনা পর্বে এ এক বিশিষ্ট অধ্যায়। একইসঙ্গে, ভারতীয় সংবিধানের ৭৫তম বর্ষপূর্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন যে অমৃতকালের চিন্তাদর্শ একটি সঙ্কল্পমাত্র নয়, একইসঙ্গে তা একটি আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণা যা আমাদের অমরত্ব এবং শাশ্বত সত্যের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে বলে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভগবান মহাবীর নির্বাণ দিবস আজ আমরা ২৫০০ বছর পরেও পালন করছি। আমার স্থির বিশ্বাস যে ভগবান মহাবীরের মূল্যবোধকে এইভাবেই উদযাপন করবেন দেশবাসী। আগামী হাজার হাজার বছর ধরে এই পরম্পরা বহমান থাকবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত শুধু তার নিজের স্বার্থের কথাই চিন্তা করে না, একইসঙ্গে সে অন্যের জন্যও কাজ করে যেতে সঙ্কল্পবদ্ধ। ভারত শুধুমাত্র ঐতিহ্যের কথাই উচ্চারণ করে না, একইসঙ্গে নীতিগত বাধ্যবাধকতাকেও গুরুত্ব দেয়। আবার, আমরা অর্থাৎ ভারতবাসীরা আমাদের শরীর ও মনের মধ্যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে দর্শন করতে পারি। আমরা ব্রহ্মা এবং শিবকেও নতুন নতুন রূপে আবিষ্কার করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন কোন ক্ষেত্রে মতপার্থক্য ঘটতে পারে, কিন্তু আমি মনে করি যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নতুন নতুন সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। আমাদের তীর্থঙ্করদের শিক্ষাদর্শ বর্তমানকালে এক নতুন প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পেয়েছে। এই সত্য শুধু ভারতবর্ষের ক্ষেত্রেই নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রেই সত্য। বিশেষত, বহু দেশই যেভাবে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হয়ে পড়েছে তাতে তীর্থঙ্করদের বাণী যে খুবই প্রাসঙ্গিক তাতে কোন সন্দেহ নেই। শ্রী মোদী বলেন যে বিশ্বের এই শঙ্কাদীর্ণ পরিবেশে মানবজাতি আজ ভারতের কাছ থেকে শান্তির বাণী প্রত্যাশা করে। ভারতের সাংস্কৃতিক ভাবমূর্তি, নতুন নতুন ক্ষমতায় আরোহন এবং বৈদেশিক নীতির জন্যই বিশ্ববাসীর চিন্তাভাবনার জগত আজ পরিবর্তিত হয়েছে। বিশ্ব মঞ্চে আজ আমরা পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সত্য ও অহিংসার নীতি তুলে ধরতে পারি। আমরা বিশ্ববাসীকে বলতে পারি যে বিশ্ব সমস্যার সমাধান রয়েছে একমাত্র ভারতীয় সংস্কৃতি ও পরম্পরার মধ্যে। এই কারণেই ভারত ‘বিশ্ববন্ধু’ রূপে আজ এক নতুন পরিচিতি লাভ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ‘মিশন লাইফ’-এর মতো ভারতীয় উদ্যোগ ও কর্মপ্রচেষ্টা বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার উদ্যোগও গ্রহণ করেছে ভারত। আমাদের এই সমস্ত উদ্যোগ বিশ্ববাসীর মনে শুধু আশাই জাগিয়ে তোলেনি, একইসঙ্গে তা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীর ধ্যান-ধারণারও পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

জৈন ধর্মের মত ও পথ সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন যে এই পথ হল জয়ের পথ। ভারত কখনই নিজের থেকে অন্য কোন জাতি বা দেশকে আক্রমণ করেনি। বরং, সে নিজেকে আরও উন্নত করে তুলতে আগ্রহী। এমনকি, অন্ধকারতম যুগেও ভারতের সাধু-সন্তরা আমাদের আলোর পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলেন।

দেশের ঐতিহ্য ও পরম্পরার মধ্যে সৌন্দর্য সৃষ্টির যে প্রয়াস বর্তমানে চালু রয়েছে তার কথাও এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে যোগ ও আয়ুর্বেদ হল সেই সৌন্দর্যেরই দুটি পৃথক পৃথক দিক। প্রধানমন্ত্রীর মতে নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করে যে ভারতের মূল পরিচয় হল তার পরম্পরাগত গৌরব। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিকতা রয়েছে ভারতের বহিরঙ্গে। আধ্যাত্মিকতাকে যদি আধুনিকতা থেকে বাদ দেওয়া হয় তাহলে যা অবশিষ্ট থাকে তা নিছকই অরাজকতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ কোটিরও বেশি ভারতবাসীকে আজ দারিদ্র্যসীমার ঊর্ধ্বে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। সত্য ও অহিংসার পথ অনুসরণ করার জন্য দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। 

আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) তথা সংস্কৃতি ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল।

PG/SKD/DM



(Release ID: 2018401) Visitor Counter : 50