অর্থমন্ত্রক

আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের হাতে অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বিতীয় দফার একগুচ্ছ পদক্ষেপের ঘোষণা

Posted On: 17 APR 2020 3:33PM by PIB Kolkata

নতুনদিল্লি, ১৭ এপ্রিল, ২০২০

 

 

 

‘মৃত্যুর মাঝে প্রাণের স্পন্দন থাকে, অসত্যের মাঝেও সত্য থাকে, অন্ধকারের মাঝেও আলো থাকে।’ -১৯৩১ সালের আক্টোবরে লন্ডনের কিংসলে হলে মহাত্মা গান্ধীর অভিভাষণ থেকে দেওয়া উদ্ধৃতি উল্লেখ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শ্রী শক্তিকান্ত দাস তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বক্তব্য পেশের সময় তিনি জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কোভিড-১৯ সংক্রামিত পরিস্থিতি  নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আমাদের লক্ষ্য হল বিশ্বব্যাপী এই মহামারি থেকে উদ্ভূত আর্থিক অবস্থার মোকাবিলা করা। সমগ্রভাবে অর্থনৈতিক খাতে কিছু জায়গায় বড় ধরনের পতন দেখা যাচ্ছে । একই সঙ্গে অন্ধকারের মধ্যে আশার আলোও নজরে আসছে। তিনি আশাপ্রকাশ করেন, সারা দেশ একজোট হয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবে।   

এই লক্ষ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গড়ে তোলা হবে। যার মাধ্যমে ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যগী, ননব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে মূলধন যোগানো হবে। দীর্ঘমেয়াদী এই লক্ষ্যে ৫০ শতাংশ অর্থ ছোট এবং মাঝারি ননব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থাগুলিকে এবং মাইক্রো ফিনান্স প্রতিষ্ঠানগুলিকে দেওয়া হবে। ৫০ হাজার কোটি টাকা নাবার্ড, স্মল ইন্ডাস্ট্রি ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাঙ্ককে দেওয়া হবে। এর ফলে কোভিড-১৯-এর ফলে সৃষ্ট আর্থিক পরিস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে  মূলধনের ঘাটতি থাকবে না।  

রিভার্স রেপোরেট চার শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে তিন দশমিক সাত পাঁচ শতাংশ করা হচ্ছে। এরফলে ব্যাঙ্কগুলি তাদের বাড়তি মূলধন বিনিয়োগ করতে পারবে এবং বিভিন্ন শিল্পে ঋণ নিতে পারবে।

রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলি কোভিড-১৯-এর ফলে যে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সেই কারণে প্রদেয় অগ্রিম অর্থের সীমা ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

ব্যাঙ্কের অনু্ৎপাদক সম্পদের হিসেব করার সময় মোরাটোরিয়ামের সময়সীমা বাদ দিয়ে সম্পদের শ্রেণীবিন্যাস করা হবে। এর ফলে, ব্যাঙ্কগুলির হাতে যথেষ্ট সম্পদ থাকবে। 

বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে যে সব ঋণ গ্রহিতার  অ্যাকাউন্ট অনু্ৎপাদক সম্পদে পরিণত হতে চলেছে, সেই অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের আরও ৯০ দিন অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে।

সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বাণিজ্যিক এবং সমব্যায় ব্যাঙ্কগুলি যে লাভ করেছে, সেই লভ্যাংশ এই মুহূর্তে দিতে হবে না, এর ফলে ব্যাঙ্কের মূলধন বজায় থাকবে।    

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লিকুইডিটির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাঙ্কগুলির জন্য লিকুইডিটির কভারেজের অনুপাত ১০০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮০ শতাংশে করা হবে। পরর্বতী  পর্যায়ে আবার দু-দফায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।

বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট প্রকল্পগুলির জন্য যে ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে, তাদের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আরও একবছর বাড়ানো হবে।

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের অনুমান ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা আরও বাড়বে। এই আর্থিক মন্দার মধ্যে ভারতের ইতিবাচক বৃদ্ধি হবে এক দশমিক নয় শতাংশ, যা জি-টোয়েন্টি গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ।

আর.বি.আই.-এর এই ঘোষণার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, এই ফলে নগদ টাকার যোগান বাড়বে এবং ঋণ দেওয়ার বিষয়টিও আরও উন্নত হবে। ব্যাঙ্কের এই পদক্ষেপ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ কৃষক এবং দরিদ্রদের সাহায্য করবে। এই ঘোষণার ফলে রাজ্যগুলির বিভিন্ন কর্মকান্ডের জন্য প্রদেয় অগ্রিম অর্থের সীমা বাড়বে।

 

 

 

CG/CB


(Release ID: 1615560)