প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সংস্কৃতি মন্ত্রীদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

“কাশী জ্ঞান, কর্তব্য এবং সত্যের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত এবং এটি প্রকৃতপক্ষে ভারতের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক রাজধানী”

“আমরা ভারতে আমাদের চিরন্তন এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য খুব গর্ববোধ করি। আমাদের চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকেও আমরা অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকি।”

“‘যুগে যুগেন ভারত’ জাতীয় জাদুঘর তৈরি হওয়ার পরে তা বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হয়ে উঠবে, যেখানে ৫ হাজার বছরেরও সুপ্রাচীন ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে”

“কোনো মূর্ত ঐতিহ্য শুধুমাত্র বস্তুগত ঐতিহ্যকেই নির্ধারণ করেনা, বরং তা একটি জাতির ইতিহাস ও পরিচয় বহন করে”

“ঐতিহ্য হল আর্থিক বৃদ্ধি এবং বৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্ব সম্পদ যা দেশের ‘বিকশিত ভারত’-এর মন্ত্রে প্রতিধ্বনিত হয়েছে”

“ভারতের জাতীয় ডিজিটাল জেলা ভান্ডার স্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনীগুলি পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছে”

“কর্মগোষ্ঠীর চারটি সি – সংস্কৃতি (কালচার), সৃজনশীলতা (ক্রিয়েটিভিটি), বাণিজ্য (কমার্স) এবং সহযোগিতার (কোলাবরেশন) গুরুত্ব প্রতিফলিত করে”

Posted On: 26 AUG 2023 10:01AM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৬ আগস্ট, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সংস্কৃতি মন্ত্রীদের বৈঠকে ভাষণ দিয়েছেন।  

প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই স্থানটি কাশী নামে পরিচিত। তাঁর সংসদীয় এলাকায় জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সংস্কৃতি মন্ত্রীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় উচ্ছাসও প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশী শুধুমাত্র বিশ্বের প্রাচীনতম শহরই নয়, এর অদূরেই রয়েছে সারনাথ যেখানে ভগবান বুদ্ধ তাঁর প্রথম বাণী প্রচার করেছিলেন। তিনি বলেন, “কাশী জ্ঞান, কর্তব্য এবং সত্যের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত এবং এটি প্রকৃতপক্ষে ভারতের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক রাজধানী।” বৈঠকে উপস্থিত অতিথিদের তিনি গঙ্গারতি দেখার জন্য পরামর্শ দেন এবং সারনাথ পরিদর্শন ও কাশীর সুস্বাদু খাবারের স্বাদ গ্রহণের জন্য আর্জি জানান তিনি।

দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার এক অন্তর্নিহিত সুযোগ ও সম্ভাবনার বীজ রোপন রয়েছে সংস্কৃতির মধ্যে, সেকথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সংস্কৃতি মন্ত্রীদের গোষ্ঠীর কাজ সমগ্র মানবতার জন্য অপরিসীম তাৎপর্য বহন করে। শ্রী মোদী জানান, “আমরা ভারতে আমাদের চিরন্তন এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য খুব গর্ববোধ করি। আমাদের চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকেও আমরা অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকি।” তিনি জানান, ভারত তার ঐতিহ্যবাসী উপাদানগুলির সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীবনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র জাতীয় পর্যায়েই নয়, গ্রামীণ ভারতে আঞ্চলিক তথা স্থানীয় পর্যায়ে দেশের সাংস্কৃতিক সম্পদ এবং শিল্পীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ভারতে সংস্কৃতি উদযাপনের জন্য বেশ কয়েকটি কেন্দ্র নির্মাণের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। দেশের বিভিন্ন স্থানে উপজাতি সম্প্রদায়ের জাদুঘরের উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে ভারতের উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি উঠে এসেছে। নতুন দিল্লিতে নির্মিত পিএম সংগ্রহালয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি ভারতের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য প্রদর্শনের এক নিদর্শন। ‘যুগে যুগেন ভারত’ জাতীয় জাদুঘর নির্মাণের কাজ শেষ হলে তা বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হয়ে উঠবে। যেখানে ৫ হাজারেরও বেশি ভারতের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে।  

সাংস্কৃতিক সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই কর্মগোষ্ঠীর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান এবং বলেন কোনো মূর্ত ঐতিহ্য শুধুমাত্র বস্তুগত ঐতিহ্যকেই নির্ধারণ করেনা, বরং তা একটি জাতির ইতিহাস ও পরিচয় বহন করে। শ্রী মোদী মন্তব্য করেন,  “প্রত্যেকেরই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা এবং তা উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।” ২০১৪ সাল থেকে ভারতের সুপ্রাচীন সভ্যতার এমন কিছু শিল্পনিদর্শন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের সভ্যতার গর্ব প্রতিফলিত হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। ‘কালচার ফর লাইফ’ বা জীবনের জন্য সংস্কৃতি রক্ষায় সকলের অবদানের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য শুধু পাথরে খোদাই করা একটি নিদর্শন মাত্র নয়, এটি হল পরম্পরা ও রীতিনীতি এবং উৎসবের এক বিশেষ ধারাবাহিকতা, যা বহু প্রজন্ম ধরেই লালিত হচ্ছে। এই কর্মগোষ্ঠীর প্রয়াস সুস্থায়ী রীতিনীতি এবং মানুষের জীবনশৈলীর পক্ষে সহায়ক হবে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।   

শ্রী মোদী জানান, আর্থিক বৃদ্ধি এবং বৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্ব সম্পদ হিসেবে ঐতিহ্যকে বিবেচনা করা হয় এবং তা দেশের ‘বিকশিত ভারত’-এর মন্ত্রে প্রতিধ্বনিত হয়েছে। উন্নয়নের পাশাপাশি ঐতিহ্যকেও রক্ষা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত তার ২ হাজার বছরের সুপ্রাচীন শিল্পকলার ঐতিহ্যের জন্য গর্ব অনুভব করে। যেখানে ৩ হাজারটির মতো অনুপম শিল্প নিদর্শন রয়েছে। ‘এক জেলা এক পণ্য’ – এই উদ্যোগ ভারতের চারু ও কারু শিল্পের অনুপম বৈশিষ্ট্যগুলিকে তুলে ধরে। একইসঙ্গে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার লক্ষ্য কিভাবে পূরণ করা সম্ভব তারও প্রতিফলন ঘটেছে এই শিল্পকর্মগুলির মধ্য দিয়ে। এ ক্ষেত্রে জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির উদ্যোগ গভীর তাৎপর্য বহন করে বলে জানান তিনি। আগামী মাসে ভারতে ‘প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা’র সূচনা হচ্ছে। ১৮০ কোটি ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগের মাধ্যমে পরম্পরাগত শিল্পী ও কারিগরদের জন্য এক অনুকূল পরিবেশ পরিস্থিতি গড়ে তোলা হবে। এতে পরম্পরাগত কারিগরদের সাহায্য মিলবে এবং তাঁদের কারু শিল্পের উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি ভারতের সমৃদ্ধশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ সম্ভব হবে।         

সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য প্রযুক্তির প্রয়োগ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, সেকথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে একটি জাতীয় ডিজিটাল জেলা ভান্ডার রয়েছে, যার মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনীগুলি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিকে আরও পর্যটক বান্ধব করে তোলার পাশাপাশি সংস্কৃতিক নিদর্শনগুলির সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

সংস্কৃতির পথ ধরে সকলের মধ্যে ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সংস্কৃতি মন্ত্রীদের কর্মগোষ্ঠী যে অভিযান শুরু হয়েছে তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ অর্থাৎ এক পৃথিবী এক পরিবার এক ভবিষ্যৎ গঠনের শক্তি ও অঙ্গীকার রয়েছে এর মধ্যে। জি২০ কর্মসূচি সংক্রান্ত পরিকল্পনা তৈরিতে তাঁদের অগ্রণী ভূমিকার প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কর্মগোষ্ঠীর চারটি সি –সংস্কৃতি (কালচার), সৃজনশীলতা (ক্রিয়েটিভিটি), বাণিজ্য (কমার্স) এবং সহযোগিতার (কোলাবরেশন) গুরুত্ব প্রতিফলিত করে।” এর মাধ্যমে এক সহমর্মী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে পরিশেষে জানান প্রধানমন্ত্রী। 

AC/SS/SKD



(Release ID: 1953494) Visitor Counter : 114