প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

নয়াদিল্লিতে অখিল ভারতীয় মারাঠি সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

प्रविष्टि तिथि: 21 FEB 2025 7:34PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ 

 

শ্রদ্ধেয় নেতা শ্রী শারদ পওয়ারজি, মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিসজি, অখিল ভারতীয় মারাঠি সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি ড. তারা ভাওয়ালকরজি, প্রাক্তন সভাপতি ড. রবীন্দ্র শোভানেজি, উপস্থিত সমস্ত গুণী সদস্যবৃন্দ, মারাঠি ভাষার পণ্ডিতবর্গ, এবং উপস্থিত ভাই ও বোনেরা—

এইমাত্র ড. তারাজি তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন, আমি হেসে বললাম—“থারছান।” উনি গুজরাতিতে উত্তর দিলেন, আর আমি-ও তো গুজরাতি জানি। দেশের আর্থিক রাজধানী মহারাষ্ট্র থেকে জাতীয় রাজধানীতে এসে উপস্থিত সমস্ত মারাঠি সারস্বত সমাজকে জানাই প্রণাম।

আজ দিল্লিতে এই সম্মানজনক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা নিবেদিত মারাঠি ভাষাকে। কিন্তু এই অখিল ভারতীয় মারাঠি সাহিত্য সম্মেলন কেবল একটি ভাষা বা একটি রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের স্পৃহা ও মহারাষ্ট্র তথা ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এই সম্মেলনের মূলসুর। দ্ঞানেশ্বর ও তুকারামের মারাঠি ভাষা আজ রাজধানী দিল্লিতে মর্যাদা পাচ্ছে।

ভাই ও বোনেরা,

১৮৭৮ সালে প্রথম সম্মেলনের পর থেকে এই সম্মেলন ১৪৭ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী। মহাদেব গোবিন্দ রানাডে, হরি নারায়ণ আপ্তে, মাধব শ্রীহরি আনে, শিবরাম পরাঞ্জপে থেকে শুরু করে বীর সাভারকর পর্যন্ত অসংখ্য মহাপুরুষ এই সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন। আজ শারদজির আমন্ত্রণে এই মহান ঐতিহ্যের অংশ হতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা সমস্ত মারাঠি ভাষাপ্রেমীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আর আজকের দিনটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ কারণ আজই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিল্লিতে সাহিত্য সম্মেলনের জন্য এর চেয়ে শুভ দিন আর কী হতে পারে!

বন্ধুগণ,

যখন মারাঠির কথা ভাবি, তখন সবার আগে স্মরণে আসে সন্ত দ্ঞানেশ্বরের বাণী— “माझा मराठीची बोलू कौतुके। परि अमृतातेहि पैजासी जिंके।” অর্থাৎ মারাঠি ভাষা নিজেই অমৃতের চেয়েও মধুর। সেই কারণেই আমার মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ সকলেই জানেন। আমি হয়তো আপনাদের মতো পণ্ডিত নই, তবে আমি সবসময় চেষ্টা করেছি মারাঠি বলতে, নতুন মারাঠি শব্দ শিখতে।

আজ এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের অভিষেকের ৩৫০ বছর, মহীয়সী অহল্যাবাই হোলকরজির জন্মত্রিশতবর্ষ, আর কয়েক মাস আগেই উদযাপিত হয়েছে সংবিধানের পঁচাত্তর বছর, যা রচনা করেছিলেন বাবাসাহেব আম্বেদকর।

আজ আমরা গর্ব অনুভব করি যে এক শতাব্দী আগে মহারাষ্ট্রের ভূমিতেই এক মারাঠি মহাপুরুষ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বীজ বপন করেছিলেন। আজ তা মহাবটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। এই শতবর্ষপূর্তিতে স্মরণ করি সংঘের সেই ত্যাগতপস্যার যজ্ঞকে, যা বেদ থেকে বিবেকানন্দ পর্যন্ত ভারতীয় সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মে পৌঁছে দিচ্ছে। আমার সৌভাগ্য যে আমিও সংঘ দ্বারা প্রেরিত হয়েছি দেশসেবার পথে জীবন উৎসর্গ করতে।

কিছু মাস আগেই মারাঠি ভাষাকে দেওয়া হয়েছে ধ্রুপদী বা ক্ল্যাসিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজের মর্যাদা। সারা বিশ্বে প্রায় ১২ কোটি মারাঠিভাষীর বহু দশকের আকাঙ্ক্ষা আজ পূর্ণ হয়েছে। এই স্বপ্নসিদ্ধির অংশ হতে পেরে আমি ধন্য।

ভাষা কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়—ভাষাই আমাদের সংস্কৃতির বাহক। সমাজের জন্মভূমি যেমন ভাষা, তেমনি সমাজগঠনের অন্যতম উপাদানও ভাষা। সমর্থ রামদাসজি লিখেছিলেন— “मराठा तितुका मेळवावा, महाराष्ट्र धर्म वाढवावा।” অর্থাৎ মারাঠি ভাষা সামগ্রিক, যা বীরত্ব ও সৌন্দর্য, সমতা ও ঐক্য, ভক্তি, শক্তি ও যুক্তিকে একত্র বহন করে। দ্ঞানেশ্বর, তুকারাম, নামদেব থেকে শুরু করে গজনন মাধুলকর ও সুধীর ফড়কের গীত রামায়ণ—সবই মারাঠির সেই জ্যোতি।

বিদেশি শাসনের শতাব্দীগুলোতে মারাঠি ভাষাই হয়ে উঠেছিল মুক্তির ডাক। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ, শম্ভাজি মহারাজ, বাজিরাও পেশোয়া—তাঁদের বীরত্বে কেঁপে উঠেছিল শত্রুরা। স্বাধীনতার লড়াইয়ে লোকমান্য তিলক, বীর সাভারকর, ফড়কেরা ইংরেজদের নিদ্রাহরণ করেছিলেন। কেশরী, মারাঠা, গোবিন্দাগ্রজের কবিতা, গদকড়ির নাটক দেশজুড়ে জ্বালিয়েছিল স্বাধীনতার অগ্নিশিখা।

মারাঠি সাহিত্য-সংস্কৃতি সমাজের প্রান্তিক ও নিপীড়িতদের মুক্তির পথ খুলে দিয়েছে—জ্যোতিবা ফুলে, সাবিত্রীবাই ফুলে, মহর্ষি কারভে, বাবাসাহেব আম্বেদকর মারাঠিকে ব্যবহার করেছেন নতুন যুগের দিশা নির্মাণে। মারাঠি সাহিত্যের প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি তাকে বিজ্ঞানের কল্পলোক পর্যন্ত নিয়ে গেছে।

চলচ্চিত্রের কথাও ভুলে যাওয়া যায় না। মারাঠি ও হিন্দি সিনেমার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য মুম্বইকে করেছে  গর্বের শহর। আজ ছাওয়া নিয়ে নতুন উদ্দীপনা, শম্ভাজি মহারাজের বীরত্বের কাহিনি আবারও আলোচনায়।

কেশবসুত লিখেছিলেন— “जुनें जाऊं द्या...” অর্থাৎ পুরনোতে আটকে থাকা নয়, নতুনকে গ্রহণ করাই সভ্যতার গতি। সেই কারণেই ভারত সভ্যতা প্রাচীন হয়েও আজ জীবন্ত—কারণ সে পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করেছে।

আজ আমরা আঞ্চলিক ভাষাগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে শিক্ষা, বিজ্ঞান, চিকিৎসা সব ক্ষেত্রেই মারাঠি ও অন্যান্য ভাষার প্রসার ঘটাচ্ছি। এখন মারাঠি তরুণরা মাতৃভাষাতেই উচ্চশিক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল পড়াশোনা করতে পারছে।

বন্ধুগণ,

আমরা বলি সাহিত্য সমাজের আয়না, কিন্তু সাহিত্য সমাজের পথপ্রদর্শকও। সেই জন্যই সাহিত্য সম্মেলনগুলির ভূমিকা এত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৭ সালে যখন ১৫০ বছর পূর্ণ হবে, তখন ১০০তম সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে। এখন থেকেই আপনাদের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

আমি আশা করি এই মহান ঐতিহ্য, নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার মারাঠি সাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

এই বিশ্বাস নিয়ে, যে মারাঠি সাহিত্যের এই গৌরবময় ধারা ১৪০ কোটি ভারতবাসীর স্বপ্ন বিকশিত ভারত গঠনে নতুন শক্তি ও প্রেরণা দেবে—আপনাদের সকলকে আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

 

SC/TM


(रिलीज़ आईडी: 2160165) आगंतुक पटल : 17
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें: English , Urdu , हिन्दी , Marathi , Manipuri , Assamese , Punjabi , Gujarati , Odia , Tamil , Telugu , Kannada , Malayalam