প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

মহারাষ্ট্রের নাসিকে ২৭তম জাতীয় যুব উৎসবের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 12 JAN 2024 3:45PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ জানুয়ারি,২০২৪

 

ভারতমাতার জয়! 
ভারতমাতার জয়! 

ভারতমাতার জয়! 

মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডেজি, আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী শ্রী অনুরাগ ঠাকুর, শ্রীমতী ভারতীয় পাওয়ার, শ্রী নিশীথ প্রামাণিক, মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, শ্রী অজিত পাওয়ারজি, অন্যান্য মন্ত্রীগণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং আমার তরুণ বন্ধুরা!

আজ ভারতের যুবশক্তির উদযাপন চলছে। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তীতে নাসিকে আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। জাতীয় যুব দিবসে আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। আজ ভারতের নারীশক্তির প্রতীক রাজমাতা জিজাও মা সাহেবেরও জন্মবার্ষিকী।

বন্ধুগণ,

মহারাষ্ট্রের এই ভূমিতে ভারতের বহু মহান ব্যক্তিত্ব জন্ম নিয়েছেন। এই রাজ্যটি হল পবিত্র, বীর যোদ্ধাদের ভূমি। এই ভূমিতে রাজমাতা জিজাও মা সাহেব ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মতো মহান বীরের জন্ম দিয়েছেন। এই ভূমি দেবী অহল্যাবাঈ হোলকার, রামাবাঈ আম্বেডকরের মতো স্মরণীয় মহীয়সীদের জন্ম দিয়েছে। লোকমান্য তিলক, বীর সাভারকার, দাদাসাহেব পটনিসের মতো উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের শিকড় হল এই রাজ্য। নাসিক-পঞ্চবটীতে বেশ কিছুটা সময় অতিবাহিত করেছিলেন ভগবান শ্রীরাম। আজ আমি নতমস্তকে এই ভূমিকে প্রণাম জানাই। ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের তীর্থস্থান এবং মন্দিরগুলিতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর ডাক দিয়েছিলাম আমি। আজ আমি কালারাম মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নিই। সমস্ত মন্দির এবং তীর্থস্থানগুলিতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর জন্য আমি নাগরিকদের কাছে আমার আবেদন রাখছি।

আমার তরুণ বন্ধুগণ,

সাধু-সন্ন্যাসী, পণ্ডিত থেকে শুরু করে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ – প্রত্যেকেই যুবশক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। শ্রী অরবিন্দ ভারতের লক্ষ্য পূরণে স্বাধীন চিন্তাভাবনা নিয়ে তরুণদের এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দও ভারতের আকাঙ্ক্ষা পূরণে তরুণদের চরিত্র, দৃঢ়তা ও বুদ্ধিমত্তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ এবং শ্রী অরবিন্দর বার্তা এই ২০২৪ সালেও ভারতের তরুণদের প্রেরণা জুগিয়ে চলেছে। তরুণদের শক্তির জন্যই ভারত আজ বিশ্বের প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। ভারত আজ অসংখ্য উদ্ভাবন, রেকর্ড সংখ্যক পেটেন্ট এবং উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, যা সম্ভব হয়েছে তরুণদের ক্ষমতা এবং শক্তির জন্যই।

বন্ধুগণ, 

সময় প্রত্যেকের জীবনে সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে আসে। ‘অমৃতকাল’ এখন ভারতের তরুণদের সামনে সেই সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে এসেছে। আজ আপনাদের সামনে ইতিহাস সৃষ্টির সুযোগ এসেছে। ‘অমৃতকাল’-এ আপনাদের ওপরে অনেক দায়িত্ব বর্তেছে। ‘অমৃতকাল’-এ ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আপনাদের। এই সময়ে আপনাদের কাজ পরবর্তী শতাব্দীর প্রজন্মের কাছে আপনাদের স্মরণীয় করে রাখবে। আমি আপনাদের একুশ শতকের ভারতের সবচেয়ে ভাগ্যবান প্রজন্ম হিসেবে মনে করি। আপনাদের ওপর আমার সবচেয়ে বেশি আস্থা রয়েছে। ‘MY Bharat’ প্ল্যাটফর্ম গড়ে ওঠার পর এটাই প্রথম যুব দিবস। প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ তরুণ তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনাদের শক্তি ও চেতনা দেশ এবং সমাজকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

বন্ধুগণ, আমাদের সরকার ১০ বছর পূর্ণ করেছে। এই এক দশকে আমরা তরুণদের সামনে থেকে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি দূর করার চেষ্টা করেছি এবং তাঁদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করার প্রয়াস চালিয়েছি। আজ শিক্ষা, কর্মসংস্থান, শিল্পোদ্যোগ বা অন্যান্য ক্ষেত্র, স্টার্ট-আপ, ক্রীড়া – প্রতিটি ক্ষেত্রে তরুণদের সহায়তা করা হচ্ছে। একটি নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণ করা হয়েছে। হস্তশিল্পে তরুণদের দক্ষ করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা চালু করা হয়েছে। নতুন নতুন আইআইটি এবং এনআইটি গড়ে তোলা হচ্ছে। বিদেশের মাটিতে আমাদের তরুণরা যাতে তাঁদের দক্ষতা তুলে ধরতে পারেন, সেজন্য সরকার তাঁদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। 

বন্ধুগণ,

তরুণদের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র খুলে দিচ্ছে সরকার। অ্যানিমেশন, কম্পিউটার গেমিং প্রভৃতি ক্ষেত্রের উন্নয়নে সরকার এগিয়ে এসেছে। পরমাণু ক্ষেত্র, মহাকাশ এবং মানচিত্রের ক্ষেত্রে সরকার সহায়তার পথ খুলে দিয়েছে।

আমাদের দেশের বিমানবন্দরগুলিকে আন্তর্জাতিক মানের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। আজ ভারতে মোবাইল ডেটা আশ্চর্যজনকভাবে সস্তা হয়ে উঠেছে, যা বিশ্বের অনেক দেশ এখনও কল্পনা পারে না। আজ তরুণরা নেতা হয়ে উঠেছেন। তাই, ভারত আজ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই সাফল্যের সাক্ষ্য বহন করছে চন্দ্রযান এবং আদিত্য এল-১। দেশের প্রতিটি প্রান্তে এখন ইউপিআই লেনদেন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বড় মল থেকে ছোটোখাটো দোকান – সর্বত্রই ইউপিআই লেনদেন হচ্ছে, যা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। 

বন্ধুগণ,

আমরা ভারতকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থনীতির দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। এখন আমরা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠতে চলেছি। আমাদের ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর স্বপ্ন পূর্ণ করতে হবে। পরিষেবা এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত অবশ্যই বিশ্বের উৎপাদন কেন্দ্রস্থল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।

বন্ধুগণ,

দুর্ভাগ্যজনকভাবে দাসত্বের মানসিকতার কারণে বাজরা রুটি, রাগি, জোয়ারের মতো খাদ্যকে গরিবদের খাদ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হত। আজ মিলেট উচ্চমানের খাদ্য হিসেবে উঠে এসেছে। শ্রীঅন্ন যোজনার মাধ্যমে সরকার এই মিলেটগুলিকে নতুন পরিচয় এনে দিয়েছে। 

বন্ধুগণ,

আমি যখনই বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতা বা বিনিয়োগকারীদের মুখোমুখি হই, তখন তা আমার মনে প্রভূত আশার সঞ্চার করে। গণতন্ত্রের কারণেই এই আশা-আকাঙ্ক্ষা। ভারত হল গণতন্ত্রের জননী। গণতন্ত্রে যত বেশি তরুণ অংশ নেবেন, দেশের ভবিষ্যৎ ততই উজ্জ্বল হবে। আপনারা যত সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হবেন, পারিবারিক রাজনীতির প্রভাব তত কমবে। পরিবার-কেন্দ্রিক রাজনীতি দেশের প্রভূত ক্ষতি করেছে। গণতন্ত্রে অংশগ্রহণের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ হল, ভোটের মাধ্যমে আপনার মতামত প্রকাশ। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা তাঁদের জীবনে এই প্রথমবার ভোট দেবেন। প্রথমবারের ভোটদাতারা গণতন্ত্রে নতুন শক্তি ও ক্ষমতা নিয়ে আসবে। অতএব, ভোটার তালিকায় আপনার নাম সুনিশ্চিত করতে, গোটা প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করুন। আপনার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে আপনার ভোট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ,

‘অমৃতকাল’-এর আগামী ২৫ বছর হল আপনার কাছে ‘কর্তব্যকাল’ বা দায়িত্ব পালনের পর্ব। দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সমাজ এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তাই, স্থানীয় পণ্যকে ছড়িয়ে দিন এবং ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্য যত বেশি সম্ভব ব্যবহার করুন। মাদক এবং মাদকাসক্তি থেকে দূরে থাকুন। মহিলাদের বিরুদ্ধে কটু মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান। 

বন্ধুগণ,

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনাদের প্রত্যেকে ত্যাগ ও নিষ্ঠা নিয়ে প্রতিটি দায়িত্ব পালন করবেন। শক্তিশালী, সক্ষম এবং দক্ষ ভারত গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে যে আলো আজ আমরা প্রজ্জ্বলন করেছি, ‘অমৃতকাল’-এ তা গোটা বিশ্বকে আলোকিত করবে। আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ! ভারতমাতার জয়! দুই হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলুন – ভারতমাতার জয়! আপনি যেখান থেকে এসেছেন, সেখানে আপনার কন্ঠস্বর পৌঁছে দেওয়া উচিত। ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়! 
ভারতমাতার জয়! 

বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
ধন্যবাদ!


 প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি দিয়েছেন হিন্দিতে 


PG/MP/DM



(Release ID: 1998473) Visitor Counter : 58