প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী বয়সোপযোগী ফিটনেসের নিয়মের সূচনা করেছেন


ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের প্রথম বার্ষিকীতে ফিটনেসে উৎসাহী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মতবিনিময়

প্রত্যেক বয়সের উপযোগী ফিটনেসের বিষয়ে উৎসাহিত করা এবং বিভিন্ন উপায়ে ফিট থাকার বিষয় নিয়ে ফিট ইন্ডিয়া ডায়ালগে জোর দেওয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 24 SEP 2020 5:23PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০
 
 
 
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বয়সোপযোগী ফিটনেস সংক্রান্ত নিয়মের সূচনা করেছেন। আজ তিনি ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের প্রথম বার্ষিকীতে অংশগ্রহণ করেন। শ্রী মোদী বিভিন্ন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, ফিটনেস বিশেষজ্ঞ এবং অন্যদের সঙ্গে ফিট ইন্ডিয়া ডায়ালগ অনুষ্ঠানে মতবিনিময় করেছেন। ভার্চ্যুয়ালি এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানটিতে মুক্ত পরিবেশে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের জীবনের অভিজ্ঞতা এবং ফিট থাকার কৌশল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভাগ করে নেন।  
 
প্যারা অলিম্পিকে স্বর্ণ পদক বিজয়ী, জ্যাভলিন থ্রোয়ার দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ঃ- 
 
প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব প্যারা অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় ভারতের সাফল্য এনে দেওয়ার জন্য শ্রী দেবেন্দ্রর প্রশংসা করেছেন। দেবেন্দ্র কিভাবে তাঁর সমস্যাগুলিকে মোকাবিলা করে একজন বিশ্বখ্যাত ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠেছেন, তিনি সে বিষয়ে জানতে চান। 
 
দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়া বৈদ্যুতিক শক খাওয়ার পর যখন তাঁর একটি হাত হারিয়েছিলেন, সেই সময়ের কঠিন পরিস্থিতির কথা জানান। তাঁর মা তাঁকে অন্যান্য স্বাভাবিক শিশুর মতো বেড়ে ওঠা এবং ফিট থাকার বিষয়ে উৎসাহ দিতেন।  
 
প্রধানমন্ত্রীর অপর একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান যে কিভাবে তিনি তাঁর কাঁধে চোট পাওয়ার সমস্যাটিকে মোকাবিলা করেছেন । এক সময়ে তিনি খেলাধূলা থেকে অবসর নেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছিলেন – এরকম অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একজনকে তাঁর মানসিক এবং শারীরিক সমস্যাগুলিকে অতিক্রম করতে হবে বলে তিনি জানান। 
 
শ্রী ঝাঝারিয়া  যখন আঘাত পেয়েছিলেন, সেই সময় ফিট থাকার জন্য কি কি করতেন, তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি, কয়েকটি ব্যায়াম  তিনি এই অনুষ্ঠানে দেখিয়েছেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী এই প্যারা অলিম্পিক স্বর্ণ পদক বিজয়ীর এ ধরনের অনুপ্রেরণাদায়ক কাজের প্রশংসা করেছেন এবং তাঁর মা নিজের ৮০ বছর বয়সে যেভাবে  নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন, শ্রী মোদী সেই জন্য  তাঁর মাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 
 
ফুটবলার আফসান আশিকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ঃ- 
 
জম্মু ও কাশ্মীরের এই গোলকিপার জানিয়েছেন, প্রত্যেক মহিলার নিজেকে ফিট রাখা উচিৎ। তিনি একাধারে মায়ের ভূমিকা পালন করেন,  অন্যদিকে, পরিবারের কাজেও নিয়োজিত থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, মহেন্দ্র সিং ধোনির শান্তভাবে কাজ করার ধারায় তিনি অনুপ্রাণিত হন। প্রতিদিন সকালে তিনি ধ্যান করে নিজেকে শান্ত ও সমাহিত রাখেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, জম্মু ও কাশ্মীরের জনসাধারণ প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও কিভাবে নিজেদের ফিট রাখেন? আফসান জানান, তাঁরা পাহাড়ে উঠে তাঁদের ফিটনেস – এর মাত্রাকে বাড়ান। তিনি আরও বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের জন সাধারণ যেহেতু অনেক উঁচুতে থাকেন, তাই তাঁদের ফুসফুসের ক্ষমতা বেশি। বিভিন্ন শারীরিক পরিশ্রম সত্ত্বেও তাঁদের কোনও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হয় না। 
 
গোলকিপার হিসাবে মানসিকভাবে তৎপর থাকা এবং শারীরিকভাবে নমনীয় থাকার প্রয়োজনীতার কথা আফসান জানিয়েছেন। 
 
অভিনেতা, মডেল মিলিন্দ সুমনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ঃ- 
 
মিলিন্দ সুমনকে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া মিলিন্দ’ বলে সম্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘মেক ইন  ইন্ডিয়া’-র একজন সক্রিয় সমর্থক হলেন মিলিন্দ সুমন। ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে, তাঁরা এখন নিজেদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন বলে মিলিন্দ সুমন উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি তাঁর মার ফিটনেস- এর কথা উল্লেখ করেন। সুমন জানান, আগে গ্রামের লোকেরা ৪০-৫০ কিলোমিটার হেঁটে জল নিয়ে আসতেন, আর এভাবেই তাঁরা ফিট থাকতেন। কিন্তু, বর্তমান যুগে শহরে প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আমাদের জীবনযাত্রা অলস হয়ে যাচ্ছে,  এই কারণে আমরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।  
 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ফিটনেস – এর কোনও বয়স থাকে না এবং মিলিন্দ সুমনের মা ৮১ বছর বয়সেও পুশ-আপ এর মতো নানারকম শারীরিক কসরত করায় তিনি তাঁর প্রশংসা করেন।  
 
মিলিন্দ সুমন বলেন, প্রত্যেকেই নিজেকে সুস্থ ও ফিট রাখতে পারেন, তার জন্য শুধুমাত্র আত্মপ্রত্যয় এবং জেদের প্রয়োজন। মিলিন্দ,  প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কিভাবে তিনি সমালোচনার মোকাবিলা করেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে এবং দায়িত্ব সহকারে প্রত্যেকের জন্য সেবার মানসিকতা থাকলে কখনও ক্লান্তি আসে না। তিনি বলেছেন, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর ভাবনাচিন্তা তৈরি হয়। কিন্তু প্রত্যেকের নিজের সঙ্গেই প্রতিযোগিতা করা উচিৎ, অন্যের সঙ্গে নয়।  
 
পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবাকরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ঃ-
 
রুজুতা দিবাকর অতীতের খাদ্যাভাসকে ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। ডাল, ভাত এবং ঘি খাওয়ার কথা তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, আমরা যদি স্থানীয় স্তরে উৎপাদিত পণ্যগুলি খাই, আমাদের কৃষকরা ও স্থানীয় অর্থনীতি তাতে উপকৃত হবে। ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মনোভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 
 
এই প্রসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলেছেন, যেখানে মানুষ কিভাবে ঘি তৈরি করতে হয়, তা শিখছেন এবং হলুদ – দুধের উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারছেন।  
 
আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় – এর ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ বলে শ্রী দিবাকর জানিয়েছেন। প্রত্যেকটি অঞ্চলের নিজস্ব খাদ্যাভাস রয়েছে এবং বাড়ির খাবার সবচেয়ে ভালো। আমরা যদি প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াকরণজাত খাবার খাওয়া বন্ধ করি এবং বাড়িতে তৈরি খাবার বেশি খাই – তা হলে আমরা অনেক উপকার পাবো। 
 
স্বামী শিবাধ্যানাম সরস্বতীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ঃ- 
 
স্বামী শিবাধ্যানাম সরস্বতী জানিয়েছেন, সর্বজনহিতায় সর্বজনসুখায় মন্ত্রে তিনি অনুপ্রাণিত। তাঁর গুরুরা কিভাবে যোগাভ্যাসের প্রয়োজনীয়তার প্রসার ঘটিয়েছেন, সে বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, প্রাচীন যুগে গুরুকূলের গুরু-শিষ্য পরম্পরায় একজন ছাত্রের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হ’ত।  
 
যোগকে তিনি শুধু ব্যায়াম বলে উল্লেখ করেননি, বরং এটিকে জীবনের একটি ধারা বলে বর্ণনা করেছেন। গুরুকূলের সময় থেকে যোগাভ্যাস করা হ’ত। 
 
পরিবর্তিত জীবনধারায় যোগাভ্যাসের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেছেন। 
 
বিরাট কোহলির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ঃ- 
 
প্রধানমন্ত্রী বিরাট কোহলির সঙ্গে তাঁর ফিটনেস – এর রুটিনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিরাট বলেছেন, মানসিক শক্তির সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। 
 
প্রধানমন্ত্রী যখন বিরাটের কাছে জানতে চান, দিল্লির বিখ্যাত ছোলে-বাটোরা খাওয়া তিনি কিভাবে ছেড়েছেন, উত্তরে বিরাট জানান,  ঘরে তৈরি সাধারণ রান্না,  নিয়মানুবর্তী খাদ্যাভাসকে বজায় রাখতে সাহায্য করে। আর এর সাহায্যেই ফিটনেস – এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
 
শ্রী মোদী জানতে চান, বিরাট কিভাবে ক্যালোরি মেপে খাওয়া-দাওয়া করেন। উত্তরে বিরাট জানিয়েছেন, খাবার হজম করার জন্য শরীরকে সময় দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ইয়ো ইয়ো টেস্টের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং ফিটনেস – এর সংস্কৃতিকে ফিরে আনার কথা উল্লেখ করেছেন। শ্রী মোদী যখন জানতে চান, বিরাট কেন ক্লান্তি অনুভব করেন না – উত্তরে শ্রী কোহলি বলেছেন, ভালো ঘুম, খাবার এবং ফিটনেস – এর মাধ্যমে এক সপ্তাহের মধ্যে শরীর চাঙ্গা হয়ে যায়। 
 
শিক্ষাবিদ মুকুল কানিতকরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ঃ- 
 
মুকুল কানিতকর জানিয়েছেন, ফিটনেস শুধুমাত্র শরীরের জন্যই প্রযোজ্য নয়, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্যও তা সমান গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতার ওপর তিনি জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সূর্য নমস্কারের বিষয়ে প্রচার চালানোয় তিনি তাঁর প্রশংসা করেছেন। শ্রীমদ্ভগবদগীতাকে তিনি দু’জন ফিট মানুষের মধ্যে আলোচনা বলে উল্লেখ করেছেন।  
 
২০২০-র জাতীয় শিক্ষা নীতিতে ফিটনেস-কে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করায় শ্রী কানিতকর প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। এর ফলে, ফিট ইন্ডিয়া গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রত্যেকে অনুপ্রাণিত হবেন। তিনি বলেছেন, ফিটনেস হল ভাবনা, বুদ্ধি এবং চিন্তার সমন্বয়। 
 
প্রধানমন্ত্রীর সমাপ্তি সূচক বক্তব্যঃ- 
 
প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষে বলেছেন, প্রতিটি বয়সের উপযোগী ফিটনেস – এর বিষয়ে ফিট ইন্ডিয়া ডায়ালগ জোর দিয়েছে। এর ফলে, বিভিন্ন উপায়ের ফিটনেস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। 
 
শ্রী মোদী বলেছেন, দেশ ,  ফিটনেস – এর ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট শুরু হওয়ার পর স্বাস্থ্য ও ফিটনেস – এর বিষয়ে সচেতনতা দিন দিন বাড়ছে। যোগ, ব্যায়াম, হাঁটাচলা, দৌড়ানো, খাদ্যাভাস, স্বাস্থ্যকর জীবনশৈলী আমাদের ভাবনাচিন্তার মধ্যে জায়গা করে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট করোনার এই সময়ে বিভিন্ন বিধিনিষেধ সত্ত্বেও তার প্রাসঙ্গিকতা উপলব্ধি করিয়েছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজ বিশ্ব জুড়ে ফিটনেস – এর বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা হয়েছে। খাদ্যাভাস, শারীরিক তৎপরতা এবং স্বাস্থ্যের ওপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুরুত্ব দিয়েছে। তারা শারীরিক কর্মতৎপরতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে। আজ অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক দেশ ফিটনেস – এর বিষয়ে নতুন লক্ষ্য ধার্য করেছে এবং তারা এই বিষয়ে কাজ করে চলেছে। বর্তমানে এ বিষয়ে বহু দেশে ব্যাপক প্রচার চলছে। আর তাই, আরও বেশি সংখ্যক নাগরিক তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যায়ামকে যুক্ত করেছেন। 
 
 
 
 
CG/CB/SB



(Release ID: 1658862) Visitor Counter : 250