স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপ থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস করেছেন
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এখানে ৩টি দ্বীপ শহীদ, স্বরাজ ও সুভাষ-এর নামে নামাঙ্কিত করেছেন, যাতে আগামী প্রজন্ম এ থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারেন এবং নেতাজী, বীর সাভারকার ও অনেক অখ্যাত শহীদরা যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা পূরণ করতে আরও বেশি দায়িত্ববোধ সম্পন্ন হয়ে উঠতে পারেন
Posted On:
16 OCT 2021 7:29PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১৬ অক্টোবর, ২০২১
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপ থেকে আজ একাধিক প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস করেছেন। শ্রী শাহ রাণী লক্ষ্মীবাঈ দ্বীপ, শহীদ দীপ ইকোট্যুরিজম প্রজেক্ট, স্বরাজ দ্বীপ ওয়ার্টার অ্যারোড্রোম ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্প আকাশপথে ঘুরে দেখেন। এই উপলক্ষে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপু্ঞ্জের উপ-রাজ্যপাল অ্যাডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) ডি কে যোশী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস উপলক্ষে শ্রী শাহ বলেন, তিনি আজ অত্যন্ত রোমাঞ্চিত এবং এটা হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক যে, দেশকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করতে আমরা বহু বছর লড়াই চালিয়েছি। পূর্ণ স্বরাজ বা স্বাধীনতা ১৯৪৭ সালে এলেও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ১৯৪৩-এ ভারতের এই অংশটিকে ২ বছর ব্রিটিশ শাসনের যাতাকাল থেকে মুক্ত রাখতে পেরেছিলেন। শ্রী শাহ আরও বলেন, দেশপ্রেমিক, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে ভারতের এই অংশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হয়ে উঠেছে। নেতাজী প্রথমবার এখানে দু-রাত্রী যাপন করেছিলেন এবং এখানেই তিনি প্রথমবার ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সারা দেশজুড়ে আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপন করছি। এই উদযাপনের মধ্যদিয়ে আমরা যুবসম্প্রদায়ের মনে দেশাত্মবোধের চেতনা জাগ্রত করতে চাই। আর এভাবেই তরুণ প্রজন্ম এক নতুন ও মহান ভারত গঠনে নিজেদের যুক্ত করতে পারবে। আমরা ভারতকে মহান দেশ করে তুলে বিশ্বে তার যোগ্যতম স্থানে দেখতে চাই। তাই আমাদের নবীন প্রজন্মকে সঠিক দিশায় অগ্রসর হতে হবে।
শ্রী শাহ বলেন আন্দামান ও নিকোবর স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। আমাদের যুবসমাজকে তাই এই দ্বীপে যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের সম্পর্কে জানতে হবে, তাদের দুঃখ-যন্ত্রনাকে উপলব্ধি করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে সেই সেল্যুলার জেল দেখতে হবে যেখানে বীর সাভারকর ১০ বছর কাটিয়েছিলেন। যেখানে ভাই প্রেমানন্দ ও সান্যালের মত অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী বছরের পর বছর কালাপানি হিসেবে পরিচিত এই দ্বীপপুঞ্জে কারাবন্দি থেকেছিলেন। নবীন প্রজন্মকে এঁদের সকলের ভারতের স্বাধীনতার জন্য আত্মবলিদানকে জানতে হবে। তাই সেল্যুলার জেল একবার ঘুরে না দেখলে এসম্পর্কে প্রকৃত উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। এই সেল্যুলার জেলেই বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর ওপর ব্রিটিশদের নির্মম অত্যাচারের কাহিনী আকাশে বাতাসে মিশে রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের সময় এই জেল ঘুরে দেখলে প্রেরণার উপলব্ধি জাগ্রত হয়। শ্রী শাহ দেশের যুব সম্প্রদায়কে অন্তত একবার আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জে স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলি ঘুরে দেখার আহ্বান জানান। শ্রী শাহ বলেন, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের সময় আমরা সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছি। আর এবছরই আমি সেখানে উপস্থিত হয়েছি যখন ১৯৪৩-এর ৩০ ডিসেম্বর সুভাষবাবু ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে স্বাধীন ভারতের মুক্ত বাতাস প্রাণভরে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, নেতাজী ও তাঁর জীবন থেকে যা জানা গেছে তার প্রেক্ষিতে এটা বলা যায় যে, তাঁর প্রতি অবিচার হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র নেতাজী প্রাপ্য সম্মান কখনওই পাননি, যা পাওয়া উচিত ছিল। শুধু তাই নয়, বহু বছর ধরে এমন অনেক মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীর সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। কিন্তু এখন সময় এসেছে তাঁদের সকলকে প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার, যাঁরা দেশের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন। আর একারণেই প্রধানমন্ত্রী মোদী আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপের নামকরণ করেছেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সর্দার প্যাটেলের সঙ্গেও নেতাজীর মত অবিচার করা হয়েছে। ভারতীয় প্রজাতন্ত্র যা আজ আমরা দেখছি, তা সর্দার প্যাটেল ছাড়া কখনই সম্ভব হত না। সর্দার প্যাটেল অত্যন্ত বিচক্ষণ ও পারদর্শীতার সঙ্গে কেবল দেড় বছরে ৫৫০টির বেশি রাজ সাম্রাজ্যকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করতে সক্ষম হন। এই ভাবেই এক অখন্ড ভারতের সূচনা হয়। এসব সত্বেও সর্দার সাহেব স্বাধীনতার পর প্রাপ্য সম্মান পাননি। কিন্তু ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে যতই অবিচার হয়ে থাক না কেন, মানব কল্যাণে তাঁদের অবদান কখন আড়ালে থাকে না। আর একারণেই নরেন্দ্র মোদী সরকার কেভাডিয়ায় সর্দার সাহেবের সুবিশাল স্ট্যাচু স্থাপন করেছেন, যা আজ সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সুভাষবাবুর জন্মতিথি ২৩ জানুয়ারিকে পরাক্রম দিবস হিসেবে উদযাপনের কথা ঘোষণা করেছেন।
শ্রী শাহ আরও বলেন, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের সময় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে। ১৮৫৭-র বিপ্লব এবং ১৮৯১-এ উত্তর-পূর্বে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে মণিপুর বড় ভূমিকা নিয়েছিল। সেই সময় মণিপুরই ছিল একমাত্র রাজ্য, যেখানে তার নিজস্ব সংবিধান কার্যকর হয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামে মণিপুরের অবদানকে স্মরণে রাখতে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে মাউন্ট হ্যারিয়েটের নামকরণ মাউন্ট মণিপুর করা হচ্ছে।
শ্রী শাহ বলেন, আজ ২৯৯ কোটি টাকা খরচের বিনিময়ে ১৪টি প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে এবং ৬৪৩ কোটি টাকার আরও ১২টি প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। মোদী সরকার আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের ছোট ছোট এলাকায় ১ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের রূপায়ণ করছে। আজ যে নবনির্মিত সেতুটির সূচনা হয়েছে, তা আজাদ হিন্দ ফৌজ সেতু হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। শ্রী শাহ বলেন, আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাছে এক পুণ্যস্থান হিসেবে চিহ্নিত ছিল এবং আজ নতুন প্রজন্মের কাছেও এক তীর্থস্থান হয়ে উঠেছে। আর একারণে আমরা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সুভাষ চন্দ্র বসুর স্মরণে একটি সৌধ বানানো হবে, যাতে সারা দেশ ও পরবর্তী প্রজন্ম নেতাজীর আত্মত্যাগ ও সাহসিকতাকে চিরকাল স্মরণ করতে পারে।
CG/BD/AS/
(Release ID: 1764590)
Visitor Counter : 341