প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী দেরাদুন থেকে দিল্লি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী যাত্রার সূচনা করেছেন


রেলের নতুন শাখার বৈদ্যুতিকীকরণ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ এবং উত্তরাখণ্ডকে ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিক রেল লাইনের রাজ্য বলে ঘোষণা করেছেন

“দিল্লি-দেরাদুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নাগরিকদের ভ্রমণের স্বাচ্ছন্দ্য এবং আরাম নিশ্চিত করবে”

“অর্থনীতিকে মজবুত করা এবং দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে ভারত আশার রেখা”

“বর্তমান দশকটি উত্তরাখণ্ডের দশক হয়ে উঠতে চলেছে”

“দেবভূমি বিশ্বের আধ্যাত্মিক চেতনার কেন্দ্র হয়ে উঠবে”

“সরকারের নজর উত্তরাখণ্ডের জন্য নবরত্ন উন্নয়ন”

“ডবল ইঞ্জিন সরকার ডবল শক্তি এবং ডবল গতির সঙ্গে কাজ করছে”

“একবিংশ শতাব্দীর ভারত পরিকাঠামোর সম্ভাবনা সম্পূর্ণ ব্যবহার করে উন্নয়নের নতুন মাত্রায় উঠতে পারে”

“পর্বতমালা প্রকল্প আগামীদিনে রাজ্যের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চলেছে”

“সঠিক উদ্দেশ্য, নীতি এবং কর্মস্পৃহা উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যায়”

“দেশ এখানেই থেমে যাবে না, দেশ গতির রথে উঠে পড়েছে। সমগ্র দেশ এখন বন্দে ভারতের গতিতে এগিয়ে চলেছে এবং এগোতেই থাকবে”

Posted On: 25 MAY 2023 12:21PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৫ মে, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে দেরাদুন থেকে দিল্লি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের প্রথম যাত্রার সূচনা করলেন। তিনি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন নতুন করে বৈদ্যুতিকীকরণ হওয়া রেল শাখার এবং উত্তরাখণ্ডকে ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিক রেল লাইনের রাজ্য বলে ঘোষণা করেছেন।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী দেরাদুন থেকে দিল্লি প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনার জন্য উত্তরাখণ্ডের প্রত্যেককে অভিনন্দন জানালেন এবং বললেন যে এই ট্রেন দেশের রাজধানীকে উত্তরাখণ্ডের দেবভূমির সঙ্গে যুক্ত করবে। তিনি জানান, এই দুই শহরের মধ্যে ভ্রমণের সময় আরও কমবে এবং এই ট্রেন যাত্রা আরও সুখকর এবং স্বাচ্ছন্দ্যমূলক হবে।

জাপান, পাপুয়া নিউ গিনি এবং অস্ট্রেলিয়া - এই তিন দেশ সফরের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এখন ভারতের দিকে অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। শ্রী মোদী বলেন, “অর্থনীতিকে মজবুত করা এবং দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে ভারত আশার রেখা।” করোনা ভাইরাস অতিমারীর মোকাবিলায় ভারতের সাফল্যের উল্লেখ করে বিশ্বে সর্ববৃহৎ টিকাকরণ অভিযান চালানোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যগুলির ওপর জোর দিয়েছেন যাদের জন্য সারা বিশ্ব থেকে মানুষজন ভারতে ছুটে আসছেন। তিনি এও বলেন উত্তরাখণ্ড যাতে এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারে বন্দে ভারত ট্রেন সেই সাহায্যে করবে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর কেদারনাথ দর্শনের কথা বলেন এবং তাঁর এক স্বতঃস্ফূর্ত উক্তির উল্লেখ করেন যেটি হল - “বর্তমান দশকটি উত্তরাখণ্ডের দশক হয়ে উঠতে চলেছে।” এই রাজ্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে যেভাবে এগিয়ে চলেছে তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আশা, “দেবভূমি বিশ্বের আধ্যাত্মিক চেতনার কেন্দ্র হয়ে উঠবে।” তিনি বলেন যে এই সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে আমাদের কাজ করতে হবে। চারধাম যাত্রায় তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা পুরনো রকর্ড ভেঙে দিয়েছে তাও জানান তিনি। বাবা কেদার, কুম্ভ / অর্থ-কুম্ভ এবং কানোয়ার যাত্রায় দলে দলে ভক্তদের আসার কথাও বলেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, খুব বেশি রাজ্যে এত ভক্ত আসে না। এটা একটা উপহারের পাশাপাশি বিশাল কাজের বিষয়। তিনি বলেন, “ডবল ইঞ্জিন সরকার ডবল শক্তি এবং ডবল গতির সঙ্গে কাজ করছে এই ‘ভগীরথ’ কাজকে সহজ করে তুলতে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে সরকার জোর দিচ্ছে উন্নয়নের জন্য নয়টি রত্নের ওপর। প্রথম রত্নটি হল কেদারনাথ-বদ্রীনাথ ধামে ১,৩০০ কোটি টাকার পুনরুজ্জীবনের কাজ। দ্বিতীয়টি হল গৌরীকুণ্ড-কেদারনাথ এবং গোবিন্দঘাট-হেমকুণ্ড সাহিবে ২,৫০০ কোটি টাকার রোপওয়ে প্রকল্প। তৃতীয়টি হল মানসখণ্ড মন্দিরমালা কর্মসূচিতে কুমায়ুনে প্রাচীন মন্দিরগুলির সংস্কার। চতুর্থটি হল গোটা রাজ্যে হোম-স্টে-র সংখ্যা বাড়ানো যেখান ইতিমধ্যেই ৪ হাজারের বেশি হোম-স্টে নথিভুক্ত আছে। পঞ্চমটি হল ১৬টি পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন স্থলের উন্নয়ন। ষষ্ঠটি উত্তরাখণ্ডে স্বাস্থ্য পরিষেবার সম্প্রসারণ। এইমস স্যাটেলাইট সেন্টার তৈরি হচ্ছে উধম সিং নগরে। সপ্তমটি হল ২ হাজার কোটি টাকার তেহরি লেক উন্নয়ন প্রকল্প। অষ্টমটি যোগ এবং রোমাঞ্চকর পর্যটনের রাজধানী হিসেবে হরিদ্বার-ঋষিকেশের উন্নয়ন এবং শেষটি টনকপুর-বাগেশ্বর রেললাইন।

তিনি বলেন, এই নবরত্নগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নে নতুন মাত্রা দিতে। তিনি জানান, ১২ হাজার কোটি টাকার চারধাম মহাপরিযোজনার কাজ হচ্ছে দ্রুতগতিতে। দিল্লি-দেরাদুন এক্সপ্রেসওয়ে যাতায়াত আরও দ্রুত ও সহজ করবে। তিনি উত্তরাখণ্ডে রোপওয়ে সংযোগেরও কথা বলেন। তিনি বলেন, “পর্বতমালা প্রকল্প আগামীদিনে রাজ্যের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চলেছে।” তিনি জানান, ১৬ হাজার কোটি টাকার ঋষিকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেল প্রকল্পের কাজ ২-৩ বছরে শেষ হয়ে যাবে। এই প্রকল্পের ফলে উত্তরাখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল সুগম হবে এবং বাড়বে লগ্নি, শিল্প ও কর্মসংস্থান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় উত্তরাখণ্ড পর্যটন, রোমাঞ্চকর পর্যটন, চলচ্চিত্রের শ্যুটিং এবং বিবাহের গন্তব্যস্থল হিসেবে উঠে আসে। তিনি বলেন, রাজ্যের পর্যটন স্থলগুলি সারা বিশ্বের পর্যটকদের টেনে নিয়ে আসছে এবং এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তাঁদের পক্ষে খুব সুবিধাজনক হবে। প্রধানমন্ত্রী জানান, যাঁরা সপরিবারে যাতায়াত করেন তাঁদের পক্ষে ট্রেনে যাতায়াত সুবিধাজনক। বন্দে ভারত ক্রমশ পরিবহণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠছে।

আগেকার সরকার পরিকাঠামোর গুরুত্ব বুঝতে পারেনি। তারা দুর্নীতি এবং পরিবারতন্ত্র নিয়েই ব্যস্ত ছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একবিংশ শতাব্দীর ভারত পরিকাঠামোর সম্ভাবনা সম্পূর্ণ ব্যবহার করে উন্নয়নের নতুন মাত্রায় উঠতে পারে”। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, আগেকার সরকারগুলি দ্রুতগামী ট্রেন চালানোর বিষয়ে অজস্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। প্রহরাবিহীন রেলগেট তুলেও দিতে পারেনি। রেললাইনের বৈদ্যুতিকীকরণের অবস্থা ছিল আরও খারাপ। প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৪-র আগে পর্যন্ত দেশের রেল নেটওয়ার্কের এক-তৃতীয়াংশ মাত্র বৈদ্যুতিকীকরণ করা হয়। ফলে, দ্রুতগামী ট্রেনের ভাবনা অসম্ভব ছিল। শ্রী মোদী বলেন, ২০১৪-র পরই রেলের আমূল পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের প্রথম হাইস্পিড ট্রেন চালানোর স্বপ্ন রূপায়ণের কাজ শুরু হয়েছে দ্রুতগতিতে। সেইসঙ্গে সেমি-হাইস্পিড ট্রেন চালানোর নেটওয়ার্কও তৈরি হচ্ছে। তিনি জানান, ২০১৪-র আগে প্রতি বছর গড়ে ৬০০ কিলোমিটার রেললাইনের বৈদ্যুতিকীকরণ হত, সেখানে আজ প্রতি বছর ৬ হাজার কিলোমিটার রেললাইন বৈদ্যুতিকীকরণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, “বর্তমানে দেশের ৯০ শতাংশের বেশি রেললাইনের বৈদ্যুতিকীকরণ হয়ে গেছে। উত্তরাখণ্ডে ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন কাজের কৃতিত্ব দেন সঠিক উদ্দেশ্য, নীতি এবং কাজের আগ্রহকে। ২০১৪-র তুলনায় বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তরাখণ্ড উপকৃত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪-র পাঁচ বছর আগে এই রাজ্যের জন্য গড় বাজেট বরাদ্দ ছিল ২০০ কোটি টাকারও কম, সেখানে আজ রেল বাজেট হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার যা প্রায় ২৫ গুণ বেশি। প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য অঞ্চলে যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন যেখানে গ্রামগুলি থেকে মানুষ যোগাযোগের অভাবে অন্য জায়গায় চলে যান। শ্রী মোদী বলেন, সরকার চায় আগামী প্রজন্ম যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তিনি বলেন, যোগাযোগ আধুনিক হলে সীমান্তে যাতায়াতও সুবিধাজনক হবে। এতে দেশকে যাঁরা রক্ষা করছেন সেই সৈন্যদের যে অসুবিধা ভোগ করতে হত তা আর করতে হবে না।

ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার উত্তরাখণ্ডের উন্নয়নে দায়বদ্ধ। উত্তরাখণ্ডের দ্রুত উন্নয়ন হলেই ভারতের দ্রুত উন্নয়ন হবে। সবশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশ এখানেই থেমে যাবে না, দেশ গতির রথে উঠে পড়েছে। সমগ্র দেশ এখন বন্দে ভারতের গতিতে এগিয়ে চলেছে এবং এগোতেই থাকবে।”

 


CG/AP/DM/



(Release ID: 1927209) Visitor Counter : 158