প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

কর্ণাটকে মান্ডিয়াতে মূল উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 12 MAR 2023 2:26PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ মার্চ, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কর্ণাটেকর মান্ডিয়া আজ মূল উন্নয়ন প্রকল্পগুলির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়ে  জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার পাশাপাশি চার লেন বিশিষ্ট মাইসুরু-কুশলনগর মহাসড়কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

সমাবেশের ভাষণের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ভগবান ভুবনেশ্বরীর প্রতি এবং আদিচুনচানাগিরি এবং মেলুকোট-এর গুরুদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এই অনুষ্ঠানে রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষদের মধ্যে উপস্থিত থাকতে পেরে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তাঁকে আশীর্বাদ করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী মান্ডার মানুষদের আতিথেয়তার কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের আশীর্বাদ বড় মধুর। রাজ্যের মানুষদের ভালোবাসা এবং আন্তরিকতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার দ্রুত উন্নয়নের প্রসার ঘটিয়ে প্রত্যেক নাগরিকের চাহিদা পূরণের দিকে এগোচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, কয়েক হাজার কোটি টাকার আজকের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি কর্ণাটকের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা পূরণে ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রয়াসের অঙ্গ স্বরুপ।

বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়েকে ঘিরে জাতীয় স্তরে যে উৎসাহের সঞ্চার হয়েছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই জাতীয় আধুনিক এবং উন্নতমানের এক্সপ্রেসওয়েকে ঘিরে দেশের যুব সম্প্রদায় রীতিমত গর্ব অনুভব করছে। তিনি জানান, এই এক্সপ্রেসওয়ে মাইসুরু এবং বেঙ্গুলুরুর মধ্যে যাতায়াতের সময় অর্ধেক কমিয়ে এনেছে। চার লেন বিশিষ্ট মহাসড়কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে তিনি উল্লেখ করেন যে সব কা বিকাশের ভাবধারাকে এই প্রকল্পগুলি আরও বিকশিত করবে এবং সমৃদ্ধির দ্বারকে উন্মুক্ত করে দেবে। প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের জনসাধারণকে এইসব প্রকল্পগুলির জন্য সাধুবাদ জানান।

ভারতের পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী দুই মহান ব্যক্তির কথা স্মরণ করেন। কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার এবং শ্রী এম বিশ্বেশ্বরাইয়া। এঁরা দুজনেই কর্ণাটকের মহান সন্তান যাঁরা দেশকে নতুন শক্তি এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েছিলেন। এঁরা বিপর্যয়কে সুযোগে রূপান্তরিত করেছিলেন এবং পরিকাঠামোর গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন। বর্তমান প্রজন্ম সৌভাগ্যবান যে তাঁরা তাঁদের বিভিন্ন প্রয়াসের সুফল লাভ করছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন দেশে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে উন্নত পরিকাঠামো প্রকল্পের প্রসার ঘটানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতমালা এবং সাগরমালা যোজনা ভারতের চালচিত্রে এবং কর্ণাটকের চালচিত্রের রূপান্তর ঘটিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব যখন করোনা অতিমারীর সঙ্গে লড়াই করছে তখনও ভারতের পরিকাঠামো বাজেট বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি জানান, দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নে ১০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। জীবনযাত্রাকে সহজ করে তোলার পাশাপাশি পরিকাঠামো, কাজ, বিনিয়োগ এবং উপার্জনের সুযোগ সামনে নিয়ে আসে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি আরও জানান, কেবলমাত্র কর্ণাটকে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মহাসড়ক সংক্রান্ত প্রকল্পে সরকার ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছে।

বেঙ্গালুরু এবং মাইসুরুকে কর্ণাটকের মূল গুরুত্বপূর্ণ শহর বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দুইয়ের মধ্যে প্রযুক্তি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গেও বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জনসাধারণ কখনও কখনও অভিযোগ করেছেন যে এই দুই শহরের মধ্যে চলাচলের ক্ষেত্রে বিরাট যানজট একটা সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। তিনি বলেন, এই এক্সপ্রেসওয়ে এই দুই শহরের মধ্যে যাতায়াতের সময় দেড় ঘণ্টাতে নামিয়ে আনবে এবং এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে উজ্জীবিত করবে।

বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়ে রামনগর এবং মান্ডিয়ার মতো ঐতিহ্যপূর্ণ শহরের মধ্যে দিয়ে যাবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরফলে পর্যটনই কেবলমাত্র প্রসারলাভ করবে তাই নয়, মা কাবেরীর উৎসস্থলে সহজেই ভ্রমণের সুযোগ খুলে যাবে। তিনি বলেন, বেঙ্গুলুরু-মেঙ্গালুরু মহাসড়ক বর্ষার সময় প্রায়সই ভূমিধ্বসের কারনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরফলে এই এলাকায় বন্দরের মধ্যে সংযোগের ক্ষেত্রে তা প্রভাব বিস্তার করে। বেঙ্গুলুরু-মেঙ্গালুরু মহাসড়কে চওড়া করে এই সমস্যার নিরসন করতে হবে বলে তিনি জানান। বর্ধিত যোগাযোগ সম্প্রসারণের ফলে এই এলাকায় শিল্পেরও প্রসার ঘটবে বলে তিনি জানান।

অতীতের সরকারগুলি নির্বোধ দৃষ্টিভঙ্গীর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গরিবদের উন্নয়নে যে অর্থ বরাদ্দ করা হত তা নয়ছয় করা হত। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে গরিবের দুঃখ ও মনোভাব বুঝতে পারে এমন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এই সরকার যে সরকার গরিবদের সমৃদ্ধি এবং কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে চলেছে এবং তাদের আবাসন, পাইপ বাহিত পরিশ্রত জল, উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ, রাস্তা, হাসপাতাল পরিকাঠামোকে নিশ্চিত করেছে এবং চিকিৎসাকে ঘিরে চিকিৎসার খরচ নিয়ে গরিবদের উৎকন্ঠাকে দুর করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, গত ৯ বছরে গরিবদের জীবনযাত্রার সাচ্ছন্দ্যকে নিশ্চিত করেছে তাদের দরজায় পরিষেবা পৌঁছে দিয়ে এবং লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের দিকে সরকার এগিয়েছে।

দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধানসূত্র বের করার সরকারি দৃষ্টিভঙ্গীর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ৯ বছরে ৩ কোটিরও বেশি আবাসন নির্মান করা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষাধিক নির্মিত হয়েছে কর্ণাটকে। জল জীবন মিশনের আওতায় ৪০ লক্ষ নতুন গৃহে পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, আপার ভদ্রা প্রকল্পে এ বছরের বাজেটে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যে সমস্ত জলসেচ প্রকল্পগুলি দশকের পর দশক ধরে আটকে ছিল, দ্রুততার সঙ্গে তাদের কাজ শেষ করা হচ্ছে। তিনি জানান, এই এলাকায় সেচ ব্যবস্থার যে সমস্যা লোকেরা ভোগ করছেন এর মধ্যে দিয়ে তার নিরসন করা হবে। কর্ণাটকের কৃষকরা যে সমস্ত ছোটখাট সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন তার সমাধান করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জানান, পিএম কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার মাধ্যমে কর্ণাটকের কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১২ হাজার কোটি টাকা সরাসরি পাঠানো হয়েছে। মান্ডা এলাকা ২ লক্ষ ৭৫ হাজার কৃষক কেবল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ৬০০ কোটি টাকা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের সরকারকে সাধুবাদ দিয়ে বলেন, পিএম কিষাণ সম্মান নিধি ৬ হাজার টাকায় কিস্তির সঙ্গে রাজ্য সরকার আরও ৪ হাজার টাকা যোগ করেছে। তিনি বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকারের কাছ থেকে কৃষকরা দ্বিগুণ সুযোগ পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফলনের অনিশ্চয়তার কারনে আখ চাষিদের সঙ্গে চিনি কলগুলির দীর্ঘস্থায়ী বকেয়া থেকে গেছে। তিনি বলেন, ইথানলের ব্যবহার শুরু করায় এই সমস্যা বহুলাংশে নিরসন করা সম্ভব হবে। অধিক ফলন হলে বাড়তি আখ থেকে ইথানল তৈরি হবে যার মধ্যে দিয়ে কৃষকদের স্থায়ী উপার্জনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। তিনি জানান, গত বছর দেশের চিনিকলগুলি তেল কোম্পানীগুলিকে ২০ হাজার কোটি টাকার ইথানল বিক্রি করেছে যার মধ্যে দিয়ে আখ চাষিদের সময়মতো টাকা মেটানো সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান ২০১৩-১৪ সাল থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার ইথানল চিনকলগুলির কাছ থেকে কেনা হয়েছে এবং এই টাকা সরাসরি কৃষকদের কাছে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটেও আখ চাষিদের কল্যাণে বহু সংস্থান রাখা হয়েছে যেমন- চিনি সমবায়গুলির সমবায়গুলির সহায়তায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং কর ছাড়ের ফলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত হল এক সম্ভাবনাময় পূর্ণ দেশ এবং সারা পৃথিবীর মানুষ এই দেশের প্রতি তাদের উৎসাহ দেখাচ্ছে। তিনি জানান, ২০২২ সালে ভারত রেকর্ড পরিমাণ বিদেশী বিনিয়োগে আকৃষ্ট করেছে এবং কর্ণাটক হল সব থেকে লাভবান রাজ্য যেখানে ৪ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি এই বিনিয়োগ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সাফল্য ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রয়াসকে তুলে ধরে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়াও জৈব প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতি, বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ প্রভৃতি কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এর পাশাপাশি মহাকাশ ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিল্প অভাবনীয় বিনিয়োগ লক্ষ্য করা গেছে।

ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রয়াসের ফলে অভূতপূর্ণ উন্নয়ন যখন সাধিত হচ্ছে তখন কিছু কিছু রাজনৈতিক দল মোদীর কবর খোড়ায় ব্যস্ত হয়ে রয়েছে। কিন্তু মোদী বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়ে উন্নয়নের কাজে এবং গরিবদের জীবনকে সাচ্ছন্দ্যময় করে তোলার কাজে ব্যস্ত। নিন্দুকদের সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটি কোটি মাতা, ভগিনী এবং কন্যার এবং দেশের মানুষের আশীর্বাদ তার রক্ষাকবচ হয়ে রয়েছে। ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী আজকের প্রকল্পগুলির জন্য কর্ণাটকের মানুষদের অভিনন্দন জানান এবং বলেন, কর্ণাটকের দ্রুত উন্নয়নে দায়বদ্ধ ডবল ইঞ্জিন সরকার।

কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসভারা বোম্মাই, কেন্দ্রীয় সড়ক, পরিবহণ এবং মহাসড়ক মন্ত্রী শ্রী নীতীন গড়করি, সংসদ বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী, মান্ডিয়ার সাংসদ শ্রীমতী সুমালতা অম্বরিশ এবং কর্ণাটক সরকারের একজন মন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

PG/AB/ NS



(Release ID: 1906414) Visitor Counter : 121