প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
মধ্যপ্রদেশের আনন্দপুর ধামে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূল পাঠ
प्रविष्टि तिथि:
11 APR 2025 7:27PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১১ এপ্রিল ২০২৫
জয় সচ্চিদানন্দ মহারাজ !!!
স্বামী বিচার পূর্ণ আনন্দ মহারাজ, রাজ্যপাল মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব, মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সাংসদ ভি. ডি. শর্মা, সাংসদ জনার্দন সিং সিগ্রীওয়াল, মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি, এবং আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
এখানে দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং সারা দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক ভক্তবৃন্দ এসেছেন। আমি আপনাদের সকলকে আন্তরিক অভিবাদন জানাই।
সাথীরা,
শ্রী আনন্দপুর ধামে এসে আজ আমার মন অভিভূত। অল্প আগে আমি গুরুজি মহারাজের মন্দির দর্শন করেছি। হৃদয় আনন্দে ভরে গেছে।
সাথীরা,
যে ভূমির প্রতিটি কণা সন্তদের তপস্যায় সিঞ্চিত, যেখানে পরার্থ এক ঐতিহ্য হয়ে গেছে, যেখানে সেবার সংকল্প মানবতার কল্যাণের পথ প্রশস্ত করে, সে ভূমি কখনোই সাধারণ নয়। আর সেই কারণেই আমাদের সন্তরা অশোকনগর সম্পর্কে বলেছিলেন যে, এখানে শোক আসতেও ভয় পায়। আমি আনন্দিত যে আজ বৈশাখী ও শ্রী গুরু মহারাজের অবতার দিবসের উৎসবে যোগ দেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমি এই পবিত্র দিনেপ্রথম পাদশাহী শ্রীশ্রী ১০৮ শ্রী স্বামী অদ্বৈত আনন্দ মহারাজ এবং অন্যান্য সকল পাদশাহী সন্তকে প্রণাম জানাই।
আমাকে জানা হয়েছে যে, আজকের এই দিনেই ১৯৩৬ সালে শ্রী দ্বিতীয় পাদশাহী মহাসমাধি লাভ করেছিলেন এবং ১৯৬৪ সালে শ্রী তৃতীয় পাদশাহী নিজস্ব স্বরূপে লীন হয়েছিলেন। আমি এই দুই সদগুরু মহারাজের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ করি। আমি মা জাগেশ্বরী দেবী, মা বীজাসন, মা জানকি করিলা মাতা ধামকেও প্রণাম জানাই এবং আপনাদের সবাইকে বৈশাখী ও শ্রী গুরু মহারাজের অবতারোৎসবের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
সাথীরা,
আমাদের ভারত ঋষি, মুনি এবং সন্তদের ভূমি। যখনই আমাদের ভারত, আমাদের সমাজ কোনো কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছে, তখনই কোনো না কোনো ঋষি, মুনি এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়ে সমাজকে নতুন দিশা দিয়েছেন। পূজ্য স্বামী অদ্বৈত আনন্দ মহারাজের জীবনেও আমরা এর প্রতিফলন দেখতে পাই। এক সময় ছিল যখন আদি শঙ্করাচার্যের মতো আচার্যরা অদ্বৈত দর্শনের গভীর জ্ঞানের ব্যাখ্যা করেছিলেন। কিন্তু দাসত্বের সময়কালে সমাজে সেই জ্ঞান বিস্মৃত হতে শুরু করেছিল। অথচ সেই সময়েই এমন ঋষি-মুনি এসেছিলেন, যাঁরা অদ্বৈত দর্শনের মাধ্যমে জাতির আত্মাকে নাড়া দিয়েছিলেন। সেই ধারাতেই পূজ্য অদ্বৈত আনন্দ মহারাজ অদ্বৈতের জ্ঞান সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেন। মহারাজ অদ্বৈতের জ্ঞানকে আমাদের সবার জন্য সহজ করে দেন এবং সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসেন।
সাথীরা,
আজ বিশ্বের উন্নতির মাঝেও মানবতার সামনে যুদ্ধ, সংঘাত এবং মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে জড়িত বহু দুশ্চিন্তা রয়েছে। এই দুশ্চিন্তা ও প্রতিবন্ধকতার মূল কোথায়? মূল রয়েছে “আপন-পর” এর মানসিকতায়। সেই মানসিকতা, যা মানুষকে মানুষ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। আজ বিশ্বও ভাবছে, এর সমাধান কোথায়? এর সমাধান রয়েছে অদ্বৈত দর্শনে!
অদ্বৈত মানে যেখানে কোনো দ্বৈত নেই। অদ্বৈত মানে প্রতিটি জীবমাত্রে একই ঈশ্বরকে দেখার ধারণা। সমগ্র সৃষ্টিকেই ঈশ্বররূপে দেখার মনোভাবই অদ্বৈত। এই অদ্বৈত দর্শনকেই পরমহংস দয়াল মহারাজ সহজ ভাষায় বলতেন— “যা তুই, তাই আমি”। ভাবুন, কত সুন্দর একটি ধারণা! “যা তুই, তাই আমি।” এই চিন্তা আমার-তোর বিভেদ দূর করে দেয়। যদি সবাই এই চিন্তা গ্রহণ করে, তবে সব ঝগড়াই মিটে যায়।
সাথীরা,
কিছুক্ষণ আগে আমার ষষ্ঠ পাদশাহী স্বামী শ্রী চিন্তাপূর্ণ আনন্দ মহারাজের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল। প্রথম পাদশাহী পরমহংস দয়াল মহারাজের ভাবধারার পাশাপাশি তিনি আমাকে আনন্দধামের সেবাকার্য সম্পর্কেও বলছিলেন। এখানে সাধনার যে ৫টি নিয়ম নির্ধারণ করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো নিষ্কাম সেবা। অর্থাৎ নিঃস্বার্থভাবে দরিদ্র-অসহায়ের সেবা করা, নর সেবায় নারায়ণ সেবাকে উপলব্ধি করা— এটাই আমাদের সংস্কৃতির ভিত্তি।
আমার অত্যন্ত আনন্দ হচ্ছে যে, এই সেবার সংস্কৃতিকে আনন্দপুর ট্রাস্ট নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। ট্রাস্টের পরিচালিত হাসপাতালে হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা হয়। চিকিৎসার জন্য বিনামূল্যে শিবিরও আয়োজন করা হয়। গো-সেবার জন্য একটি আধুনিক গোরক্ষালয় চালানো হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের জন্য বহু স্কুলও চালু করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আনন্দপুর ধাম পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে সমগ্র মানবতার এক বিশাল সেবা করছে। আশ্রমের অনুগামীরা হাজার হাজার একর অনাবাদী জমি সবুজে ভরিয়ে তুলেছেন। আজ আশ্রমের রোপিত হাজারো গাছ পরার্থের কাজে আসছে।
ভাই ও বোনেরা,
এই সেবার ভাবনাই আজ আমাদের সরকারের প্রতিটি প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। আজ প্রত্যেক দরিদ্র প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার কারণে খাদ্যের চিন্তা থেকে মুক্ত। প্রত্যেক দরিদ্র ও প্রবীণ আয়ুষ্মান যোজনার কারণে চিকিৎসার চিন্তা থেকে মুক্ত। প্রত্যেক দরিদ্র পরিবার পিএম আবাস যোজনার কারণে পাকা ঘরের আশঙ্কা থেকে মুক্ত হচ্ছে। জল জীবন মিশনের কারণে গ্রামে গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা সমাধান হচ্ছে।
দেশে রেকর্ড সংখ্যায় নতুন এইমস, আইআইটি এবং আইআইএম খোলা হচ্ছে। দরিদ্রতম পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। আমাদের পরিবেশ পরিষ্কার হোক, প্রকৃতি সংরক্ষিত থাকুক— এর জন্য সরকার “এক গাছ মায়ের নামে” অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে দেশজুড়ে কোটি কোটি গাছ লাগানো হয়েছে। দেশ এত বড় পরিসরে এত কিছু করতে পারছে, এর পেছনে আমাদের সেবাভাবই মূল চালিকা শক্তি। দরিদ্র ও বঞ্চিতদের উন্নয়নের সংকল্প, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ” এর মন্ত্র, সেবার এই চেতনা— আজ এটাই সরকারের নীতি।
সাথীরা,
যখন আমরা সেবার সংকল্পে যুক্ত হই, তখন আমরা শুধু অন্যেরই কল্যাণ করি না, আমাদের ব্যক্তিত্বও পরিশীলিত হয়, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রশস্ত হয়। সেবা আমাদের ব্যক্তিগত সীমানা ছাড়িয়ে সমাজ, জাতি ও মানবতার বৃহত্তর উদ্দেশ্যের সঙ্গে যুক্ত করে। আমরা মিলেমিশে একসঙ্গে কাজ করতে শিখি। আমরা জীবনের বিভিন্ন দিক অনুধাবন করি। আপনারা সকলে সেবামূলক কাজে নিবেদিতপ্রাণ মানুষ। আপনারা জীবনে অভিজ্ঞতা করেছেন— কষ্টের সঙ্গে লড়াই করা এবং তারপর কষ্টকে জয় করা, সেবা করতে করতে আমরা সহজেই এইসব শিখে যাই। তাই আমি বলি, সেবা এক সাধনা, এক গঙ্গা— যাতে প্রত্যেকেরই ডুব দেওয়া উচিত।
সাথীরা,
অশোকনগর ও আনন্দপুর ধামের মতো এই অঞ্চল, যা দেশকে এত কিছু দিয়েছে, তার উন্নয়নও আমাদের দায়িত্ব। এই অঞ্চলের শিল্প, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসীম সম্ভাবনা বয়ে এনেছে। তাই আমরা মধ্যপ্রদেশ ও অশোকনগরের উন্নয়নকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
চন্দেরি তন্ত্তশিল্প নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য চন্দেরি শাড়িকে জি-আই ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। প্রানপুরে "ক্রাফ্ট হ্যান্ডলুম ট্যুরিজম ভিলেজ" শুরু হয়েছে। এতে এই অঞ্চলের অর্থনীতিও নতুন গতি পাবে। মধ্যপ্রদেশ সরকার উজ্জয়িনী সিংহস্থের প্রস্তুতিতেও এখন থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
কিছুদিন আগে রামনবমীর মহোৎসবও পালিত হয়েছে। আমরা দেশে “রাম বনগমন পথ”-এর উন্নয়ন করছি। এই রাম বনগমন পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মধ্যপ্রদেশ দিয়ে অতিক্রম করবে। আর আমাদের মধ্যপ্রদেশ আগেই যেমন অদ্ভুত, তেমনি গৌরবময়। এই কার্যক্রমের ফলে তার পরিচিতি আরও মজবুত হবে।
সাথীরা,
দেশ ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে, আমরা এই লক্ষ্য অর্জন করবই। তবে এই যাত্রাপথে কিছু বিষয় সবসময় মনে রাখতে হবে। আমরা দেখি, বিশ্বের বহু দেশ উন্নয়নের যাত্রায় তাদের সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, তারা তাদের ঐতিহ্য ভুলে গেছে।
কিন্তু ভারতে আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হবে। কারণ আমাদের সংস্কৃতি কেবল আমাদের পরিচয়ই নয়, আমাদের শক্তিও। আমি আনন্দিত যে, আনন্দপুর ধাম ট্রাস্ট এই দিকেও বহু কাজ করে আসছে। আমার বিশ্বাস, আনন্দপুর ধামের সেবাকার্য উন্নত ভারতের সংকল্পকে নতুন শক্তি দেবে।
একবার আবার আপনাদের সবাইকে বৈশাখী এবং শ্রী গুরু মহারাজের অবতারোৎসবের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। বহু বহু শুভেচ্ছা।
জয় শ্রী সচ্চিদানন্দ।
SC/PK..
(रिलीज़ आईडी: 2159780)
आगंतुक पटल : 15
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें:
Assamese
,
English
,
Urdu
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam