প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

‘প্রবুদ্ধ ভারত’এর ১২৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য

Posted On: 31 JAN 2021 3:46PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৩১ জানুয়ারি, ২০২১
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ স্বামী বিবেকানন্দের শুরু করা রামকৃষ্ণ ঐতিহ্যের মাসিক পত্রিকা ‘প্রবুদ্ধ ভারত’এর ১২৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জানান, স্বামী বিবেকানন্দ আমাদের চেতনা প্রকাশের জন্য এই পুস্তিকার নাম রেখেছিলেন প্রবুদ্ধ ভারত। স্বামীজী রাজনৈতিক বা আঞ্চলিক সত্তাকে দূরে সরিয়ে রেখে একটি ‘জাগ্রত ভারত’ তৈরি করতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘স্বামী বিবেকানন্দ ভারতকে এমন এক সাংস্কৃতিক চেতনা হিসেবে দেখেছেন যা বহু শতাব্দী ধরে অবস্থান করছে এবং জীবিত রয়েছে’।
 
মহীশুরের মহারাজা এবং স্বামী রামকৃষ্ণনন্দকে লেখা স্বামী বিবেকানন্দের বেশ কয়েকটি চিঠির উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দরিদ্রদের ক্ষমতায়ণের ক্ষেত্রে স্বামীজীর দৃষ্টিভঙ্গিতে দুটি সুস্পষ্ট চিন্তাভাবনার প্রতিফলন তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমত স্বামীজী চেয়েছিলেন যদি গরীবরা সহজেই ক্ষমতায়ণের পথে যেতে না পারেন তাহলে তাদের ক্ষমতায়ণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, স্বামীজী ভারতের দরিদ্রদের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘তাদের ধারণা দেওয়া উচিত; তাদের চারপাশের বিশ্বে যা চলছে সে সম্পর্কে তাদের চোখ খুলে দেওয়া দরকার; এবং তার পরে তারা নিজস্ব পরিত্রাণের পথ খুঁজে বের করার কাজ করবে’। প্রধানমন্ত্রী এই পদক্ষেপের বিষয়ে জোর দিয়ে জানান, যে ভারত আজ এই পথেই এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি দরিদ্ররা ব্যাঙ্কের সুবিধা গ্রহণ করতে না পারেন তবে ব্যাঙ্কগুলিকে অবশ্যই দরিদ্রদের কাছে পৌঁছতে হবে। জনধন যোজনার মাধ্যমে এটাই করা হয়েছে। দরিদ্ররা যদি বীমার সুবিধা গ্রহণ করতে না পারেন তাহলে অবশ্যই বীমার সুবিধা দরিদ্রদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। জন সুরক্ষা প্রকল্পগুলির মাধ্যমে এটিই করা হচ্ছে। যদি দরিদ্ররা স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা গ্রহণ করতে না পারেন তাহলে অবশ্যই তাদের স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ গ্রহণের সুবিধে করে দিতে হবে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে এটাই করা হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সংযোগের সুযোগ সুবিধা দেশের প্রতিটি প্রান্তে, বিশেষত দরিদ্রদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এতে দরিদ্রদের মধ্যে আকাঙ্খা প্রজ্জ্বলিত হয়েছে এবং এই আকাঙ্খাগুলিই দেশকে বৃদ্ধির পথে চালিত করেছে’।
 
শ্রী মোদী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীতে ভারতের কার্যকরি অবস্থান সঙ্কটের মুহূর্তে নিরুপায়ীদের সাহায্য করার স্বামীজীর চিন্তাভাবনার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। একইভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা নিয়ে ভারত অভিযোগ করার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক সৌরজোট গঠন করে এই সমস্যার সমাধানের পথে এগিয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, ‘এটিই হলো স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিভঙ্গিগঠিত প্রবুদ্ধ ভারত। এ এমন এক ভারত যা বিশ্বের সমস্যার সমাধানের পথ দেখাচ্ছে’। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের বড় স্বপ্ন ছিল, কারণ ভারতের যুব সমাজের প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস ছিলো। তিনি ভারতের যুবকদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের পাওয়ার হাউজ হিসেবে দেখেছেন। আজ ভারতের বাণিজ্যিক নেতৃত্বে, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, টেকনোক্র্যাট, পেশাদার, বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক এবং আরও অনেকের মধ্যে এই উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। প্রধানমন্ত্রী যুবদের বেদান্ত সম্পর্কে স্বামীজীর বক্তৃতাগুলি অনুসরণ করে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন, যেখানে স্বামীজী অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং সেগুলিকে সেখার রেখাচিত্রের অঙ্গ হিসেবে দেখার বিষয়ে কথা বলেছেন। দ্বিতীয়ত বিষয়টি হলো যে, মানুষের মনের মধ্যে প্রবেশ করাতে হবে : নির্ভিক হওয়া এবং আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ হওয়া। শ্রী মোদী যুবদের স্বামী বিবেকানন্দকে অনুসরণ করে পথ চলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা বিশ্বের জন্য মূল্যবান কিছু তৈরি করতে পারবে তারাই চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে, স্বামী বিবেকানন্দ আধ্যাত্মিক ও অর্থনৈতি অগ্রগতিকে কখনই পরস্পরের স্বতন্ত্র রূপে দেখেন নি। সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি সেই পদ্ধতির বিরুদ্ধে ছিলেন যেখানে লোকেরা দারিদ্রকে রোমান্টিক করে তোলে। স্বামীজীকে আধ্যাত্মিক গুরু ও এক উচ্চ আত্মার মানুষ হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী জানান যে দরিদ্রদের জন্য অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধ্যান ধারনা কখনই স্বামীজী ত্যাগ করেন নি।
 
শ্রী মোদী পরিশেষে জানান যে প্রবুদ্ধ ভারত ১২৫ বছর ধরে স্বামীজীর চিন্তাভাবনা প্রসারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যুব সমাজকে শিক্ষিত করে তোলা ও দেশকে জাগ্রত করে তোলার লক্ষ্যে এটি হল এক দর্শনের ভিত, সেই লক্ষ্যেই তারা কাজ করছে। স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনাগুলি অবিস্মরণীয় করে তোলার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
***
 
 
 
CG/SS/SKD


(Release ID: 1693797) Visitor Counter : 178