প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

নতুন দিল্লিতে ইকোনমিক টাইমস ওয়ার্ল্ড লিডার্স ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

Posted On: 23 AUG 2025 10:12PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে ইকোনমিক টাইমস ওয়ার্ল্ড লিডার্স ফোরামে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ফোরামে বিশ্ব পরিস্থিতি এবং ভূ-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ভারত আর্থিকভাবে কতটা শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে, তা তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বিকাশশীল অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে এবং খুব শীঘ্রই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আর্থিক শক্তির দেশ হয়ে উঠবে। শ্রী মোদী বলেন, ভারতের রাজস্ব ঘাটতি ৪.৪ শতাংশ কমে এসেছে এবং ভারতীয় সংস্থাগুলি মূলধনী বাজার থেকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করছে। অন্যদিকে, ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে, যা আগে কখনও ঘটেনি। তিনি জানান, মুদ্রাস্ফীতি অনেক কমে এসেছে এবং সুদের হারও কমেছে। সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি)-এর মাধ্যমে দেশের লগ্নিকারীরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছেন। 

প্রধানমন্ত্রী জানান, ইপিএফও-র তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৫-এর জুন মাসেই ২২ লক্ষ সাধারণ চাকরি হয়েছে, যা আগে কখনও ঘটেনি।  খুচরো মুদ্রাস্ফীতিও সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। তিনি জানান, ২০১৪ সালে যেখানে ২.৫ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো, এখন তা ১০০ গিগাওয়াটে পৌঁছে গিয়েছে। 

শ্রী মোদী আগের সরকারগুলির বিরুদ্ধে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির অভিযোগ করেন। এই সংকীর্ণ মানসিকতার কারণে অন্য দেশগুলির তুলনায় ভারত বছরের পর বছর ধরে পিছিয়ে ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের পরবর্তী পর্বে এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে। ভারত এখন ৬জি প্রযুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। 

শ্রী মোদী বলেন, ভারত ৫০-৬০ বছর আগে সেমিকন্ডাক্টর তৈরির কাজ শুরু করতে পারত, কিন্তু তা হয়নি। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, সেমিকন্ডাক্টর তৈরির সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি এখন ভারতে আসতে শুরু করেছে। চলতি বছরের শেষের দিকে মেক ইন ইন্ডিয়া চিপ বাজারে চলে আসবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন। 

জাতীয় মহাকাশ দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি মহাকাশ ক্ষেত্রেও ভারতের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, ২১ শতকে বিশ্বের অন্য দেশগুলি যখন মহাকাশে অভিযান চালাচ্ছে, তখন ভারতও পিছিয়ে থাকতে পারে না। মহাকাশ ক্ষেত্রেও সরকারের সংস্কারের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, গত ১১ বছরে ভারত ৬০টির বেশি মিশন সম্পন্ন করেছে। তিনি বলেন, ভারত এখন গগণযান মিশনের প্রস্তুতি চালাচ্ছে। মহাকাশ ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে বেসরকারি অংশগ্রহণের পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৪-র আগে ভারতে মাত্র একটি স্টার্টআপ ছিল, এখন তা ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। মহাকাশে ভারতের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরির পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিরোধীরা যতই বাধা দিক, সংস্কার চালিয়ে যেতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ প্রসঙ্গে সংশোধিত আয়কর আইনের কথাও তুলে ধরেন তিনি। 

শ্রী মোদী বলেন, সরকার ক্রীড়া ক্ষেত্রেও সংস্কারের পথে হেঁটেছে। নতুন ক্রীড়ানীতিও চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, জিএসটি কাঠামো ক্ষেত্রেও বড় ধরনের সংস্কার করা হচ্ছে। জিএসটি প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হবে এবং জিএসটি-র হার আরও কমানো হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতে উৎপাদন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কারের পথে হাঁটছে সরকার। এর ফলে, নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি মানুষের জীবনযাপন এবং ব্যবসা করা আরও সহজ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

শ্রী মোদী বলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গড়তে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন, আত্মনির্ভর ভারতই হবে উন্নত ভারতের ভিত্তি। প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত তার  বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৫০ শতাংশ অজৈব জ্বালানির মাধ্যমে উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল। ৫ বছর আগে অর্থাৎ ২০২৫-এর মধ্যেই সেই সাফল্য অর্জন করা গেছে। 

রপ্তানির ক্ষেত্রেও আত্মনির্ভর ভারতের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতবছর ৪ লক্ষ কোটি টাকার কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। গতবছর বিশ্বে তৈরি ৮০০ কোটি ভ্যাকসিন ডোজের মধ্যে ৪০০ কোটিই তৈরি হয়েছে ভারতে। শ্রী মোদী জানান, স্বাধীনতার পর সাড়ে ছয় দশকে ভারতে ইলেক্ট্রনিক্স রপ্তানি ছিল প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে ৩.২৫ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। তিনি আরও জানান, ২০১৪ পর্যন্ত গাড়ি শিল্পে বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। এখন মাত্র এক বছরেই ১.২ লক্ষ কোটি টাকার গাড়ি রপ্তানি করেছে  ভারত। বিশ্বের ১০০টি দেশে বৈদ্যুতিক গাড়িও রপ্তানি করে থাকে ভারত। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অগ্রগতির প্রধান ভিত্তি হল গবেষণা। দেশের গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন তৈরি করা হয়েছে এবং এর জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে পরিবেশবান্ধব শক্তি, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি, ব্যাটারি স্টোরেজ এবং জৈব প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারত এখন 'সংস্কার, কার্য সম্পাদন এবং রূপান্তর'-এর মন্ত্রকে হাতিয়ার করে এগিয়ে চলেছে। লাল কেল্লার প্রাকার থেকে তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এখন পরিবর্তনের কান্ডারী হয়ে উঠেছে। 

 


SC/MP/AS


(Release ID: 2160351)