অর্থমন্ত্রক

শ্রম সংস্কারের ইতিহাসে ২০১৯ ও ২০২০ যুগান্তকারী বর্ষ; ২৯টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনের সংযুক্তিকরণ , যুক্তিসঙ্গত ও সরলীকরণের মধ্য দিয়ে ৪টি শ্রম কোড তৈরি করা হয়েছে

Posted On: 29 JAN 2021 3:42PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৯ জানুয়ারি, ২০২১

 

২০২০-২১ অর্থবর্ষের আর্থিক সমীক্ষাতে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে শ্রম সংস্কারের ইতিহাসে ২০১৯ ও ২০২০ যুগান্তকারী বর্ষ। ২৯টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনের সংযুক্তিকরণ ও সরলীকরণের মাধ্যমে ৪টি শ্রম কোড তৈরি করা হয়েছে। এগুলি হ’ল – ২০১৯ – এর মজুরি সংক্রান্ত কোড; ২০২০-র শিল্প সংস্থা সম্পর্কিত কোড; ২০২০-র কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত কোড এবং ২০২০-র সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোড। কেন্দ্রীয় অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন আজ সংসদে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের আর্থিক সমীক্ষা পেশ করার সময় এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানিয়েছেন, পরিবর্তিত শ্রম বাজার এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী, যেমন – পরিযায়ী শ্রমিক ও স্বনির্ভর কর্মীদের একটি আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য এই কোড সহায়ক হবে।

শহরাঞ্চলের অস্থায়ী কর্মীরা কোভিড-১৯ এর কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত। নির্দিষ্ট সময় অন্তর কর্মী গোষ্ঠীর ওপর যে সমীক্ষা হয়, সেই পিএলএফএস অনুসারে, দেশের শহরাঞ্চলে মোট কর্মী গোষ্ঠীর ১১.২ শতাংশ অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। ৬৩.১৯ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ২০২০’র মে-অগাস্টের মধ্যে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে সফর করেছেন। তবে, যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য না থাকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে কতজন কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।  কেন্দ্র মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের কল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

পিএলএফএস-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে ৫১ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ কর্মক্ষম। এদের মধ্যে ৪৮ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ কর্মরত এবং ৩ কোটি মানুষ কর্মহীন। ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের মধ্যে দেশে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ৮৫ লক্ষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের মধ্যে ৪৬ লক্ষ শহরের এবং ৩৯ লক্ষ গ্রামের। ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৮-১৯ এর মধ্যে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ৭৯ লক্ষ হ্রাস পেয়েছে। এরা বেশির ভাগই গ্রামাঞ্চলের মহিলা। তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে কর্মসংস্থান বেশি সৃষ্টি হয়েছে।

শিল্প-ভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, কৃষি ক্ষেত্রে ২১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ যুক্ত। অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারী শিল্প সংস্থাগুলিতে ৬ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ কর্মরত। উৎপাদন শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় ৫ কোটি ৯ লক্ষ এবং নির্মাণ শিল্পে ৫ কোটি ৭ লক্ষ মানুষ কর্মরত। কৃষি ক্ষেত্র, উৎপাদন, পরিবহণ ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০১৮-১৯ এ কর্মরত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পিএলএফএস অনুসারে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়কালের তুলনায় ২০২০-র জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়কালে স্থায়ী বেতনভুক কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সমীক্ষা অনুসারে, কর্মচারী ভবিষ্যনিধি তহবিল সংগঠনে ২০২০-র ২০শে ডিসেম্বরের হিসাব অনুসারে, ৭৮ লক্ষ ৫৮ হাজার নতুন শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করেছেন। ২০১৮-১৯ এর নিরিখে এই সংখ্যা বেশি। আর্থিক সমীক্ষা অনুসারে, ভারতে কর্মহীনতার হার হ্রাস পেয়েছে। ২০১৭-১৮ সালে যেখানে এই পরিমাণ ছিল ৬.১ শতাংশ, সেখানে ২০১৮-১৯ সালে তা কমে হয়েছে ৫.৮ শতাংশ। তবে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই হার ভিন্ন। অরুণাচল প্রদেশ, কেরল, মণিপুর ও বিহারে কর্মহীন যুবক-যুবতীর সংখ্যা বেশি। তুলনামূলকভাবে গুজরাট, কর্ণাটক, পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে তা কম।

প্রযুক্তির কারণে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, ওলা, উবের, আর্বান ক্ল্যাপ, জোম্যাটো, সুইগির মতো ই-কমার্স ও অনলাইন সংস্থায় প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীকালে গিগ অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অনলাইনে খুচরো ব্যবসা-বাণিজ্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। লকডাউনের সময় বিভিন্ন সংস্থা তাদের কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে সুযোগ করে দেওয়ায় ফ্রি-ল্যান্সার এবং আউটসোর্সে যুক্ত কর্মী সংখ্যা কমেছে।

আর্থিক সমীক্ষায় আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনায় ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ঘোষিত হয়েছে। এই প্রকল্পে কর্মচারী ভবিষ্যনিধি তহবিলে বিভিন্ন সংস্থা ও কর্মচারীদের সুবিধার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমীক্ষায় সংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্যও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে, ৪ কোটি ৩০ লক্ষ কর্মচারী, সংস্থার মালিক এবং ৬ লক্ষ ৫০ হাজার সংস্থা মূলধনজনিত সঙ্কট থেকে বিশেষ সুবিধা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজে পরিযায়ী শ্রমিক সহ নির্মাণ কর্মীদের জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ৩১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ২ কোটি কর্মীকে মাসিক ১হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা অর্থ সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। এর মোট পরিমাণ ৪৯৭৩ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা।

***

 

 

CG/CB/SB


(Release ID: 1693421) Visitor Counter : 632