কৃষিমন্ত্রক

আত্মনির্ভর ভারত অভিযান/কৃষির আওতায় কৃষক কল্যাণে কৃষি সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি বিভাগ একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে

Posted On: 08 AUG 2020 1:02PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী, ৮ আগস্ট, ২০২০

 

 


    কৃষি ক্ষেত্রের সুস্থায়ী উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হল কৃষিতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি। এর সাহায্যে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, ফসলের ক্ষতির পরিমান কমে এবং কৃষিক্ষেত্রে খরচ হ্রাস পায়। কৃষিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম প্রাকৃতিক সম্পদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যয় হ্রাস করে। ভারত সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক '#আত্মনির্ভর কৃষি'র আওতায় কৃষি সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি বিভাগ একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।


    দেশে কৃষিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম উন্নয়নের দিকে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে একাধিক উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। এরই অঙ্গ হিসেবে ২০১৪ সালের এপ্রিলে কৃষিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের সুবিধার্থে একটি প্রকল্প  শুরু করা হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫৩৩ কোটি টাকা রাজ্য সরকারগুলিকে মঞ্জুর করা হয়েছে।


    দেশের উত্তরাঞ্চলে পরিবেশ দূষণে অন্যতম প্রধান কারণ হল ধানের খড় পোড়ানো। পাঞ্জাব, হরিয়ানায় বর্তমানে রবি শস্য চাষের জন্য জমি পরিষ্কার করে ধানের খড় পোড়ানোর প্রবণতা প্রচুর পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ এইসব রাজ্যে ফসল তোলার পর ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে অল্প সময়ে পরবর্তী ফসল চাষের জন্য জমিগুলিকে প্রস্তুত করতে হয়। এইদিকে লক্ষ্য রেখে কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক ২০১৮ সালে ধানের খড় বা ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সেখানে কৃষকদের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর জন্য 'কাস্টম হায়ারিং সেন্টার' (সিএইচসি) গড়ে তোলা হয়েছে। এর পাশাপাশি কৃষকদের পৃথকভাবে যন্ত্র কেনার জন্য ভর্তুকিও দেওয়া হচ্ছে। ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যগুলির জন্য মোট ১১৭৮.৪৭ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় বাজেটে এজন্য ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এরমধ্যে ৫৪৮.২০ কোটি টাকা রাজ্যগুলির জন্য মঞ্জুর করা হয়েছে।


    কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক বিভিন্ন ভাষায় 'সিএইচসি-কৃষিতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম' শীর্ষক একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে কৃষকরা তাদের এলাকায় কোথায় 'কাস্টম হায়ারিং সার্ভিস' কেন্দ্র রয়েছে তা জানতে পারবেন। এই অ্যাপটির সাহায্যে ক্ষুদ্র, প্রান্তিক কৃষকরা উচ্চমূল্যের কৃষি যন্ত্রপাতি না কিনেও কৃষি কাজের জন্য ভাড়ার ভিত্তিতে যন্ত্র নিতে পারবেন। এই অ্যাপটির এখন নাম দেওয়া হয়েছে 'ফার্মস-অ্যাপ'।


    কোভিড মহামারী বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নই। কৃষিকাজ ও কৃষকদের ওপরও এই মহামারীর প্রভাব পরেছে। কারণ কোভিডের ফলে লকডাউনের সময় কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারছিলেন না কৃষকরা। রবি ফসলের মরশুমে ফসল কাটার সময় এই লকডাউনের ফলে তাদের বেশ সমস্যায় সম্মুখীন হতে হয়। একইসঙ্গে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত অনেক পরিযায়ী শ্রমিকই লকডাউন ঘোষণা হতেই নিজ নিজ রাজ্যে ফিরে যান। এই পরিস্থিতিতে কৃষি শ্রমিকদের ঘাটতি মেটাতে, রবি ফসল যথাযথ সময় মাঠ থেকে তোলা এবং কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। সরকারের নির্দেশ মেনে লকডাউনের সময় জমিতে কৃষিকাজ পরিচালনা অব্যাহত রাখা হয়। কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাস্টম হায়ারিং সেন্টারের কাজের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু নিয়ম শিথিল করা হয়। কৃষি  সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি মেরামতের দোকান এবং খুচরো যন্ত্রপাতি সরবরাহের ছাড় দেওয়া হয়। এছাড়াও কৃষিকাজের সঙ্গে সরঞ্জামাদি এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্য বা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সরবরাহ সুনিশ্চিত করা হয়। সরকারের ভর্তুকি মূলক কর্মসূচির আওতায় কৃষি উৎপাদনের সাহায্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।


    মূলত চাকরির সন্ধানে শহরের বিভিন্ন সংস্থাগুলিতে অস্থায়ীভাবে কাজ করতে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনেও কোভিড মহামারী প্রভাব ফেলেছে। লকডাউনের কারণে এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয়ে অনেক পরিযায়ী শ্রমিকই তাদের নিজ নিজ রাজ্যে ফিরে গেছেন। এই ধরণের পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তার জন্য কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক এগিয়ে এসেছে। তাদেরকে স্থানীয় এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে 'আত্মনির্ভর ভারত অভিযান/কৃষি' প্রকল্পের আওতায় পরিযায়ী শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অঙ্গ হিসেবে মধ্যপ্রদেশে বুদনি এবং হরিয়ানার হিশারে 'ফার্ম মেশিনারি ট্রেনিং অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট'এ ৮টি কর্মসংস্থানমুখী বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের দক্ষতা অর্জন কর্মসূচির বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকাগুলি পাওয়া যাবে http://farmech.dac.gov.in/ এই ওয়েব পোর্টালে।

 



CG/SS/NS



(Release ID: 1644484) Visitor Counter : 1901