প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

মহারাষ্ট্রে ৫১১টি প্রমোদ মহাজন গ্রামীণ কৌশল্যা বিকাশ কেন্দ্রের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 19 OCT 2023 7:48PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ 


নমস্কার!
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ সিন্ডেজী, উপ-মুখ্যমন্ত্রী ভাই দেবেন্দ্র ফড়নবিশজী, অজিত পাওয়ারজী, শ্রী মঙ্গল প্রভাত লোধাজী, রাজ্য সরকারের মন্ত্রীগণ, ভাই ও বোনেরা!
চলছে নবরাত্রি উৎসব। আজ স্কন্দমাতার পূজার দিন। সন্তানের আনন্দময় জীবন ও খ্যাতি প্রত্যেক মায়েরই কাম্য। তা সম্ভব হতে পারে শিক্ষা ও দক্ষতার মাধ্যমে। এই পুণ্য লগ্নে মহারাষ্ট্রে আমাদের নবীন প্রজন্মের দক্ষতা বিকাশে চালু হচ্ছে ৫১১টি গ্রামীণ দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্র। 
বন্ধুগণ,
ভারতের দক্ষ যুবশক্তির চাহিদা সারা বিশ্বেই বাড়ছে। অনেক দেশে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা খুব বেশি। সেখানে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত যুবশক্তির অভাব। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ১৬টি দেশ প্রায় ৪০ লক্ষ দক্ষ যুবক-যুবতীকে কাজ দিতে চায়। কিন্তু, দক্ষ পেশাদারের অভাবে তারা এক্ষেত্রে অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন দেশে এখন নির্মাণ, স্বাস্থ্য, পর্যটন, শিক্ষা এবং পরিবহণ ক্ষেত্রে মানবসম্পদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ভারত শুধু নিজের জন্যই নয়, সারা বিশ্বের জন্যই তৈরি করছে দক্ষ পেশাদার। 
মহারাষ্ট্রের এই নতুন দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্রগুলি সারা বিশ্বে দক্ষ পেদাদারের চাহিদা মেটাতে পারে। এইসব কেন্দ্রে নির্মাণ ক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কাজ করার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে কেন্দ্রগুলিতে। মহারাষ্ট্রে গণমাধ্যম ও বিনোদনের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রেও দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে অনেক কেন্দ্রে। আজ ভারত বৈদ্যুতিন ও হার্ডওয়্যার ক্ষেত্রে বড় উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠছে। এইসব কেন্দ্রে সে সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও পাবেন যুবক-যুবতীরা।
অনুগ্র শক্তি বা সফট্ স্কিলের প্রশিক্ষণের উপরও নজর দেওয়ার জন্য আমি মহারাষ্ট্র সরকার এবং সিন্ডেজীকে অনুরোধ করছি। ভিন দেশে আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে দৈনন্দিন কথপোকথন অনায়াসে করতে পারে, তা নিশ্চিত করাও জরুরি। ভাষার ব্যবধান ঘোচাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগাতেও তাদের দক্ষ করে তুলতে হবে। 
বন্ধুগণ,
আগে দক্ষতা বিকাশে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হ’ত না। এজন্যও যুবক-যুবতীদের চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াতো। সেই সমস্যা ঘোচাতেই আমাদের সরকার বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছে। প্রথমবার ভারতে তৈরি হয়েছে দক্ষতা বিকাশ সংক্রান্ত পৃথক একটি মন্ত্রক। এর আওতায় চালু হয়েছে একাধিক প্রকল্প। কৌশল বিকাশ যোজনার আওতায় এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১ কোটি ৩০ লক্ষ যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। 
বন্ধুগণ,
দক্ষতা বিকাশের এই উদ্যোগ সামাজিক ন্যায়ের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সমাজের দুর্বলতর মানুষের দক্ষতা বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন বাবাসাহেব আম্বেদকর। দলিত, পিছিয়ে পড়া মানুষ এবং আদিবাসীদের কল্যাণের প্রশ্নে তিনি শিল্পায়নের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেছিলেন। বলা বাহুল্য শিল্প ক্ষেত্রে কাজ পেতে গেলে কর্মদক্ষতা একান্ত আবশ্যক। অতীতে সমাজের প্রান্তিকবর্গের মানুষ এজন্যই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকতেন। ভারত সরকারের দক্ষতা বিকাশ সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচির কল্যাণে ছবিটা এখন পাল্টে গেছে। 
বন্ধুগণ,
ভারতে মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে সামাজিক বাধা দূর করায় অগ্রগ্ণ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন মাতা সাবিত্রী বাঈ ফুলে। তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত এই সরকার নারী শিক্ষা এবং দক্ষতার প্রশ্নে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে। গ্রামে গ্রামে মহিলারা গড়ে তুলছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠী। মহিলা ক্ষমতায়ন কর্মসূচির আওতায় ৩ কোটি মহিলাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কৃষি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার বাড়াতে চায় সরকার। এজন্যও গ্রামের মহিলাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। 
বন্ধুগণ,
দক্ষতা বিকাশের এই কর্মসূচিতে দেশের উন্নয়নের বিষয়টি প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া দরকার। সেইসব পণ্য উৎপাদনে জোর দিতে হবে, যার মাধ্যমে ভারত এগোতে পারে স্বনির্ভরতার দিশায়। দেশে উৎপাদিত পণ্য হতে হবে ত্রুটি মুক্ত। পরিষেবা ক্ষেত্রের বিষয়ও একই কথা প্রযোজ্য। 
বন্ধুগণ,
ভারতে কৃষি ক্ষেত্রে নতুন ধরনের দক্ষতা প্রয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। রাসায়নিক কৃষি প্রণালী আমাদের বাসগ্রহের অনেক ক্ষতি করেছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় প্রাকৃতিক ও জৈব চাষ এবং সে সংক্রান্ত দক্ষতা বিকাশে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষি ক্ষেত্রে জলের সুষম ব্যবহার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক দক্ষতার বিকাশও সমান জরুরি। আমি বিশ্বাস করি যে, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে উন্নত ভারত গড়ে তোলার স্বপ্ন পূরণে দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির গুরুত্ব অসীম। 
একটি অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিই। একবার সিঙ্গাপুর সফরে সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে আমি সেখানকার দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্র দেখতে গিয়েছিলাম। এই কেন্দ্রটি আমাদের আইটিআই – এর মতো। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী জানালেন, সম্পন্ন পরিবারের শিক্ষার্থীরা আগে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতেন না। কিন্তু, তাঁর সনির্বন্ধ উদ্যোগে ঐ কেন্দ্রটি তৈরি হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। আমাদের দেশেও শ্রমকে যথার্থ সামাজিক মর্যাদা দেওয়া দরকার। 
সমবেত যুবাদের আমি শুভেচ্ছা জানাই। তাঁদের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি খুশি। 
নমস্কার!

(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল)


PG/AC/SB



(Release ID: 1973671) Visitor Counter : 67