প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

লাক্ষাদ্বীপের কাভারাত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 03 JAN 2024 1:54PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪

 

লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক শ্রী প্রভূ প্যাটেলজি, স্থানীয় সাংসদ এবং লাক্ষাদ্বীপের আমার সকল পরিবার-পরিজনকে শুভেচ্ছা! নমস্কারম!

এল্লাভারক্কুম সুখম আনু এন্নু বিশ্বাসীক্কুন্নু!

লাক্ষাদ্বীপের সকাল দেখে আমি খুব খুশি। লাক্ষাদ্বীপের সৌন্দর্য ভাষায় বর্ণনা করা দুঃসাধ্য। আমার সৌভাগ্য যে এবারে আমার সুযোগ হয়েছে অগত্তি, বঙ্গরম এবং কাভারাত্তিতে আমার পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের। লাক্ষাদ্বীপ ভৌগোলিক পরিমাপে ছোট হলেও, লাক্ষাদ্বীপের মানুষের হৃদয় সমুদ্রের মতো বিশাল। আমি আপনাদের ভালোবাসা এবং আশীর্বাদ পেয়ে ধন্য। 

আমার পরিবার-পরিজন,

স্বাধীনতার পর কয়েক দশক ধরে কেন্দ্রের সরকার তাদের রাজনৈতিক দলের উন্নয়নেই শুধু নজর দিয়েছে। দূরবর্তী, সীমান্ত ঘেঁষা অথবা সমুদ্র দিয়ে ঘেরা যেসব রাজ্য, তাদের প্রতি কোনো মনোযোগ দেওয়া হয়নি। গত ১০ বছরে আমাদের সরকার সীমান্তবর্তী এলাকা, সমুদ্রের দূরপ্রান্তীয় এলাকাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। ভারতের প্রত্যেকটি নাগরিক এবং প্রত্যেকটি অঞ্চলের জীবনযাপন সহজ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সবরকম সুবিধা নিশ্চিত করার ওপর অগ্রাধিকার দিয়েছে। আজ প্রায় ১,২০০ কোটি টাকা মূল্যের প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন হয়েছে। এইসব প্রকল্পগুলি ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ, জল, স্বাস্থ্য এবং শিশুদের যত্ন সংক্রান্ত। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য আপনাদের সকলকে অভিনন্দন।

আমার পরিবার-পরিজন,

গত ১০ বছরে লাক্ষাদ্বীপের মানুষের জীবন সহজ করতে সরকার চেষ্টার ত্রুটি করেনি। ‘পিএম আবাস যোজনা (গ্রামীণ)’-য় ১০০ শতাংশ মানুষকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বিনামূল্যে রেশন পৌঁছচ্ছে প্রত্যেক সুবিধাপ্রাপকের কাছে এবং কৃষক ঋণ কার্ড ও আয়ুষ্মান কার্ড দেওয়া হয়েছে। আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির এবং স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এখানে। সরকারের লক্ষ্য, সরকারি কর্মসূচিগুলির সুবিধা যেন প্রত্যেকে পায় সেটা সুনিশ্চিত করা। কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর (ডিবিটি)-এর মাধ্যমে প্রত্যেক সুবিধাপ্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পাঠাচ্ছে। এতে স্বচ্ছতা এসেছে, দুর্নীতি কমেছে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, লাক্ষাদ্বীপের মানুষকে তাঁদের অধিকার থেকে যেই-ই বঞ্চিত করুক না কেন, তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না।

আমার পরিবার-পরিজন,

২০২০-তে আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিয়েছিলাম যে ১ হাজার দিনের মধ্যে আপনাদের কাছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেব। আজ কোচি-লাক্ষাদ্বীপ সাবমেরিন অপটিক্যাল ফাইবার প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। এবার থেকে লাক্ষাদ্বীপ ১০০ গুণ বেশি গতির ইন্টারনেটের সুবিধা পাবে। এতে সরকারি পরিষেবা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার উন্নতি হবে। লাক্ষাদ্বীপে লজিস্টিক্স পরিষেবা হাবের সুবিধাও গতি পাবে। লাক্ষাদ্বীপে প্রত্যেকটি বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। নোনা জলকে পরিষ্কার জলে পরিণত করার জন্য নতুন যে কারখানা হয়েছে, তাতেও এই প্রকল্প আরও এগিয়ে যাবে। এই কারখানায় প্রতিদিন তৈরি হবে ১.৫ লক্ষ লিটার পানীয় জল। এর পাইলট প্রকল্প ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে কাভারাত্তি, অগত্তি এবং মিনিকয় দ্বীপে।

আমার পরিবার-পরিজন,

বন্ধুগণ, লাক্ষাদ্বীপ সফরে আমার সুযোগ হয়েছে আলি মানিকফ্যানের সঙ্গে দেখা হওয়ার। তাঁর গবেষণা ও উদ্ভাবন গোটা অঞ্চলের বিশাল উন্নতি ঘটিয়েছে। আমার সরকারের পক্ষে খুবই আনন্দের বিষয় যে আলি মানিকফ্যান ২০২১-এ পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ভারত সরকার যুব সমাজের উদ্ভাবন এবং উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন পথ তৈরি করছে। এমনকি আজও যুবাদের ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে, তরুণীদের দেওয়া হয়েছে বাই-সাইকেল। বহু বছর ধরে লাক্ষাদ্বীপে কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। ফলে, এখানকার যুব সমাজকে উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে যেতে হত। আমাদের সরকার লাক্ষাদ্বীপে উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে।  কলা এবং বিজ্ঞানের নতুন কলেজ খোলা হয়েছে আন্দ্রত ও কাদমাত দ্বীপে এবং একটি নতুন পলিটেকনিক তৈরি হয়েছে মিনিকয়-তে যার ফলে এখানকার ছাত্রছাত্রীরা প্রভূত উপকৃত হচ্ছেন। 

আমার পরিবার-পরিজন,

বন্ধুগণ, হজ তীর্থযাত্রীদের সুবিধার জন্য আমাদের সরকার যে প্রয়াস নিয়েছে তাতে লাক্ষাদ্বীপের মানুষও উপকৃত হয়েছেন। হজ তীর্থযাত্রীদের জন্য ভিসা-বিধি সরল করা হয়েছে এবং হজ সংক্রান্ত বেশিরভাগ লেনদেন এখন ডিজিটাল করা হয়েছে। মহিলারাও এখন মেহরাম ব্যতীতই হজে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন। এইসব প্রয়াসের ফলেই ভারতীয় উমরাহ্‌ যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

আমার পরিবার-পরিজন,

এখন ভারত সামুদ্রিক খাদ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের অংশীদারি বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে। এতে উপকৃত হচ্ছে লাক্ষাদ্বীপও। এখান থেকে টুনা মাছ পাঠানো হচ্ছে জাপানে। এখান থেকে উচ্চমানের মাছ রপ্তানি করার অনেক সুবিধা, যাতে এখানকার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের জীবনে রূপান্তর ঘটতে পারে। এখানে সামুদ্রিক আগাছা চাষের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাক্ষাদ্বীপের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সরকার সতর্ক নজর দিচ্ছে যাতে এখানকার পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়। এই প্রয়াসের অঙ্গ ব্যাটারি স্টোরেজ ব্যবস্থার সঙ্গে সৌরশক্তি কেন্দ্র নির্মাণ। এটাই লাক্ষাদ্বীপের প্রথম ব্যাটারি-নির্ভর সৌরশক্তি প্রকল্প। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ডিজেলের ওপর নির্ভরতা কমবে, যার ফলে কমবে দূষণ এবং সামুদ্রিক পরিবেশের ওপর এর প্রভাব পড়বে খুব সামান্য। 

আমার পরিবার-পরিজন,

স্বাধীনতার ‘অমৃতকাল’-এ ‘বিকশিত ভারত’ উন্নয়নে লাক্ষাদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে লাক্ষাদ্বীপকে তুলে ধরতে ভারত সরকার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি এখানে যে জি-২০ বৈঠক হয়েছে তাতে লাক্ষাদ্বীপ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘স্বদেশ দর্শন’ কর্মসূচিতে লাক্ষাদ্বীপের জন্য নির্দিষ্ট গন্তব্য-ভিত্তিক একটি সার্বিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।  লাক্ষাদ্বীপ এখন তাদের দুটি ব্লু ফ্ল্যাগ সৈকতের জন্য গর্ব করতে পারে। আমাকে জানানো হয়েছে যে, দেশের প্রথম ওয়াটার ভিলা প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে কাদমাত এবং সুহেলি দ্বীপে।

লাক্ষাদ্বীপ ক্রুজ পর্যটনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হয়ে উঠতে চলেছে। গত পাঁচ বছরে এখানে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় পাঁচগুণ। আপনাদের মনে থাকতে পারে যে আমি দেশের মানুষকে বিদেশ সফরের আগে ভারতের অন্তত ১৫টি জায়গা ঘোরার আবেদন জানিয়েছি। যাঁরা বিভিন্ন দেশের দ্বীপ ঘুরে দেখতে ইচ্ছুক, বিভিন্ন দেশের সমুদ্র সম্পর্কে আগ্রহী, আমি তাঁদের প্রথমে লাক্ষাদ্বীপে আসতে বলেছি। আমার বিশ্বাস, যাঁরাই এখানকার সুন্দর সৈকতগুলি দেখবেন, তাঁরা বিদেশ যাত্রার কথা ভুলে যাবেন। 

আমার পরিবার-পরিজন,

আমি আপনাদের সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, জীবনযাপন, ভ্রমণ এবং বাণিজ্য সহজ করতে আমরা যথাসম্ভব পদক্ষেপ নেব। ‘বিকশিত ভারত’-এর উন্নয়নে লাক্ষাদ্বীপ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এই বিশ্বাসের সঙ্গেই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই!

আপনাদের প্রত্যেককে অসংখ্য ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছিলেন


PG/AP/DM


(Release ID: 1993032) Visitor Counter : 131