প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী ‘বাণিজ্য ভবন’এর উদ্বোধন করলেন এবং নির্যাত পোর্টালের উদ্বোধন করলেন
“দেশ নাগরিক-কেন্দ্রিক প্রশাসনের লক্ষ্যে এগোচ্ছে” “ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর নীতি, সিদ্ধান্ত, সংকল্প এবং তার রূপায়ন স্বাধীন ভারতের লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল” “সরকারের নাগাল পাওয়া এবং সরকারি সুবিধা সহজে পাওয়া নিশ্চিত করা প্রধান অগ্রাধিকার” “কর দাতাদের তখনই সম্মান করা হয় যখন প্রকল্প এবং কর্মসূচি নির্দিষ্ট সময়ে সম্পূর্ণ হয়” “বাণিজ্য ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন থেকে উদ্বোধন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দেশে রূপান্তরকারী অগ্রগতি ঘটেছে” “উন্নয়নশীল থেকে উন্নত মর্যাদা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশের রূপান্তরে রপ্তানী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়”
Posted On:
23 JUN 2022 12:31PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ২৩ জুন, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিল্লিতে ‘বাণিজ্য ভবন’এর উদ্বোধন করলেন এবং নির্যাত পোর্টালের উদ্বোধন করলেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী পীযুষ গোয়েল, শ্রী সোম প্রকাশ এবং শ্রীমতী অনুপ্রিয়া প্যাটেল।
এই উপলক্ষ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ নতুন ভারতে নাগরিক-কেন্দ্রিক প্রশাসনের যাত্রাপথে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যে পথে গত ৮ বছর ধরে দেশ চলছে। তিনি বলেন, দেশ একটি নতুন এবং আধুনিক বাণিজ্যিক ভবনের পাশাপাশি একটি রপ্তানী পোর্টাল, একটি প্রাতিষ্ঠানিক এবং অন্যটি ডিজিটাল পরিকাঠামো উপহার পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের প্রথম শিল্পমন্ত্রী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর প্রয়াণ বার্ষিকীও। তিনি বলেন, তাঁর নীতি, সিদ্ধান্ত, সংকল্প এবং তাদের রূপায়ণ স্বাধীন ভারত গড়ার লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আজ দেশ তাঁর উদ্দেশ্যে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।
মন্ত্রকের নতুন পরিকাঠামোর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন সহজে বাণিজ্য করার এবং তার মাধ্যমে ‘সহজে বসবাস করারও’ সংকল্প পুনরায় গ্রহণ করার সময় এসেছে। তিনি বলেন, সহজে সুযোগ গ্রহণের উপায় এই দুটির মধ্যে সংযোগ সৃষ্টিকারী। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকা উচিত নয় এবং সহজে সরকারের নাগাল যাতে পাওয়া যায় সুযোগ দেওয়াই সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, সরকারের নীতিতে এই দর্শন স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত।
সাম্প্রতিক অতীতের অনেকগুলি উদাহরণের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, নতুন ভারতের নতুন কর্মসংস্কৃতিতে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করার তারিখ সাধারণভাবে প্রকল্পেরই অঙ্গ এবং তা কঠোরভাবে মেনে চলা হয়। তিনি বলেন, যখন সরকারের কোনো প্রকল্প বছরের পর বছর দীর্ঘায়িত হয়না এবং সময়ে কাজ সম্পূর্ণ হয় তখনই সরকারের কর্মসূচিগুলি তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে এবং তখনই দেশের করদাতারা সম্মানিত হন। এখন পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান নামে আমাদের আধুনিক ব্যবস্থা আছে। তিনি বলেন, এই বাণিজ্য ভবন দেশের ‘গতিশক্তি’কে আরও গতি দেবে।
প্রধানমন্ত্রী নতুন বাণিজ্য ভবনকে এই সময়ে বাণিজ্য ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় তিনি জোর দিয়েছিলেন উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার ওপর এবং আন্তর্জাতিক উদ্ভাবন সূচকের উন্নতির ওপর। বর্তমানে ভারত আন্তর্জাতিক উদ্ভাবন সূচকে ৪৬তম স্থানে এবং ক্রমাগত উন্নতি করে চলেছে। তিনি সেইসময় সহজে বাণিজ্য করার উন্নতির কথাও বলেছিলেন, আজ ৩২০০০এর বেশি অপ্রয়োজনীয় বিধি অপসারণ করা হয়েছে। একইরকমভাবে এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় জিএসটি ছিল নতুন, আজ প্রতিমাসে ১ লক্ষ কোটি জিএসটি আদায় খুব সাধারণ ব্যাপার। সরকারি ই-বাজার ক্ষেত্রে সেইসময় ৯০০০ কোটি টাকার বরাত নিয়ে আলোচনা হত, আজ ৪৫ লক্ষের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোগপতি ঐ পোর্টালে নাম তুলেছেন এবং ২.২৫ কোটির বেশি মূল্যের বরাত দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেইসময় ১২০টি মোবাইল ইউনিটের কথা বলেন, যা ২০১৪য় ছিল মাত্র দুটি, সেখানে আজ এই সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। চার বছর আগের ৫০০ থেকে বর্তমানে ভারতে ২৩০০ নিবন্ধীকৃত ফিন-টেক স্টার্টআপ আছে। বাণিজ্য ভবন ইন্ডিয়ার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময়ে বছরে ৮০০০ স্টার্টআপকে স্বীকৃতি দেওয়ায় চালু ছিল। সেই সংখ্যা এখন ১৫০০০-এর বেশি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর সারা বিশ্বে নজিরবিহীন বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও ভারতের রপ্তানী হয়েছে ৬৭০ বিলিয়ন ডলার বা ৫০ লক্ষ কোটি টাকা। গত বছর দেশ সিদ্ধান্ত নেয় সমস্যা সত্ত্বেও পণ্য ও রপ্তানীর মূল্য ৪০০ বিলিয়ন ডলার বা ৩০ লক্ষ কোটি টাকার সীমা পেরোতে হবে। আমরা তা পেরিয়েছি এবং ৪১৮ বিলিয়ন ডলার বা ৩১ লক্ষ কোটি টাকার রপ্তানীর নতুন রেকর্ড করেছি। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরের এই সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে আমরা এখন আমাদের রপ্তানীর লক্ষ্য বাড়িয়েছি এবং সেই লক্ষ্য পূরণে আমাদের প্রয়াস দ্বিগুণ করেছি। এই নতুন লক্ষ্য পূরণ করতে প্রত্যেকের সমবেত প্রয়াস অত্যন্ত জরুরি।’ তিনি আরও বলেন যে, শুধু স্বল্পমেয়াদী নয় দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, নির্যাত--ন্যাশনাল ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট ফর ইয়ারলি অ্যানালিসিস অফ ট্রেড পোর্টালটি সকলকে প্রকৃত সময়ে তথ্য জানিয়ে অচলায়তন দূর করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই পোর্টাল থেকে সারা বিশ্বের ২০০রও বেশি দেশে রপ্তানী হয় এমন ৩০টির বেশি পণ্য সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। আগামীদিনে প্রতিটি জেলার রপ্তানী সংক্রান্ত তথ্যও এখানে পাওয়া যাবে। এটি জেলাগুলিকেও রপ্তানীর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াসকে জোরদার করবে।’
প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে দেশের রূপান্তরে রপ্তানী বৃদ্ধির ভূমিকায় গুরুত্ব দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, গত ৮ বছরে ভারত নিয়মিতভাবে রপ্তানী বৃদ্ধি করছে এবং রপ্তানীর লক্ষ্য পূরণ করছে। ভালো নীতি থেকে রপ্তানী বৃদ্ধি, সহজ প্রক্রিয়া, প্রক্রিয়ার সরলীকরণ এবং পণ্যের জন্য নতুন বাজার প্রভূত সাহায্য করেছে। তিনি বলেন যে, বর্তমানে প্রত্যেকটি মন্ত্রক, সরকারের প্রত্যেকটি দপ্তর ‘সার্বিক সরকার’ পদক্ষেপের মাধ্যমে রপ্তানী বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সে এমএসএমই মন্ত্রকই হোক অথবা বিদেশ, কৃষি বা বাণিজ্য মন্ত্রকই হোক সকলেই অভিন্ন লক্ষ্যে একইরকম প্রয়াস চালাচ্ছে। তিনি নির্দিষ্ট করে বলেন, নতুন নতুন ক্ষেত্র থেকে রপ্তানী বাড়ছে। এমনকি অনেক প্রত্যাশী জেলা থেকেও রপ্তানী বেড়েছে বহুগুণ। তুলা এবং তন্তুজ পণ্যের রপ্তানী বৃদ্ধি ৫৫ শতাংশ বেড়েছে, যার থেকে বোঝা যায় তৃণমূল স্তরে কিভাবে কাজ হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভোকাল ফর লোকাল অভিযান, ‘এক জেলা এক পণ্য’ কর্মসূচির মাধ্যমে স্থানীয় পণ্যের ওপর সরকার বিশেষ জোর দেওয়ায় রপ্তানী বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। এখন আমাদের অনেক পণ্যই প্রথম রপ্তানী হচ্ছে বিশ্বের নতুন নতুন দেশে। সীতাভোগ মিষ্টান্ন রপ্তানী হচ্ছে বাহরিনে, নাগাল্যান্ডের তাজা কিং লঙ্কা পাঠানো হচ্ছে লন্ডনে, অসমের তাজা বার্মিজ আঙুর পাঠানো হচ্ছে দুবাইতে, ছত্তিশগড়ের আদিবাসীদের মহুয়াজাত পণ্য যাচ্ছে ফ্রান্সে এবং কার্গিলের খুমানি যাচ্ছে দুবাইতে, এইসব উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লোকাল দ্রুত গ্লোবাল হয়ে উঠছে।’ সম্প্রতি যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কৃষকদের, বয়ন শিল্পীদের এবং আমাদের চিরাচরিত পণ্যকে রপ্তানী পরিমন্ডলের সঙ্গে সংযুক্ত করতে আমরা সাহায্য করছি এবং জিআই তকমা লাগানোর ওপর জোর দিচ্ছি।’ তিনি গত বছরে আরব আমিরশাহী এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির উল্লেখ করেন এবং জানান যে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। অত্যন্ত সমস্যা সঙ্কুল পরিবেশকে ভারতের সুযোগে পরিণত করতে বিদেশে ভারতীয় কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির কাজের প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বলেন, দেশের অগ্রগতির জন্য ব্যবসার স্বার্থে নতুন বাজার চিহ্নিত করা এবং প্রয়োজন মাফিক পণ্য প্রস্তুত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সবশেষে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকটি দপ্তরকে সম্প্রতি চালু হওয়া পোর্টাল এবং প্ল্যাটফর্মগুলির নিয়মিত পর্যালোচনা করতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা এই ব্যবস্থা তৈরি করেছি তাতে কতটা সাফল্য পাওয়া গেছে এবং সমস্যা আছে কি না সেগুলি মেটানোর প্রয়াস নিতে হবে।’
PG/AP/NS
(Release ID: 1836552)
|