প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও হাইকোর্টগুলির প্রধান বিচারপতিদের যৌথ সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী


স্বাধীনতার ৭৫ বছর বিচার বিভাগ এবং আইনসভার ভূমিকা তথা দায়িত্ব ক্রমাগত স্পষ্ট করেছে; যেখানেই প্রয়োজন সেখানেই দেশকে সঠিক দিশা নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত হয়েছে

আমরা কিভাবে বিচার ব্যবস্থাকে সক্ষম করে তুলতে পারি, যাতে তা ২০৪৭ সালে ভারতের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে পারে, আর এটিই আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত

অমৃত কালে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীতে বিচার ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যাতে সহজেই ন্যায় বিচার, দ্রুত সুবিচার এবং সকলের জন্য বিচার সুনিশ্চিত করা যায়

সরকার ডিজিটাল ভারত মিশনের এক অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থায় প্রযুক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনার বিষয়টিকে বিবেচনা করছে

আদালতের কাজকর্মে স্থানীয় ভাষার ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন, যাতে সাধারণ মানুষ বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার সঙ্গে নিজেদের আরও বেশি যুক্ত করতে পারেন

দেশে বিচারাধীন এবং কারাগারে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কয়েদী রয়েছেন; এদের অধিকাংশই দরিদ্র এবং সাধারণ পরিবারের

আমি সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিদের কাছে মানবিক সংবেদনশীলতা এবং আইনের ভিত্তিতে দীর্ঘ বিচারাধীন বিষয়গুলিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার আবেদন জ

Posted On: 30 APR 2022 12:04PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি,  ৩০ এপ্রিল, ২০২২
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী ও হাইকোর্টগুলির প্রধান বিচারপতিদের যৌথ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন। এই উপলক্ষে তিনি সমবেত সকলের উদ্দেশে ভাষণ দেন। যৌথ এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভারতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি ইউ ইউ ললিত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী কিরেণ রিজিজু, অধ্যাপক শ্রী এস পি সিং বাঘেল, সুপ্রিমকোর্টের একাধিক বিচারপতি, হাইকোর্টগুলির প্রধান বিচারপতি, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপরাজ্যপালরা উপস্থিত ছিলেন। 
 
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, আমাদের দেশে বিচার বিভাগের ভূমিকা সংবিধানে অভিভাবকের মত হলেও আইনসভা সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিনিধিত্ব করে। তাই সংবিধানের দুই শাখা বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং আইনসভার মধ্যে সামঞ্জস্য ও সমন্বয় দেশে এক কার্যকর ও সময়সীমা ভিত্তিক বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার রূপরেখা প্রণয়ন কররে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর বিচার বিভাগ এবং আইনসভার ভূমিকা তথা দায়িত্ব ক্রমাগত স্পষ্ট করেছে। যেখানেই প্রয়োজন সেখানেই দেশকে সঠিক দিশা নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত হয়েছে। যৌথ এই সম্মেলনকে সংবিধানের সৌন্দর্যের প্রাণবন্ত বহিঃপ্রকাশ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এবং এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে আসছেন। তিনি মজার ছলেই বলেন, এই সম্মেলনে যোগদানের নিরিখে তিনি অন্যদের তুলনায় অনেক সিনিয়র। 
 
সম্মেলনের মূল সুর স্থির করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪৭-এ দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ পূরণ করবে তখন আমরা দেশে কেমন বিচার ব্যবস্থা দেখতে চাই? আমরা কিভাবে বিচার ব্যবস্থাকে সক্ষম করে তুলতে পারি, যাতে তা ২০৪৭ সালে ভারতের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে পারে। এই বিষয়টিতে আমাদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, অমৃত কালে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীতে বিচার ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যাতে সহজেই ন্যায় বিচার, দ্রুত সুবিচার এবং সকলের জন্য বিচার সুনিশ্চিত করা যায়। 
 
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বিচার ব্যবস্থায় বিলম্ব দূর করতে সরকার নিরন্তর জোর দিয়ে চলেছে। একই ভাবে, বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এবং বিচার ব্যবস্থার পরিকাঠামোর মানোন্নয়নে সর্বাত্মক প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কেস ম্যানেজমেন্ট বা মামলার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়েছে। এমনকি, বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে শূন্য পদগুলি পূরণে প্রয়াস চলছে। 
 
বিচার বিভাগীয় কাজকর্মের প্রেক্ষিতে সুপ্রশাসনিক ব্যবস্থায় তিনি প্রযুক্তি ব্যবহারে নিজের দৃষ্টিভঙ্গীর কথা পুনরায় উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার ডিজিটাল ভারত মিশনের এক অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থায় প্রযুক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনার বিষয়টিকে বিবেচনা করছে। বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রয়োগ আরও বাড়ানোর জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও হাইকোর্টগুলির প্রধান বিচারপতিদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ই-আদালত প্রকল্প মিশন মোড ভিত্তিতে রূপায়ন করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি ডিজিটাল লেনদেনে সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল ব্যবস্থা ছোট শহর, এমনকি গ্রামগুলিতেও অত্যন্ত কার্যকর হয়ে উঠছে। সারা বিশ্বে গতবছর যত ডিজিটাল লেনদেন হয়েছে, তার ৪০ শতাংশই ভারতে। প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বহু দেশে আইন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এখন ব্লকচেন, ইলেক্ট্রনিক ডিসকভারি, সাইবার নিরাপত্তা ও রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধমত্তা এবং বায়োএথিক্সের মত বিষয়গুলিতে পঠন-পাঠন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশেও আইন শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলা সকলের দায়িত্ব। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালতের কাজকর্মে স্থানীয় ভাষার ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন, যাতে সাধারণ মানুষ বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার সঙ্গে নিজেদের আরও বেশি যুক্ত করতে পারেন। এমনকি, বিচার ব্যবস্থার প্রতি যাতে তাদের আস্থা বাড়ানো যায়। তিনি বলেন, এর ফলে জনগণের স্বার্থে বিচার প্রক্রিয়ার অধিকার আরও সুদৃঢ় হবে। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও স্থানীয় ভাষার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। 
 
শ্রী মোদী আইনের জটিলতা এবং বাধাবিপত্তির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে সরকার এমন ১ হাজার ৮০০টি আইন চিহ্নিত করে যা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যেই ১ হাজার ৪৫০টি আইন বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে, রাজ্যগুলি কেবল এধরণের ৭৫টি আইন বাতিল করেছে। এই প্রেক্ষিতে শ্রী মোদী নাগরিকদের অধিকার ও তাদের জীবনযাপন সহজ করে তোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যথাযথা পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বিচার বিভাগীয় সংস্কার কেবল নিছক একটি নীতিগত বিষয় নয়। এই সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সাধারণ মানুষের সহনশীলতার বিষয়টিও নীতিগত ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এবং যাবতীয় আলাপ-আলোচনায় এই বিষয়টিকেই মূল প্রতিপাদ্য করতে হবে। তিনি জানান, দেশে বিচারাধীন এবং কারাগারে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কয়েদী রয়েছেন। এদের অধিকাংশই দরিদ্র এবং সাধারণ পরিবারের। প্রতিটি জেলায় জেলা শাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে, যাতে বিচারাধীন বিষয়গুলি দ্রুত পর্যালোচনা করে, সম্ভব হলে কারাবন্দিদের জামিনে মুক্ত দেওয়া যায়। এই প্রেক্ষিতে তিনি সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিদের কাছে মানবিক সংবেদনশীলতা এবং আইনের ভিত্তিতে দীর্ঘ বিচারাধীন বিষয়গুলিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার আবেদন জানান।  
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টগুলিতে বিশেষ করে স্থানীয় আদালতগুলিতে জমে থাকা মামলার নিষ্পত্তির জন্য মধ্যস্থতা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিবাদ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে হাজার হাজার বছরের পুরানো পরম্পরা রয়েছে। পারস্পরিক সম্মতি ও পারস্পরিক অংশ গ্রহণ নিজ পদ্ধতিতে ন্যায় বিচারের একটি স্বতন্ত্র মানবিক ধারণা দেয় বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে সরকার সংসদে মধ্যস্থতা বিল পেশ করেছে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমৃদ্ধ আইনি দক্ষতা ও মধ্যস্থতার মাধ্যমে ভারত সমস্যা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের অগ্রণী দেশ হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, এর মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বের সামনে একটি মডেল তুলে ধরতে পারি। 
 
 
CG/BD/AS/

(Release ID: 1821739) Visitor Counter : 201