প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
মধ্যপ্রদেশের ধার-এ একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী; সূচনা হল ‘সুস্থ নারী সশক্ত পরিবার’ অভিযানের
Posted On:
17 SEP 2025 2:17PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
মধ্যপ্রদেশের ধার-এ আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন। ধার ভোজশালার প্রাণস্বরূপ বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী বাগদেবীর প্রতি প্রণাম জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণ শুরু করেন। বিশ্বকর্মা জয়ন্তী উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানান দেশের কারিগর ভাইবোনেদের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধার-এর ভূমির সঙ্গে শৌর্য ও বীরত্বের আখ্যান মিশে রয়েছে। জাতির সম্মান রক্ষায় সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন মহারাজ ভোজ। মহর্ষি দধিচীর আত্মবলিদান মানবতা রক্ষায় অবিচল থাকার শিক্ষা দেয়। আজ মা ভারতীর নিরাপত্তা রক্ষা জাতির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। পাকিস্তানের জঙ্গিরা আমাদের মা-বোনেদের সিঁদুর মুছে দিয়েছে এবং অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে আমরা তাদের আশ্রয়স্থল গুঁড়িয়ে দিয়েছি। চোখের পলকে নতজানু হয়েছে পাকিস্তান। গতকালও এক পাকিস্তানি জঙ্গি নিজের করুণ পরিণতির বর্ণনা দিয়েছে।
এই নতুন ভারত পরমাণু-হুমকি গ্রাহ্য করে না এবং শত্রুর মূলে আঘাত হানতে প্রস্তুত বলে প্রধানমন্ত্রী আবারও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর দিনটি ঐতিহাসিক। সর্দার প্যাটেলের দৃঢ় পদক্ষেপের ফলে এই দিনে ভারতীয় সেনা হায়দ্রাবাদকে দেশের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। বর্তমানে দিনটি চিহ্নিত হায়দ্রাবাদের মুক্তি দিবস হিসেবে- যা বার্তা দেয় যে মা ভারতীর সম্মানের চেয়ে বড় আর কিছুই হতে পারে না।
আত্মবলিদানে অবিচল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন ছিল ঔপনিবেশিক শাসনমুক্ত দ্রুত বিকাশশীল ভারত এবং সেই স্বপ্ন সফল করতে ১৪০ কোটি ভারতবাসী আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। উন্নয়নের এই যাত্রায় চারটি স্তম্ভ হলেন ভারতের নারীশক্তি, যুবশক্তি, দরিদ্র মানুষ এবং কৃষকবর্গ। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী ‘সুস্থ নারী সশক্ত পরিবার’ অভিযানের সূচনা করেন।
দেশজুড়ে সাড়া ফেলেছে ‘আদি সেবা পর্ব’। প্রধানমন্ত্রী আজ মধ্যপ্রদেশে এই কার্যক্রমের সূচনা করেন। এর ফলে জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ সরাসরি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্বকর্মা জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী ধার-এ টেক্সটাইল পার্কের শিলান্যাস করেন। এই প্রকল্প রূপায়িত হলে দেশের বস্ত্রশিল্পে আরও গতি আসবে এবং বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির বিকাশের মূল ভিত্তি হল, নারীশক্তি। মায়ের স্বাস্থ্যের ওপর পুরো পরিবারের কল্যাণ নির্ভর করে। সচেতনতা বা সম্পদের অভাবে একজন নারীও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তা নিশ্চিত করা জরুরি বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, বহু ব্যাধিই প্রথমে চিহ্নিত হয় না, কিন্তু পরে মারাত্মক আকার ধারণ করে। ‘সুস্থ নারী সশক্ত পরিবার’ অভিযানের আওতায় মহিলাদের নিয়মিতভিত্তিতে রক্তচাপ, মধুমেহ, রক্তাল্পতা, যক্ষ্মা এবং ক্যান্সার সংক্রান্ত শারীরিক পরীক্ষা হবে। এইসব পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র মিলবে নিখরচায়। চিকিৎসার আরও প্রয়োজন হলে রয়েছে আয়ুষ্মান কার্ড। কর্মসূচিটি আজ শুরু হয়ে চলবে দোসরা অক্টোবর পর্যন্ত। এর সুযোগ নেওয়ার জন্য মা ও বোনেদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, মহিলাদের শারীরিক পুষ্টির বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এই উপলক্ষ্যে তিনি আজ থেকে অষ্টম জাতীয় পোষণ মাসের সূচনা করেন। প্রসূতি ও শিশু মৃত্যুর হার কমাতে সরকারের গৃহীত প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার আওতায় প্রথম সন্তানের জন্মের পর ৫০০০ টাকা এবং দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে ৬০০০ টাকা প্রসূতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে তিনি মনে করিয়ে দেন। এ বাবদ এখনও পর্যন্ত ১৯ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে এবং আজও ১৫ লক্ষ প্রসূতির কাছে একটিমাত্র ক্লিকের মাধ্যমে ৪৫০ কোটি টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের মাটি থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আরও একটি উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসি এলাকাগুলিতে সিকল সেল অ্যানিমিয়া একটা বড় সমস্যা। তার মোকাবিলায় এই রাজ্যেরই শাদল থেকে ২০২৩ সালে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। তার আওতায় সারা দেশে ৫ কোটিরও বেশি মানুষের শারীরিক পরীক্ষাও সম্পন্ন।
মহিলাদের কল্যাণে সরকারের গৃহীত স্বচ্ছ ভারত অভিযান, উজ্জ্বলা যোজনা কিংবা জল জীবন মিশনের মতো কর্মসূচির প্রসঙ্গ উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। আয়ুষ্মান ভারত, পিএম গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা, পিএম আবাস যোজনার মতো কল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলিও তাঁর বক্তব্যে আজও জায়গা করে নিয়েছে। মুদ্রা যোজনা, লাখপতি দিদি, ব্যাঙ্ক সখী, ড্রোন দিদি প্রভৃতি উদ্যোগ মহিলাদের ক্ষমতায়নে সরকারের আন্তরিকতার প্রমাণ বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১১ বছরে দরিদ্র মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ লক্ষ্য দিয়েছে তাঁর সরকার। দেশের ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার ওপরে উঠে এসেছেন।
মধ্যপ্রদেশের বিখ্যাত মাহেশ্বরী বয়ন শিল্পের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেবী অহল্যাবাই হোলকার এই শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন। সম্প্রতি তাঁর ৩০০-তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। ধার-এ পিএম মিত্র পার্ক সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বস্ত্রশিল্পের বিকাশে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্বকর্মা জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে বিশেষভাবে উঠে আসে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার কথা। দেশের কারিগর ভাই-বোনেদের এই উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানান তিনি। বিশ্বকর্মা যোজনার আওতায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ৩০ লক্ষ কারিগর উপকৃত হয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধার হল কুশাভাই ঠাকরের জন্মস্থান- যিনি দেশের জন্য নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
নাগরিকদের আবারও স্বদেশীর মন্ত্র অনুসরণের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মহাত্মা গান্ধী স্বদেশীর ধারণাকে স্বাধীনতার একটি প্রকৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। বর্তমানে এই বিষয়টি বিকশিত ও আত্মনির্ভর ভারতের ভিত্তি হওয়া উচিত। স্বদেশী পণ্যের ক্রয় ও ব্যবহার দেশের অর্থ দেশের মধ্যেই রাখার বড় উপায় এবং তেমনটা হলে জাতীয় বিকাশের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং কর্মসংস্থানে গতি আসবে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, ২২ সেপ্টেম্বর থেকে পুনর্মাজিত জিএসটি ব্যবস্থাপনা কার্যকর হচ্ছে। এরফলে সাধারণ মানুষের হাতে যে অর্থ আসবে তা স্বদেশী পণ্য ক্রয়ের কাজে লাগানোর ডাক দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মোহন যাদব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীমতী সাবিত্রী ঠাকুর প্রমুখ।
SC/AC/NS
(Release ID: 2167711)
Visitor Counter : 2
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam