প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

রাজ্যসভায় বিদায়ী সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 08 FEB 2024 1:07PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

 

মাননীয় চেয়ারম্যান,

প্রতি দু-বছর অন্তর এই সভায় এ ধরণের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। কিন্তু এই সভা ধারাবাহিকতার প্রতীক। প্রতি ৫ বছর অন্তর লোকসভা পাল্টে যায়, আর এই সভায় নতুন উদ্যমের সঞ্চার হয় প্রতি দু-বছরে। কাজেই প্রকৃত অর্থে এটা বিদায়ী অনুষ্ঠান নয়। নতুনদের সামনে অমূল্য উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছেন বিদায়ী সদস্যরা। 

শ্রদ্ধেয় অনেক সাংসদ আবার ফিরে আসেন, অনেকে আসেন না। আমি বিশেষভাবে বলতে চাই মাননীয় ডঃ মনমোহন সিং-এর কথা। ৬ বার এই সভার সদস্য হয়ে অসাধারণ দূরদর্শিতা এবং নেতৃত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন তিনি। আদর্শগত দিক থেকে ভিন্নমত হওয়া সত্ত্বেও আমি বলবো যে, এই সভাকে তিনি যেভাবে পথ দেখিয়েছেন, তা সব সময় মনে রাখবে সারা দেশ। গণতন্ত্র সম্পর্কে যখনই আলোচনা হবে, তখনই উঠে আসবে ডঃ মনমোহন সিং-এর অবদানের প্রসঙ্গ।

আজ যাঁরা এই সভা কিংবা লোকসভার সাংসদ, কিংবা আগামীদিনে যাঁরা সাংসদ হবেন, তাঁদের কাছে আমার আবেদন এই যে দলমত নির্বিশেষে সকলেই আমরা এঁদের আচরণ এবং কাজকর্ম থেকে শিক্ষা নেব। 

এই সভায় সাম্প্রতিক একটি ভোটাভুটির ঘটনার কথা মনে পড়ে। সরকার পক্ষ অনায়াসে জিতে যাবে তা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। কিন্তু হুইল চেয়ারে থাকা সত্ত্বেও ডঃ মনমোহন সিং নিজের ভোট দেওয়ায় চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। এই কর্তব্যপরায়ণতা সত্যই অনুসরণযোগ্য। সকলের পক্ষ থেকে আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য কামনা করি। তিনি আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকুন। 

মাননীয় চেয়ারম্যান,

আমাদের সহকর্মীরা যে মুহুর্তে নতুন দায়িত্ব নিয়ে বৃহত্তর জনপরিসরে এগোবেন, সেই মুহুর্তেই তাঁরা রাজ্যসভা থেকে উপনীত হবে জনসভায়। এই সভার অভিজ্ঞতা বৃহত্তর ওই পরিসরে তাঁদের সাহায্য করবে বলে আমি প্রত্যয়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩-৪ বছর পঠন-পাঠনের পর একজন মানুষ যেভাবে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠেন, ঠিক সেভাবেই এই সভার সদস্য হিসেবে ৬ বছর থাকার পর একজন জনপ্রতিনিধি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠেন আরও। এই বিষয়টি দেশের অগ্রগতির পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক এক চালিকাশক্তি। 

আজ যেসব সাংসদ রাজ্যসভা থেকে বিদায় নিচ্ছেন তাঁরা পুরনো এবং নতুন সংসদ ভবন দুটিতেই কাজ করেছেন। তাঁরা রেখে যাচ্ছেন স্বাধীনতার ৭৫ বছরের সঙ্গে জড়িত এক উত্তরাধিকার। 

কোভিডের কঠিন সময় আমরা কোনোদিনই ভুলতে পারি না। যখনই এই সাংসদদের কাজে ডাকা হয়েছে, দলমত নির্বিশেষে তাঁরা রাজি হয়েছেন সানন্দে। বাড়ির বাইরে বেরনোও যখন বিপজ্জনক ছিল তখনও এই সাংসদরা অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন এবং নিজেদের কাজ করে গেছেন। কোভিডের সময়ে আমরা অনেক অমূল্য শিক্ষা পেয়েছি- একথা বলাই বাহুল্য। 

আমাদের অভিজ্ঞতা একই সঙ্গে তিক্ত ও মধুর। কোভিডে আমরা হারিয়েছি অনেক বন্ধুকে। তা সত্ত্বেও এগিয়ে চলেছি আমরা। অনেক আনন্দময় মুহুর্তেরও সাক্ষী হয়েছেন এই সভার সদস্যরা। 

খার্গেজির উপস্থিতিতে আমি একটা কথা বলতে চাই। চিরাচরিত বিশ্বাস অনুযায়ী অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে শিশুদের কপালে কালো তিলক এঁকে দেন পরিবারের সদস্যরা। বিগত দশকে আমাদের দেশ বিকাশের প্রশ্নে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এই ধারা বজায় রাখতে কালো তিলক একটা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আজ আপনি কালো পোশাক এবং কপালে কালো তিলক এঁকে সেই বার্তায় দিতে চাইছেন। এজন্য আপনাকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। 

মাননীয় চেয়ারম্যান,

আমাদের প্রবাদ হল যে একজনের গুণাবলী উপযুক্ত সাহচর্যে বিকশিত হয়। সাহচর্য উপযুক্ত না হলে ফল হয় উল্টো। আরও বলা হয় যে, বেগবতী নদীর মতোই আমাদের গুণাবলী উৎকর্ষমান বজায় রাখতে পারে গতির সাহচর্যে। এই সভায় প্রতি দু বছর নতুন গতি এনে দেন নতুন সদস্যরা। কিন্তু এই গতি ও নতুনত্বকে ইতিবাচক অবদান রাখার উপযুক্ত করতে গেলে দায়বদ্ধতা এবং সততার অনুশীলন জরুরি। 

আমাদের বিদায়ী সদস্যরা নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশকে সেবা করে যাবেন এই আমার আশা। সকলকে শুভেচ্ছা। 

অনেক ধন্যবাদ ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে।
  


PG/AC/NS



(Release ID: 2015711) Visitor Counter : 23