প্রতিরক্ষামন্ত্রক
সন্ত্রাসবাদের যাবতীয় রূপ নির্মূল করতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার দায়বদ্ধ : রাজ্যসভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী
Posted On:
29 JUL 2025 5:15PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৯ জুলাই, ২০২৫
ভারত আজ সন্ত্রাসবাদের শিকড়ে পৌঁছে তাকে উপড়ে ফেলতে সক্ষম – রাজ্যসভায় ২৯ জুলাই, ২০২৫ তারিখে এই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং। সন্ত্রাসবাদের যাবতীয় রূপ নির্মূল করতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার দায়বদ্ধ বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সরকার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সক্ষমতা, জাতীয় অঙ্গীকার, নৈতিকতা এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞাকে তুলে ধরেছে। নমনীয় নীতির একটি দেশের ভীত নাগরিক নয়, ভারতবাসী এখন এক শক্তিশালী দেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে নিজের পরিচয় খুঁজে পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন শ্রী সিং।
সরকার সীমান্ত এলাকাকে সুরক্ষিত করার পাশাপাশি, দেশকে কৌশলগত, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকেও শক্তিশালী করে তুলতে চায় বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারত হামলা সহ্য করার স্বভাব ত্যাগ করে সমুচিত জবাব দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে। পরমাণু হামলার জুজু এই দেশকে আর টলাতে পারবে না।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও জানান, অপারেশন সিঁদুর সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে মাত্র। পাকিস্তান কোনোরকম ভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলেই ভারত আরও জোরালো জবাব দিতে প্রস্তুত।
অপারেশন সিঁদুর – এর সময়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে নেওয়া উচিৎ ছিল বলে কোনও কোনও মহলের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, সেই দিন আর বেশি দূরে নেই, যখন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ আবার ভারতের অংশ হয়ে উঠবেন।
সন্ত্রাসবাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের ডাক দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, শান্তি ও সমৃদ্ধির আবহ’কে ধ্বংস করার চেষ্টা সম্পর্কে উদাসীন থাকা যায় না। ধর্মীয় তাত্ত্বিক কিংবা রাজনৈতিক কোনও যুক্তিই সন্ত্রাসবাদের পক্ষে কথা বলতে পারে না।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও বলেন, ভারত ও পাকিস্তান একই সময়ে স্বাধীনতা পেয়েছিল। কিন্তু, আজ ভারত আন্তর্জাতিক আঙিনায় গণতন্ত্রের মাতা এবং পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের পিতা বলে পরিচিত। ঐ দেশ সবসময়েই জঙ্গীদের আশ্রয় দিয়ে এসেছে। পহলগাঁও – এর ঘটনা আবার তা প্রমাণ করল। সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর পাকিস্তানকে সহায়তাদান থেকে বিরত থাকতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আবেদন রেখেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধী কমিটির ভাইস চেয়ারে পাকিস্তানের দায়িত্ব গ্রহণ সম্পর্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ৯/১১’র হামলার পর এই কমিটি গড়ে তোলা হয়েছিল। কাজেই পাকিস্তানকে এই কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত বেড়াল’কে দুধ পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়ার সমতুল। পাকিস্তান হাফিজ সৈঈদ এবং মাসুদ আজহারের মতো জঙ্গীদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র এবং সেদেশের শীর্ষ সেনাকর্তারা জঙ্গীদের শেষকৃত্যে যোগ দেন। কাজেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া গোটা বিষয়টিকেই হাস্যকর পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে।
পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসবাদের বিরোধী বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, জঙ্গীদের মোকাবিলায় অপারগ হলে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ভারতের সাহায্য নিতে পারে। জঙ্গীদের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নিতে পাকিস্তানকে বাধ্য করায় আন্তর্জাতিক উদ্যোগের কথা বলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
জম্মু ও কাশ্মীরে অভিযান চালিয়ে পহলগাঁও হামলায় জড়িত জঙ্গীদের নিকেশ করার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভারতীয় সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন জানান। অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে বিশদে জানান তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভর ভারত – এর অন্যতম স্তম্ভ হ’ল প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র। বিদেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উপর ভারতের নির্ভরশীলতা কমছে। অগ্নি, পৃথ্বী ও ব্রহ্মোস – এর মতো আমাদের বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র আজ শত্রুকে যথোচিত জবাব দিতে সদা প্রস্তুত। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের আধুনিকীকরণে মোদী সরকারের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ২০১৩-২০১৪ অর্থবর্ষের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ২,৫৩,৩৪৬ কোটি টাকার। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা দাঁড়িয়েছে ৬,২১,৯৪১ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪’য় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানীর মূল্যমান ছিল মাত্র ৬৮৬ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা দাঁড়িয়েছে ২৩,৬২২ কোটি টাকা। ১০০টি দেশে রপ্তানী হচ্ছে ভারতে তৈরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম। এই ক্ষেত্রে ভারতের রপ্তানীর মূল্যমান এই বছরেই ৩০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ২০২৯ সালে অঙ্কটিকে ৫০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যেতে চায় সরকার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও বলেন, অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত রাখতে সরকার জরুরি-ভিত্তিতে ক্রয় ব্যবস্থাপনার পথে এগোচ্ছে।
SC/SD/AG
(Release ID: 2150502)