নির্বাচনকমিশন

ভারতের নির্বাচন কমিশন ২০২৪-এর সাধারণ নির্বাচনে তরুণ ও শহুরে ভোটদাতাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে সমাজ মাধ্যমের শক্তিকে ব্যবহার করছে

Posted On: 07 APR 2024 7:54PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৭ এপ্রিল, ২০২৪

 

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের জন্য দেশ যত প্রস্তুত হচ্ছে, ভারতের নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের যুক্ত করতে নতুন নতুন ভাবনা-চিন্তা করছে। ‘টার্নিং ১৮’ এবং ‘ইউ আর দি ওয়ান’-এর মতো অভিনব অভিযান শুরু করেছে সমাজ মাধ্যমে। ‘চুনাও কা পর্ব, দেশ কা গর্ব’ এই ভাবনায় ভর করে নির্দিষ্ট বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছে কমিশন। ভারতের নির্বাচন কমিশন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, ইউটিউব সহ প্রধান প্রধান সমাজ মাধ্যমে ছিলই। তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে পাবলিক অ্যাপ, হোয়াটসঅ্যাপ এবং লিঙ্কডইন। 

‘টার্নিং ১৮’ বা ১৮-য় পা অভিযান

কমিশন অধিক সংখ্যক ভোটদাতাদের ভোটকেন্দ্রে হাজির করানোর অভিযানে দেখেছে ভোটদান সম্পর্কে শহরে এবং তরুণদের মধ্যে নিষ্পৃহতা উদ্বেগের বিষয়। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের সময়ে নির্বাচন কমিশনের ‘টার্নিং ১৮’ অভিযান বিশেষ করে নির্দিষ্ট তরুণ এবং প্রথমবারের ভোটদাতাদের জন্য। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য আসন্ন নির্বাচনে তরুণদের যুক্ত করা। এছাড়া পূর্বেকার নির্বাচনগুলিতে শহুরে মানুষ এবং তরুণদের মধ্যে যে নিষ্পৃহতা লক্ষ্য করা গেছে তার মোকাবিলা করা।

‘টার্নিং ১৮’ অভিযানে দর্শক-শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে একাধিক ভাবনা এবং কৌশল নেওয়া হয়েছে।  সহজে আপন করে নেওয়া যায় এমন ভাবনা সমৃদ্ধ লোগো দিয়ে এক একটি সিরিজ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানে অতীতের এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করা হয়েছে যাতে বোঝা যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কতটা অগ্রগতি হয়েছে। ১৮ বছর বয়েস হলেই ভোটদানের গুরুত্বের ওপর জোর এই অভিযানে তরুণ ভোটদাতাদের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া ১৮-৩০ বছর বয়সী মহিলা ভোটদাতাদের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ নিয়ে রেখচিত্রের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সার্বিক প্রসারের দিকটি।

‘টার্নিং ১৮’ অভিযানের প্রভাব পড়েছে যথেষ্ট। রাজ্য মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকরা এবং জাতীয় গণ-সম্প্রচারকারী সংস্থা, ডিডি নিউজ এবং আকাশবাণীর মাধ্যমে এর প্রচার হয়েছে সর্বাত্মক। এছাড়া ভারতের নির্বাচন কমিশন জনপ্রিয় জাতীয় এবং রাজ্য স্তরের এসভিইইপি আইকনদের যুক্ত করায় এর প্রভাব পড়েছে বহুগুণ বেশি। এই সমন্বিত প্রয়াসের ফলে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে অভিযানের বার্তাটি পৌঁছে দেওয়া সহজ হয়েছে। কার্যকরীভাবে পৌঁছে দেওয়া গেছে নির্দিষ্ট শ্রোতার কাছে এবং আসন্ন নির্বাচনের দিনগুলির জন্য আগ্রহের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। 

‘ইউ আর দি ওয়ান’ বা আপনিই একমাত্র অভিযান

‘টার্নিং ১৮’ অভিযানে ভর করে ভারতের নির্বাচন কমিশন ‘ইউ আর দি ওয়ান’ নামে আরও একটি উল্লেখযোগ্য অভিযান শুরু করেছে। এই উদ্যোগটির লক্ষ্য গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত বিভিন্ন পক্ষের অমূল্য অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া। ভোটদাতা এবং রাজনৈতিক দলগুলি থেকে শুরু করে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), তৃণমূল স্তরের কর্মী, ভোটকর্মী, প্রশাসনিক আধিকারিক, সাংবাদিক, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নিরাপত্তাকর্মী প্রত্যেকেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বস্ততা এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আকর্ষণীয় গল্প এবং মনকাড়া ছবি (যেমন- যাই হোক না কেন- আরও পথ হাঁটবো আমরা, যাতে তোমাকে পিছিয়ে না পড়তে হয়।) অভিযানে তুলে ধরা হয়েছে এইসব ব্যক্তিদের দায়বদ্ধতা, গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে তাদের ভূমিকা এবং দায়িত্ব নিয়ে প্রেরণাদায়ক গর্ব। এর মধ্যে আছে গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ, চিত্তাকর্ষক ঘটনা এবং অতীতের নির্বাচনের গল্প এবং ভিডিও বা রিল তুলে ধরা, যার থেকে বোঝা যায় যবনিকার আড়ালে ভোটকর্মীদের নিরলস প্রয়াসের কথা। প্রত্যেক ভোটদাতার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দুরূহ পথ অতিক্রমের প্রচেষ্টা।

অভিনব এবং নির্বাচনের মনকাড়া গল্প, ক্রসওয়ার্ড, নির্বাচন অভিধানের মাধ্যমে ভোটদাতাদের আকর্ষণ করা

এই অভিযানের আরও অনেক রকম চিত্তাকর্ষক বৈশিষ্ট্য আছে, যেমন- ‘চুনাওভি কিসসে’ যেখানে পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলির মনকাড়া গল্প পরিবেশন করা হচ্ছে। এছাড়া এ-জেড অফ ইন্ডিয়ান ইলেকশনস সিরিজে নির্বাচন সংক্রান্ত নাম, সংজ্ঞা এবং প্রক্রিয়া জানানো হচ্ছে ব্যবহারকারীকে। ওয়ার্ড প্লে উইথ ইসিআই আরও একটি সিরিজ, যেখানে ব্যবহারকারীরা নির্বাচন সংক্রান্ত শব্দ খোঁজার খেলা করতে পারেন। নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যে কোন প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আছে ‘সওয়াল-জবাব’ সিরিজ। পোলস অ্যান্ড পিক্সেলস সিরিজে ভারতের নির্বাচন কমিশন ভারতীয় নির্বাচনের সূচনা থেকে যাত্রাপথের সচিত্র বর্ণনা দিয়েছে। 

‘ভেরিফাই বিফোর ইউ অ্যামপ্লিফাই’ উদ্যোগ

ভুয়ো এবং ভ্রান্তিমূলক খবর যাতে না ছড়ায় তার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন ‘ভেরিফাই বিফোর ইউ অ্যামপ্লিফাই’ (পোস্ট করার আগে প্রথমে জানুন) উদ্যোগ নিয়েছে যেমনটা সাধারণ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সময় সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার শ্রী রাজীব কুমার। ভুয়ো খবর ছড়ানো আটকাতে তিনি সকলকে অনুরোধ করেছিলেন যাতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য। এই সক্রিয় পদক্ষেপের লক্ষ্য, কোনো খবর শেয়ার করার আগে তার সত্যতা যাচাই করে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করা, যাতে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো বন্ধ হয় এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বস্ততা রক্ষা পায়।

এছাড়া নির্ঘণ্ট সংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি অ্যাপ এবং নির্বাচন কমিশনের কোনো সিদ্ধান্ত, ভোটার তালিকায় কিভাবে নাম দেখা যাবে এবং নিজের ভোটকেন্দ্রটি খোঁজা সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি গ্রাফ এবং রিলের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যাতে ব্যবহারকারীরা বিস্তারিত সঠিক তথ্য পেতে পারেন। এটাও উল্লেখ্য যে এবারে যে নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছে তাতে দেখা গেছে আমূল পরিবর্তন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার শ্রী রাজীব কুমার সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন ছবি এবং রেখচিত্রের সাহায্য। এই পুরো অনুষ্ঠানটি লাইভ স্ট্রিমিং হয়েছে এবং লাইভ ট্যুইট করা হয়েছে যাতে তা তৎক্ষণাৎ পৌঁছে যায় সংবাদ মাধ্যম সহ সকলের কাছে।

সৃজনশীল কৌশল এবং সামাজিক মাধ্যমের শক্তিকে ব্যবহার করে ভারতের নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য গোটা দেশের নাগরিকদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় শামিল করা যাতে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং ভারতীয় গণতন্ত্রের প্রাণবন্ত উৎসবে কিছু অবদান রাখেন। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোটদানের দিনগুলি যতো এগিয়ে আসছে, ততই বোঝা যাচ্ছে অন্তর্ভূক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশনের নিষ্ঠার ক্ষেত্রে এই উদ্যোগগুলি কতটা কার্যকর। 
    


PG/AP/NS…



(Release ID: 2017494) Visitor Counter : 277