প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

কর্ণাটকের উদুপির শ্রীকৃষ্ণ মঠে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

प्रविष्टि तिथि: 28 NOV 2025 2:05PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি,  ২৮ নভেম্বর, ২০২৫

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কর্ণাটকে উদুপির শ্রী কৃষ্ণ মঠে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। ভগবান শ্রী কৃষ্ণের স্বর্গীয় দর্শন এবং শ্রীমদ্ভগবদগীতার মন্ত্রের আধ্যাত্মিক অনুভূতিতে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সম্মাননীয় সাধু এবং গুরুদের উপস্থিতি লাভ তাঁর কাছে পরম সৌভাগ্যের। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবলমাত্র  ৩ দিন পূর্বে তিনি গীতা ভূমি কুরুক্ষেত্রে গিয়েছিলেন। আজ ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আশীর্বাদধন্য ভূমি এবং জগৎ গুরু শ্রী মাধবাচার্যজির আলোয় আলোকিত ক্ষেত্রভূমিতে  আসা তাঁর কাছে পরম সৌভাগ্যের। এক লক্ষ কণ্ঠে একত্রে ভগবদগীতা পাঠের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের সহস্রাব্দ প্রাচীন আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের জীবন্ত মহিমা বিশ্বের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী জানান, কর্ণাটকে আসা তাঁর কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতার মতো। পবিত্র ভূমি উদুপি সফর সবসময়ই অসাধারণ। তিনি বলেন, গুজরাটে তাঁর জন্ম হলেও গুজরাট এবং উদুপি এক গভীর বিশেষ সম্পর্কসূত্রে যুক্ত। 

শ্রী মোদী বলেন, উদুপির আকর্ষণ তার কাছে আরও এক বিশেষ কারণে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ জনসংঘ এবং ভারতীয় জনতা পার্টির পরিচালন মডেলের কর্মভূমি হল এই উদুপি। তিনি জানান ১৯৬৮ সালে উদুপির জনসাধারণ জনসংঘের ভিএস আচার্যকে মিউনিসিপ্যাল পরিষদে নির্বাচিত করে এবং এর মধ্যে দিয়েই নতুন পরিচালন মডেলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বচ্ছতা অভিযান যা আজ জাতীয় স্তরে প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে, পাঁচ দশক পূর্বেই উদুপি তা গ্রহণ করেছিল। জল সরবরাহ ও পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা সংক্রান্ত পরিকল্পনার সূত্রপাত ১৯৭০-এর সময়কালে উদুপিতে হয়। এই সমস্ত অভিযানই জাতীয় অগ্রাধিকার হয়ে রাষ্ট্রের উন্নয়নে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বহু সংখ্যক মানুষ যখন পবিত্র গ্রন্থ গীতা থেকে পাঠ করেন তখন সেই স্বর্গীয় ধ্বনি এক স্থানে অনুরণিত হলে মনে এক নতুন চেতনা জাগ্রত করে। মেধাগত এক নব শক্তির সঞ্চার হয়। তিনি বলেন, আধ্যাত্মবাদের এই শক্তি সামাজিক ঐক্যেরও শক্তি স্বরূপ। লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ বিশ্বকে দেখাচ্ছে সম্মিলিত চেতনার শক্তি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই বিশেষ দিনে তিনি পরম পূজ্য সুগুনেন্দ্র তীর্থ স্বামীজিকে বিশেষ করে প্রণাম জানাতে চান। যিনি লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের ধারণার স্বর্গীয় চেতনার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ এতে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের হাতে গীতা লেখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন ভগবদগীতার শিক্ষা উন্নয়নের পথ দেখায়। শত শত বছর ধরে ভারতবর্ষে গীতা, উপনিষদ এবং শাস্ত্র জ্ঞানকে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পরম্পরা রয়েছে। এই অনুষ্ঠান পরবর্তী প্রজন্মকেও ভগবদগীতার সঙ্গে অর্থপূর্ণ সম্পর্কসূত্রে যুক্ত করবে। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে আসার ৩ দিন পূর্বে তিনি অযোধ্যায় গিয়েছিলেন। অযোধ্যা থেকে উদুপি ভগবান রামের অসংখ্য ভক্ত এই বর্ণাঢ্য উদযাপনকে প্রত্যক্ষ করেছে। রাম মন্দির আন্দোলনে উদুপির উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি জানান। 
ভারতের দ্বৈত দর্শনে জগৎ গুরু শ্রী মাধবাচার্যকে প্রাণপুরুষ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর হাতে উদুপির অষ্টমঠ ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠান গঠন এবং নব ধারার প্রবর্তন এক উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে এই ক্ষেত্র জ্ঞান, ভক্তি এবং সেবার এক পবিত্র সঙ্গম। 
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জগৎ গুরু শ্রী মাধবাচার্য হরিদাস প্রথায় এক নতুন শক্তির সঞ্চার করেন। পুরন্দর দাস, কনক দাসের মতো মহান সাধকেরা ভক্তিকে সরল রসে শ্রুতিময় করে তুলে কন্নড় ভাষায় সাধারণ মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শিক্ষা প্রতি বয়সের ক্ষেত্রেই এক বাস্তবানুগ শিক্ষা। গীতার বাণী কেবল ব্যক্তিকে পথ দেখায় না। রাষ্ট্রের নীতি নির্দেশিকার পথ গড়ে দেয়। জগৎ গুরু শ্রী মাধবাচার্য তাঁর সারাজীবন ধরে ভারতের ঐক্যকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সেই সব অনুভূতিকেই কাজে লাগিয়েছেন। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ নীতির পিছনে সর্বজন হিতায়, সর্বজন সুখায় ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শ্লোক অনুপ্রেরণাদায়ক হয়েছে। তিনি বলেন, ভগবান কৃষ্ণ দরিদ্রকে সাহায্য করার মন্ত্র দিয়েছিলেন এবং সেই মন্ত্রই আয়ুষ্মান ভারত এবং পিএম আবাসের মত সরকারি প্রকল্পের অনুপ্রেরণা স্বরূপ। তিনি বলেন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ নারী সুরক্ষা এবং ক্ষমতায়ণের জ্ঞান বিতরণ করেছিলেন। এই শিক্ষাই নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়মের মত ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে দেশকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি আরও বলেন, সকলের কল্যাণে শ্রী কৃষ্ণের শিক্ষা ভারতের ভ্যাকসিন মৈত্রী, সৌরজোট এবং বসুধৈব কুটুম্বকমের মত নীতির সূত্র গড়ে দিয়েছে। শ্রী মোদী মিশন সুদর্শন চক্রের অর্থ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, দেশের মূল ক্ষেত্রগুলিকে নিয়ে এক প্রতিরক্ষা দেওয়াল গড়ে তোলা, শিল্প, সরকারি ক্ষেত্র যার অন্তর্ভুক্ত। শত্রুও সেই দেওয়াল ভাঙার ঔদ্ধত্য দেখাতে ভয় পাবে কারণ ভারতের সুদর্শন চক্র তাদেরকে ধ্বংস করে দেবে।

পহেলগাঁও-এ নারকীয় জঙ্গিহানার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই জঙ্গিহানায় দেশের অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কর্ণাটকের মানুষরা ছিলেন। এর যোগ্য জবাব দিতেই অপারেশন সিঁদুরের উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে এই জাতীয় জঙ্গি আক্রমণ হলে সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকত। কিন্তু নতুন ভারত কারো কাছে মাথা নত করতে শেখেনি, জনসাধারণের স্বার্থরক্ষাতে সে পিছপা হয়না। ভারত জানে কিভাবে শান্তি গড়তে হয় আর কি ভাবে শান্তি রক্ষা করতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রথম সংকল্প হবে জল সংরক্ষণ এবং নদী রক্ষা। দ্বিতীয় সংকল্প গাছ লাগানো। দেশ জুড়ে এক পেঢ় মা কে নাম গতি সঞ্চার করেছে। সমস্ত মঠগুলি যদি এই অভিযানে সামিল হয় তাহলে তার প্রভাব বহুধা বিস্তৃত হতে পারে। তৃতীয় সংকল্প হতে হবে দেশের  একজন অত্যন্ত গরিব মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন, চতুর্থ সংকল্প স্বদেশীর ধারণা। দেশের দায়িত্বপূর্ণ নাগরিকরা স্বদেশী দ্রব্য গ্রহণ করুন। তিনি বলেন, ভারত আজ আত্মনির্ভর ভারত এবং স্বদেশীর মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমাদের অর্থনীতি, আমাদের শিল্প আমাদের প্রযুক্তি নিজের শক্তিতে নিজের  পায়ে যাতে দাঁড়াতে পারে সেই লক্ষ্যেই এই ভাবধারা। সেই জন্যে সম্মিলিত কণ্ঠে জোরের সঙ্গে আমাদের বলতে হবে ভোকাল ফর লোকাল। পঞ্চম সংকল্পের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন তা হল প্রাকৃতিক চাষ। ষষ্ঠ সংকল্প স্বাস্থ্যকর জীবনশৈলি। মিলেটকে আমাদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং খাবারে তেলের পরিমাণ কমাতে হবে। সপ্তম সংকল্প হবে যোগকে জীবনের অঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করা। অষ্টম সংকল্প হল পাণ্ডুলিপির সংরক্ষণ। আমাদের প্রাচীন জ্ঞান এই সব পাণ্ডুলিপিতেই লুকিয়ে রয়েছে। এই জ্ঞান সংরক্ষণের লক্ষ্যে ভারত সরকার জ্ঞান ভারতম মিশন নিয়ে কাজ করছে। এই অমূল্য ঐতিহ্য রক্ষায় জনসাধারণের সহযোগিতা দরকার বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবম সংকল্পটি হবে দেশের কম করে ২৫ টি স্থানকে ঐতিহ্য ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত করা। তিনি বলেন, কেবল ৩-৪ দিন পূর্বেই হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে মহাভারত এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারের উদ্বোধন হয়েছে। ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জীবন দর্শনকে প্রত্যক্ষ করতে এই স্থান সফরের জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর মাধবপুর মেলার আয়োজন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং মাতা রুক্মিনীর বিবাহ উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়। যাতে দেশের অসংখ্য মানুষ বিশেষত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষরা ভিড় করেন। সকলকে এই মেলায় অংশ নিতে আহ্বান জানান তিনি।          
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের পূর্ণ জীবন এবং গীতার প্রতিটি পরিচ্ছদ কাজ, কর্তব্য এবং কল্যাণের বার্তা বহন করে। ভারতীয়দের জন্য ২০৪৭ –এর সময়কাল কেবল অমৃতকালই নয়, উন্নত ভারত গড়ে তোলার এক কর্ম পরিক্রমার অধ্যায়। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হল নিজের কর্তব্য সম্পাদন। কর্ণাটকের পরিশ্রমী মানুষেরা এই কর্তব্য সম্পাদনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি কাজ হবে দেশের জন্য নিবেদিত। এই স্বপ্নবলেই উন্নত কর্ণাটক এবং উন্নত ভারতের স্বপ্নপূরণ করা যাবে। উদুপির পবিত্র ভূমি থেকে উদ্ভূত শক্তি উন্নত ভারতের সংকল্পপথে পথ দেখাবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। ভাষণ শেষে এই পবিত্র অনুষ্ঠান উপলক্ষে উপস্থিত সকলকে তিনি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। 

কর্ণাটকের রাজ্যপাল থাওয়ারচাঁদ গেহলট, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 


SC/AB/SG


(रिलीज़ आईडी: 2196180) आगंतुक पटल : 4
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें: English , Urdu , Marathi , हिन्दी , Manipuri , Gujarati , Tamil , Kannada , Malayalam