প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

রাশিয়ায় প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বঙ্গানুবাদ

प्रविष्टि तिथि: 09 JUL 2024 2:25PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৯ জুলাই ২০২৪

 

নমস্কার, প্রিয় প্রিভেত মাস্কভা ! কেমন আছেন? 

আপনাদের এই স্নেহ, ভালোবাসা এবং এখানে আসার জন্য যে আপনারা যে সময় দিয়েছেন, তার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আমি একা আসিনি; আমার সঙ্গে আমি অনেক কিছু নিয়ে এসেছি। আমি নিয়ে এসেছি ভারতের মাটির আবেগ, ১৪০ কোটি দেশবাসীর ভালোবাসা এবং আপনাদের জন্য তাঁদের আন্তরিক শুভেচ্ছা। এটা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতীয় প্রবাসীদের সঙ্গে আমার প্রথম আলোচনা এই মস্কোতেই হচ্ছে।


বন্ধুগণ,
আজ ৯ই জুলাই, অর্থাৎ আমার শপথ গ্রহণের ঠিক এক মাস পূর্ণ হল। এক মাস আগে, ৯ই জুন, আমি টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলাম, এবং সেদিন একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে আমার তৃতীয় মেয়াদে আমি তিন গুণ শক্তি এবং তিন গুণ গতিতে কাজ করব। এটাও লক্ষণীয় যে আমাদের সরকারের অনেক লক্ষ্যের সঙ্গেই তিন সংখ্যাটি বিশেষভাবে যুক্ত। এই মেয়াদে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করা, দরিদ্রদের জন্য তিন কোটি বাড়ি নির্মাণ এবং তিন কোটি ' লাখপতি দিদি' তৈরি করা - এই লক্ষ্যগুলি সবই আমাদের অন্তর্ভুক্ত। সম্ভবত এই শব্দটি আপনাদের কাছে নতুন।

ভারতের গ্রামগুলিতে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আমরা দক্ষতার বিকাশ এবং বহুমুখীকরণের উপর জোর দিয়ে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক ভাবে ক্ষমতায়ন করতে চাই। আমার তৃতীয় মেয়াদের লক্ষ্য হল, গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র পরিবার থেকে আসা তিন কোটি বোন যেন সমৃদ্ধি লাভ করতে পারেন  - যার অর্থ হল তাঁদের বার্ষিক আয় যেন ১ লক্ষ টাকার বেশি হয় এবং এটি স্থায়ীভাবে বজায় থাকে। এটি একটি বিরাট লক্ষ্য, তবুও আপনাদের মতো বন্ধুদের সমর্থন ও আশীর্বাদ পেলে এই লক্ষ্যগুলিও অর্জন করা সম্ভব। আপনারা সকলেই জানেন যে আধুনিক ভারত ধারাবাহিকভাবে তার উদ্দেশ্যগুলি পূরণ করছে। আমাদের দেশ  চন্দ্রযান পাঠানো, বিশ্বব্যাপী সুরক্ষিত ডিজিটাল লেনদেনে নেতৃত্ব দেওয়া, এবং অগ্রগামী সমাজকল্যাণ নীতি বাস্তবায়নের মতো উল্লেখযোগ্য কীর্তি অর্জন করেছে। উপরন্তু, ভারত আজ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমেরও অধিকারী।

২০১৪ সালে যখন আপনারা আমাকে দেশসেবার সুযোগ দিয়েছিলেন, তখন দেশে মাত্র কয়েকশো স্টার্টআপ ছিল; আজ সেই সংখ্যা লক্ষাধিক। ভারত এখন পেটেন্ট দাখিল এবং গবেষণা প্রকাশনার ক্ষেত্রে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে, যা আমাদের যুব সমাজের অপরিমেয় প্রতিভা ও শক্তির পরিচয় তুলে ধরছে - এটি অর্জন করার কৃতিত্বটি বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে।

বন্ধুগণ,
বিগত এক দশকে ভারত যে গতিতে উন্নয়ন অর্জন করেছে, তাতে বিশ্ব বিস্মিত। ভারতে আসা দর্শকরা প্রায়শই দেশের এই রূপান্তরের কথা উল্লেখ করেন - তাঁরা নতুন নির্মাণ এবং ঘটে চলা এমনকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলি উপলব্ধি করতে পারেন। যখন ভারত সফলভাবে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের মত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, তখন বিশ্ব ভারতের ক্রমবর্ধমান মর্যাদাকে স্বীকার করে নেয়। মাত্র দশ বছরে ভারতের বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্রুত দ্বিগুণ হওয়া এবং ৪০,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি রেললাইনকে বৈদ্যুতিক করা - এই বিষয়গুলি ভারতের  ক্ষমতাকে  আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরে এবং ভারতের রূপান্তরের একটি স্থায়ী ছাপ বিশ্বজুড়ে রেখে যায়।


আজ, ভারত যখন ডিজিটাল লেনদেনে নতুন মানদণ্ড তৈরি করছে, এল-১  বিন্দু থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ সম্পন্ন করছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ রেল সেতু নির্মাণ করছে এবং বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি স্থাপন করছে, তখন সকল পর্যবেক্ষকের কাছেই এটি স্পষ্ট যে ভারত সত্যিই বদলে যাচ্ছে। এই পরিবর্তন এসেছে দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে থাকা ১৪০ কোটি নাগরিকের শক্তির ওপর ভারতের বিশ্বাস থেকে। ভারত তার জনগণকে এবং একটি বিকশিত জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার তাদের সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ে গর্বিত। দেশের প্রতিটি কৃষক, প্রতিটি যুবক এবং প্রতিটি পিছিয়ে পড়া মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই অঙ্গীকার দৃশ্যমান।


আজ, আমার ভারতবাসীরা বিশ্বের বিভিন্ন কোণে বসবাস করেন। আপনাদের প্রত্যেকেই মাতৃভূমির সাফল্য নিয়ে অপার গর্ববোধ করেন, আপনাদের শির উচ্চ হয়ে থাকে হয়ে থাকে। যখন আপনারা আপনাদের বিদেশী বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের দেশ নিয়ে আলোচনা করেন, তখন উৎসাহের সাথে দেশের অর্জনগুলি বর্ণনা করেন, এবং তাঁরাও মনোযোগ সহকারে শোনেন। আমি আপনাদেরকে স্পষ্টভাবেই জিজ্ঞাসা করি: আমি যা বলছি তা কি সত্য? আপনারা কি গর্বিত নন? আপনারা কি গর্ব অনুভব করেন? বিশ্বে আপনাদের সম্পর্কে ধারণা কি বদলেছে? এই দৃঢ় প্রত্যয় আসছে ১৪০ কোটি দেশবাসীর কাছ থেকে। আজ, ১৪০ কোটি ভারতীয় দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলি সমাধান করতে বদ্ধপরিকর।


আমার বন্ধুরা, আমাদের দেশ এই কঠিন পরিস্থিতিগুলি মোকাবিলা করা থেকে এড়িয়ে যায় না। আজ, ১৪০ কোটি ভারতীয় প্রতিটি ক্ষেত্রে উৎকর্ষ অর্জনের জন্য অক্লান্তভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আপনারা দেখেছেন যে আমরা কীভাবে কেবল কোভিড সংকট থেকে আমাদের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারই করিনি, বরং এটিকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির মধ্যে স্থানও দিয়েছি। আমরা শুধু পরিকাঠামোগত ঘাটতিগুলি পূরণ করছি না; আমরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি মানদণ্ডও তৈরি করছি। এটি শুধু স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি নয়; আমরা বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রকল্প 'আয়ুষ্মান ভারত'-এর মাধ্যমে প্রতিটি অসহায় মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করছি। এই প্রকল্পটি বিশ্বজুড়ে এ ধরণের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। বন্ধুরা, এই সব কীভাবে সম্ভব হচ্ছে? কে এই পরিবর্তন নিয়ে আসছে? আমি আরও একবার বলছি, এটি হল আমাদের ১৪০ কোটি নাগরিকের অক্লান্ত পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও একাগ্রতা, এবং সাফল্যের জন্য তাঁদের স্বপ্ন, সংকল্প ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা।


বন্ধুগণ,
ভারতের এই রূপান্তর শুধু তার ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি প্রতিটি নাগরিকের, বিশেষ করে যুব সমাজের, আত্মবিশ্বাসেও স্পষ্ট। আপনারা জানেন, আত্মবিশ্বাসই সাফল্যের দিকে প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০১৪ সালের আগে আমরা হতাশার মধ্যে  ছিলাম; নিরাশা আমাদের গ্রাস করেছিল। তবে, আজ গোটা দেশ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। একটি হাসপাতালের কথা ভাবুন, যেখানে একই অসুস্থতায় আক্রান্ত দুই রোগীর চিকিৎসা করছেন সম-যোগ্যতার চিকিৎসকগণ। একজন রোগীর মধ্যে অদম্য আত্মবিশ্বাস রয়েছে, আর অন্যজন নৈরাশ্যে ভুগছেন। প্রায়শই দেখা যায় যে আত্মবিশ্বাসী রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান, যেখানে হতাশাগ্রস্ত রোগীর সাহায্যের প্রয়োজন হয়। আজকের ভারত এই আত্মবিশ্বাসেরই প্রতিচ্ছবি, যা আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

আপনারা সম্প্রতি টি-২০ বিশ্বকাপের আমাদের এই জয় দেখেছেন, এবং আমি নিশ্চিত যে আপনারাও এখানে সেই জয়কে উদযাপন করেছেন। করেছেন কি? আপনারা কি গর্বিত ছিলেন এই জয় নিয়ে? এই বিশ্বকাপ জয়ের গল্পটি অদম্য মানসিকতার পরিচয় বহন করে। আজকের ভারতীয় যুব সমাজ শেষ বল পর্যন্ত হার মানতে রাজি নয়, এটি সেই মানসিকতাকেই প্রমাণ করে যে যারা নত স্বীকার করতে চায় না, বিজয় তাঁদেরই মুকুট হয়। এই মনোভাব কেবল ক্রিকেটে নয়, সব খেলাতেই অনুরণিত হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে, আমাদের ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছেন। একটি শক্তিশালী দল এখন আসন্ন প্যারিস অলিম্পিকের জন্য ভারত থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করবে। ভারতের যুব সমাজের এই আত্মবিশ্বাসই আমাদের আসল পুঁজি, যা একবিংশ শতাব্দীতে ভারতকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।


বন্ধুগণ,
আপনারা অবশ্যই নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং সর্বশেষ মুহূর্তের তথ্য জানার জন্য নিশ্চয়ই খবরে  চোখ রেখেছেন - কে কী বলছে এবং কে কী করছে, তা দেখেছেন।

বন্ধুগণ,
নির্বাচনের সময় আমি প্রায়শই বলতাম যে গত দশকে ভারত যে উন্নয়ন করেছে, তা কেবলই একটি ঝলক মাত্র। পরবর্তী দশকে তার আরও আরও দ্রুত বৃদ্ধি দেখা যাবে। সেমিকন্ডাক্টর থেকে বৈদ্যুতিন দ্রব্য উৎপাদন, সবুজ হাইড্রোজেন থেকে বৈদ্যুতিন যান, এবং বিশ্বমানের পরিকাঠামো - এই সব ক্ষেত্রে ভারতের ত্বরান্বিত গতি আন্তর্জাতিক উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায় রচনা করবে।আমি দায়িত্বের সঙ্গে এই কথা বলছি। বর্তমানে, ভারত বিশ্বব্যাপী আর্থিক বৃদ্ধিতে ১৫% অবদান রাখছে, এবং আগামী বছরগুলিতে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। ভারত বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কঠিন পরিস্থিতি গুলি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেবে, কারণ এইসব প্রতিকূল  পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করা আমার ডিএনএতে মিশে আছে।


বন্ধুগণ,
আমি খুব আনন্দিত। নিজেদের মধ্যে এই সৌহার্দ্যই হল আসল কথা, যেখানে নেতা ও জনগণের মধ্যে কোনো দূরত্ব নেই, যেখানে নেতার চিন্তাভাবনা সাধারণ মানুষের ভাবনার সঙ্গে মিলে যায়। এই ঐক্য  এক বিশাল শক্তির জন্ম দেয়, যা আমি এই মুহূর্তে দেখতে পারছি বন্ধুরা।


বন্ধুগণ,
আমি আনন্দিত যে ভারত ও রাশিয়া বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য একসঙ্গে সহযোগিতা করছে। আপনারা প্রত্যেকে, যারা এখানে উপস্থিত আছেন, আপনাদের কঠোর পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে রুশ সমাজের প্রতি অবদান রেখে আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন।

বন্ধুগণ,
আমি দীর্ঘকাল ধরে ভারত ও রাশিয়ার এই বিশেষ বন্ধনের একজন গুণমুগ্ধ ভক্ত। যখনই আমরা রাশিয়া শব্দটি শুনি, তখনই প্রতিটি ভারতীয়র মনে আসে সুখ-দুঃখের অংশীদার, আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধুটির কথা। আমাদের রুশ বন্ধুরা একে বলে "দ্রুঝবা", আর হিন্দিতে আমরা বলি 'দোস্তি'। রাশিয়ার তীব্র ঠাণ্ডা থাকা সত্ত্বেও, ভারত-রাশিয়ার বন্ধুত্বের উষ্ণতা সবসময়ই শক্তিশালী ও ইতিবাচক হয়ে থেকেছে। এই সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার এক দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যা এখানকার প্রতিটি ঘরে ঘরে অনুরণিত হওয়া সেই বিখ্যাত গানেও প্রতিধ্বনিত হতো: "সের পে লাল টোপি রুসি, ফির ভি? ফির ভি? ফির ভি? দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি..." এই গানটি হয়তো পুরোনো, কিন্তু এর ভাবাবেগ চিরন্তন। অতীতে, রাজ কাপুর এবং মিঠুন দার মতো কিংবদন্তীরা তাঁদের শিল্পকলার মাধ্যমে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যেকার সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে সমৃদ্ধ করেছেন। আমাদের সিনেমা এই বন্ধনকে আরোও গভীর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, এবং আজ আপনারা প্রত্যেকেই ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে নতুন দিগন্তে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের এই বন্ধুত্ব অসংখ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, এবং প্রতিবারই তা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।


বন্ধুগণ,
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে এই অবিচ্ছিন্ন বন্ধুত্বকে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি আমার প্রিয় বন্ধু রাষ্ট্রপতি পুতিনের নেতৃত্বের বিশেষভাবে প্রশংসা করি। আমি গত এক দশকে ছয়বার রাশিয়া সফর করেছি এবং এই বছরগুলিতে ১৭ বার রাষ্ট্রপতি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। প্রতিটি সাক্ষাৎ আমাদের পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাকে আরও মজবুত করেছে। যখন আমাদের শিক্ষার্থীরা যুদ্ধের সময় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল, তখন রাষ্ট্রপতি পুতিন তাঁদের নিরাপদে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য সহায়তা করেছিলেন। এই সমর্থনের জন্য আমি আরও একবার রাশিয়ার জনগণের এবং আমার বন্ধু রাষ্ট্রপতি পুতিনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।


বন্ধুগণ,
আজ, আমাদের যুব সমাজের মধ্যে এক  বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী রাশিয়াতে আসে পড়াশোনা করার জন্য। আমাকে শুনেছি যে এখানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিত্বকারী সমিতি রয়েছে, যারা প্রতিটি অঞ্চলের উৎসব, রান্না, ভাষা, গান এবং সঙ্গীতের বৈচিত্র্যকে সংরক্ষণ করে। আপনারা এখানে হোলি থেকে দীপাবলি পর্যন্ত প্রতিটি উৎসব অত্যন্ত উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করেন। ভারতের স্বাধীনতা দিবসও এখানে উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয়, এবং আমি আশা করছি যে এই বছর ১৫ই আগস্টের উদযাপন আরও জমকালো হবে। গত মাসেও এখানে হাজার হাজার মানুষ আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে অংশ নিয়েছিলেন। আমার জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হল, আমাদের রুশ বন্ধুরা সমান উৎসাহের সঙ্গে আপনাদের এই আনন্দ উদযাপনগুলিতে যোগদান করেন। এই মানুষের সঙ্গে মানুষের সংযোগ সরকারি উদ্যোগের ঊর্ধ্বে এবং এটি নিঃসন্দেহে এক বিশাল শক্তি।

এবং বন্ধুগণ,
এই ইতিবাচক পরিবেশের মধ্যে, আমি আপনাদের সঙ্গে আরও একটি সুখবর জানাতে পেরে আনন্দিত। আপনারা হয়তো ভাবছেন সেটা কী। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে কাজান  এবং ইয়েকাতেরিনবুর্গে দুটি নতুন  দূতাবাস স্থাপন করা হবে। এই পদক্ষেপটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণ এবং বাণিজ্যের সুযোগগুলিকে আরও সহজ করবে।


বন্ধুগণ,
আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি প্রতীক হল আস্ট্রাখানের ইন্ডিয়া হাউস, যেখানে সপ্তদশ শতাব্দীতে গুজরাটের ব্যবসায়ীরা বসবাস করতেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম দিকের কার্যকালে আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। দু'বছর আগে, মুম্বাই ও আস্ট্রাখান বন্দর শহরগুলিকে সংযুক্তকারী উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডোরের মাধ্যমে আস্ট্রাখান তার প্রথম বাণিজ্যিক চালান  গ্রহণ করেছিল। বর্তমানে, চেন্নাই-ভ্লাদিভোস্তক পূর্বাঞ্চলীয় সামুদ্রিক করিডোরের জন্য প্রচেষ্টা চলছে। গঙ্গা-ভল্গা সভ্যতা সংলাপের মাধ্যমে আমাদের দুই দেশ একে অপরকে নতুন করে আবিষ্কার করছে।


বন্ধুগণ,
 
২০১৫ সালে যখন আমি এখানে এসেছিলাম, তখন আমি বলেছিলাম যে একবিংশ শতাব্দী হবে ভারতের। আমি তখন তা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলাম, আর আজ সারা বিশ্বই সেই সুরেই কথা বলছে। এই বিষয়ে এখন সমগ্র বিশ্বের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। প্রত্যেকেই নিশ্চিত করছে যে একবিংশ শতাব্দী ভারতের। আজ,ভারত এক নতুন আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করছে বিশ্বের সকলের কাছে ভ্রাতৃত্ব পূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে। ভারতের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা বিশ্বকে স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির আশা দেখাচ্ছে। উদীয়মান বহুধ্রুবীয় বিশ্ব ব্যবস্থায় ভারতকে একটি শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। যখন ভারত শান্তি, সংলাপ এবং কূটনীতির পক্ষে সওয়াল করে, তখন বিশ্ব মনোযোগ দেয়। সংকটের সময়ে, ভারত প্রায়শই প্রথম সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়, এবং বিশ্বব্যাপী প্রত্যাশা পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে। দীর্ঘকাল ধরে বিশ্ব এক প্রভাব দ্বারা চালিত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা দেখে এসেছে। আজকের বিশ্ব প্রভাব  নয়, সঙ্গম চায়। একটি দেশ হিসেবে ভারতের থেকে আর কে এটি বেশি ভালোভাবে বুঝতে পারে, যেখানে সমাবেশ ও সঙ্গমকে শ্রদ্ধা করা হয়?


বন্ধুগণ,
আপনারা প্রত্যেকেই রাশিয়ায় ভারতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন। যারা দূতাবাসের অন্তর্ভুক্ত, তারা হলেন 'রাজদূত', আর যারা মিশনের বাইরে আছেন, তারা হলেন 'রাষ্ট্রদূত'। ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে আপনাদের প্রয়াস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ,

এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ যে ভারতে ৬০ বছর পর কোনো সরকার টানা তৃতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। তবে, এই নির্বাচনের সময়, সমস্ত মনোযোগ, সমস্ত ক্যামেরা কেবল মোদীর ওপরই নিবদ্ধ ছিল, ফলে অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা থেকে মনোযোগ সরে গিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, এই সময়ে চারটি রাজ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল - অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম, অন্ধ্র প্রদেশ এবং ওড়িশা এবং এই সবকটিতেই এনডিএ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জয় লাভ করেছে। বর্তমানে মহাপ্রভু জগন্নাথ জির পবিত্র তীর্থযাত্রা চলছে - জয় জগন্নাথ। ওড়িশা রাজ্যে একটি উল্লেখযোগ্য রূপান্তর ঘটেছে, আর সেই কারণেই আমি আজ আপনাদের মাঝে থেকে একটি উড়িয়া স্কার্ফও পরে আছি।


বন্ধুগণ,
মহাপ্রভু জগন্নাথ জির আশীর্বাদ আপনাদের সকলের ওপর বর্ষণ হোক এবং আপনারা সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি লাভ করুন... এই আন্তরিক কামনা নিয়ে আমি আপনাদের প্রত্যেককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই! আমার বন্ধুরা, এটি হল চিরন্তন ভালোবাসার গল্প। এটি দিনে দিনে আরও সমৃদ্ধ হতে থাকবে, আকাঙ্ক্ষাগুলিকে প্রতিশ্রুতিতে পরিণত করবে, আর আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিটি লক্ষ্য অর্জিত হবে। এই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে আমার গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার পরে বলুন - 

ভারত মাতা কি জয়!

ভারত মাতা কি জয়!

ভারত মাতা কি জয়!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

আপনাদের অনেক ধন্যবাদ!
*****


SSS/AS......


(रिलीज़ आईडी: 2177743) आगंतुक पटल : 18
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें: English , Urdu , Marathi , हिन्दी , Hindi_MP , Manipuri , Assamese , Punjabi , Gujarati , Odia , Tamil , Telugu , Kannada , Malayalam