প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের নওসারিতে ‘গুজরাট গৌরব অভিযান’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 10 JUN 2022 3:11PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১০ জুন, ২০২২

 

ভারতমাতা কী জয়! ভারতমাতা কী জয়! ভারতমাতা কী জয়! গুজরাটের জনপ্রিয় ও প্রাণশক্তিতে ভরপুর মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় শ্রী ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেলজি, সংসদে আমার বরিষ্ঠ সহযোগী এবং নওসারির সাংসদ আর গত সাধারণ নির্বাচনে আপনারা যাঁকে ভারতে সবচাইতে বেশি ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন, আর এর মাধ্যমে সারা দেশে নওসারির নাম উজ্জ্বল করেছেন, আপনাদের তেমন জনপ্রিয় প্রতিনিধি আমাদের ভারতীয় জনতা পার্টির গুজরাটের সভাপতি শ্রী সি আর পাটিলজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী ভগিনী দর্শনাজি, কেন্দ্রীয় সরকারের সকল মাননীয় মন্ত্রীগণ, মাননীয় সাংসদগণ এবং মাননীয় বিধায়কগণ, গুজরাট রাজ্য সরকারের সকল মাননীয় মন্ত্রীগণ এবং আজ এখানে বিপুল সংখ্যায় আগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা!

আজ গুজরাট গৌরব অভিযান’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমার একটি বিশেষ কারণে গর্ব হচ্ছে, আর সেই গর্ব এজন্য হচ্ছে কারণ আমি এত বছর এই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী রূপে কাজ করেছি, কিন্তু কখনও কোনও জনজাতি এলাকায় এত বড় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য আমার হয়নি। আজ আমার এজন্যই অত্যন্ত গর্ব হচ্ছে যে আমি গুজরাট ছাড়ার পর যে যে মানুষেরা গুজরাটকে সামলানোর দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁরা সকলেই অসাধারণ কাজ করছেন। আজ আমার প্রিয় ভূপেন্দ্র ভাই এবং শ্রদ্ধেয় শ্রী সি আর পাটিলজির যুগলবন্দীতে যে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে গুজরাটে মানুষের মনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রতি বিশ্বাস আরও পোক্ত হচ্ছে, তারই পরিণাম হল আজ আমার সামনে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষের এত বিশাল সমাগম। আমি সেজন্য অত্যন্ত গর্ববোধ করছি যে আমার কর্মকালে আমি যা করতে পারিনি, তা আজ আমার বন্ধুরা করতে পারছেন,  আর আপনাদের ভালোবাসাও আমাদের প্রতি ক্রমবর্ধমান। এই অকুণ্ঠ সমর্থন থেকে প্রেরণা নিয়ে আমাদের কর্ম – তৎপরতা আরও বাড়ছে। নওসারির এই পবিত্র মাটি থেকে আমি উনাই মাতার মন্দিরকে মাথা নত করে প্রণাম জানাচ্ছি। বিভিন্ন জনজাতির মানুষের সামর্থ্য এবং সঙ্কল্পের এই ভূমিকে ‘গুজরাট গৌরব অভিযান’-এর অংশ করে তোলা – এটাও আমার জন্য একটি অত্যন্ত গৌরবের কথা। গুজরাটের গৌরব বিগত দুই দশকে যত দ্রুত বিকশিত হয়েছে, ‘সবকা বিকাশ’ বা সকলের উন্নয়ন হয়েছে,  আর এই উন্নয়ন থেকে সৃষ্টি হয়েছে আরও নতুন নতুন উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা। এই গৌরবময় পরম্পরাকে আমাদের ডবল ইঞ্জিনের সরকার সততার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আজ আমার ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস কিংবা ভূমিপূজন করার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি এজন্য প্রিয় ভূপেন্দ্র ভাইয়ের কাছে এবং গুজরাট রাজ্য সরকারের কাছেও কৃতজ্ঞ যে এই পবিত্র কাজে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনারা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই সমস্ত প্রকল্প নওসারি, তাপি, সুরাট, ভলসাড সহ দক্ষিণ গুজরাটের কোটি কোটি বন্ধুদের জীবনকে সহজ করে তুলবে। বিদ্যুৎ সংযোগ, বাড়িতে বাড়িতে নলের মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ, গ্রামে গ্রামে পাকা সড়ক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা – এই সবকিছুর উন্নয়ন প্রকল্প এবং তাও বিশেষভাবে আমাদের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে যখন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন সেই পরিষেবাগুলি কর্মসংস্থানেরও নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই সকল উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আমি আজ এই এলাকার সকল ভাই ও বোনেদের এবং গুজরাটের সকল জনগণকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

আট বছর আগে আপনারা অনেক অনেক আশীর্বাদ দিয়ে, অনেক বেশি আশা নিয়ে দেশসেবার জন্য, আমার ভূমিকা সম্প্রসারিত করার জন্য আমাকে দিল্লি পাঠিয়েছিলেন। বিগত আট বছরে আমি উন্নয়নের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে কোটি কোটি নতুন মানুষ, অনেক নতুন ক্ষেত্রকে যুক্ত করার সাফল্য অর্জন করেছি। আমাদের গরীব, আমাদের দলিত, আমাদের বঞ্চিত, আমাদের পিছিয়ে পড়া মানুষজন, আমাদের জনজাতি ভাই ও বোনেরা, আমাদের মহিলারা – সকলেই তাঁদের জীবনের মৌলিক প্রয়োজনগুলি পূরণ করা ছাড়াই কাটিয়ে দিতেন। এমনই একটা বিরাট সময়ের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীন ভারতের জনগণ দিনপাত করছিলেন। স্বাধীনতার এই দীর্ঘ কালখণ্ডে যাঁরা সবচাইতে বেশি সময় সরকার চালিয়েছেন তাঁরা উন্নয়নকে তাঁদের অগ্রাধিকার করে তোলেননি। যে ক্ষেত্র, যে শ্রেণীর লোকেদের তাঁদের সবচাইতে বেশি প্রয়োজন ছিল, তাঁরা তাঁদেরও উন্নয়ন করেননি কারণ, এই কাজ করার জন্য অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। পাকা সড়কপথ থেকে সবচাইতে বেশি যাঁরা বঞ্চিত ছিলেন তাঁরা হলেন আমার দেশের গ্রামবাসী, আমাদের জনজাতি এলাকাগুলি। যে গরীব পরিবারগুলি গত আট বছরে পাকা বাড়ি পেয়েছেন, বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন, শৌচালয় পেয়েছেন, বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগ পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই আমার জনজাতি ক্ষেত্রের ভাই ও বোনেরা, আমার দলিত ভাই ও বোনেরা, আমার পিছিয়ে পড়া পরিবারের মানুষেরা রয়েছে। সবচাইতে বেশি পরিশ্রুত জল পান করা থেকে আমার জনজাতি ক্ষেত্রের ভাই ও বোনেরা, আমার দলিত ভাই ও বোনেরা, আমার পিছিয়ে পড়া পরিবারের মানুষেরা বঞ্চিত ছিলেন। টিকাকরণের অভিযান যখন চলছিল, তখনও আমার দেশের গ্রামগুলিতে, দেশের গরীবদের কাছে এবং জনজাতি অঞ্চলগুলিতে সেই অভিযান পৌঁছতে অনেক বছর লেগে যেত। শহরগুলিতে তো পৌঁছে যেত। টেলিভিশনে এবং খবরের কাগজে জয়জয়কারও হয়ে যেত কিন্তু দূর, সুদূর অরণ্য অঞ্চলগুলি বঞ্চিত থেকে যেত। একটু আমার গুজরাটের ভাই ও বোনেদের জিজ্ঞাসা করুন – আপনাদের সকলের টিকাকরণ হয়েছে? কী সকলের টিকাকরণ হয়েছে? হাত ওপরে তুলুন! সবাই কি বিনামূল্যে পেয়েছেন? টাকা দিতে হয়েছে? দেখুন, এই দূরদুরান্তের অরণ্যে বসবাসকারী মানুষদের জন্য চিন্তা করা এটা আমাদের সকলের শিষ্টাচার এর মধ্যে রয়েছে। 

বন্ধুগণ,

ব্যাঙ্কিং পরিষেবা থেকে সবচাইতে বেশি বঞ্চিত ছিলেন আমার জনজাতি ক্ষেত্রের ভাই ও বোনেরা, আমার দলিত ভাই ও বোনেরা, আমার পিছিয়ে পড়া পরিবারের মানুষেরা। বিগত আট বছরে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর মন্ত্র নিয়ে চলার পথে আমাদের সরকার গরীব মানুষদের মৌলিক পরিষেবা দেওয়াকে, সার্বিকভাবে গরীব কল্যাণকেই সবচাইতে বেশি জোর দিয়েছে।

বন্ধুগণ,

গরীব মানুষকে ক্ষমতায়িত করার জন্য আজ আমাদের সরকার ১০০ শতাংশ ‘সশক্তিকরণ অভিযান’ শুরু করে দিয়েছে। কোনও গরীব, কোনও জনজাতির মানুষ যাতে কোনও সরকারি প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত না হন, যে প্রকল্পগুলি তাঁদের জন্যই রচিত হয়েছে, সেগুলির সুফল যেন তাঁরা অবশ্যই পান সেই লক্ষ্যে আমাদের সরকার দ্রুতগতিতে কাজ করছে। 

বন্ধুগণ,

এখানে মঞ্চে আসার আগে আমি আমাদের এই এলাকার জনজাতি ভাই ও বোনেদের সুখ-দুঃখের কথা শুনছিলাম। সেজন্যই আমার এখানে মঞ্চে এসে পৌঁছতে সামান্য বিলম্ব হয়েছে। আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলছিলাম, তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করছিলাম যে সরকারি প্রকল্পগুলির মাধ্যমে তাঁরা লাভবান হচ্ছেন কিনা, আর যাঁরা সুবিধাভোগী তাঁরা কী কী সুফল পেয়েছেন! আমি বোঝার চেষ্টা করছিলাম। যখন সাধারণ মানুষের সঙ্গে এ ধরনের সম্পর্ক বজায় থাকে, তখনই উন্নয়নের জন্য সমর্থন সেই অনুপাতে বাড়তে থাকে। গুজরাটের ডবল ইঞ্জিনের সরকার ১০০ শতাংশ ক্ষমতায়নের অভিযানে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাজ করে চলেছে। আমি সেজন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র ভাই এবং রাজ্য ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শ্রী সি আর পাটিল এবং তাঁর সম্পূর্ণ টিমকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আজ যখন অনেক দীর্ঘ সময় পর এই চিখলি-তে এসেছি, তখন স্বাভাবিকভাবেই সমস্ত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। কত বছর হয়ে গেল আমি আপনাদের এখানে আসছি। আপনাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কত পুরনো আর যেভাবে সেই দিনগুলিতে আমাদের কাছে সেরকম যাতায়াতের সুবিধা ছিল না, এখানে এলে বাস থেকে নেমে কাঁধে ঝোলা নিয়ে হাঁটতে শুরু করতাম আর এখানকার অনেক পরিবার, অনেক গ্রাম, আমার এখন সবার নাম মনে নেই, আমি এত বছর ধরে আপনাদের মধ্যে কাজ করেছি, থেকেছি কিন্তু কখনই আপনারা আমাকে খালি পেটে থাকতে দেননি। এতো ভালোভাসা, এতো আশীর্বাদ দিয়ে আপনারা একরকম আমাকে লালন করেছেন। এটাই আমার সবচাইতে বড় শক্তি যে এটা আমার এই জনজাতি ভাই ও বোনেদের মধ্যে থেকে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি যতটা কাজ করেছি তার থেকে অনেক বেশি আমি তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, পরিচ্ছন্ন থাকা, অনুশাসনপ্রিয়তা – এগুলি আমাদের জনজাতি পরিবারের শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে। আমি যখন ডাঙ্গ জেলায় যেতাম কিংবা জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে যেতাম, সকালে কিংবা সন্ধ্যায় বা গোধূলি বেলায়, সবাইকে দেখতাম একটি লাইন ধরে চলছেন। একে অন্যের পেছনে চলছেন আর শুধু এটাই নয়, অত্যন্ত চিন্তাভাবনা করে তাঁদের জীবনযাপনের প্রতিটি পদক্ষেপ রচিত। আজ জনজাতি সমাজ একটি সামুদায়িক জীবন এবং আদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকা, পরিবেশকে রক্ষা করা – এগুলিই এই সমাজের মূল বৈশিষ্ট্য। এখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সবাই বলেছেন – আজকের এই যে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পগুলি, সেগুলি নিয়ে সবাই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। আমার মনে আছে যে একটা সময় ছিল, গুজরাটের অতীতে একজন এরকম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন যে তাঁর আমলে এই জনজাতি এলাকাগুলিতে, তাঁর নিজের গ্রামেও জলের ট্যাঙ্ক পর্যন্ত ছিল না। একটি হ্যান্ডপাম্প লাগিয়েছিলেন, সেটাতেও ১২ মাস জল থাকত না, মাঝেমধ্যেই শুকিয়ে যেত। তাঁর নিজের সাম্মানিক ভাতা থেকেও টাকা তাঁর দল কেটে নিত। এটা সবাই জানেন। আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন আমি তাঁর গ্রামে জলের ট্যাঙ্ক তৈরি করে দিই। একটা সময় এমন ছিল যে গুজরাটের একজন মুখ্যমন্ত্রী জামনগরে একটি জলের ট্যাঙ্ক বানিয়েছিলেন এবং তিনি নিজেই সেই জলের ট্যাঙ্ক উদ্বোধন করেছিলেন আর গুজরাটের খবরের কাগজগুলিতে প্রথম পৃষ্ঠায় বড় বড় ছবি ছাপায় হয়েছিল যে মুখ্যমন্ত্রী জলের ট্যাঙ্ক উদ্বোধন করেছেন। এরকম দিনও গুজরাট দেখেছে। আজ আমার অনেক গর্ব হয় যে আমি সেই জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ৩ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করছি আর আমাদের দেশে তো যে কোনও কাজ করুন না কেন, কিছু মানুষ আছেন যাঁরা বলতে শুরু করে দেন যে এই সামনে নির্বাচন আসছে, সেজন্য কাজ শুরু হচ্ছে। নির্বাচন আসছে তাই কাজ হচ্ছে। আমি তাঁদেরকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, আমার কার্যকালে আপনারা একটি এমন সপ্তাহ খুঁজে বের করুন যে সপ্তাহে আমি কোনও না কোনও নতুন প্রকল্প শুরু করিনি। বিভিন্ন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার কাজ আমি এই ২২-২৩ বছর ধরে করছি। এই ২২-২৩ বছরের মধ্যে একটি সপ্তাহও এমন খুঁজে বের করতে পারবেন না যে সপ্তাহে আমি উন্নয়নের কোনও কাজ করিনি। আবারও বলছি একটি এমনও সপ্তাহ খুঁজে পাবেন না। কিন্তু যাঁরা খালি ভুল খুঁজে বের করতের চান, তাঁদের তো মনে হবেই যে ভোট আসছে। সেজন্যই এসব কাজ হচ্ছে আর সেজন্যই আমাকেও একথা বলতে হচ্ছে যে ২০১৮-তে এই জনজাতি এলাকায় পানীয় জল দেওয়ার জন্য এত বড় প্রকল্প যখন নিয়ে এসেছিলাম তখন এখানকারও কতজন বলেছেন যে কিছুদিন পরেই তো ২০১৯-এর সাধারণ নির্বাচন আসতে চলেছে। সেজন্য মোদী সাহেব এখানে এসে আম ও তেঁতুল দেখাচ্ছেন। আজ আমার খুব গর্ব হচ্ছে যে তাঁরা সবাই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছেন আর আজ সেই উদ্বোধন করা প্রকল্পে নলগুলি দিয়ে পরিশ্রুত জল বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে গেছে। তখন আমাদের এই কাজের বহর দেখে অনেকেই মেনে নিতে পারছিলেন না। তাঁরা ভাবতে পারছিলেন না যে গড়িয়ে পড়া জলকে মাথায় চড়ানো হচ্ছে কেন! আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র ভাই এবং গুজরাট ভারতীয় জনতা পার্টির অধ্যক্ষ শ্রী সি আর প্যাটেলও এর সাক্ষী। ৩০০ থেকে ৪০০ ফুটের ঢাল হত। যেন ২০০ তলা উঁচু পাহাড় চড়ার মতো ব্যাপার আর নিচে থেকে জল টেনে পাহাড়ের ওপরে নিয়ে যাওয়ার সমস্যা এবং তাও যদি শুধুই নির্বাচনে জয় পাওয়ার জন্য করতে হয়, মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ ভোটের জন্য কেউ এত পরিশ্রম করতেন না। তাঁদেরকে তো অন্য কোনও ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিতে হবে। কিন্তু আমরা নির্বাচনে জেতার জন্য নয়, আমরা তো এ দেশের জনগণের উপকারের জন্য কাজ করতে নেমেছি। নির্বাচনে তো জনগণ আমাদেরকে জেতান, মানুষের আশীর্বাদ আমাদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে।

এর-এস্টোল প্রোজেক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিশ্বে সুরেন্দ্র নগর জেলায় ধাঁকির কাজ করা হয়েছে আর আমি এই কথাগুলি আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি এবং কলেজগুলির টেকনিক্যাল বিভাগে যাঁরা পড়াশোনা করেন, সেই ছাত্রছাত্রীদেরকে বিশেষভাবে বলতে চাই, ধাঁকি-তে আমরা যে নর্মদার জল টেনে তুলেছি, তেমনই আমরা এখানে যেভাবে জল এনেছি, এর সম্পর্কে ও অনুশীলন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের করা উচিৎ, অধ্যাপকদের এখানে ঘুরে সরেজমিনে দেখে যাওয়া উচিৎ কিভাবে পাহাড়ের চড়াই-উতরাই, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর সমস্ত হিসাবনিকাশ বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। নল এত ওপরে গেলে জলের এতটা প্রেশার কেমনভাবে আসবে! আবার এখানে পাম্প লাগালেই জল এত ওপরে যাবে। এটা একটা অনেক বড় কাজ ছিল আর আমাদের রাজ্যে, আমার এখানকার ধরমপুরের একটি অত্যন্ত প্রান্তিক অঞ্চলেও থাকতে হয়েছিল। আমি সাপুতারাতে ছিলাম। সব সময়েই এটা অনুভব করেছি যে বৃষ্টি খুব হলেও আমাদের ভাগ্যে জল ছিল না। সেই জল বয়ে নিচে চলে যেত। আমরা প্রথমবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমাদের অরণ্যের উঁচু-নিচু পাহাড়গুলি থাকতে, দূরদুরান্তে বসবাসকারী আমাদের জনজাতির ভাই ও বোনেরা থাকতে, এই বিশাল অরণ্যভূমি থাকার ফলে তাঁদেরও জল পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাঁরা ছাড়াও সমাজের আমার দলিত ভাই ও বোনেরা, আমার পিছিয়ে পড়া পরিবারের মানুষেদেরও সেই অধিকার রয়েছে, শুদ্ধ পানীয় জল পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাঁরা সবাই যেন শুদ্ধ পানীয় জল পান সেজন্য আমরা অনেক বড় অভিযান শুরু করেছি। এই অভিযান নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে নয় আর আমরা বলি, যে সকল প্রকল্পের শিলান্যাস আমরা করি, তার উদ্বোধনও আমরাই করি আর আজ আমার সৌভাগ্য যে আজকের কাজটিও আমার ভাগ্যেই লেখা ছিল। এটাই দায়বদ্ধতা। জনগণের জন্য বেঁচে থাকা। মানুষের জন্য বাঁচা, মানুষের জন্য জ্বলতে থাকা। শাসন ক্ষমতার উত্থান-পতনের মধ্যে সময় নষ্ট করার মানুষ আমি নই। শাসন ক্ষমতায় বসা আমার জন্য শুধুই সেবা করার একটা সুযোগ বলে আমি মনে করি। সাধারণ জনগণের উপকার করার সৌভাগ্য বলে আমি মনে করি। বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারীর সময় গোটা পৃথিবী ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু এখনও পর্যন্ত এত বেশি টিকাকরণের ডোজ একমাত্র ভারতেই দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০০ কোটি ডোজ! 

আজ সান্ডালপোর, খেরগাম, রুমোলা, মান্ডভিতে জল এলে আমাদের শরীর ও মনে কত শক্তি এসে যায় ভাই ও বোনেরা! আর আজ কত শিলান্যাসের কাজও আমাকে করতে হয়েছে। ১১ লক্ষেরও বেশি মানুষকে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি প্রদানের কাজ আজ করা হয়েছে। আমাদের জোসিংপুরা থেকে শুরু করে আমাদের নারণপুরা, আমাদের সোনগড় – এই সমস্ত এলাকায় জল সরবরাহের প্রকল্প এবং এর ব্যবহার যে নিয়ে যে ভূমিপূজন হয়েছে, তার জন্য এই এলাকাতেও ১৪ লক্ষেরও বেশি জনগণের জীবনকে ‘পানীদার’ করে তোলা সম্ভব হয়েছে।

বন্ধুগণ,

‘জল জীবন মিশন’-এর অন্তর্গত আমাদের এই গুজরাটে কী সমস্যা এসেছিল সে সম্পর্কে হয়তো আপনাদের স্মরণে আছে কিংবা যাঁদের বয়স এখন ২০ বছর হয়েছে তাঁরাই হয়তো বেশি করে জানেন না। ২৫ বছর হওয়ার পরেও অনেকে বেশি জানেন না। কিন্তু তাঁদের থেকে যাঁরা বড় তাঁদের অবশ্যই হয়তো মনে আছে যে তাঁরা গুজরাটে কিভাবে দিন কাটাতেন। তাঁদের বাবা, ঠাকুরদারা কিভাবে দিন কাটিয়েছেন। কিন্তু নিজের বাবা, ঠাকুরদাদাদের যে সমস্যার মোকাবিলা করে বাঁচতে হয়েছিল, আমাদের নতুন প্রজন্মের এমন কোনও সমস্যাসঙ্কুল জীবনের সম্ভাবনা থাকলেও তাঁদেকে আমরা সেভাবে বাঁচতে দিতে চাই না। আমরা চাই তাঁরা যেন সুখে থাকতে পারেন, উন্নয়নে সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে পারেন। তাঁদের অতীতে জলের অধিকার নিয়ে আওয়াজ তুললে খুব বেশি কী করা হত? বিধায়ক এসে হ্যান্ডপাম্প লাগিয়ে দিয়ে যেতেন আর তার উদ্বোধন করে যেতেন। আরও ছয় মাসে তো সেই হ্যান্ডপাম্প থেকে বাতাস বেরোতে শুরু করত। কিন্তু জল আসত না। এরকমটাই তো এখানে হয়েছে, তাই না? অনেক চেষ্টা করেও জল যোগাড় করতে পারতেন না আর আজ আমরা বাড়িতে বাড়িতে জল সরবরাহ করছি। আমার মনে আছে গোটা ওমরগ্রাম থেকে অম্বাজি পর্যন্ত এত বড় জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় যেমন জনজাতির মানুষেরা ছিলেন, তেমনই অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষেরাও ছিলেন আর উচ্চবর্ণের সমাজের মানুষেরাও বসবাস করতেন, অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষেরাও বসবাস করতেন আর এখান থেকেও যেন মেধাবী এবং তেজী ছেলে-মেয়েরা জন্ম নেয়, এখান থেকে পড়াশোনা করে তাঁদের ছেলে-মেয়েরা এগিয়ে যেতে পারে, তার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। এই গোটা এলাকায় একটাও বিজ্ঞানের স্কুল ছিল না ভাই ও বোনেরা। আর যে এলাকায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান পড়ার ব্যবস্থা থাকবে না, সেখানে এসে যতই আমরা মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ চালু করার ভাষণ দিই, তাতে কোনও লাভ হবে না ভাই ও বোনেরা। কিন্তু আমার মনে আছে ২০০১-এ দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি এটাই প্রথম কাজ করেছিলাম। এই এলাকায় এসে অনেক বিজ্ঞানের স্কুল তৈরি করেছি যাতে আমার জনজাতি ভাই ও বোনেদের পরিবার থেকে ছেলে-মেয়েরা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেন, ডাক্তার হতে পারেন আর আজ আমি অত্যন্ত গর্বিত যে আমাদের উদ্যোগে শুরু করা সেই বিজ্ঞান স্কুলগুলি থেকে পাশ করে আজ মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হচ্ছেন। আজ এই জনজাতি এলাকায় একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। গুরু গোবিন্দ সিংহ-এর নামে বিশ্ববিদ্যালয়, বিরসা মুন্ডার নামে বিশ্ববিদ্যালয় আর জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়।

ভাই ও বোনেরা,

উন্নয়নের কাজ যদি করতে হয় তাহলে দূরদুরান্তের অরণ্য অঞ্চলেও যেতে হয় আর এই কাজের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন পরিবর্তনের কাজ আমরা করেছি। গ্রামে গ্রামে সড়কপথ তৈরি করা, প্রত্যেক গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে দেওয়া নিয়ে আলাপ-আলোচনা হোক। আজ নওসারি এবং ডাঙ্গ জেলার মানুষ সবচাইতে বেশি সুফল পাচ্ছেন। আমি জাঙ্গ জেলাকে সবচাইতে বেশি শুভেচ্ছা জানাব আর দক্ষিণ গুজরাটকেও শুভেচ্ছা জানাব। ডাঙ্গ জৈব কৃষির যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে, প্রাকৃতিক চাষের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই ডাঙ্গ জেলা অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। সেজন্য আমি এ রাজ্যের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আজ নওসারিতে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ, ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এর দ্বারা সুফল পেতে চলেছে। আমার জনজাতি এলাকার ভাই ও বোনেদের ভবিষ্যৎ যেন উজ্জ্বল হয়, জনজাতি সমাজের ছেলে-মেয়েরা যেন আরও বেশি ডাক্তার হন, ইঞ্জিনিয়ার হন, আমার অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর বাবা-মায়েদের ছেলে-মেয়েরা যেন ডাক্তার হয়, ইঞ্জিনিয়ার হয়, হডপতি সমাজের যেন ডাক্তার হয়, ইঞ্জিনিয়ার হয় তা সুনিশ্চিত করতে আমরা ইংরেজির বদলে মাতৃভাষার মাধ্যমে পড়াশোনা করার সুযোগ তৈরি করেছি। এখান আর তাঁদেরকে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার প্রয়োজন হবে না। নিজেদের মাতৃভাষায় তাঁরা পড়াশোনা করেও ডাক্তারি কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবেন।

ভাই ও বোনেরা,

আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম তখন আমি ‘বনবন্ধু যোজনা’ শুরু করেছিলাম আর আজ আমাদের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র ভাইজির নেতৃত্বে ‘বনবন্ধু কল্যাণ যোজনা’র চতুর্থ পর্যায় চলছে আর ১৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে এর চতুর্থ পর্যায় শুরু হয়েছে। ভাই ও বোনেরা উন্নয়ন কিভাবে এগিয়ে যায় এটি তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এই কাজ আমাদের ভূপেন্দ্র ভাইয়ের নেতৃত্বে গুজরাট রাজ্য সরকার করছে।

ভাই ও বোনেরা,

এরকম অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। আমাদের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার ছোট ছোট ভাই ও বোনেরা, আমার মনে আছে, আমি এখানে ওয়াডিতে একটি প্রকল্প চালু করেছিলাম। ওয়াডি হল ওয়ালসেডের কাছাকাছি একটি অঞ্চল। এই ওয়াডি প্রকল্প দেখার জন্য আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামজি এসেছিলেন। তিনি কখনও তাঁর জন্মদিন পালন করেননি। কিন্তু তাঁর জন্মদিনে তিনি এখানে ওয়াডি এলাকায় এসে সারাদিন ছিলেন আর এই ওয়াডি প্রকল্প কী তা নিয়ে গবেষণা করে দিল্লি এসে তিনি আমাকে বলেওছিলেন যে মোদীজি, আপনি প্রকৃতপক্ষেই গ্রামের মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার মতো আসল কাজটি, মূল কাজটি করছেন আর ওয়াডি প্রকল্প আমার জনজাতি ভাই ও বোনেদের মাত্র খানাখন্দে ভরা আধা একর জমি, ছোট আকারের, কিন্তু সেখানে কিছু উৎপাদন হয় না আর সেখানেই আমাদের জনজাতি বোনেরা পরিশ্রম করতে জানেন আর আমার জনজাতি ভাইয়েরা তো সন্ধ্যায় একটু আনন্দ করতে ভালোবাসেন। তারপরও আজ ওয়াডিতে আমাদের জনজাতি ভাই ও বোনেরা কাজু চাষ করছেন। এই কাজুর চাষ এখানে বেশ সাফল্যের সঙ্গে হচ্ছে।

ভাই ও বোনেরা,

উন্নয়ন যাতে সর্বাঙ্গীণ হয়, বিকাশ যাতে সর্বস্পর্শী হয়, উন্নয়ন যাতে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছয়, বিকাশ যাতে সকল ক্ষেত্রকে স্পর্শ করে, সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি আর এমন অনেক কাজ আজ গুজরাটের রাজ্য সরকারও সমানতালে এগিয়ে নিয়ে চলেছে৷ সেজন্যই হয়তো আপনারা আরও একবার এত বিপুল সংখ্যায় এখানে এসে আমাদের সবাইকে আশীর্বাদ করেছেন। এই দৃশ্য আমাদেরকে অনেক শক্তি যোগায়, আপনাদের জন্য কাজ করার শক্তি যোগায়। এই মা ও বোনেদের আশীর্বাদ আপনাদের জন্য আরও বেশি দৌড়নোর শক্তি যোগায় আর এই শক্তির কারণেই আমরা গুজরাটকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই আর ভারতকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আরও একবার আপনাদের সকলের আশীর্বাদের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। এত বিপুল সংখ্যায় এসে যে আশীর্বাদ দিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমি গুজরাট সরকারকেও শুভেচ্ছা জানাই যে এরকম ইতিবাচক কাজ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ আর সমাজের প্রান্তিক ব্যক্তিটি পর্যন্ত সুফল পৌঁছে দেওয়ার কাজ তাদের মাধ্যমেই হচ্ছে। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা। ভারতমাতা কী জয়। ভারতমাতা কী জয়। ভারতমাতা কী জয়।

 

CG/SB/DM/


(Release ID: 1833946) Visitor Counter : 241