প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

দেশের ৭৫টি জেলায় ৭৫টি ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট জাতির উদ্দেশে উৎসর্গকালে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 16 OCT 2022 3:26PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬ অক্টোবর ২০২২

 

অর্থমন্ত্রী নির্মলাজি, মন্ত্রিসভার অন্যান্য সহকর্মীবৃন্দ, শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর, বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিব, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মন্ত্রী, অর্থনীতিবিদ, আর্থিক বিশেষজ্ঞ, ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ, অন্যান্য বিশিষ্টজন, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!

৭৫টি ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিটের সূচনা উপলক্ষে আমি সকল দেশবাসীকে জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র সম্ভাবনাময় দিকটি আজ আরও একবার উন্মোচিত হল সারা দেশের কাছে। ভারতের ৭৫টি জেলায় আজ গড়ে উঠতে চলেছে ৭৫টি ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট। এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ব্যাঙ্ক, শীর্ষ ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্যদেরও আমি অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,

সাধারণ ভারতবাসীর জীবনযাত্রাকে সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে দেশে যে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে, ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট স্থাপন হল সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোর আরও একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ। এটি হল এমনই এক ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা যেখানে ন্যূনতম ডিজিটাল পরিকাঠামোর সহায়তায় সর্বোচ্চ পরিষেবার সুযোগ পাওয়া সম্ভব। এজন্য কোনো কাগজপত্রের দরকার নেই, প্রয়োজন নেই কোনরকম অযথা দৌড়োদৌড়ির। বরং, আগের থেকে আরও অনেক সহজভাবে পরিষেবার সুযোগ পাওয়া সম্ভব এর মাধ্যমে। ফলে, কাজকর্মের ক্ষেত্রে শুধু যে সুবিধা হবে তাই নয়, ডিজিটাল ব্যাঙ্ক ব্যবস্থাও এর মাধ্যমে আরও সুরক্ষিত থাকবে। কোনো গ্রাম বা ছোট শহরে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিটের পরিষেবা গ্রহণের সময় যে কোনো মানুষই টাকা পাঠানো থেকে শুরু করে ঋণ গ্রহণ পর্যন্ত সমস্ত ধরনের কাজই করতে পারবেন খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে। এক সময় দরিদ্র গ্রামবাসীদের ব্যাঙ্ক পরিষেবার সুযোগ পাওয়ার জন্য নানা ঝঞ্ঝাট পোয়াতে হত। কিন্তু আজ তাঁরা এই পরিবর্তনের শরিক হতে পেরে নিঃসন্দেহে খুশি হবেন।

বন্ধুগণ,

আমাদের সরকারের লক্ষ্য হল সাধারণ ভারতবাসীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাঁদের আরও শক্তিশালী করে তোলা। সমাজের একেবারে নিচের স্তরে যে সমস্ত মানুষ বাস করেন, তাঁদের কথা চিন্তা করে আমরা আমাদের নীতি স্থির করেছি। সাধারণ মানুষের কাছে সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে সঙ্গে প্রগতির ফসল তুলে দেওয়াই হল সরকারের লক্ষ্য। ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সংস্কার, স্বচ্ছতার মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে আরও বলিষ্ঠ করে তোলা এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি – এই বিষয়গুলির দিকে দৃষ্টি রেখে আমরা কাজ করে চলেছি। এর আগে বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন সেমিনার ও আলোচনাসভায় বিদ্বজ্জনেরা ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা, অর্থনীতি এবং দরিদ্র মানুষদের সম্পর্কে অনেক কথাই আলোচনা করেছেন। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির কথাও শোনা যেত তাঁদের মুখে। কিন্তু, এ সমস্ত কিছুই ছিল তখন শুধুমাত্র চিন্তাভাবনার স্তরেই সীমাবদ্ধ। সেই সময় একটা ধারণা ছিল যে দরিদ্রদের আগে গিয়ে পৌঁছতে হবে ব্যাঙ্কের দরজায় এবং তারপরেই তাঁরা যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সঙ্গে। কিন্তু এই ধ্যান-ধারণাকে আমরা এখন বদলে দিয়েছি। আমরা স্থির করেছি যে ব্যাঙ্কই বরং তার সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পৌঁছে যাবে দরিদ্র মানুষের দ্বারপ্রান্তে। এই লক্ষ্যে প্রথমেই যে কাজটি আমরা করেছি তা হল দরিদ্র মানুষের সঙ্গে ব্যাঙ্কের দূরত্ব বা ব্যবধান কমিয়ে আনা। এই দূরত্ব শুধু আক্ষরিক অর্থেই নয়, মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও কমিয়ে আনা দরকার বলে আমরা মনে করি। দূরদুরান্তের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে সাধারণ মানুষের দুয়ারে ব্যাঙ্ক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। বর্তমানে দেশের ৯৯ শতাংশ গ্রামেই একটি বা তারও বেশি ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে কিংবা ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’-এর অস্তিত্ব রয়েছে। এমনকি, পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে একজন ব্যাঙ্ক প্রতিনিধির সন্ধান খুঁজে বের করাও এখন আর অসম্ভব কোনো কাজ নয়। এর বাইরে ইন্ডিয়া পোস্ট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ডাকঘরগুলির বিশাল নেটওয়ার্ককে যুক্ত করা হয়েছে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার মূলস্রোতের সঙ্গে। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রতি ১ লক্ষ বয়স্ক জনসাধারণের জন্য যতগুলি ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে, ততগুলি শাখা বোধহয় চিন, জার্মানি এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও নেই।

বন্ধুগণ,

সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা ২৪ ঘন্টাই কাজ করে চলেছি। সমগ্র ব্যবস্থায় পরিবর্তন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা সঙ্কল্পবদ্ধ। দরিদ্রতম মানুষটির কাছেও পৌঁছে যেতে আমরা কৃতসঙ্কল্প। জন ধন অভিযান যখন আমরা শুরু করেছিলাম, কোনো কোনো মহল থেকে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল যে এই ধরনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গরীবরা আদৌ কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন কিনা। এমনকি অনেক বিশেষজ্ঞও এ বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। কিন্তু, একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ক্ষমতা যে কতখানি তা আজ প্রমাণিত সকল দেশবাসীর কাছেই। দেশের সাধারণ নাগরিকরা এখন এই ধরনের অভিজ্ঞতার শরিক। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকার ফলে খুব কম প্রিমিয়ামে বিমার সুযোগ এখন আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকার সুবাদে দরিদ্র মানুষ এখন কোনরকম গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণের জন্য আবেদন জানাতে পারছেন। ভর্তুকির অর্থ এখন সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে দরিদ্র সুফলভোগীদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আর এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকার জন্যই নিজেদের ঘর-বাড়ি তৈরি, শৌচাগার নির্মাণ এবং রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি পাওয়ার মতো বিষয়গুলি এখন আর তাঁদের কাছে অধরা নেই। দেশের কৃষকরাও বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির সুযোগ গ্রহণ করতে পারছেন তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। করোনা অতিমারীকালে দরিদ্র মা-বোনেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা হস্তান্তরের ব্যবস্থাও অনেক সহজ হয়ে উঠেছিল। ভারতের ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং পরিকাঠামোর প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল কর্তৃপক্ষও। এ সমস্ত কিছুর জন্যই কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন দেশের দরিদ্র সাধারণ মানুষ এবং কৃষক ও শ্রমিকরা। কারণ, নতুন নতুন প্রযুক্তির সুযোগ গ্রহণ করতে তাঁরা নির্ভয়ে এগিয়ে এসেছেন। তাঁরা উপলব্ধি করেছেন যে এই ধরনের প্রযুক্তি এখন তাঁদের জীবনের এক বিশেষ অঙ্গ হয়ে উঠেছে।

বন্ধুগণ,

ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে আর্থিক সুযোগ-সুবিধার মেলবন্ধন সম্ভাবনার এক নতুন জগৎ আমাদের সামনে মেলে ধরেছে। ইউপিআই হল এর একটি সেরা দৃষ্টান্ত এবং ভারত এজন্য গর্বিত। ইউপিআই হল বিশ্বের এক অনন্য প্রযুক্তি। ভারতে এখন গ্রাম থেকে শহর, শোরুম থেকে সবজির দোকান – সর্বত্রই আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ইউপিআই চালু হয়েছে। এক সময় ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ডকে ধনী ও অভিজাত শ্রেণীর বৈভবের প্রতীক বলে মনে করা হত। কিন্তু এই ধারণা এখন পালটে গেছে ‘রুপে কার্ড’ চালু করার ফলে। দেশের সাধারণ মানুষের হাতে হাতে এখন ঘুরছে ‘রুপে কার্ড’। দেশের ৭০ কোটিরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে এটি। ভারতের নিজস্ব এই কার্ড এখন গ্রাহ্য হচ্ছে বিশ্বের নানা দেশে। প্রযুক্তি ও অর্থনীতির এই মেলবন্ধন সাধারণ ও মধ্যবিত্ত মানুষের ক্ষমতায়ন ঘটিয়েছে। ফলে, অর্থনৈতিক দিক থেকে মানুষে মানুষে বিভেদের গণ্ডী এখন ক্রমশই ছোট হয়ে আসছে।

বন্ধুগণ,

জন ধন, আধার ও মোবাইল – এই তিনটির মিলিত শক্তি দুর্নীতির মূলোৎপাটন ঘটাতে চলেছে। এক সময় দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ তাঁদের কাছে পৌঁছনোর আগেই অনেক ক্ষেত্রেই মাঝপথে অদৃশ্য হয়ে যেত। কিন্তু, প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তরের মাধ্যমে এই অর্থ এখন সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে যোগ্য ও নির্দিষ্ট ব্যক্তির নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত ২৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি অর্থ জমা পড়েছে প্রত্যক্ষ সুফলভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে।

ভাই ও বোনেরা,

সমগ্র বিশ্বই এখন ভারতের ডিবিটি ও ডিজিটাল শক্তি বা ক্ষমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ডিজিটাল ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ভারত এখন সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আন্দোলনের পুরোভাগে রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বিশ্বের সফল প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা ভারতের এই প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ভারতের এই সাফল্যে তাঁরা আবার বিস্মিতও।

ভাই ও বোনেরা,

ডিজিটাল ও অর্থনৈতিক – এই দুইয়ের মিলিত শক্তির সাহায্যে ভারতকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি অনেক দূর পর্যন্ত। বর্তমানে ভারতের নীতি ও অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার মূলে রয়েছে ‘ফিনটেক’ – এই প্রযুক্তিটি। ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিটগুলি ফিনটেক-এর শক্তি ও ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। জন ধন অ্যাকাউন্ট দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির পথ প্রশস্ত করেছে। আর এইভাবেই দেশে আর্থিক বিপ্লব আসতে চলেছে ফিনটেক-এর হাত ধরে।

বন্ধুগণ,

ব্লক চেন প্রযুক্তির সাহায্যে ডিজিটাল কারেন্সি চালু করার কথা সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার বিভিন্ন দিক যুক্ত রয়েছে এর সঙ্গে। নগদ টাকা ছাপানোর জন্য যে অর্থ ব্যয় করা হয়, ডিজিটাল কারেন্সি চালু করার মাধ্যমে তার সাশ্রয় সম্ভব কারণ, ডিজিটাল অর্থনীতিতে কালি বা কাগজের প্রয়োজন পড়ে না। এক আত্মনির্ভর ভারতে এ হল এক বড় ধরনের সাফল্য। তাছাড়া, কাগজের ব্যবহার কমে আসার ফলে পরিবেশেরও উন্নতি ঘটবে বলে আমরা মনে করি।

বন্ধুগণ,

ব্যাঙ্ক বর্তমানে শুধুমাত্র আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম মাত্র নয়, একইসঙ্গে তা সুপ্রশাসন ও উন্নততর পরিষেবার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এর মধ্য দিয়ে বেসরকারি ক্ষেত্র ও ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসার ও উন্নয়নের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। ডিজিটাল ইন্ডিয়া অনেক কিছু অসম্ভবকেই এখন সম্ভব করে তুলেছে যা আজ থেকে মাত্র কয়েক বছর আগেও সকলের কাছে ছিল অকল্পনীয়।

বন্ধুগণ,

ডিজিটাল অর্থনীতি এখন দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন শক্তি সঞ্চার করেছে। এর ফলে লাভবান হচ্ছে স্টার্ট-আপ সংস্থা এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ও ‘স্বনির্ভর ভারত’ কর্মসূচি। নতুন নতুন বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অণু শিল্প সংস্থাগুলির জন্য। ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট চালু হওয়ার ফলে আরও অনেক নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটবে। নতুন ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্বাগত জানাব নতুন নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধাগুলিকেও।

বন্ধুগণ,

যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার শক্তির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। ভারতের অর্থনীতি এখন দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে। ২০১৪ সালের আগে দেশে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল ফোন ব্যাঙ্কিং। আর আজ আট বছর বাদে ফোন ব্যাঙ্কিং-এর যুগ পেরিয়ে এসে আমরা পা রেখেছি ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং-এর যুগে। ফোন ব্যাঙ্কিং-এর নেতিবাচক দিকগুলির আমরা সাক্ষী কারণ এই ব্যবস্থা ব্যাঙ্ককে অনেকটাই ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছিল। ফলে, দেশের অর্থনীতিও বিপদ মুক্ত ছিল না। অনেক বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে সেই সময়। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় সবকিছু হয়ে উঠেছে সহজ ও স্বচ্ছ। দুর্নীতি দমন আইনের সংস্কারের মাধ্যমে তা আরও কার্যকর করে তুলেছি আমরা। ব্যাঙ্ক ব্যবস্থায় আমরা নিয়ে এসেছি বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিকে। ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে সবক’টি ব্যাঙ্কেরই এখন লক্ষ্য হওয়া উচিৎ আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা।

ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যাঁরা যুক্ত রয়েছেন তাঁদের কাছে স্বাধীনতার এই অমৃতকালে আমি আর্জি জানাব যে আপনারা এমন একটা কিছু করে দেখান যা হয়ে উঠতে পারে দেশের ব্যাঙ্ক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। ডিজিটাল লেনদেনকে ১০০ শতাংশ সম্ভব করে তুলতে পারেন আপনারা মিলিতভাবে।

ভাই ও বোনেরা,

ডিজিটাল লেনদেনকে ১০০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন করে কোনো নিয়ম-নীতি রচনার প্রয়োজন নেই কারণ, মিলিত প্রচেষ্টাতেই তা সম্ভব হয়ে উঠতে পারে।

বন্ধুগণ,

ব্যাঙ্কের প্রত্যেকটি শাখারই উচিৎ অন্তত ১০০ জন ব্যবসায়ীকে ডিজিটাল লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত করা। আমাদের জন ধন কর্মসূচি সফল হয়ে উঠেছে ব্যাঙ্কের সাধারণ কর্মী ও আধিকারিকদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই। তাঁরা পৌঁছে গেছেন দরিদ্র মানুষের কুটিরে। এমনকি তাঁরা সপ্তাহান্তেও কাজ করে গেছেন। কারণ তাঁদের লক্ষ্য ছিল একটা – জন ধন কর্মসূচিকে সফল করে তোলা। এইভাবে এই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে যদি তাঁরা ব্যাঙ্কের শাখা প্রতি অন্তত ১০০ জন ব্যবসায়ীকে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় শিক্ষিত করে তুলতে পারেন, তাহলে এক বড় ধরনের বিপ্লবের রূপকার হবেন আপনারাই।

পরিশেষে, আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই ভারতের অর্থমন্ত্রী তথা অর্থ মন্ত্রককে, শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর তথা কর্মী ও আধিকারিকদের এবং সমস্ত সাধারণ মানুষকে। ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিটের সূচনার মাধ্যমে এক মহামূল্য উপহার নিয়ে আজ আপনারা উপস্থিত দেশবাসীর কাছে। দীপাবলির আগে এবং স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে ৭৫টি ডিজিটাল ইউনিটের সূচনা হল এক অভিনব সমাপতন।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা, অনেক অনেক ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে


PG/SKD/DM



(Release ID: 1869400) Visitor Counter : 140