প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় রক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন

Posted On: 12 MAR 2022 1:36PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১২ মার্চ, ২০২২
 
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ আহমেদাবাদে রাষ্ট্রীয় রক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে ভাষণ দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ, গুজরাটের রাজ্যপাল, সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
 
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের শুরুতে মহাত্মা গান্ধী এবং যাঁরা ডান্ডি অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। উল্লেখ্য, আজকের দিনেই এই মহান অভিযানের সূচনা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী জানান, “ব্রিটিশদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে গান্ধীজির নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে তুলে আমরা ব্রিটিশ সরকারকে ভারতীয়দের সম্মিলিত শক্তি সম্পর্কে বোঝাতে পেরেছিলাম।”
 
প্রধানমন্ত্রী জানান, ঔপনিবেশিক আমলে ঔপনিবেশিক প্রভুদের জন্য শান্তি বজায় রাখতে জনসাধারণের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের উপর ভিত্তি করে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ধারণা গড়ে উঠেছিল। এভাবে, পূর্বের পরিস্থিতি খুবই ভিন্ন ছিল। কারণ, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রস্তুতিতে সময় লাগতো, যা এখন আর লাগে না। প্রযুক্তি, পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আজকের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিতে কাজ করার জন্য দক্ষতার প্রয়োজন। 
 
শ্রী মোদী পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের ভাবমূর্তি পরিবর্তনের উপর জোর দেন। মহামারী চলাকালীন পুলিশ কর্মীদের মানবিক কাজের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার পর দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। একটি ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, আমাদের ইউনিফর্ম পরিহিত কর্মীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু তা এখন পরিবর্তিত হয়েছে। যখন লোকেরা এই ইউনিফর্ম পরা কর্মীদের দেখেন, তারা সাহায্যের আশ্বাস পান।”
 
প্রধানমন্ত্রী চাকরির চাপ মোকাবিলায় পুলিশ কর্মীদের জন্য যৌথ পরিবারের সহায়তা সঙ্কুচিত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।  তিনি বাহিনীতে যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ সহ মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ মুক্ত হওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য এখন চাপমুক্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রয়োজন"।
 
প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা ও পুলিশের কাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অপরাধীরা প্রযুক্তি ব্যবহার করলে, তাদের ধরতেও প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি জানান, প্রযুক্তির এই জোর দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখতে সাহায্য করবে। 
 
প্রধানমন্ত্রী জানান, গান্ধীনগর এলাকায় জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়, রক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফরেন্সিক সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তিনি এসম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলিতে একটি সামগ্রিক শিক্ষা তৈরিতে নিয়মিত সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সমন্বয়সাধনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “কখনও এটিকে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ভাবতে ভুল করবেন না। এটি একটি রক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়। যা সম্পূর্ণভাবে দেশের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে থাকে।” প্রধানমন্ত্রী পুষ্টি, প্রযুক্তির মতো বিষয়গুলির গুরুত্বের কথা পুনরায় তুলে ধরেন। 
 
শ্রী মোদী শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান যে, তারা যেন মানবতার মূল্যবোধকে তাদের ইউনিফর্মের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে ধরে রাখেন এবং তাদের প্রচেষ্টায় কখনই সেবার চিন্তাধারাকে ঘাটতি না হতে দেন। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে কন্যা ও মহিলাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মহিলাদের বৃহত্তর অংশগ্রহণ দেখতে পাচ্ছি। বিজ্ঞান হোক, শিক্ষা হোক বা সুরক্ষা – মহিলারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।” 
 
প্রধানমন্ত্রী প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে  প্রথম ব্যাচের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি গুজরাটের পুরনো ফার্মাসি কলেজের অবদানের কথাও উল্লেখ করেছেন। একইভাবে আইআইএম আমেদাবাদ দেশে শক্তিশালী এমবিএ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
 
পুলিশ, ফৌজদারি বিচার এবং সংশোধনমূলক প্রশাসনিক ক্ষেত্রের মতো বিভিন্ন শাখায় উচ্চমানের প্রশিক্ষিত মানব শক্তির প্রয়োজন মেটাতে রাষ্ট্রীয় রক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় (আরআরইউ) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১০ সালে গুজরাট সরকার প্রতিষ্ঠিত রক্ষা শক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নতিসাধন করে সরকার রাষ্ট্রীয় রক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি জাতীয় পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়, একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের পয়লা অক্টোবর থেকে এর পথ চলা শুরু। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিল্প সংস্থা থেকে জ্ঞান ও সম্পদের ব্যবহার করে বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তুলবে এবং পুলিশ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎকর্ষ কেন্দ্র স্থাপন করবে। 
 
আরআরইউ পুলিশ এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন পুলিশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা, ফৌজদারি আইন ও বিচার, সাইবার মনোবিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সাইবার নিরাপত্তা, অপরাধ তদন্ত, কৌশলগত ভাষা, অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা,শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা থেকে ডক্টরেট স্তর পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক পাঠক্রম চালু করেছে। বর্তমানে ১৮টি রাজ্যে ৮২২ জন ছাত্রছাত্রী এই পাঠক্রমে নাম নথিভুক্ত করেছেন।
 
CG/SS/SKD/


(Release ID: 1805432) Visitor Counter : 139