প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

রায়পুর, ছত্তিশগড়ে বিশেষ গুণসম্পন্ন ৩৫টি ফসলের প্রজাতি দেশকে সমর্পণের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 28 SEP 2021 3:22PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

 

নমস্কারজি!

কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমরজি, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেশ বাঘেলজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অন্য সহযোগী শ্রী পুরুষোত্তম রুপালাজি, শ্রী কৈলাস চৌধরিজি, ভগিনী শ্রীমতী শোভাজি, ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী রমন সিং-জি, বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শ্রী ধর্ম লাল কৌশিকজি, কৃষি-শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিভিন্ন বিভাগের ডায়রেক্টরগণ, বৈজ্ঞানিক বন্ধুগণ এবং আমার প্রিয় কৃষক ভাই ও বোনেরা!

আমাদের উত্তর ভারতে ঘাঘ এবং ভড্ডরীর কৃষি বিষয়ক লোককথা অত্যন্ত জনপ্রিয়। ঘাঘ আজ থেকে অনেক শতাব্দী আগে বলেছিলেন :

“জেতে গহিরা জোতে খেত,

পরে বীজ, ফল তেতে দেত।”

অর্থাৎ, চাষের সময় লাঙলের হাল মাটির যত গভীরে যায়, বীজ বপন করলে ফসলও তত বেশি হয়। এই লোককথা ভারতের কৃষিতে হাজার হাজার বছরের পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে রচিত হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় ভারতীয় কৃষি সর্বদাই কতটা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক ছিল। কৃষি এবং বিজ্ঞানের এই মিলনে নিরন্তর ভারসাম্য বজায় রাখা একবিংশ শতাব্দীর ভারতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আজ এর সঙ্গে যুক্ত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের আধুনিক ভাবনাচিন্তাসম্পন্ন কৃষকদের এটা সমর্পণ করা হচ্ছে। আর যে ছোট ছোট কৃষক ভাইয়েরা জীবনে পরিবর্তনের আশা নিয়ে বাঁচেন, তাঁদের জন্য এটি অনেক বড় উপহার। আজ আমি আমার দেশের কোটি কোটি কৃষকদের চরণে এই উপহারকে সমর্পণ করছি। ভিন্ন ভিন্ন ফসলের ৩৫টি নতুন প্রজাতি আজ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হচ্ছে। আজ রায়পুরে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োটিক স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট’-এরও শুভ উদ্বোধন হল। চারটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাস পুরস্কারও দেওয়া হল। আমি আপনাদের সবাইকে, দেশের কৃষক বন্ধুদের এবং কৃষি বৈজ্ঞানিকদের অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

বন্ধুগণ,

বিগত ৬-৭ বছরে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিকে কৃষিতে প্রয়োগ করে কৃষি সংক্রান্ত অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে, ক্রমপরিবর্তিত আবহাওয়ায় উদ্ভূত নতুন পরিস্থিতির অনুকূল অধিক পুষ্টিসম্পন্ন বীজ বপনের দিকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভিন্ন ভিন্ন ফসলের এমন ১,৩০০-রও বেশি বীজের বৈচিত্র্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই শৃঙ্খলায় আজ আরও ৩৫টি ভিন্ন প্রজাতির শস্য দেশের কৃষকদের চরণে সমর্পণ করা হচ্ছে। এই বীজগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে চাষকে সুরক্ষা প্রদান এবং দেশ থেকে অপুষ্টি দূরীকরণ অভিযানে অত্যন্ত সহায়ক হয়ে উঠবে। এই প্রজাতিগুলি আমাদের কৃষি-বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফসল। এই নতুন প্রজাতিগুলি আবহাওয়ার অনেক ধরনের প্রতিকূলতার মোকাবিলায় যেমন সক্ষম, তেমনই এদের মধ্যে পুষ্টির উপাদানও অনেক বেশি। এগুলির মধ্যে কিছু প্রজাতি যেসব অঞ্চলের মাটিতে জলের পরিমাণ অত্যন্ত কম তেমন এলাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে, কিছু প্রজাতি নানা রোগ থেকে সুরক্ষিত, আর কিছু প্রজাতি দ্রুত ফলনশীল, আবার কয়েকটি প্রজাতি ক্ষারযুক্ত জলেও ফলতে পারে। অর্থাৎ, দেশের ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে এগুলিকে তৈরি করা হয়েছে। ছত্তিশগড়ের মানুষ আজ ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োটিক স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট’ নামক একটি নতুন জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পেয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠান আবহাওয়া ও অন্যান্য পরিস্থিতির পরিবর্তন থেকে জন্ম নেওয়া বিভিন্ন প্রতিকূলতার বায়োটিক চাপের মোকাবিলার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রচেষ্টাকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে পথ দেখাবে ও নানারকম বৈজ্ঞানিক সাহায্য করবে। এখান থেকে যে মানবসম্পদ প্রশিক্ষিত হবেন, আমাদের যে নবীন প্রজন্মের মানুষরা প্রশিক্ষিত হয়ে ‘যুবা ধন’-এ পরিণত হবেন, তাঁদের বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তির ফলে ভবিষ্যতে তাঁরা বড় বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠবেন। অনেক স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানও এখানেই আবিষ্কৃত হবে, যা দেশকে কৃষিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে, আর কৃষকদের আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

বন্ধুগণ,

আমরা সবাই জানি যে আমাদের দেশের ফসলের কত বড় অংশ বিভিন্ন পোকা-মাকড়ে খেয়ে নষ্ট করে। এর ফলে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়। গত বছর করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যেও আমরা দেখেছি কিভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল এসে অনেক রাজ্যে বড় হামলা চালিয়েছে। গতবার ভারত অনেক চেষ্টা করে তবেই এই হামলা রুখতে পেরেছিল। কৃষকদের অত্যধিক লোকসান থেকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। আমি মনে করি, এই নতুন প্রতিষ্ঠানের একটা বড় দায়িত্ব হল এই ধরনের সমস্যার সমাধান বের করা, আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এখানে কর্মরত বৈজ্ঞানিকরা তাঁদের প্রতি দেশের প্রত্যাশা পূরণে অবশ্যই সফল হবেন।

বন্ধুগণ,

চাষবাস ও কৃষকদের জীবিকা যখন সংরক্ষণ পায়, বিভিন্ন সুরক্ষা কবচ পায়, তখন অত্যন্ত দ্রুত কৃষির উন্নতি হয়। কৃষকদের জমির সুরক্ষা প্রদানের জন্য তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে ১১ কোটি মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড প্রদান করা হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা নিজেদের জমির শক্তি কতটা, কোন উপাদানের অভাব রয়েছে বা কোন উপাদান বেশি রয়েছে, কী ধরনের বীজ বপন করলে ভালো ফসল পেতে পারেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন। মাটিতে কোন ধরনের ওষুধ মেশাতে হবে, কী ধরনের সার মেশাতে হবে – এই সমস্ত কিছু মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ডের মাধ্যমে জমির স্বাস্থ্য সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার ফলেই সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে কৃষকরা অত্যন্ত লাভবান হচ্ছেন, তাঁদের খরচ কমেছে, ফসলের উৎপাদন বেড়েছে। তেমনই, ইউরিয়াকে ১০০ শতাংশ নিম আচ্ছাদিত করে আমরা সারের ঘাটতি সংক্রান্ত বিভিন্ন দুশ্চিন্তা দূর করেছি। কৃষকদের সেচের জলের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা বিভিন্ন সেচ প্রকল্প শুরু করেছি, আর অনেক দশক ধরে ঝুলে থাকা প্রায় ১০০টি বৃহৎ সেচ পরিকল্পনা সম্পূর্ণ করার অভিযান চালিয়েছি। অনেক বড় মাত্রায় বাজেট বরাদ্দ করে কৃষকদের ক্ষেতে জল পৌঁছনোর বিষয়টিকে অগ্রাদিকার দিয়েছি। তেমনই জল সাশ্রয়ের জন্য আমরা ক্ষুদ্র সেচ, স্প্রিঙ্কলার ইত্যাদি প্রযুক্তির সাহায্যে কৃষকদের ফসল বৃদ্ধির জন্য তাঁদেরকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছি। বিভিন্ন ফসলকে নানা রকম রোগ থেকে বাঁচানোর জন্য, ফলন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের নতুন নতুন প্রজাতির বীজ প্রদান করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে চাষের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেন, অন্নদাতারা যাতে শক্তি উৎপাদনকারী হয়ে ওঠেন, নিজেদের বিদ্যুতের প্রয়োজন নিজেরাই পূরণ করতে পারেন আর তারপর অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরকারি গ্রিডে দিয়ে তা থেকে আয় করতে পারেন সেকথা মাথায় রেখে পিএম কুসুম অভিযান শুরু করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ কৃষককে সোলার পাম্প প্রদান করা হয়েছে। তেমনই আজ আমরা সবাই জানি, আবহাওয়া পরিবর্তন কিভাবে গোটা বিশ্বের চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে! একটু আগেই আমাদের ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীজি তাঁর রাজ্যকে কত ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে কী ধরনের প্রতিকূলতা বেড়েছে তা অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। এখন আপনারা জানেন শিলাবৃষ্টি এবং আবহাওয়ার মার থেকে কৃষকদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য আমরা অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন করেছি। আগের অনেক নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে যাতে কৃষকদের সর্বাধিক লাভ হয়। বিপর্যয়ের সময় তাঁদের যেন লোকসানের মুখোমুখি না হতে হয়, পিএম ফসল বিমা যোজনার মাধ্যমেও কৃষকদের অত্যন্ত লাভ হয়েছে আর তাঁরা সুরক্ষাও পেয়েছেন। এই পরিবর্তনের পর কৃষকরা কেমন লাভবান হয়েছেন তা বোঝা যায় কারণ প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনায় পরিবর্তনের ফলে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার ক্লেমের টাকা কৃষকরা পেয়েছেন। এই কঠিন সঙ্কটকালে এই ১ লক্ষ কোটি টাকা কৃষকদের অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে।

বন্ধুগণ,

ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আমরা ক্রয় প্রক্রিয়াতেও সংস্কার এনেছি যাতে বেশি সংখ্যক কৃষক এর দ্বারা লাভবান হতে পারেন। রবি চাষের ঋতুতে ৪৩০ লক্ষ মেট্রিক টনেরও বেশি গম কেনা হয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষকরা ৮৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ পেয়েছেন। কোভিডের সঙ্কটকালে গম ক্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি, ডাল ও তিলশস্য ক্রয় কেন্দ্রের সংখ্যাও তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। কৃষকদের ছোট ছোট প্রয়োজন পূরণের জন্য কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে আমাদের দেশের ১১ কোটিরও বেশি কৃষককে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই হলেন ক্ষুদ্র কৃষক। আমাদের দেশে প্রতি ১০ জনের মধ্যে আটজন কৃষকই ক্ষুদ্র কৃষক। তাঁরা অত্যন্ত ছোট ছোট জমির টুকরোতে চাষ করেন। এ ধরনের কৃষকদের প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি এই করোনা সঙ্কটকালেই পাঠানো হয়েছে। কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করার জন্য আমরা  বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সাহায্যে তাঁদের সহায়তার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকেই সহজ করে তুলেছি। আজ কৃষকরা উন্নত পদ্ধতিতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাচ্ছেন। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে ২ কোটিরও বেশি কৃষককে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। মৎস্যচাষী এবং ডেয়ারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদেরও কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। ১০ হাজারেরও বেশি কৃষক উৎপাদক সঙ্ঘকে ই-ন্যাম প্রকল্পের মাধ্যমে সর্বাধিক কৃষি মান্ডির সঙ্গে যুক্ত করা, চালু কৃষি মান্ডিগুলির আধুনিকীকরণ – এই সমস্ত কাজ দ্রুতগতিতে করা হচ্ছে। দেশের কৃষকদের জন্য আর দেশের কৃষির সঙ্গে যুক্ত যত কাজ গত ৬-৭ বছরে হয়েছে তা আগামী ২৫ বছরে বড় জাতীয় সঙ্কল্পগুলির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হবে। ২৫ বছর পর আমাদের দেশ স্বাধীনতার শতবর্ষ পালন করবে। আজ আমরা স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছি। ২৫ বছর পর স্বাধীনতার শতাব্দী উৎসব পালন করব। আর সেজন্য এই ২৫ বছর ধরে বড় বড় সঙ্কল্পগুলিকে বাস্তবায়নের জন্য দেশে বড় শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলা হয়েছে। বীজ থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত যত ধরনের কাজ বড় আর্থিক শক্তিরূপে কৃষকের হাতে এসেছে তা নিশ্চিতভাবেই ভারতের উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করবে ও সুনিশ্চিত করবে।

বন্ধুগণ,

আমরা সবাই জানি যে কৃষি এক প্রকার রাজ্যের বিষয়। এ বিষয়ে অনেকবার লেখাও হয়েছে যে এই রাজ্যের বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিৎ নয়। কিন্তু আমি কৃষকদের সমস্যার কথা জানি, অনেক বছর ধরে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী রূপে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে জানি, কৃষি ও কৃষকের জন্য রাজ্যের বিশেষ দায়িত্ব অবশ্যই রয়েছে আর এই দায়িত্ব রাজ্যগুলির অবশ্যই পালন করা উচিৎ। আমি একজন মুখ্যমন্ত্রী রূপে এই দায়িত্ব পালনের চেষ্টায় উৎসর্গীকৃত ছিলাম। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে আমি দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে, কৃষি নীতিগুলিকে এবং সেগুলির প্রভাব চাষের ওপর কতটা পড়ে তা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে অনুভব করেছি আর একটু আগে আমাদের কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারজি আমার গুজরাট শাসনকালে কী ধরনের কাজ হয়েছিল তার খুঁটিনাটি বর্ণনা করছিলেন।

একটা সময় ছিল যখন গুজরাটের চাষবাস হাতেগোনা কয়েকটি ফসলের ফলনেই সীমাবদ্ধ ছিল। গুজরাটের একটা বড় অংশে জলের অভাবে কৃষকরা চাষবাস ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই সময় আমরা একটাই মন্ত্র নিয়ে এগিয়েছি, কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে এগিয়েছি আর সেই মন্ত্রটি হল – পরিস্থিতি বদলাতে হবে, আমরা সবাই মিলে অবশ্যই পরিস্থিতি বদলাব। সেজন্য আমার শাসনকালে আধুনিক কৃষি-বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার শুরু করেছিলাম। আজ দেশের কৃষি এবং বাগিচা চাষে গুজরাটের একটি বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে। আজ গুজরাটে ১২ মাস চাষের কাজ চলে। কচ্ছ-এর মতো ঊষর এলাকাতেও আজ এমন সব ফল, সব্জির ফলন হয়, যেগুলি সম্পর্কে এক সময় ভাবাই যেত না। আজ কচ্ছ-এর মরুভূমি থেকেও সেখানকার কৃষিজ পণ্য বিদেশে রপ্তানি হওয়া শুরু হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

শুধুই ফলনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, গোটা গুজরাটে কোল্ড চেনের একটা বড় নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। এরকম অনেক প্রচেষ্টার মাধ্যমে কৃষির পরিধিকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কৃষি সংশ্লিষ্ট শিল্প এবং কর্মসংস্থানও বৃহৎ মাত্রায় গড়ে উঠেছে। একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্য সরকারের সমস্ত দায়িত্ব থাকে। সেজন্য আমি সেই সময় এসব কাজ করার সুযোগ পেয়েছি আর এর পেছনে খুব পরিশ্রমও করেছি।

ভাই ও বোনেরা,

স্বাধীনতার এই অমৃতকালে কৃষিতে এরকম আধুনিক পরিবর্তনকে আরও বিস্তারিত করার প্রয়োজন রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন শুধু কৃষি নয়, আমাদের সমগ্র বাস্তব্যবস্থার জন্য একটি বড় সমস্যা। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে আমাদের মৎস্য উৎপাদন, পশুদের স্বাস্থ্য এবং উৎপাদনশীলতা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়েছে। এর ফলে, কৃষক এবং মৎসজীবীদেরই সবচাইতে বেশি লোকসানের শিকার হতে হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নতুন ধরনের কীট-পতঙ্গ, নতুন নতুন রোগ, মহামারী – এসব হচ্ছে। এর ফলে, মানুষ এবং পশুধনের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও অনেক বড় বড় সঙ্কট আসছে আর ফসল উৎপাদনও প্রভাবিত হচ্ছে। এই বিষয়গুলি নিয়ে গভীর ও নিয়মিত নিবিড় গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। যখন বিজ্ঞান, সরকার এবং সমাজ মিলেমিশে কাজ করবে, তখন এর ফল আরও ভালো হবে। কৃষক ও বৈজ্ঞানিকদের এরকম মেলবন্ধন নতুন নতুন সমস্যার মোকাবিলায় দেশের শক্তি বাড়াবে। জেলাস্তরে এরকম বিজ্ঞান-ভিত্তিক কৃষি মডেল চাষে আগ্রহী আরও বেশি পেশাদার মানুষেরা কৃষিকে আরও লাভজনক করে তুলবে। আজ জলবায়ু পরিবর্তন থেকে রক্ষা করার জন্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে উৎসাহ যোগাতে যে অভিযানের উদ্বোধন করা হল তার পেছনেও এই ভাবনাই রয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

এখন সেই সময় এসেছে, যখন আমাদের ‘ব্যাক টু বেসিক্স’ আর ‘মার্চ ফর ফিউচার’ - উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে হবে। যখন আমি ‘ব্যাক টু বেসিক্স’-এর কথা বলছি তখন পারম্পরিক কৃষির সেই শক্তিকে বোঝাতে চাইছি, যাতে আজকের অধিকাংশ সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলার সুরক্ষা কবচ ছিল। পারম্পরিক রূপে আমরা কৃষি, পশুপালন এবং মৎস্যপালন একসঙ্গেই করছিলাম। তাছাড়া, একসঙ্গে একই ফসলের খেতে একই সময়ে অনেক ধরনের ফসল উৎপন্ন করা যায়। অর্থাৎ, আগে আমাদের দেশের কৃষি মাল্টি-কালচার ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে এটা মোনো-কালচারে পরিবর্তিত হয়ে গেছে। ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির কারণে কৃষকরা একটাই ফসল উৎপাদন শুরু করেছেন। আমাদের সবাইকে মিলেমিশে এই পরিস্থিতিকে বদলাতেই হবে। আজ যখন আবহাওয়া পরিবর্তনের সমস্যা বাড়ছে, তখন আমাদের নিজেদের কাজের গতিকেও বাড়াতে হবে। বিগত বছরগুলিতে এই ভাবনাকে আমরা কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য উৎসাহ যুগিয়েছিলাম। কৃষকদের শুধুই ফসল-ভিত্তিক রোজগার ব্যবস্থা থেকে বাইরে বের করে নানা মূল্য সংযোজন এবং কৃষির অন্যান্য বিকল্পের জন্যও প্রেরণা যোগানো হচ্ছে। এর প্রয়োজন ক্ষুদ্র কৃষকদের ক্ষেত্রে আরও বেশি। সেজন্য আমরা প্রতি ১০০ জন কৃষকের মধ্যে যে ৮০ জন ক্ষুদ্র কৃষক রয়েছেন, তাঁদেরকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এই উদ্যোগে আমাদের কৃষকদের জন্য পশুপালন ও মৎস্যচাষের পাশাপাশি মৌ-পালন, চাষের ক্ষেতেই সৌরশক্তি উৎপাদন, বর্জ্য থেকে সম্পদ আহরণ, ইথানল বায়ো-ফুয়েল-এর মতো বিকল্পও কৃষকদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে ছত্তিশগড় সহ দেশের কৃষকরা দ্রুত এই নতুন নতুন বিষয়গুলিকে আপন করে নিচ্ছেন। প্রত্যেকেই কৃষির পাশাপাশি আরও দু’চারটি ক্ষেত্রে কাজ করার উৎসাহ দেখাচ্ছেন।

বন্ধুগণ,

আবহাওয়ার স্থানীয় পরিস্থিতি অনুসারে ফসলের উৎপাদন আমাদের পারম্পরিক কৃষির আরেকটি বড় শক্তি। খরাক্রান্ত এলাকাগুলিতে সেখানকার উপযোগী ফসলের উৎপাদন হয়, যেসব এলাকায় বেশি বন্যা হয় কিংবা জলের যোগান বেশি থাকে অথবা যে অঞ্চলে বরফ বেশি থাকে, সেইসব এলাকায় সেই ধরনের ফসল উৎপাদন করা হয়। আবহাওয়ার হিসেবে ফলানো এই ধরনের ফসলে পৌষ্টিক মূল্য বেশি থাকে। বিশেষ করে, আমাদের জোয়ার-বাজরার মতো মোটা শস্যে এই পৌষ্টিক মূল্য অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলেন যে এগুলি আমাদের স্বাস্থ্যকে অনেক বেশি শক্তি যোগায়। সেজন্য আজকের লাইফস্টাইলে যে ধরনের রোগ বাড়ছে সেগুলির দিকে তাকিয়ে আমাদের এই জোয়ার-বাজরা জাতীয় শস্যের চাহিদা অনেক বেশি বেড়েছে।

আমার কৃষক ভাই ও বোনেরা,

আপনারা জেনে খুশি হবেন যে ভারতের প্রচেষ্টাতেই রাষ্ট্রসঙ্ঘ আগামী বছর অর্থাৎ, ২০২৩-কে ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ মিলেটস ঘোষণা করেছে। আমাদের জোয়ার-বাজরা জাতীয় মোটা শস্য চাষের পরম্পরা আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরার এবং নতুন বাজার অন্বেষণের এটা একটা বড় সুযোগ। কিন্তু তার জন্য এখন থেকে জোরকদমে কাজ করতে হবে। আজ এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমি দেশের সমস্ত সামাজিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি আবেদন রাখব, আপনারাও মিলেটস-এর ফুড ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করুন, মিলেটস-এর নতুন নতুন খাদ্য বৈচিত্র্য কিভাবে তৈরি করা যায় তার প্রতিযোগিতা করুন। ২০২৩-এ যদি আন্তর্জাতিক স্তরে আমাদের মিলেট চাষকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে হয়, তাহলে এগুলি নিয়ে নতুন নতুন গবেষণা করতে হবে আর জনগণের মধ্যেও সচেতনতা বাড়াতে হবে। মিলেটস সংক্রান্ত নতুন ওয়েবসাইটও চালু করা যেতে পারে, যেখানে মানুষ মিলেটস নিয়ে নানা ধরনের আলাপ-আলোচনা ও চর্চা করবে। কোন জিনিসটা কিভাবে তৈরি হতে পারে, তা থেকে কী লাভ হবে, তার একটি সচেতনতা অভিযান শুরু হতে পারে। আমি মনে করি এর থেকে কী কী লাভ হবে সেই সংক্রান্ত আকর্ষণীয় সমস্ত তথ্য যদি আমরা সেই ওয়েবসাইটগুলিতে রাখি তাহলে অনেক মানুষ এগুলির সঙ্গে যুক্ত হবেন। আমি সমস্ত রাজ্যগুলিকেও অনুরোধ জানাব যে, আপনাদের রাজ্যের কৃষি বিভাগ, আপনাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আপনাদের বৈজ্ঞানিক ও অগ্রগামী কৃষকদের নিয়ে রাজ্যভিত্তিক এরকম টাস্ক ফোর্স গড়ে তুলুন। ২০২৩-এ যখন গোটা বিশ্ব এই মিলেটস বর্ষ পালন করবে তখন ভারত সেখানে কিভাবে যোগদান করবে, কী কী অবদান রাখবে, ভারত কিভাবে নেতৃত্ব দেবে, ভারতের কৃষকরা কিভাবে সেখান থেকে লাভবান হবেন – এসব কিছু মাথায় রেখেই এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

বন্ধুগণ,

বিজ্ঞান ও গবেষণার মাধ্যমে নানা সমাধান এখন মিলেটস এবং অন্যান্য শস্যের উৎকর্ষ বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, যাতে দেশের ভিন্ন ভিন্ন অংশে স্থানীয় পরিবেশ ও প্রয়োজনীয়তা অনুসারে এগুলিকে ফলানো যায়! আজ যে শস্যগুলির নতুন নতুন প্রজাতির উদ্বোধন করা হল, সেগুলিতে এই ধরনের প্রচেষ্টার ঝলকই আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমাকে এ কথা বলা হয়েছে যে, এই সময় দেশে ১৫০-রও বেশি ক্লাস্টারে সেখানকার পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী কৃষি প্রযুক্তির বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা ও প্রয়োগ চলছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের যে কৃষির পুরনো পরম্পরা রয়েছে তার সঙ্গে ‘মার্চ টু ফিউচার’ যুক্ত করাও ততটাই প্রয়োজনীয়। যখন আমরা ভবিষ্যতের কথা বলি, তখন তার মাধ্যম হয় আধুনিক প্রযুক্তি, কৃষির নতুন নতুন সরঞ্জাম। আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম এবং উপকরণগুলিকে উৎসাহ যোগানোর প্রচেষ্টাগুলির পরিণাম আজ পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভারতের ভবিষ্যৎ আসবে স্মার্ট মেশিনগুলির মাধ্যমে, স্মার্ট সরঞ্জামের মাধ্যমে। দেশে প্রথমবার গ্রামের সম্পত্তি ও ব্যক্তির সম্পত্তির নথি তৈরির ক্ষেত্রে ড্রোনের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা আমরা দেখছি। এখন কৃষির ক্ষেত্রেও আধুনিক ড্রোন এবং সেন্সরের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এগুলির মাধ্যমে কৃষি সংক্রান্ত উচ্চমানের তথ্য আমরা পেতে পারি। এটি কৃষির সমস্যাগুলির রিয়েল টাইম সমাধান খুঁজে বের করতেও সাহায্য করবে। সম্প্রতি চালু করা নতুন ড্রোন নীতি এক্ষেত্রে আরও সহায়ক প্রমাণিত হবে।

বন্ধুগণ,

বীজ থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত যে ইকো-সিস্টেম রয়েছে, দেশ তাকে যেভাবে গড়ে তুলছে তা থেকে আমাদের ক্রমাগত আধুনিক হয়ে উঠতে হবে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং ব্লক চেন টেকনলজি চাহিদা ও সরবরাহ সংক্রান্ত প্রতিকূলতাগুলি দূর করার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। আমাদের এ ধরনের আবিষ্কার, এ ধরনের স্টার্ট-আপগুলিকে প্রোমোট করতে হবে যা এই প্রযুক্তিগুলিকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিতে পারে। দেশের প্রত্যেক কৃষক, বিশেষ করে ক্ষুদ্র কৃষকরা এই নতুন উপকরণগুলি ও নতুন নতুন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করবেন। তবেই কৃষিক্ষেত্রে বড় বড় পরিবর্তন আসবে। কৃষকদের হাতে কম দামে আধুনিক প্রযুক্তি তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্টার্ট-আপগুলির বড় ভূমিকা পালনের এটাই মস্ত বড় সুযোগ। আমি দেশের যুব সম্প্রদায়কে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানাব।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার এই অমৃতকালে আমাদের কৃষি-সংশ্লিষ্ট আধুনিক বিজ্ঞানকে গ্রামে গ্রামে, বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে এর জন্য কিছু বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমাদের এখন চেষ্টা করতে হবে যে মিডল স্কুল লেভেল পর্যন্ত কৃষির সঙ্গে যুক্ত গবেষণা ও প্রযুক্তি যেন আমাদের বিদ্যালয় পাঠ্যক্রমের অংশ হয়ে ওঠে। বিদ্যালয় স্তরেই আমাদের ছাত্রছাত্রীদের সামনে যদি এই বিকল্প থাকে যাতে তারা কৃষিকে জীবিকা হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে পারে – তাহলে খুব ভাল হবে।

বন্ধুগণ,

আজ আমরা যে অভিযান শুরু করেছি, একে গণ-আন্দোলনে পরিবর্তিত করার জন্য আমাদের সকলকে নিজেদের অংশীদারিত্ব সুনিশ্চিত করতে হবে। দেশকে অপুষ্টি থেকে মুক্তি দেওয়ার যে অভিযান চলছে, জাতীয় পোষণ মিশনকেও এই অভিযান আরও ক্ষমতায়িত করবে। এখন তো সরকারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সরকারি প্রকল্পগুলির মাধ্যমে গরীবদের, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের, ফর্টিফায়েড চাল দেওয়া হবে। সম্প্রতি আমি অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে আলোচনায় অপুষ্টি বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেক খেলোয়াড়কে অনুরোধ জানিয়েছিলাম যাতে তাঁরা প্রত্যেকে আগামী ১-২ বছরে কম করে ৭৫টি বিদ্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টি সম্পর্কে সচেতন করেন, খেলাধূলা নিয়ে কথা বলেন, শারীরিক কসরত নিয়ে কথা বলেন। আজ আমি সমস্ত শিক্ষাবিদ, সমস্ত কৃষি বৈজ্ঞানিক, সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে বলব যে আপনারাও স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের জন্য নিজেদের লক্ষ্য স্থির করুন। প্রত্যেকেই ৭৫ দিনের অভিযানে অংশগ্রহণ করুন। ৭৫টি গ্রামকে দত্তক নিয়ে পরিবর্তনের অভিযান শুরু করুন। ৭৫টি বিদ্যালয়কে বেছে নিয়ে সচেতনতার অভিযান চালান। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে উৎসাহ যোগান। এরকম একটি অভিযান যদি দেশের প্রত্যেক জেলায় নিজস্ব স্তরে এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্তরে শুরু হয়, তাহলে নতুন নতুন ফসল, ফর্টিফায়েড বীজ, জলবায়ু পরিবর্তন থেকে রক্ষার নানা উপায় ইত্যাদি বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করা যেতে পারে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যে আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় একাজে আমরা সফল হবো। আমি যে কথাটি বলতে চাইছি, সকলের প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকলের প্রচেষ্টা আবহাওয়া পরিবর্তন থেকে দেশের কৃষিকে বাঁচাবে, কৃষকদের সমৃদ্ধি এবং দেশের স্বাস্থ্যের সুরক্ষাও সুনিশ্চিত করবে। আরেকবার সমস্ত কৃষক বন্ধুদের নতুন ক্রপ ভ্যারাইটি এবং নতুন জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জন্য আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভকামনা। আরেকবার যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আজ পুরস্কার পেল, তাঁদেরকে অভিনন্দন জানাই - যাতে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা, বৈজ্ঞানিক মন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিই আমাদের সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উৎকৃষ্ট পথ দেখাতে পারে। আপনাদের সবার উদ্দেশে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভকামনা!

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

CG/SB/DM/




(Release ID: 1761584) Visitor Counter : 435