প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ : গৌহাটিতে অ্যাডভান্টেজ অসম ২.০ ইনভেস্টমেন্ট ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার সম্মেলন ২০২৫ উদ্বোধন
प्रविष्टि तिथि:
25 FEB 2025 2:06PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
অসমের রাজ্যপাল শ্রী লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যজি, কর্মঠ মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মাজি, শিল্পক্ষেত্রের নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ, ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়বৃন্দ,
পূর্ব ভারতে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল আজ এক নতুন ভবিষ্যতের পথে যাত্রা শুরু করতে চলেছে। অ্যাডভান্টেজ অসম, অসমের সামর্থ্য ও অগ্রগতিকে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করার এক মহতী উদ্যোগ। ইতিহাস সাক্ষী যে, অতীতে ভারতের সমৃদ্ধিতে পূর্ব ভারতের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। আজ যখন ভারত এক উন্নত ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তখন পূর্ব ভারত ও আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চল আবারও তাদের শক্তি ও সম্ভাবনা প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত। আমি অ্যাডভান্টেজ অসম -কে এই মনোভাবের প্রতিফলন হিসেবে দেখি। এই মহোৎসব আয়োজনের জন্য আমি অসম সরকার ও হিমন্তজির নেতৃত্বাধীন সমগ্র টিমকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আমি স্মরণ করি, ২০১৩ সালে যখন আমি নির্বাচনী প্রচারের জন্য অসমে এসেছিলাম, তখন এক সমাবেশে হঠাৎই বলেছিলাম— “সেই দিন দূরে নয়, যেদিন মানুষ অক্ষর শেখার সময় বলবে: A for Assam।”
বন্ধুগণ,
আজ আমরা সবাই ঘনিষ্ঠভাবে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি। এই অনিশ্চয়তার মাঝেও বিশেষজ্ঞরা একটি বিষয়ে নিশ্চিত— আর তা হলো ভারতের দ্রুত বিকাশ। এই আস্থার পিছনে রয়েছে দৃঢ় ভিত্তি। আজকের ভারত দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ২১শ শতকের আগামী ২৫ বছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশ্বের আস্থা আজ ভারতের যুবসমাজে, যারা দ্রুত দক্ষ হচ্ছে এবং উদ্ভাবনের চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে। বিশ্বের আস্থা ভারতের নব-মধ্যবিত্ত সমাজে, যারা দারিদ্র্যের শৃঙ্খল ভেঙে নতুন আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এগিয়ে আসছে। বিশ্বের আস্থা ভারতের ১৪০ কোটির জনগণের উপর, যারা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নীতির ধারাবাহিকতাকে সমর্থন করছে। বিশ্বের আস্থা ভারতের শাসনব্যবস্থায়, যা নিরবচ্ছিন্নভাবে সংস্কার কার্যকর করছে। আজ ভারত স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খলকে মজবুত করছে, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করছে, পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি, নতুন India-Middle East-Europe Economic Corridor বহু নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে।
বন্ধুগণ,
বিশ্বের এই ক্রমবর্ধমান বিশ্বাসের মাঝেই আজ আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি মা কামাক্ষ্যার পবিত্র ভূমিতে। ভারতের বিকাশে অসমের অবদান ক্রমাগত বাড়ছে। ২০১৮ সালে অ্যাডভান্টেজ অসম -এর প্রথম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন অসমের অর্থনীতি ছিল ২.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা। আজ তা দাঁড়িয়েছে ৬ লক্ষ কোটি টাকায়। অর্থাৎ মাত্র ছয় বছরে অসমের অর্থনীতি দ্বিগুণ হয়েছে। এটাই ডাবল ইঞ্জিন সরকার-এর দ্বিগুণ প্রভাব। আপনাদের মতো বিনিয়োগকারীদের অবদানে অসম এখন সীমাহীন সম্ভাবনার রাজ্যে রূপান্তরিত হয়েছে। শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, পরিকাঠামো ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে অসম সরকার বিশেষ জোর দিচ্ছে।
২০১৪ সালের আগে ব্রহ্মপুত্রের উপর মাত্র তিনটি সেতু ছিল— ৭০ বছরে মাত্র তিনটি। কিন্তু গত ১০ বছরে আমরা চারটি নতুন সেতু নির্মাণ করেছি। এর মধ্যে একটির নামকরণ হয়েছে ভারতরত্ন ভূপেন হাজারিকা-র নামে। রেল বাজেটেও অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছে— ২০০৯-১৪ সালে যেখানে গড়ে ২১০০ কোটি টাকা ছিল, আমাদের সরকার সেটিকে বাড়িয়ে ১০ হাজার কোটিতে নিয়ে গিয়েছে। অসমের ৬০টিরও বেশি রেলস্টেশন আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। আজ উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম সেমি-হাই-স্পিড ট্রেন গৌহাটি ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে চলাচল শুরু করেছে।
বন্ধুগণ,
অসমের আকাশপথ সংযোগও দ্রুত বাড়ছে। ২০১৪ সালের আগে মাত্র ৭টি রুটে বিমান চলাচল করত। আজ তা প্রায় ৩০টি রুটে গিয়ে পৌঁছেছে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে এবং যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।
বন্ধুগণ,
পরিকাঠামোর উন্নতির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলায়ও অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। বিগত এক দশকে বহু শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, সীমান্ত সমস্যা সমাধান হয়েছে। আজ অসমের প্রতিটি অঞ্চল, প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি যুবক এই রাজ্যের উন্নতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে।
বন্ধুগণ,
আজ ভারতের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি ক্ষেত্রে মহা সংস্কার চলছে। Ease of Doing Business উন্নত করতে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। স্টার্ট-আপ থেকে শুরু করে উৎপাদন ও এমএসএমই ক্ষেত্রে নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের ব্যাপক বিনিয়োগ শিল্প, পরিকাঠামো ও উদ্ভাবনকে শক্তিশালী করছে। এজন্যই বিনিয়োগকারীরা ভারতের পরিবর্তনের সম্ভাবনা উপলব্ধি করছেন। অসমও এই গতিতে এগিয়ে চলেছে। অসম ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, অসম এই লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে। আমার এই বিশ্বাস অসমের কর্মক্ষম, প্রতিভাবান মানুষ এবং বিজেপি সরকারের প্রতিশ্রুতির উপর নির্ভরশীল।
অসম আজ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারতের মধ্যে প্রবেশদ্বার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। এই সম্ভাবনাকে আরও বাড়াতে কেন্দ্র সরকার চালু করেছে North East Transformative Industrialisation Scheme বা Unnati। আমি শিল্পনেতাদের আহ্বান জানাই এই পরিকল্পনা এবং অসমের অসীম সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করুন।
বন্ধুগণ,
অসমের চা আজ একটি গ্লোবাল ব্র্যান্ড, সারা বিশ্বের চা-প্রেমীদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুই শতাব্দীর এই ঐতিহ্য অসমকে অন্য ক্ষেত্রেও সাফল্যের অনুপ্রেরণা জোগায়।
বন্ধুগণ,
বিশ্বের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। বিশ্ব দৃঢ় সরবরাহ শৃঙ্খল দাবি করছে। এই সময়ে ভারত উৎপাদন খাতে Mission Mode -এ কাজ শুরু করেছে। Make in India -এর মাধ্যমে আমরা সাশ্রয়ী উৎপাদনকে উৎসাহিত করছি। ফার্মাসিউটিক্যালস, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইলস— সব ক্ষেত্রেই ভারত দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও নতুন মানদণ্ড তৈরি করছে। অসম এই উৎপাদন বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
অসম আজ ভারতের অনশোর ন্যাচারাল গ্যাস উৎপাদনে ৫০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখে। তেল শোধনাগারের ক্ষমতা বাড়ছে। ইলেকট্রনিক্স, সেমিকন্ডাক্টর, সবুজ শক্তি— নতুন প্রজন্মের ক্ষেত্রেও অসম দ্রুত এগিয়ে আসছে। টাটা সেমিকন্ডাক্টর অ্যাসেম্বলি অ্যান্ড টেস্ট ফেসিলিটি জাগিরোডে উদ্বোধন হয়েছে। এটি আগামী দিনে উত্তর-পূর্বে প্রযুক্তির বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বন্ধুগণ,
ডিজিটাল বিপ্লব, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের উপরই ২১শ শতকের অগ্রগতি নির্ভর করছে। এজন্য আমাদের সরকার সম্পূর্ণ গতিতে নীতি ও কৌশল বাস্তবায়ন করছে। আজ ভারত ইলেকট্রনিক্স ও মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং-এ বিরাট অগ্রগতি করেছে। এখন লক্ষ্য সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন। আগামী দশকের শেষে ইলেকট্রনিক্স ক্ষেত্র ৫০০ বিলিয়ন ডলার স্পর্শ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তখন ভারত সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে একটি আন্তর্জাতিক শক্তি হয়ে উঠবে।
বন্ধুগণ,
পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা মাথায় রেখে আমাদের সরকার নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, সবুজ হাইড্রোজেন— সব ক্ষেত্রেই কাজ চলছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। আমি চাই, অসম নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিক। তবে এর জন্য শিল্পক্ষেত্রের নেতৃত্বকে এগিয়ে আসতে হবে।
বন্ধুগণ,
২০৪৭ সালের মধ্যে পূর্ব ভারত, ভারতের 'উন্নত ভারত' গঠনের মূল চালিকাশক্তি হবে। পরিকাঠামো, কৃষি, শিল্প, পর্যটন— প্রতিটি ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্ব ও পূর্ব ভারত দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই যাত্রায় আপনারা সঙ্গী হবেন এবং অসমের বিকাশে অবদান রাখবেন। আসুন, আমরা সকলে মিলে অসমকে এমন এক রাজ্যে পরিণত করি, যা ভারতের সক্ষমতাকে Global South-এর সামনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
আমি আবার আপনাদের সকলকে এই সম্মেলনের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। এবং এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি— আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আমি উন্নত ভারত গড়ার যাত্রায় আপনাদের পূর্ণ সমর্থন করব।
অনেক ধন্যবাদ।
SC/TM
(रिलीज़ आईडी: 2160161)
आगंतुक पटल : 11
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें:
English
,
Urdu
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam