প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ ৯৮ তম পর্ব অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ

Posted On: 26 FEB 2023 11:40AM by PIB Kolkata

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। মন কি বাতের এই ৯৮তম পর্বে আপনাদের সবার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। শতপূর্তির দিকে এই যাত্রায়, মন কি বাত-কে, আপনারা সবাই,  জনসাধারণের অংশগ্রহণের যে অভিব্যক্তি তার অনন্য মঞ্চ করে তুলেছেন। প্রত্যেক মাসে লক্ষ লক্ষ বার্তায় কত মানুষের মন কি বাত আমার কাছে এসে পৌঁছয়। আপনারা নিজেদের মনের শক্তি সম্পর্কে তো জানেনই, এভাবেই সমাজের শক্তিতে কীভাবে দেশের শক্তি বাড়ে, এটা আমরা মন কি বাতের ভিন্ন ভিন্ন পর্বে দেখেছি, বুঝেছি, আর আমি অনুভব করেছি - স্বীকারও করেছি। আমার সেই দিনটির কথা মনে আছে যদিন আমরা মন কি বাতে ভারতের চিরাচরিত খেলাধুলোকে উৎসাহ দেওয়ার কথা আলোচনা করেছিলাম। তৎক্ষণাৎ ভারতে একটা ঢেউ উঠল চিরাচরিত খেলাধুলোকে যুক্ত করার, তার চর্চার, সেগুলো শেখার। মন কি বাতে যখন ভারতের খেলনার আলোচনা হল  তখন দেশের মানুষ সক্রিয়ভাবে একে উৎসাহ দিল। এখন তো ভারতের খেলনার এমন    ক্রেস তৈরি হয়ে গিয়েছে যে বিদেশেও এর চাহিদা খুব বাড়ছে। যখন মন কি বাতে আমরা স্টোরি টেলিং-এর ভারতীয় ধারা সম্পর্কে চর্চা করলাম তখন এর সুনাম দূরদূরান্তে পৌঁছে গেল।  বেশি-বেশি মানুষ স্টোরি টেলিং-এর ভারতীয় ধারা প্রতি আকৃষ্ট হতে লাগল।

বন্ধুগণ, আপনাদের মনে আছে যে সর্দার প্যাটেলের জন্মজয়ন্তী অর্থাৎ একতা দিবসে মন কি বাতে আমরা তিনটে প্রতিযোগিতার কথা বলেছিলাম। এই সব প্রতিযোগিতা দেশভক্তির উপর আধারিত গীত, লোরি আর রঙ্গোলি নিয়ে ছিল। আমার বলতে ভালো লাগছে যে গোটা দেশের সাতশোরও বেশি জেলার পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ প্রবল উৎসাহে এতে অংশ নেয়। শিশুরা, বড়রা, প্রবীণরা সবাই এতে হৈ হৈ করে অংশ নেয় আর কুড়িটিরও বেশি ভাষায় নিজেদের এন্ট্রি পাঠায়। এই সব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সব প্রতিযোগীকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন। আপনারা প্রত্যেকে, নিজেই, এক একজন চ্যাম্পিয়ন, শিল্প সাধক। আপনারা সবাই এটা দেখিয়েছেন যে নিজের দেশের বৈচিত্র্য এবং সংস্কৃতির প্রতি আপনাদের হৃদয় কতটা প্রেম রয়েছে।

বন্ধুগণ, আজ এই প্রসঙ্গে আমার লতা মঙ্গেশকর জী, অর্থাৎ লতা দিদির কথা মনে পড়া অত্যন্ত স্বাভাবিক। কারণ যখন এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল তখন লতা দিদি ট্যুইট করে দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেন যাতে তাঁরা অবশ্যই এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন।

বন্ধুগণ, লোরি লিখন প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার জেতেন কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলার বি এম মঞ্জুনাথ’জী। তিনি এই পুরস্কার পান কন্নড় ভাষায় লেখা তাঁর লোরি 'মালগু কন্দা'র জন্য। এটা লেখার প্রেরণা তিনি পান নিজের মা আর ঠাকুমার গাওয়া লোরি-গীত থেকে। এটা শুনলে আপনাদেরও ভালো লাগবে।

ঘুমিয়ে পড়ো, ঘুমিয়ে পড়ো আমার বেবি
আমার বুদ্ধিমান সোনা, ঘুমিয়ে পড়ো
দিন শেষ হয়ে নেমেছে অন্ধকার
ঘুমের দেবী চলে আসবেন
তারাদের বাগান থেকে
স্বপ্ন নিয়ে আসবেন
ঘুমিয়ে পড়ো, ঘুমিয়ে পড়ো
জোজো  জো জো
জোজো  জো জো

অসমের কামরূপ জেলার বাসিন্দা দিনেশ গোয়ালা জী এই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছেন। ইনি যে লোরি লিখেছেন তাতে মাটি আর ধাতু দিয়ে তৈরি স্থানীয় বাসন তৈরীর কারিগরের Propular Craft-এর ছাপ রয়েছে।

কুমোর দাদা বস্তা নিয়ে এসেছেন
আচ্ছা, কী আছে কুমোরের এই বস্তার মধ্যে?
কুমোরের বস্তা খুলে দেখতে পেলাম
বস্তার মধ্যে রয়েছে মিষ্টি একটা বাটি
আমাদের পুচকিটা কুমোরকে জিজ্ঞাসা করল
কেমন এই ছোট্ট বাটি!

গীত আর লোরির মতোই রঙ্গোলি প্রতিযোগিতাও খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। এতে অংশ নেওয়া প্রতিযোগীরা দারুণ দারুণ রঙ্গোলি বানিয়ে পাঠিয়েছেন। এতে বিজয়ী এন্ট্রি ছিল পঞ্জাবের কমল কুমার জী-র। ইনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং অমর শহীদ বীর ভগৎ সিংহের খুব সুন্দর রঙ্গোলি বানিয়েছেন। মহারাষ্ট্রের সাংলির শচীন নরেন্দ্র অওসারি’জী নিজের রঙ্গোলিতে জালিয়ানওয়ালাবাগ, সেখানকার নরসংহার আর শহীদ উধম সিংহের বীরত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন।

গোয়ার বাসিন্দা গুরুদত্ত ওয়ান্তেকার গান্ধীজির রঙ্গোলি তৈরি করেছিলেন, অন্যদিকে পুদুচেরির মালাতিসেলভম জি’ও অনেক মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উপর মনোনিবেশ করেছিলেন। দেশাত্মবোধক গানের প্রতিযোগিতার বিজয়ী, টি. বিজয় দুর্গা’জী অন্ধ্র প্রদেশের মানুষ। তিনি তেলুগু ভাষায় নিজের এন্ট্রি পাঠিয়েছিলেন। তিনি নিজের অঞ্চলের প্রসিদ্ধ স্বাধীনতা সংগ্রামী নরসিংহ রেড্ডি গারুজী দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। আপনারাও বিজয় দুর্গা’জী সেই এন্ট্রির কিছুটা অংশ শুনুন

(Telugu Sound Clip (27 seconds) HINDI Translation)

রেনাড়ু প্রদেশের সূর্য,
হে বীর নরসিংহ!
ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অংকুর তুমি, অঙ্কুশ তুমি!
ব্রিটিশদের অন্যায় ও স্বৈরাচারী দমন-পীড়নের ঘটনা দেখে।
তোমার রক্ত গরম হয়েছিল এবং আগুন জ্বলেছিল!
রেনাড়ু প্রদেশের সূর্য,
হে বীর নরসিংহ!

তেলেগুর পরে, এখন আমি আপনাকে মৈথিলীতে একটি ক্লিপ শোনাব। এটি পাঠিয়েছেন দীপক বৎস’জী। এই প্রতিযোগিতায় তিনি পুরস্কারও জিতেছেন।

(Maithili Sound Clip (30 seconds) HINDI Translation)

ভারত বিশ্বের গর্ব ভাই,
আমাদের দেশ মহান
তিন দিক সাগরে ঘেরা,
উত্তরে কৈলাস বলবান,
গঙ্গা, যমুনা, কৃষ্ণা, কাবেরী,
কোশি, কমলা, বলান
আমাদের দেশ মহান ভাই।
তেরঙা অন্ত প্রাণ

বন্ধুরা, আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এমন এন্ট্রির তালিকা অনেক দীর্ঘ। আপনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে, আপনার পরিবারের সাথে তাঁদের দেখুন এবং শুনুন - আপনি অনেক অনুপ্রেরণা পাবেন। আমার প্রিয় দেশবাসী, বেনারসের কথাই হোক, সানাইয়ের কথাই হোক, ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান জীর কথাই হোক, আমার মনোযোগ সেদিকে যাবেই। কয়েকদিন আগে 'ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান যুব পুরস্কার' দেওয়া হয়েছে। সঙ্গীত ও পারফর্মিং আর্ট এর ক্ষেত্রে উদীয়মান, প্রতিভাবান শিল্পীদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এই পুরস্কার শিল্প, কলা ও সঙ্গীত জগতের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি, সমৃদ্ধিতেও অবদান রাখছে। এর মধ্যে এমন শিল্পীরাও অন্তর্ভুক্ত যাঁরা সেই সকল বাদ্যযন্ত্রগুলির নবজাগরণ ঘটিয়েছেন, যাদের জনপ্রিয়তা সময়ের সাথে কমে যাচ্ছিল। এখন, আপনারা সবাই এই টিউনটি মন দিয়ে শুনুন...

(Sound Clip (21 seconds) Instrument- ‘ সুরসিঙ্গার’, Artist - জয়দীপ মুখার্জী)

আপনি কি জানেন এটি কোন বাদ্যযন্ত্র? আপনি হয়তো জানেন না! এই বাদ্যযন্ত্রের নাম 'সুরসিঙ্গার' এবং এই সুরটি রচনা করেছেন জয়দীপ মুখার্জি।

ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান পুরস্কারে সম্মানিত যুবকদের মধ্যে জয়দীপ জি একজন । ৫০ ও ৬০-এর দশকে থেকেই এই বাদ্যযন্ত্রের সুর শুনতে পাওয়া দুর্লভ হয়ে পড়লেও জয়দীপ সুরসিঙ্গারকে আবার জনপ্রিয় করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একইভাবে, বোন উপ্পলপু নাগমণি জি’র প্রচেষ্টাও অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক, যাঁকে ম্যান্ডোলিনে কর্নাটকী ইন্সট্রুমেন্টালের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আবার সংগ্রাম সিং সুহাস ভান্ডারে জি বারকরি কীর্তনের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন। এই তালিকায় শুধু সঙ্গীত শিল্পীই আছেন এমন নয় - ভি দুর্গা দেবী’জি 'করকাট্টম', একটি প্রাচীন নৃত্যশৈলীর জন্য এই পুরস্কার জিতেছেন। এই পুরস্কারের আরেকজন বিজয়ী, রাজ কুমার নায়ক জী, তেলেঙ্গানার ৩১টি জেলায় ১০১ দিন ধরে চলা পেরিনি ওডিসির আয়োজন করেছিলেন। আজ সকলে তাঁকে পেরিনি রাজকুমার নামেই চেনে। পেরিনি নাট্যম, ভগবান শিবকে উৎস্বর্গীকৃতএকটি নৃত্য, কাকাতিয়া রাজবংশের সময় খুব জনপ্রিয় ছিল। এই রাজবংশের শিকড় আজকের তেলেঙ্গানার সাথে সম্পর্কিত। আর একজন পুরস্কার বিজয়ী হলেন সাইখোম সুরচন্দ্রা  সিং।

ইনি মাইতেই পুং যন্ত্রটি তৈরিতে তার দক্ষতার জন্য প্রসিদ্ধ. এই বাদ্যযন্ত্রটির মনিপুরের সঙ্গে যোগ আছে। পুরন সিংহ, যিনি একজন দিব্যাংগ শিল্পী, যিনি রাজুলা মালুশাহী,নিউলি, হুড়কা বল, জাগারের মতো সংগীতের বিভিন্ন ধারাকে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এই সংক্রান্ত বেশ কিছু অডিও রেকর্ডিংও করেছেন। উত্তরাখন্ড এর লোকসঙ্গীতে নিজের উৎকর্ষের নিদর্শন রেখে তিনি বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়েছেন। সময়ের অপ্রতুলতার কারণে আমি এখানে সব পুরস্কার প্রাপকদের নাম না নিতে পারলেও, আমি আশাবাদী যে আপনারা ওঁদের সম্পর্কে নিশ্চই খোঁজ রাখবেন। আমি এও আশা রাখি যে এই সব শিল্পীরা তাদের Performing Arts কে আরো জনপ্রিয় করে তোলার জন্য তৃণমূল স্তরে গিয়ে সকলকে অনুপ্রাণিত করবেন। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের দেশ এখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। দেশের বিভিন্ন কোণায় আমরা ডিজিটাল ইন্ডিয়ার শক্তি উপলব্ধি করতে পারছি। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার শক্তিকে ঘরে ঘরে পৌঁছনোর পেছনে অনেকগুলো apps এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এমনি একটি app হলো ই-সঞ্জীবনী।  এই app এর সাহায্যে টেলি -কন্সালটেশন অর্থাৎ দূরে বসেই ভিডিও কনফারেন্সিঙের মাধ্যমে ডক্টরের কাছ থেকে আপনার রোগ ব্যাধি নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব। এই app ব্যবহার করে এখনো পর্যন্ত ১০ কোটিরও বেশি মানুষ টেলি কন্সালটেশন করেছেন। আপনারা ভাবতে পারেন !  ১০ কোটি লোক ভিডিও কন্সালটেশন করেছেন! রুগী ও চিকিৎসকের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরী হলো, এটা একটা বিরাট প্রাপ্তি। আর এই প্রাপ্তির জন্য আমি সকল চিকিৎসক এবং এই সুবিধাপ্রাপ্ত সকল রুগীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। ভারতবাসীরা, কিভাবে এই প্রযুক্তিকে নিজেদের জীবনের অঙ্গ করেছেন এটি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা দেখেছি কোরোনাকালে কিভাবে এই ই-সঞ্জীবনী app এর মাধ্যমে হওয়া টেলিকনসালটেশন কত মানুষের কাছে একটা আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমার মনে হলো যে এই নিয়ে “মন কি বাতে” একজন চিকিৎসক ও রুগীর সঙ্গে আলোচনা করা যাক, তাদের কথা শোনা যাক এবং আপনাদের কাছে সেটা পৌঁছানো যাক। আমরা জানতে চাইবো যে এই টেলি কন্সালটেশন মানুষের জন্য কতটা উপকারী।  আমাদের সঙ্গে আছেন সিক্কিমের এক চিকিৎসক, ডাক্তার মদন মণি’জী ।ডাক্তার মদন মণি’জী, সিক্কিমের বাসিন্দা ঠিকই কিন্তু তিনি তার MBBS ধানবাদ থেকে করেছেন এবং তারপর বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে MD করেছেন। উনি বিভিন্ন গ্রামীণ অঞ্চলের বহু মানুষদের টেলি কন্সালটেশন দ্বারা  চিকিৎসা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার.. নমস্কার… মদন মণি’জী।
ডা: মদন মণি – নমস্কার স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আমি নরেন্দ্র মোদী বলছি।
ডা: মদন মণি– হ্যাঁ.. হ্যাঁ.. বলুন স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আপনি তো বেনারসে পড়াশোনা করেছেন?
ডা: মদন মণি– হ্যাঁ.. স্যার আমি বেনারসে পড়াশোনা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী – আপনার medical education ওখানেই হয়েছে?
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ.. হ্যাঁ..
প্রধানমন্ত্রী – তাহলে আপনি যেসময় বেনারসে ছিলেন, সেই তখনকার বেনারস আর এখনকার বদলে যাওয়া বেনারস কখনও দেখতে গেছেন নাকি যাওয়া হয়নি?
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ প্রধানমন্ত্রী’জী আমি যেতে পারিনি, যবে থেকে সিকিমে চলে এসেছি, কিন্তু আমি শুনেছি যে বেশ পরিবর্তন ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রী – তো কত বছর হয়ে গেল আপনি বেনারস ছেড়েছেন?
ডা: মদন মণি – বেনারস 2006 সালে ছেড়ে এসেছি, স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – ওহ আচ্ছা.. তাহলে আপনার নিশ্চয় একবার যাওয়া উচিৎ।
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ.. হ্যাঁ.. স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, আমি ফোন করেছি, এই কারণে যে আপনি সিকিমের ভেতরে প্রত্যন্ত পাহাড়ে থেকে বসবাসকারী জনগণকে টেলিকনসালটেশনের দুর্দান্ত পরিষেবা প্রদান করছেন।
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ..
প্রধানমন্ত্রী – আমি মন কি বাতের শ্রোতা বন্ধুদের আপনার অভিজ্ঞতাশোনাতে চাই।
ডা: মদন মণি – আচ্ছা..
প্রধানমন্ত্রী – একটু বলুন আমাকে, কেমন অভিজ্ঞতা ছিল?

ডা: মদন মণি – অভিজ্ঞতা খুব ভালো ছিল প্রধানমন্ত্রী জি। ব্যাপারটা হল, সিকিমে, খুব কাছাকাছিও যে PHC রয়েছে, সেখানে যেতেও লোকজনেদের গাড়িতে চেপে কমপক্ষে এক-দুশো টাকা নিয়ে যেতে হতো। আর ডাক্তার পাওয়া যায়, কি না পাওয়া যায়, সেটাও একটা problem। তাই Tele Consultation-এর মাধ্যমে মানুষ আমাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে পারেন, এমনকি দূর দূরান্তের মানুষও। Health & Wellness Centre-এর যারা CHOs রয়েছেন, তারাও আমাদের, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। আর আমরা, যদি তাদের কোন পুরনো অসুখ থাকে তার reports, তার এখনকার present condition, ইত্যাদি  সবকিছুই তাদের জানিয়ে দি।

প্রধানমন্ত্রী – মানে document transfer করেন।
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ.. হ্যাঁ। Document transferও করি এবং যদি transfer করতে না পারি, তাহলে আমরা তা মানুষদের পড়ে শোনাই।
প্রধানমন্ত্রী – ওখানের Wellness Centre-এর doctor বলে দেন।
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ, Wellness Centre-এর যে CHO থাকেন তিনি, Community Health Officer।
প্রধানমন্ত্রী – আর যারা patient, তারা নিজেদের অসুবিধার বিষয়ে আপনাদের সরাসরি বলেন।
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ, patientও নিজের অসুবিধা আমাদের জানান। তারপর পুরনো records দেখে, আবার যদি নতুন কিছু পাওয়া যায় তা জানানো হয়। ধরুন, যদি কারোর Chest Auscultate করাতে হয়, তাহলে জানা দরকার তার পা ফোলা নেই তো! যদি CHO তা না দেখে থাকেন, তাহলে আমরা সেই ব্যক্তিকে বলি যে সে যেন পরীক্ষা করায় তার ফোলা রয়েছে কি নেই, চোখ দেখাতে বলা হয়, anaemia রয়েছে কিনা, যদি তার কাশি হয়ে থাকে তাহলে Chest-এর  Auscultate করিয়ে জানা দরকার সেখানে sounds রয়েছে কিনা।
প্রধানমন্ত্রী – আপনি Voice Call-এ কথা বলেন না Video Call-এরও ব্যবহার করেন?
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ, Video Call-এরও ব্যবহার করি।
প্রধানমন্ত্রী – তাহলে patient-কে, আপনিও দেখতে পান?
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ, patient-কেও দেখতে পাই।
প্রধানমন্ত্রী – Patient-এর কি রকম feeling হয়?

ডা: মদন মণি – Patient-এর ভালই লাগে কারণ ডাক্তারকে তারা এত কাছে দেখতে পায়। তাদের confusion থাকে যে তাদের ওষুধ বাড়ানো হবে না কমানো হবে, কারণ সিকিমে বেশিরভাগ patient diabetes, Hypertension ইত্যাদিতে ভোগে, একটা diabetes ও hypertension-এর ওষুধ change করানোর জন্য তাঁকে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করতে অনেক দূর যেতে হয়। কিন্তু Tele Consultation-এর মাধ্যমে ওখানেই পরামর্শ পাওয়া যায় আর ওষুধও health & Wellness Centre-এ  Free Drugs initiative-এর দরুন পাওয়া যায়। তাই একই জায়গা থেকেই ওষুধও নিয়ে যেতে পারে সবাই।

প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা মদনমণি জি, আপনি তো জানেন যে patient-দের একটা স্বভাব রয়েছে যে যতক্ষণ না ডাক্তার আসছেন, এবং দেখছেন, ততক্ষণ সে সন্তুষ্ট হয় না, আর ডাক্তারেরও মনে হয় রোগীকে দেখতে হবে, তাহলে এখানে যে পুরো ব্যাপারটাই Telecom-এর Consultation-এর মাধ্যমে হচ্ছে, তখন সেখানে ডাক্তার কি feel করছে, patient-টি বা কি feel হচ্ছে?

ডা: মদন মণি – হ্যাঁ, আমাদেরও মনে হয় যদি patient মনে করেন যে ডাক্তারের দেখা উচিত, তাহলে যা যা দেখা প্রয়োজন, তা আমরা CHO-কে বলে video-তেই দেখাবার কথা বলি। আর কখনো কখনো তো patient-কে video-তেই কাছে এসে তার যা সমস্যা রয়েছে, ধরুন কারুর যদি চামড়ার কোন problem হয়েছে, skin-এর problem হয়েছে, তখন আমরা তার সমস্যা video-তেই দেখিয়ে দি।  তাই তাঁরাও সন্তুষ্টি হন।

প্রধানমন্ত্রী – আর তারপর রোগীকে পরিষেবা দেবার পর তিনি যখন খুশি হন তখন কি রকম অনুভব হয়? রোগী কি সুস্থ হচ্ছেন?

ডা: মদন মণি – হ্যাঁ খুব ভালো লাগে। আমাদেরও ভালো লাগে স্যার। কারন আমি এখন স্বাস্থ্য বিভাগে আছি আর এর সঙ্গে আমি টেলি কনসাল্টেশন ও করি, তাই ফাইলের সঙ্গে সঙ্গে পেশেন্টদের দেখাশোনা করাও আমায় অনেক আনন্দের অনুভূতি দেয়।

প্রধানমন্ত্রী – গড়ে কতজন রোগীর টেলিকনসাল্টেশন কেস আপনার কাছে আসে?
ডা: মদন মণি – এখন অবধি আমি ৫৩৬ জন রোগী দেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী – ওহ অর্থাৎ আপনার এই বিষয়ে অনেকটা দক্ষতা এসে গেছে।
ডা: মদন মণি – হ্যাঁ ভালো লাগে দেখতে।
প্রধানমন্ত্রী – আমি আপনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই টেকনোলজির মাধ্যমে আপনি  সিকিমের দূর দূরান্তের জঙ্গলে, পাহাড়ের বাসিন্দাদের এত বড় পরিষেবা দিচ্ছেন। আর খুশির কথা এটাই যে আমাদের দেশের প্র্রান্তিক ক্ষেত্রেও এই টেকনোলজির এত সুন্দর ব্যবহার হচ্ছে। আমার তরফ থেকে আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন।
ডা: মদন মণি – ধন্যবাদ।

বন্ধুরা ডঃ মদন মনির কথা থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে এই ই-সঞ্জীবনী অ্যাপ কিভাবে ওনার সাহায্য করছে। ডক্টর মদন জি’র পরে আমরা আরো এক মদনজির সঙ্গে কথা বলব। ইনি  হলেন উত্তরপ্রদেশের চন্দৌলি জেলার অধিবাসী মদন মোহন লাল জি। এখন এটাও একটা অদ্ভুত বিষয় যে চন্দৌলিও বেনারসের পাশেই অবস্থিত। আসুন মদনমোহন জি’র কাছ থেকে জানি যে ই-সঞ্জীবনী কে নিয়ে একজন রোগী হিসেবে ওনার অনুভূতি কি রকম?

প্রধানমন্ত্রী – মদন মোহন জি প্রণাম।
মদন মোহন জি – নমস্কার, নমস্কার সাহেব।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার। আচ্ছা আমাকে এটা বলা হয়েছে যে আপনি ডায়াবেটিসের রোগী।
মদন মোহন জি – হ্যাঁ।
প্রধানমন্ত্রী – আর আপনি টেকনোলজির সাহায্যে টেলিকনসালটেশন করে আপনার রোগের সম্বন্ধে সাহায্য নেন।
মদন মোহন জি – হ্যাঁ।
প্রধানমন্ত্রী – একজন পেশেন্ট হয়ে আমি আপনার অনুভূতি শুনতে চাই, যাতে আমি দেশবাসীর কাছে এই কথাটা পৌঁছে দিতে পারি যে আজ টেকনোলজির মাধ্যমে আমাদের গ্রামের মানুষেরাও কিভাবে এর সাহায্য নিতে পারেন। একটু বলুন কিভাবে ব্যবহার করেন?
মদন মোহন জি – আসলে স্যার হসপিটাল অনেক দূরে আর আমার যখন ডায়াবেটিস হলো তখন আমাকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হতো, ডাক্তার দেখাতে হতো। যখন থেকে আপনার দ্বারা এই ব্যবস্থা করা হয়েছে তখন থেকে আমি যাই, আমার পরীক্ষা করা হয়, আমাদের বাইরের ডাক্তারদের সঙ্গে কথাও বলিয়ে দেওয়া হয় আর ওষুধও দিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে আমার ও আমার মতো অনেক মানুষের  লাভ হল।
প্রধানমন্ত্রী – তাহলে প্রতিবার কী একই ডাক্তারবাবু দেখেন; না কী ডাক্তার বদলে যায়?
মদন মোহন জি – যখন সে বুঝতে পারেন না, তখন ডাক্তারবাবুকে দেখায়। তারপর তিনিই কথা বলে অন্য ডাক্তারের সঙ্গে আমার কথা বলিয়ে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী – আর ডাক্তার আপনাকে যে গাইডেন্স (guidance) দেয় তাতে কি আপনার সম্পূর্ণ লাভ হয়?
মদন মোহন জি – হ্যাঁ লাভ তো হয়েই, এতে আমার অনেক সুবিধা হয়। আর গ্রামের লোকজনেরো সুবিধা হয়। সবাই ওখানেই বলেন যে দাদা আমাদের BP আছে বা সুগার আছে, Test করুন বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করুন, ওষুধ দিন। আর আগে তো ৫-৬ কিলোমিটার দূরে যেতে হতো। লম্বা লম্বা লাইন পড়তো। Pathology-তেও লাইন পড়তো, একটা গোটা দিন নষ্ট হয়ে যেতো।
প্রধানমন্ত্রী – মানে আপনার সময়-ও বেঁচে যাচ্ছে!
মদন মোহন জি – তাছাড়া পয়সা'ও খরচ হতো, আর এখানে বিনামূল্যে সব পরিষেবা পাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, যখন আপনি সামনাসামনি ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করেন তখন একটা ভরসা তৈরি হয়। মনে হয় অন্তত ডাক্তারবাবু আছেন, আমার পালস দেখে নিয়েছেন, চোখ পরীক্ষা করেছেন, আমার জিভ চেক করেছেন; মানে একটা অন্যরকম feeling কাজ করে, কিন্তু যখন এই tele consultation এর সাহায্য নিতে হয় তখন কী সেই একই রকম ভরসা তৈরি হয়?
মদন মোহন জি – হ্যাঁ, অবশ্যই ভরসা তৈরি হয়! উনি আমার নাড়ি পরীক্ষা করছেন, স্টেথোস্কোপে শ্বাস পরীক্ষা করছেন- এরকমই একটা অনুভূতি আমার হয়, আর আমার শরীরটাও বেশ ভালো লাগে। এতো সুন্দর একটা ব্যবস্থা আপনার জন্য আমরা পেয়েছি যে তার ফলে আমাদের কষ্ট করে যেখানে যেতে হতো, গাড়ির ভাড়া দিতে হতো, লাইন দিতে হতো, সেখানে সব পরিষেবা আমরা ঘরে বসে বসেই পেয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা মদন মোহন জি, আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন। এই বয়সে এসেও আপনি technology সম্পর্কে জেনেছেন, এর ব্যবহার-ও করছেন। অন্যদেরও বলুন যাতে তাদের সময় বেঁচে যায়, খরচও বেঁচে যায়, আর তাঁদের যে উপায় বাতলে দেওয়া হয় সেইমতো ওষুধ পেতেও কোন অসুবিধা হয় না।
মদন মোহন জি – হ্যাঁ, সেই আর কি!
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা মদন মোহন জি।
মদন মোহন জি – সাহেব, আপনি বেনারসকে কাশি বিশ্বনাথ স্টেশন করেছেন। আপনার জন্যে Devlopment হয়েছে । তাই আপনাকে আমাদের তরফ থেকে অভিনন্দন।
প্রধানমন্ত্রী – আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ, তবে আমি নয়, বেনারসের মানুষই বেনারসকে গড়ে তুলেছে‌ন, আমি তো শুধুই মা গঙ্গার সেবার জন্যে এখানে, মা গঙ্গা'ই আমাকে ডেকেছেন, ব্যাস এটুকুই। আচ্ছা ঠিক আছে, আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। প্রনাম।
মদন মোহন জি – নমস্কার স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – হ্যাঁ নমস্কার!

বন্ধুগণ, দেশের সাধারণ মানুষের জন্য, মধ্যবিত্তদের জন্য, পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের জন্য  E- Sanjivani., নামে জীবন রক্ষার অ্যাপ তৈরি হয়েছে। এটি হলো ভারতবর্ষের ডিজিটাল বিপ্লবের শক্তি। আর তার প্রভাব আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখতে পাচ্ছি। আপনারা তো জানেনই ভারতের ইউপিআই এর ক্ষমতা। বিশ্বের বহু দেশ এর প্রতি আকৃষ্ট। কিছুদিন পূর্বেই ভারত আর সিঙ্গাপুরের মধ্যে upi pay now link লঞ্চ করা হয়েছে। এখন ভারত আর সিঙ্গাপুর বাসীরা নিজেদের মোবাইল ফোন থেকে ঠিক সেই ভাবেই পয়সার লেনদেন করছেন যেভাবে তারা নিজেদের দেশে করে থাকেন। আমি খুবই আনন্দিত যে জনগণ এর সুযোগ নেওয়া শুরু করে দিয়েছে। ভারতের ই সঞ্জীবনী app  বলুন বা UPI, এগুলি Ease of Living কে আরো উন্নত করতে সাহায্য করেছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী। যখন কোন দেশে, বিলুপ্তপ্রায় কোন বিশেষ পাখির প্রজাতিকে, বা কোন জীবকে বাঁচানো হয়, তখন সারা বিশ্বে সেটার চর্চা হয়। আমাদের দেশে এমন অনেক মহান পরম্পরা আছে যেগুলি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, জনমানস থেকে মুছে গিয়েছিল, কিন্তু এখন জনগণের অংশগ্রহণের ফলে ফের পুনর্জীবিত হয়ে উঠেছে আর তার চর্চার জন্য  মন কি বাতের মঞ্চের চেয়ে ভালো কি কিছু হতে পারে?

এখন আমি আপনাদের যা বলতে চলেছি, সেটা জেনে আপনাদের সত্যিই খুব ভালো লাগবে এবং ঐতিহ্যের প্রতি গর্ববোধ করবেন। আমেরিকার নিবাসী শ্রীমান কাঞ্চন ব্যানার্জি ঐতিহ্যের সংরক্ষণের কাজের যুক্ত একটি অভিযানের দিকে আমার নজর আকৃষ্ট করেছেন। আমি ওনাকে অভিনন্দন জানাই। বন্ধুগণ, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায় বাঁশবেড়িয়াতে এই মাসে ত্রিবেণী কুম্ভ মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ৮ লাখেরও বেশি ভক্তের সমাগম ঘটেছে। কিন্তু আপনারা কি জানেন এই মেলা  কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? এই জন্য গুরুত্ব পূর্ণ কারণ বিশেষ এই জন্য কারণ এই মেলাটিকে ৭০০ বছরের পর আবার পুনর্জীবিত করে তোলা হয়েছে। এমনিতেই এই পরম্পরা হাজার বছরেরও বেশি পুরনো, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ৭০০ বছর আগে বাংলার ত্রিবেণী তে এই মহোৎসবটি বন্ধ গিয়েছিল। স্বাধীনতার পর এটিকে আবার শুরু করা উচিত ছিল কিন্তু সেটাও হয়ে ওঠেনি। দু'বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতির উদ্যোগে এই মহোৎসবটি আবার আরম্ভ করা হয়েছে। এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সব্বাইকে সাধুবাদ  জানাই। আপনারা কেবলমাত্র একটি প্রথাকে জীবিত করে তুলছেন তা না; বরং ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষাও করছেন।

বন্ধুগণ , পশ্চিমবঙ্গের ত্রিবেণীকে যুগ যুগ ধরে একটি  পবিত্র স্থান  বলে মনে করা হয়। এটার উল্লেখ বিভিন্ন মঙ্গল কাব্যে, বৈষ্ণব সাহিত্যে, শাক্ত সাহিত্যে ও অন্যান্য বাংলা সাহিত্যের ধারায় লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল থেকে এইটা জানা যায় যে এই ঐতিহাসিক স্থানটি কোন এক সময় সংস্কৃত, শিক্ষা, ও ভারতীয় সংস্কৃতির কেন্দ্র ছিল। অনেক সাধুরাই এই স্থানটিকে মাঘ সংক্রান্তির কুম্ভ স্নানের জন্য পবিত্র মনে করেন। ত্রিবেণীতে আপনারা অনেক গঙ্গার ঘাট, শিব মন্দির ও টেরাকোটার কারুকার্য খচিত প্রাচীন ঘর-বাড়ি ইত্যাদি দেখতে পাবেন। ত্রিবেনীর ঐতিহ্যকে পুনঃস্থাপন করার জন্য ও কুম্ভ মেলার গৌরবকে পুনর্জীবিত করার জন্য এখানে গতবছর কুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। সাতশো বছর পর এই  তিন দিন ব্যাপী কুম্ভ মহাস্নান ও মেলা এই ক্ষেত্রে। এক নতুন প্রাণশক্তির সঞ্চার ঘটিয়েছে। তিন দিন ধরে প্রত্যেক দিনের গঙ্গা আরতি, রুদ্রাভিষেক ও যজ্ঞে বহু মানুষ দলে দলে যোগ দিয়েছেন। এইবারের মহোৎসবে বিভিন্ন আশ্রম মঠ ও আখড়া থেকেও অনেকেই যোগদান করেছেন। বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ধারা যেমন কীর্তন, বাউল , গৌড়ীয়ন নৃত্য, শ্রীখোল, পটের গান, ছৌ নাচ, সান্ধ্য অনুষ্ঠানের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। আমাদের দেশের তরুণদের তাদের সোনালী অতীতের সঙ্গে যুক্ত করার এটি একটি  অত্যন্ত প্রশংসনীয় প্রয়াস। ভারতবর্ষে এমন বহু প্রথা আছে যেগুলিকে রিভাইভ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমি আশা করি যে এই সমস্ত বিষয়ের উপর আলোচনা এইদিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, স্বচ্ছ ভারত অভিযান আমাদের দেশে জন-অংশীদারিত্বের অর্থই বদলে দিয়েছে। দেশের যে কোন স্থানে যদি স্বচ্ছতা সম্পর্কিত কোন কর্মসূচি চলে, তাহলে মানুষ তার খবর আমাকে অতি অবশ্যই পৌঁছে দেন। এভাবেই আমার মনোযোগ আকৃষ্ট হয়েছে, হরিয়ানার যুবাদের এক স্বচ্ছতা অভিযানের প্রতি। হরিয়ানাতে একটি গ্রাম আছে - দুলহেরী। সেখানকার যুবারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ভিওয়ানী শহরকে স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে এক দৃষ্টান্ত রূপে গড়ে তুলতে হবে। তাঁরা "যুবা স্বচ্ছতা এবং জনসেবা সমিতি" নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছেন। এই সংগঠনের সদস্যরা ভোর চারটের সময় ভিওয়ানী পৌঁছে যান। শহরের আলাদা আলাদা জায়গায় তারা একযোগে সাফাই অভিযান চালান। এঁরা এখনো পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু টন জঞ্জাল পরিষ্কার করেছেন।

বন্ধুরা, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় "ওয়েস্ট টু ওয়েলথ" ও বটে। ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া জেলার এক বোন কমলা মোহরানা একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী চালান। সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা দুধের প্যাকেট ও অন্যান্য প্লাস্টিক প্যাকিং থেকে ঝুড়ি, মোবাইল স্ট্যান্ড এর মত অনেক দ্রব্য প্রস্তুত করেন। এটা তাদের জন্য স্বচ্ছতার পাশাপাশি উপার্জনেরও একটা প্রশস্ত উপায় হয়ে উঠছে। আমরা যদি মনস্থির করি তাহলে স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারি। অন্ততপক্ষে প্লাস্টিক ব্যাগের বদলে কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করার সংকল্প তো আমাদের সবারই করা উচিত। আপনি দেখবেন আপনার এই সংকল্প আপনাকে কতটা তৃপ্তি দেবে, এবং পাশাপাশি অন্যদেরও অবশ্যই অনুপ্রাণিত করবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ আমরা ও আপনারা আরো একবার অনেক প্রেরণাদায়ক বিষয় নিয়ে কথা বললাম। পরিবারের সঙ্গে বসে সেগুলি আপনারা শুনলেন এবং সারাদিন তার গুঞ্জরণ আপনাদের মধ্যে থাকবে। দেশের কর্মক্ষমতা বিষয়ে আমরা যত আলোচনা করব ততই উদ্বুদ্ধ হব। সেই উদ্দীপনা-প্রবাহের সঙ্গে চলতে চলতে আজ আমরা "মন কি বাত" এর ৯৮ তম পর্বের গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। কিছুদিন পরই হোলির উৎসব। আপনাদের সবাইকে হোলির শুভকামনা জানাই। আমাদের উৎসবগুলি "ভোকাল ফর লোকাল" এই সংকল্পের সঙ্গেই আমাদের উদযাপন করতে হবে। আপনাদের অনুভূতির কথাও আমার সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে বিদায় দিন। পরের বার আরো নতুন নতুন বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা হবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।



(Release ID: 1902714) Visitor Counter : 435