প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

মিজোরামে উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 13 SEP 2025 12:26PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

 

মিজোরামের রাজ্যপাল শ্রী ভি কে সিং জি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী লালডুহোমা জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবজি, মিজোরাম সরকারের মন্ত্রীগণ, সাংসদ ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ, মিজোরামের মানুষের প্রতি শুভেচ্ছা।

আমি মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরে রয়েছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে খারাপ আবহাওয়ার জন্য আমি আইজলে আপনাদের কাছে যেতে পারলাম না। এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতা আন্দোলন কিংবা দেশ নির্মাণ – যাই হোক না কেন, মিজোরামের মানুষ সব সময়েই এগিয়ে এসেছেন। আত্মত্যাগ ও সেবা, সাহস ও সহমর্মিতা, এইসব মূল্যবোধ মিজো সমাজের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। ভারতের উন্নয়নযাত্রায় আজ মিজোরামের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। 

বন্ধুগণ,

দেশ, বিশেষত মিজোরামের মানুষের কাছে আজ হল একটি ঐতিহাসিক দিন। আজ থেকে আইজল ভারতের রেল মানচিত্রে যুক্ত হবে। কয়েক বছর আগে আমি আইজল রেললাইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সুযোগ পেয়েছিলাম। আজ আমি গর্বের সঙ্গে তা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করছি। অনেক প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জকে জয় করে এই রেলপথ তৈরি করা হয়েছে। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের দক্ষতা এবং শ্রমিকদের দৃঢ় মনোবলের জন্যই তা সম্ভব হয়েছে। 

বন্ধুগণ,

এই প্রথম  রাজধানী এক্সপ্রেসের মাধ্যমে মিজোরামের সাইরাং
দিল্লির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে। এটি শুধুমাত্র একটি রেল যোগাযোগ নয়, এটি হল পরিবর্তনের একটি জীবনরেখা। এই রেলপথ মিজোরামের মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে বিপ্লব আনবে। মিজোরামের কৃষক এবং ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে যেতে পারবেন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিচর্যার ক্ষেত্রে মানুষ আরও সুযোগ-সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি, পর্যটন, পরিবহন এবং আতিথেয়তা ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। 

বন্ধুগণ,

ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য মিজোরামের মতো রাজ্য সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত ব্যাপকভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে। গত ১১ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বের উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে। গ্রামাঞ্চলে রাস্তাঘাটের পাশাপাশি  মহাসড়ক নির্মাণ, মোবাইল এবং ইন্টারনেট সংযোগ, বিদ্যুৎ, নলবাহিত জল এবং এলপিজি সংযোগ সহ সমস্ত ক্ষেত্রে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। উড়ান প্রকল্পে বিমান ভ্রমণের সুবিধা পাবে মিজোরাম এবং খুব শীঘ্রই এই অঞ্চলে হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু হবে। এর ফলে মিজোরামের প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের পুবে তাকাও নীতি এবং উত্তর-পূর্ব আর্থিক করিডর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মিজোরামের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মাধ্যমে মিজোরামকে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গেও যুক্ত করা হবে। এর ফলে, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য ও পর্যটনের বিকাশ ঘটবে।

বন্ধুগণ,

মিজোরামের তরুণ প্রতিভার ক্ষমতায়ন করা সরকারের লক্ষ্য। মিজোরামে ইতিমধ্যে ১১টি একলব্য আবাসিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে এবং আরও ছ’টির কাজ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এই অঞ্চলে এখন প্রায় ৪,৫০০টি স্টার্ট-আপ এবং ২৫টি ইনকিউবেটর কাজ করছে। উন্নয়নের এই আন্দোলনে মিজোরামের তরুণরা সক্রিয়ভাবে যোগ দিচ্ছেন এবং তাঁদের নিজেদের ও অন্যদের জন্যও নতুন নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দিচ্ছেন।

বন্ধুগণ,

ভারত দ্রুত আন্তর্জাতিক ক্রীড়ার এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠছে। সেইসঙ্গে, এটি দেশের এক ক্রীড়া-অর্থনীতিও গড়ে তুলছে। ক্রীড়াক্ষেত্রে মিজোরামের এক অদ্ভূত ঐতিহ্য রয়েছে। ফুটবল এবং অন্যান্য ক্রীড়ায় এই রাজ্য বহু চ্যাম্পিয়নের জন্ম দিয়েছে। আমাদের ক্রীড়ানীতির মাধ্যমে মিজোরাম উপকৃত হবে। সরকার সম্প্রতি জাতীয় ক্রীড়ানীতি ‘খেলো ইন্ডিয়া খেল নীতি’ প্রণয়ন করেছে। এই উদ্যোগ মিজোরামের তরুণদের সামনে সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দেবে।

বন্ধুগণ,

দেশ কিংবা বিদেশে উত্তর-পূর্বের সংস্কৃতির দূত হয়ে ওঠা আমার কাছে অত্যন্ত আনন্দের। কয়েক মাসে আগে দিল্লিতে আমি
 অষ্টলক্ষ্মী উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলাম। সেখানে উত্তর-পূর্বের বস্ত্র, হস্তশিল্প, পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছিল। রাইজিং নর্থ ইস্ট সামিটে উত্তর-পূর্বের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আমি বিনিয়োগকারীদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম।
 ‘ভোকাল ফর লোকাল’ উদ্যোগের ফলে উত্তর-পূর্বের কারিগর এবং কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। মিজোরামের বাঁশের সামগ্রী, জৈব রসুন, হলুদ এবং কলার বিশেষ পরিচিত রয়েছে।

বন্ধুগণ,

মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা এবং সহজে ব্যবসা করার পথ খুলে দিতে আমরা ক্রমাগত পদক্ষেপ নিয়ে চলেছি। সম্প্রতি জিএসটি সংস্কার করা হয়েছে। এর ফলে অনেক পণ্যের দাম কমবে, পরিবারগুলির জীবনযাপন আরও সহজ হবে। কংগ্রেস আমলে ওষুধ, টেস্ট কিট এবং বিমা পলিসির ওপর প্রচুর কর ধার্য করা হয়েছিল। এর ফলে, স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও বিমাক্ষেত্র সাধারণ পরিবারের কাছে ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। জিএসটি-র নতুন হারের ফলে ক্যান্সারের মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ কমবে। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে সিমেন্ট এবং নির্মাণ সামগ্রীর দামও কমবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বহু সংস্থা ইতিমধ্যেই স্কুটার এবং গাড়ির দামও কমিয়ে দিয়েছে। 

বন্ধুগণ,

২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতে ৭.৮ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতি ঘটেছে। এর অর্থ হল, ভারত এখন বিশ্বের দ্রুততম বিকাশশীল এবং আর্থিক শক্তির দেশ। অপারেশন সিঁদুরের সময় মেড-ইন-ইন্ডিয়া অস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতি এবং উৎপাদন ক্ষেত্রের অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, প্রত্যেক নাগরিক, প্রত্যেকটি পরিবার এবং প্রতিটি অঞ্চলের কল্যাণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। নাগরিকদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে উন্নত ভারত গড়ে উঠবে এবং এই যাত্রায় মিজোরামের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। 

বন্ধুগণ,

প্রত্যেক নাগরিক, প্রত্যেকটি পরিবার এবং প্রতিটি অঞ্চলের কল্যাণে আমার সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। নাগরিকদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে গড়ে উঠবে উন্নত ভারত এবং এই যাত্রায় মিজোরামের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। আমি আপনাদের আবার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং ভারতের রেল মানচিত্রে আইজলকে স্বাগত জানাচ্ছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আমি আজ আইজলে যেতে পারলাম না। কিন্তু আমি নিশ্চিত, খুব শীঘ্রই আমাদের সাক্ষাৎ ঘটবে। ধন্যবাদ!

 


SC/MP/DM


(Release ID: 2166434) Visitor Counter : 13