প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
দেরাদুণে উত্তরাখন্ড রাজ্য গঠনের রজত জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
09 NOV 2025 3:31PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫
দেবভূমি উত্তরাখন্ডের ভাই ও বোনেরা এবং প্রবীণদের শুভেচ্ছা জানাই।
উত্তরাখন্ডের রাজ্যপাল গুরমীত সিং মহাশয়, মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং মহাশয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী অজয় টামটা মহাশয়, বিধানসভার অধ্যক্ষ বোন ঋতু, উত্তরাখন্ড মন্ত্রিসভার সদস্যরা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং মঞ্চে উপবিষ্ট সাংসদ, পবিত্র সাধু-সন্ত, যাঁরা বিপুল সংখ্যায় এখানে এসেছেন আমাদের আশীর্বাদ করতে, অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা, আমার প্রিয় উত্তরাখন্ডের ভাই ও বোনেরা!
বন্ধুগণ,
আজ ০৯ নভেম্বর। এই দিনটি আমাদের দীর্ঘ অবসানের পর, এক স্বপ্ন পূরণের দিন। আজকের দিনটি গর্বের দিন। উত্তরাখন্ডের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে এই দিনটির স্বপ্ন দেখে এসেছেন, যা ২৫ বছর আগে বাস্তবায়িত হয়েছে। ২৫ বছর আগে অটলজির সরকার এই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। আর ২৫ বছর পর, এই রাজ্য উচ্চতার এক নতুন শিখরে পৌঁছেছে, যা অত্যন্ত স্বাভাবিক। এখানকার প্রতিটি মানুষ, যাঁরা এই সুন্দর রাজ্য গঠনে সংগ্রাম করেছেন, তাঁরা আজ আনন্দিত এবং গর্বিত। যাঁরা পাহাড়, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও দেবভূমি উত্তরাখন্ডের জনগণকে ভালোবাসেন, তাঁরাও আজ আনন্দে উদ্বেলিত।
বন্ধুগণ,
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ডবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকার উত্তরাখন্ডের জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছে এবং রাজ্যকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এই রাজ্যের রজত জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই, রাজ্যের আন্দোলনের সময়ে যাঁরা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের প্রণাম জানাই। একই সঙ্গে, যাঁরা এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদেরও শ্রদ্ধা জানাই।
বন্ধুগণ,
আপনারা জানেন, উত্তরাখন্ডের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমার আধ্যাত্মিক জীবনের যাত্রাপথে যখন আমি এখানে এসেছিলাম, তখন এই পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী ভাই ও বোনেদের কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং প্রতিটি সঙ্কটকে উত্তরণের একনিষ্ঠ মানসিকতায় আমি অনুপ্রাণিত হই।
বন্ধুগণ,
এই অঞ্চলে আমার বসবাসের সময়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা অতুলনীয়। আর তাই, যখন আমি কেদার দর্শন করি, তখন আমি বলেছিলাম, এই দশক উত্তরাখন্ডের। এটি নিছক কথার কথা ছিল না। আপনাদের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা ছিল, আর তাই উত্তরাখন্ডের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আজ এখানে এসে আমার সেই আস্থা আরও বেড়ে গেল। প্রকৃত অর্থেই এটি উত্তরাখন্ডের উন্নয়নের সময়কাল।
বন্ধুগণ,
২৫ বছর আগে যখন উত্তরাখন্ড গঠিত হয়েছিল, তখন তাঁদের সামনে প্রচুর চ্যালেঞ্জ ছিল। রাজ্যের বাজেট ছিল কম। কেন্দ্রের সহায়তার উপর নির্ভর করে বেশিরভাগ চাহিদা পূরণ করতে হ’ত। কিন্তু, আজ সেই ছবিটা পুরো বদলে গেছে। এখানে আসার আগে আমি রৌপ্য জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখি। আপনাদের সকলের কাছে আমার অনুরোধ যে, ঐ প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখবেন, সেখানে গত ২৫ বছর ধরে উত্তরাখন্ডের সম্পর্কে নানা তথ্য আপনারা পাবেন। পরিকাঠামো, শিক্ষা, শিল্প, পর্যটন, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং গ্রামোন্নয়নে সাফল্যের যে নিদর্শন, তা এককথায় প্রশংসনীয়। ২৫ বছর আগে উত্তরাখন্ডের বাজেট ছিল মাত্র ৪ হাজার কোটি টাকা। এখন যেসব তরুণ-তরুণীর বয়স ২৫ বছর তাঁদের সেই সময় সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। আজ ১ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পেশ হয়েছে। এই ২৫ বছরে উত্তরাখন্ডে বিদ্যুৎ উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তার দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়েছে। আগে এখানে ছয় মাসে মাত্র ৪ হাজার জন বিমান সফর করে এসে পৌঁছতেন আর আজ প্রতিদিন সমসংখ্যক বিমান যাত্রী এখানে এসে পৌঁছন।
বন্ধুগণ,
এই ২৫ বছরে এই রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ১০ গুণ বেড়েছে। আগে এখানে মাত্র ১টি মেডিকেল কলেজ ছিল। আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ – এ পৌঁছেছে। ২৫ বছর আগে ২৫ শতাংশ মানুষও টিকাকরণের আওতায় আসতেন না। আর আজ উত্তরাখন্ডের প্রায় প্রতিটি গ্রাম টিকাকরণের আওতায় এসে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্যের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। সমন্বিত নীতি এবং উত্তরাখন্ডীদের একনিষ্ঠ প্রয়াসের কারণেই এই সাফল্য। আগে খাড়া পাহাড় উন্নয়নের জন্য বাধার কারন ছিল। আর এখন, সেই পথই নতুনভাবে আমাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
বন্ধুগণ,
কিছু আগে আমি উত্তরাখন্ডের যুবক-যুবতী ও শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা রাজ্যের উন্নয়নের বিষয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। আমার হয়তো ভুল হতে পারে, তাও গাঢ়য়ালী ভাষায় আমি রাজ্যের মানুষকে বলতে চাই যে, ২০৪৭ সালে ভারত যখন উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হবে, আমার উত্তরাখন্ড, আমার দেবভূমিও সেই যাত্রায় সঙ্গী থাকবে।
বন্ধুগণ,
আজ উত্তরাখন্ডের উন্নয়ন যাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন এবং খেলাধূলা সংক্রান্ত এই প্রকল্পগুলি রাজ্যে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। যমরানী এবং সং জলাধার প্রকল্প দেরাদুণ ও হালদোয়ানির পানীয় জলের সমস্যা মেটাবে। এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আমি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির জন্য রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখন্ড সরকার এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে আপেল ও কিউই চাষীদের ভর্তুকি দিচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই আর্থিক সহায়তা স্বচ্ছভাবে কার্যকর হচ্ছে কিনা, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া যাবে। এই প্রসঙ্গে আমি রাজ্য সরকার, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
দেবভূমি উত্তরাখণ্ড হল ভারতের আধ্যাত্মিক জীবনের হৃদস্পন্দন। গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী, কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, জগেশ্বর এবং আদি কৈলাসের মতো অগণিত তীর্থস্থান আমাদের গভীর বিশ্বাসের প্রতীক। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই পবিত্র তীর্থস্থানগুলি দর্শন করেন। তাদের যাত্রা ভক্তির পথ উন্মুক্ত করে এবং একই সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের অর্থনীতিতে নতুন শক্তি সঞ্চার করে।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখণ্ডের উন্নয়নের সঙ্গে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা গভীরভাবে জড়িত। সেই কারণেই রাজ্যে বর্তমানে ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক প্রকল্পের কাজ চলছে। ঋষিকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেল প্রকল্প দ্রুত এগিয়ে চলেছে। দিল্লি-দেরাদুন এক্সপ্রেসওয়ে এখন প্রায় সম্পূর্ণ। গৌরীকুণ্ড-কেদারনাথ এবং গোবিন্দঘাট-হেমকুণ্ড সাহেব রোপওয়ে প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি উত্তরাখণ্ডের উন্নয়নে নতুন গতির সঞ্চার করছে।
বন্ধুগণ,
গত ২৫ বছরে উত্তরাখণ্ড উন্নয়নযাত্রার দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে। এখন আমাদের সামনে প্রশ্ন হল, আগামী ২৫ বছরে আমরা উত্তরাখণ্ডকে কোন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই? আপনারা সকলেই একটা কথা শুনেছেন: " ইচ্ছা থাকলেই, উপায় হয়।" সুতরাং, একবার আমরা যখন স্পষ্টভাবে নির্ধারণ পারি যে আমাদের লক্ষ্য কী, তখন তা অর্জনের পরিকল্পনাও দ্রুত তৈরি হবে। আর এই লক্ষ্যগুলি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ৯ নভেম্বরের চেয়ে ভালো দিন আর কী হতে পারে?
বন্ধুগণ,
উত্তরাখণ্ডের আসল পরিচয় এর আধ্যাত্মিক শক্তির মধ্যে নিহিত। যদি উত্তরাখণ্ড তা বাস্তবায়নের সংকল্প নেয়, তাহলে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এটি "বিশ্বের আধ্যাত্মিক রাজধানী" হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। এখানকার মন্দির, আশ্রম, ধ্যান এবং যোগ কেন্দ্রগুলিকে বিশ্বব্যাপী একটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে।
বন্ধুগণ,
দেশ বিদেশের নানা জায়গা থেকে মানুষ সুস্থ হবার জন্য এখানে আসেন। উত্তরাখণ্ডের ভেষজ ও আয়ুর্বেদিক ওষুধের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৫ বছরে, উত্তরাখণ্ড সুগন্ধি উদ্ভিদ, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ভেষজ, যোগব্যায়াম এবং সুস্থতা সংক্রান্ত পর্যটনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এখন সময় এসেছে উত্তরাখণ্ডের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে যোগ কেন্দ্র, আয়ুর্বেদ কেন্দ্র, প্রাকৃতিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এবং হোমস্টে তৈরির পরিকল্পনা করার। এর মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠার একটি প্যাকেজ তৈরি করা যায়। আমাদের আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে যা বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হবে।
বন্ধুগণ,
আপনারা সকলেই জানেন যে কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে "ভাইব্র্যান্ট ভিলেজেস" কর্মসূচির উপর কতটা জোর দিচ্ছে। আমি চাই উত্তরাখণ্ডের প্রাণশক্তিতে ভরপুর প্রতিটি গ্রাম নিজেই একটি ছোট পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হোক। সেখানে হোমস্টে থাকবে, স্থানীয় খাবার এবং স্থানীয় সংস্কৃতির প্রচার করা হবে। একবার ভাবুন, যখন ভারতের অন্যান্য অংশ বা বিদেশ থেকে আসা পর্যটকরা একটি উষ্ণ, ঘরোয়া পরিবেশ উপভোগ করবেন এবং ডাবকে, চুড়কানি, রোট-আরসা, রস-ভাত এবং ঝাঙোরে কি খিরের মতো ঐতিহ্যবাহী খাবার খাবেন, তখন তারা কতটা খুশি হবেন! সেই আনন্দ তাদের একবার নয়, বারবার উত্তরাখণ্ডে ফিরিয়ে আনবে ।
বন্ধুগণ,
এখন আমাদের উত্তরাখণ্ডের অজানা সম্ভাবনাগুলি মানুষের কাছে পৌছে দেবার জন্য মনোনিবেশ করতে হবে। হরেলা, ফুলদেই এবং ভিতৌলির মতো স্থানীয় উৎসবের অংশ হয়ে ওঠা পর্যটকরা সেই অভিজ্ঞতাগুলি সব সময় মনে রাখেন। এখানকার মেলাগুলিও দারুনভাবে প্রাণশক্তিতে ভরপুর। নন্দা দেবীর মেলা, জৌলজীবী মেলা, বাগেশ্বরের উত্তরায়ণী মেলা, দেবীধুরা মেলা, শ্রাবণী মেলা এবং মাখন উৎসব হল উত্তরাখণ্ডের প্রাণ। এই স্থানীয় মেলা এবং উৎসবগুলিকে বিশ্ব মানচিত্রে তুলে ধরার জন্য, আমরা "এক জেলা, এক উৎসব" এর মতো একটি প্রচার অভিযান শুরু করতে পারি।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখণ্ডের সমস্ত পাহাড়ি জেলায় ফল চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের এই পাহাড়ি জেলাগুলিকে উদ্যানপালন কেন্দ্রে পরিণত করার কথা ভাবতে হবে। ব্লুবেরি, কিউই, নানা ধরণের ভেষজ এবং ঔষধি গাছ ভবিষ্যতের কৃষিকাজে সহায়ক হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, হস্তশিল্প এবং জৈব পণ্যের মতো ক্ষেত্রগুলিকে উৎসাহিত করার জন্য উত্তরাখণ্ডের অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে নতুন করে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখণ্ডে সারা বছর জুড়ে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে, তাই আমি আগেই পরামর্শ দিয়েছিলাম , এবার আমাদের সারা বছর পর্যটনের কথা ভেবে পরিকল্পনা করা উচিত। আমি খুশি যে উত্তরাখণ্ড শীতকালীন পর্যটনকে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলি সত্যিই উৎসাহব্যঞ্জক। শীতকালীন পর্যটকদের সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। পিথোরাগড়ে, ১৪,০০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় অত্যন্ত উচ্চস্থানের একটি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আদি কৈলাস পরিক্রমা দৌড়ও সমগ্র দেশে যথেষ্ট আলোচিত হচ্ছে। তিন বছর আগে, আদি কৈলাস যাত্রায় ২,০০০ এরও কম ভক্ত অংশগ্রহণ করতেন। আজ, সেই সংখ্যা ৩০,০০০ এরও বেশি হয়ে গেছে। মাত্র কয়েকদিন আগে, কেদারনাথ মন্দিরের দরজা এই মরশুমের জন্য বন্ধ করা হল। এবছর, প্রায় ১৭ লক্ষ ভক্ত কেদারনাথ ধাম দর্শনের জন্য এসেছিলেন। তীর্থযাত্রা এবং বছরজুড়ে পর্যটন উত্তরাখণ্ডের শক্তি, এই শক্তি উন্নয়নকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এখানে ইকো-ট্যুরিজম এবং অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমেরও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরাখণ্ড দেশের যুবসমাজের কাছে একটি প্রধান আকর্ষণস্থল হয়ে উঠতে পারে।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখণ্ডও এখন চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নতুন গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রাজ্যের নতুন চলচ্চিত্র নীতি এখন শ্যুটিং-এর কাজকে আরও সহজ করে তুলেছে। উত্তরাখণ্ড বিবাহের গন্তব্য হিসেবেও জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। আপনারা জানেন, আমি "ভারতে বিবাহ" সংক্রান্ত একটি প্রচার অভিযানের সূচনা করেছি। বিদেশীদের কাছে ভারতে এসে বিবাহের এই উদ্যোগের জন্য, উত্তরাখণ্ডের উচিত বিশ্বমানের বিবাহ অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা। এই কাজে, ৫-৭টি প্রধান প্রধান কেন্দ্র চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলিকে ভবিষ্যতে বিবাহের স্থান হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে।
বন্ধুগণ,
আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার যে সংকল্প ভারত নিয়েছে, সেই পথে ‘ভোকাল ফর লোকাল’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। উত্তরাখন্ডও যাত্রার শরিক। স্থানীয় স্তরে উৎপাদিত পণ্য, সেগুলির ব্যবহার এবং দৈনন্দিন জীবনে সেগুলিকে যুক্ত করা রাজ্যের ঐতিহ্য। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, উত্তরাখন্ড সরকার ‘ভোকাল ফর লোকাল’ – এর জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর আওতায় ১৫টি কৃষি পণ্যকে জিআই ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। বেদুফল এবং বদ্রি গরুর ঘি সম্প্রতি জিআই ট্যাগ পেয়েছে – যা অত্যন্ত গর্বের। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের কাছে বদ্রি গরুর ঘি খুবই পছন্দের। আর এখন বেদু, পাহাড়ের গ্রামগুলি থেকে রাজ্যের বাইরে অন্যত্র বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে। জিআই ট্যাগ লাগানো পণ্য সামগ্রী যখনই নানা জায়াগায় পাঠানো হয়, তখনই উত্তরাখন্ডের নামও সেখানে করা হয়। দেশের সর্বত্র যাতে এ ধরণের জিআই ট্যাগের পণ্য সামগ্রী পৌঁছয়, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ‘হাউস অফ হিমালয়াজ’ এখন একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই ব্র্যান্ড উত্তরাখন্ডের বিভিন্ন উপাদানকে এক অভিন্ন মঞ্চে নিয়ে এসেছে। রাজ্যের বৈচিত্র্যপূর্ণ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী একটি একক পরিচিতি পেয়েছে, যাতে সেগুলি আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যান্য পণ্য সামগ্রীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সামিল হতে পারে। এখন রাজ্যের বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও কেনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে, কৃষক, হস্তশিল্পী এবং ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীরা নতুন নতুন বাজার পাচ্ছেন। উত্তরাখন্ডের ‘হাউস অফ হিমালয়াজ’ ব্র্যান্ডটিকে আরও উন্নত করতে আমাদের সক্রিয় হতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমরা জানি, গত কয়েক বছর ধরে উত্তরাখন্ড তার উন্নয়ন যাত্রায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু, প্রতিটি বাধাকে রাজ্যের শক্তিশালী বিজেপি সরকার অতিক্রম করেছে। এরফলে, রাজ্যের উন্নয়ন কখনই শ্লথ হয়নি। উত্তরাখন্ডের ধামী সরকার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বাস্তবায়িত করেছে, যা অন্য রাজ্যের কাছে উদাহরণ-স্বরূপ। ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইন এবং দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের মতো বিভিন্ন দৃঢ় পদক্ষেপ এই রাজ্য গ্রহণ করেছে। জমির অবৈধ দখলদারী এবং জনবিন্যাসের পরিবর্তনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলির ক্ষেত্রে বিজেপি সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে মানুষকে সবধরনের সহায়তা করতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে।
বন্ধুগণ,
আমরা উত্তরাখন্ড রাজ্য গঠনের রজত জয়ন্তী উদযাপন করছি। আমি আনন্দিত, আগামী বছরগুলিতে এই রাজ্য উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। একইসঙ্গে, এই রাজ্যের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও অনন্য পরিচিতিকেও বহন করবে। আরও একবার রাজ্যবাসীকে রজত জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা জানেন, আমরা ২৫ বছর পর, দেশের স্বাধীনতার শতবার্ষিকী উদযাপন করব। তাই আসুন, আমরা কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করি। আমরা সঠিক পথ অবলম্বন করে দ্রুত এগিয়ে চলি। কেন্দ্রীয় সরকার উত্তরাখন্ড সরকারের সঙ্গে প্রতিটি ক্ষেত্রে থাকবে - সেই আশ্বাস আমি আপনাদের দিচ্ছি। রাজ্যের প্রতিটি নাগরিক এবং প্রত্যেক পরিবারের সুখ, সমৃদ্ধিময় ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
এ বছর ‘বন্দে মাতরম্’ – এর সার্ধশতবর্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। তাই আসুন, আমরা একসঙ্গে বলে উঠি –
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্!
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে)
SC/CB/SB…
(Release ID: 2188336)
Visitor Counter : 5
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam