প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী তামিলনাড়ুতে ৩১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ১১টি প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ ও শিলান্যাস করেছেন


তামিলনাড়ুতে আসা সর্বদাই আনন্দের ; এখানকার ভূমির মাহাত্ম্য রয়েছে ; এ রাজ্যের মানুষ, সংস্কৃতি ও ভাষা অসাধারণ

তামিল ভাষা চিরন্তন এবং তামিল সংস্কৃতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে

ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় রেখে আধুনিকীকরণ ও উন্নয়নের কাজ চলছে ; একইসঙ্গে স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটছে

সরকার উৎকৃষ্ট ও সুস্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে তোলার ওপর অগ্রাধিকার দেয়

গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির সর্বাঙ্গীন সাফল্য অর্জনে সরকার কাজ করে চলেছে

আমাদের উদ্দেশ্য গরিব কল্যাণ

ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে ভারত শ্রীলঙ্কাকে সম্ভাব্য সবরকম সহায়তা দিচ্ছে

তামিল ভাষা ও সংস্কৃতিকে আরও জনপ্রিয় করতে সরকার সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ

Posted On: 26 MAY 2022 7:52PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী,  ২৬  মে, ২০২২
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী চেন্নাই-এ ৩১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি ১১টি প্রকল্প জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ ও শিলান্যাস করেছেন। পরিকাঠামোর বিকাশের সঙ্গে যুক্ত এই প্রকল্পগুলি সমগ্র অঞ্চলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে অত্যন্ত কার্যকর হবে এবং এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করবে। এই উপলক্ষ্যে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল শ্রী আর এন রবি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী এম কে স্ট্যালিন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী এল মুরুগন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 
 
এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে, তামিলনাড়ুতে আরও একবার আসতে পারায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তামিলনাড়ুতে আসতে পারা সর্বদাই আনন্দের। এই ভূমির বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। এখানকার মানুষ, সংস্কৃতি ও ভাষা অসাধারণ। তিনি আরও বলেন এই রাজ্য থেকে কেউ না কেউ সর্বদাই দুর্দান্ত হয়ে উঠেছে। ডেফলিম্পিক্সে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় দলের সদস্যদের অভ্যর্থনা জানানোর কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার ভারত সবথেকে ভালো ফল করেছে। এই প্রতিযোগিতায় ভারত যে ১৬টি পদক পেয়েছে তার ৬টির পিছনে অবদান রয়েছে তামিলনাড়ুর ছেলে-মেয়েদের।
 
সমৃদ্ধ তামিল সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তামিল ভাষা চিরন্তন এবং তামিল সংস্কৃতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। চেন্নাই থেকে কানাডা, মাদুরাই থেকে মালয়েশিয়া, নামাক্কল থেকে নিউইয়র্ক, সালেম থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা সর্বদাই পোঙ্গল ও পুথান্ডু উৎসব যথোচিত উৎসাহ উদ্দীপনায় উদযাপিত হয়। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি কান চলচ্চিত্র উৎসবেও তামিলনাড়ুর ভূমিপুত্র ও কেন্দ্রীয়মন্ত্রী থিরু এল মুরুগন চিরাচরিত তামিল পোশাকে রেড কার্পেটে হেঁটেছেন, যা প্রকৃতপক্ষে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা তামিল মানুষের কাছে গর্বের বিষয়। 
 
শ্রী মোদী বলেন, আজ যে সমস্ত প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে সেগুলি সবই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে। তিনি বলেন, বেঙ্গালুরু-চেন্নাই এক্সপ্রেসওয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ মহানগরের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তুলবে এবং চেন্নাই বন্দর ও মাদুরাভয়ালের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী চারলেন বিশিষ্ট ডেকার এলিভেটেড সড়কটি চেন্নাই বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এমনকি এই মহানগরে যানজট এড়াতে সাহায্য করবে। পাঁচটি রেল স্টেশনের মানোন্নয়ের কাজ চলছে বলেও তিনি জানান। শ্রী মোদী বলেন, ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় রেখে আধুনিকীকরণ ও উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। একইসঙ্গে এই উদ্যোগে স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটছে। তিনি আরও বলেন, মাদুরাই-টেনি রেল লাইনের গেজ পরিবর্তনের ফলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তেমনই তাঁরা নতুন বাজারের সুবিধা নিতে পাববেন।
 
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ঐতিহাসিক চেন্নাই লাইট হাউস প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে যারা নিজেদের বাড়ি পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী তাদের অভিনন্দন জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত সন্তুষ্টির বিষয় যে আমরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছি। রেকর্ড সময়ের মধ্যে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে এবং আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে চেন্নাইতেই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থায় মাল্টিমোডাল লজিস্টিক পার্ক আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবে এবং আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার সংকল্প পূরণে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা নেবে।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, যেসমস্ত দেশ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে তারা উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। সরকার উৎকৃষ্ট ও সুস্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে তোলার ওপর সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশই গরিব কল্যাণ। সামাজিক পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রাধিকার সর্বজনহিতায় এবং সর্বজনসুখায়- এই আদর্শকে অনুসরণ করে এগিয়ে চলেছে। শ্রী মোদী বলেন, বর্তমান সরকার গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিগুলির সর্বাঙ্গীন সাফল্য অর্জনে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। শৌচাগার নির্মাণ থেকে আবাসন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ.... আমরা সার্বিক সাফল্যের লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি। সার্বিক সাফল্য যখন অর্জিত হবে তখন কেউই এই সুবিধা থেকে বাদ যাবেন না।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পরিকাঠামো ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি করেছে। কয়েক বছর আগেও পরিকাঠামো বলতে সড়ক, বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহের কথা বলা হত। আজ আমরা দেশে গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ করে চলেছি। আই-ওয়ে গড়ে তোলার লক্ষ্যেও কাজ চলছে। প্রতিটি গ্রামে হাইস্পিড ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করাই আমাদের উদ্দেশ্য।
 
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, সরকার তামিল ভাষা ও সংস্কৃতির আরও প্রসারে সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। এ বছর জানুয়ারিতে চেন্নাইয়ে সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ ক্লাসিক্যাল তামিল প্রতিষ্ঠানের নতুন ক্যাম্পাসের সূচনা হয়েছে। এই ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ তহবিল যুগিয়েছে। সম্প্রতি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে তামিল শিক্ষার জন্য সুহ্মমনিয়া ভারতী চেয়ার গড়ে তোলা হয়েছে। তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে অর্থাৎ বারাণসীতে এরকম একটি উদ্যোগ বাস্তবায়িত হওয়ায় তিনি অত্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলছে। আপনারা সকলে শ্রীলঙ্কার বর্তমান ঘটনাবলী সম্পর্কে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে ভারত শ্রীলঙ্কাকে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্য করছে। শ্রী মোদী স্মরণ করে বলেন, তিনিই প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি জাফনা সফর করেছেন। শ্রীলঙ্কায় তামিল সম্প্রদায়ের মানুষের সহায়তায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবা, পরিবহণ, আবাসন ও সংস্কৃতি প্রভৃতি।
 
আজাতি কা অমৃত মহোৎসবের সময় আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণে দেশবাসীর সমবেত সংকল্প গ্রহণের কথা তিনি আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী ২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকার ৫টি প্রকল্প জাতির উদ্দেশ্য উৎসর্গ করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মাদুরাই-টেনি রেল লাইনের গেজ পরিবর্তন। ৫৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তাম্বারাম-চেঙ্গলপাত্তুরের মধ্যে তৃতীয় রেল লাইন। ১১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এন্নোর-চেঙ্গলপাত্তু এবং থিরুভাল্লু-বেঙ্গালুরু শাখায় ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপ লাইন। 
 
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চেন্নাই লাইট হাউস প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে নির্মিত ১ হাজার ১৫২টি গৃহের উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষ্যে ২৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এরমধ্যে রয়েছে ১৪ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠতে চলা ২৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ বেঙ্গালুরু-চেন্নাই এক্সপ্রেসওয়ে। এই এক্সপ্রেসওয়েটি চালু হলে বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ের মধ্যে যাত্রার সময় ২-৩ ঘণ্টা হ্রাস পাবে। তিনি পাঁচটি রেল স্টেশনের মানোন্নয়নে শিলান্যাস করেন। এই রেল স্টেশনগুলি হল চেন্নাই এগমোরে, রামেশ্বরম, মাদুরাই, কাঠপাডি এবং কন্যাকুমারী। এই রেল স্টেশনগুলির মানোন্নয়ন খাতে খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি। 
 
প্রধানমন্ত্রী চেন্নাইয়ে প্রায় ১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকার একটি মাল্টিমোডাল লজিস্টিক পার্কের শিলান্যাস করেন। এই লজিস্টিক পার্কটি পণ্য পরিবহণে অত্যন্ত সহায়ক হবে এবং বিবিধ উদ্দেশ্য পূরণেও কার্যকর ভূমিকা নেবে।
 
 
CG/BD/NS


(Release ID: 1828834) Visitor Counter : 131