প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতায় ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা
Posted On:
28 JUN 2025 8:24PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ২৮ জুন ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী : শুভাংশু নমস্কার!
শুভাংশু শুক্লা : নমস্কার!
প্রধানমন্ত্রী : আপনি আজ আপনার মাতৃভূমি থেকে, ভারতভূমি থেকে অনেক দূরে রয়েছেন, কিন্তু আপনি ভারতীয়দের হৃদয়ে সবচেয়ে কাছে রয়েছেন। আপনার নামের মধ্যে বিশেষত্ব রয়েছে এবং আপনার যাত্রাও এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। এই সময়ে, আমরা দুজনে কথা বলছি ঠিকই, কিন্তু ১৪০ কোটি ভারতবাসীর অনুভূতিও আমার সঙ্গে রয়েছে। আমার কণ্ঠস্বরের মধ্যে সমস্ত ভারতবাসীর উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রতিফলিত হচ্ছে। ভারতের পতাকা মহাকাশে তুলে ধরার জন্য আমি আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। আমি খুব বেশি সময় নেব না। সবার আগে আমাকে বলুন, সবকিছু কি ঠিক আছে? আপনি কি সুস্থ আছেন?
শুভাংশু শুক্লা : হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী জি! আপনি এবং আমার ১৪০ কোটি দেশবাসীর শুভেচ্ছার জন্য ধন্যবাদ। আমি পুরোপুরি সুস্থ এবং নিরাপদে রয়েছি। কারণ, আপনাদের আশীর্বাদ এবং ভালোবাসা... আমার খুব ভালো লাগছে। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা এবং অন্য কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা আমি এবং আমার মতো আমাদের দেশে অনেক মানুষের এবং আমাদের ভারত কোন দিকে ঘুরছে, তার দিক নির্দেশ করছে। আমার এই যাত্রা, পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে, ক্ষুদ্র এই যাত্রা শুধুমাত্র আমার নিজের নয়, আমার মনে হচ্ছে, এই যাত্রা আমাদের দেশেরও যাত্রা। কারণ, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আমি কখনও কল্পনা করতে পারিনি যে, আমি মহাকাশচারী হতে পারি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, আপনার নেতৃত্বে আজকের ভারত আমাকে এই সুযোগ দিয়েছে এবং সেই সব স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার সুযোগ দিয়েছে। তাই, এটি আমার এক বড় সাফল্য এবং আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, আমি এখানে আমার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হয়েছি। ধন্যবাদ, প্রধানমন্ত্রী জি!
প্রধানমন্ত্রী : শুভ, আপনি মহাশূন্যে রয়েছেন, সেখানে মাধ্যাকর্ষণ নেই, কিন্তু প্রতিটি ভারতবাসী দেখতে পাচ্ছেন, আপনি পৃথিবীর দিকে নামছেন। আপনি কি সঙ্গে নিয়ে যাওয়া গাজরের হালুয়া আপনার বন্ধুদের খাওয়াচ্ছেন?
শুভাংশু শুক্লা : হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী জি! আমি আমার দেশ থেকে কিছু খাদ্যসামগ্রী এনেছি, যেমন গাজরের হালুয়া, মুগ ডালের হালুয়া এবং আম রস। আমি চাই, আমার অন্য বন্ধুরা, যাঁরা অন্য দেশ থেকে এসেছেন, তাঁরাও এর স্বাদ নিক এবং ভারতের সমৃদ্ধ রন্ধন ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হোক। তাই, আমরা সবাই একসঙ্গে বসে এর স্বাদ নিয়েছি এবং প্রত্যেকেই এই খাবারকে অত্যন্ত পছন্দ করেছেন। কেউ কেউ আমাকে বলেছেন, তাঁরা যখন পৃথিবীতে ফিরে আসবেন এবং আমাদের দেশ পরিদর্শনে আসবেন, তখন আমাদের সঙ্গে এর স্বাদ নেবেন...
প্রধানমন্ত্রী : শুভ, পরিক্রমা হল ভারতের শত শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য। আপনি মাতা ধরিত্রীকে পরিক্রমা করার সৌভাগ্যের অধিকারী হয়েছেন। আপনি এখন পৃথিবীর কোন অংশে রয়েছেন?
শুভাংশু শুক্লা : হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী জি! আমার কাছে এখন সঠিক কোন তথ্য নেই, কিন্তু কিছুক্ষণ আগে আমি জানালার বাইরের দিকে তাকাচ্ছিলাম, আমরা তখন হাওয়াইয়ের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমরা দিনে ১৬ বার পরিক্রমা করছি। কক্ষপথ থেকে আমরা ১৬ বার সূর্যোদয় এবং ১৬ বার সূর্যাস্ত দেখছি এবং গোটা প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত বিস্ময়কর। এই কক্ষপথে, এত দ্রুত গতি, আমরা ঘন্টায় প্রায় ২৮০০০ কিলোমিটার বেগে ছুটছি। আপনার সঙ্গে যখন কথা বলছি, তখন এই গতি বোঝা যাচ্ছে না, কারণ আমরা ভিতরে রয়েছি, কিন্তু কোথাও না কোথাও এই গতি প্রমাণ করছে যে, আমাদের দেশ কত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী : দারুণ!
শুভাংশু শুক্লা : এই মুহূর্তে আমরা এখানে পৌঁছেছি এবং এখন আমাদের আবার আরও এগোতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা, আপনি যখন মহাকাশের বিশাল ব্যাপ্তি প্রথম দেখলেন, তখন আপনার মনে কী এসেছিল?
শুভাংশু শুক্লা : প্রধানমন্ত্রী জি, ঠিকভাবে বলতে গেলে, যখন আমরা প্রথমবারের জন্য কক্ষপথে পৌঁছই, মহাকাশে পৌঁছই, তখন প্রথমে পৃথিবীকে দেখতে পাই এবং বাইরে থেকে পৃথিবীকে দেখার পর প্রথমে মনে হয়েছিল, পৃথিবী পুরো একইরকম দেখতে, আমি বোঝাতে চাইছি, বাইরে থেকে কোনও সীমারেখা নেই, বাইরে থেকে কোন সীমানা দেখা যাচ্ছে না। দ্বিতীয় যে জিনিসটি অত্যন্ত নজরে এসেছে, তা হল, আমরা যখন প্রথমবারের জন্য ভারতকে দেখি, আমরা যখন প্রথম ভারতের মানচিত্র পর্যালোচনা করি, তখন আমরা দেখতে পাই, অন্য দেশগুলি কত বড়, আমাদের দেশের আকার কত, আমরা তা মানচিত্রে দেখতে পাই, কিন্তু এটি সঠিক নয়। কারণ, আমরা ত্রিমাত্রিক বস্তুকে দ্বিমাত্রিকে এঁকেছি, সেটি কাগজের ওপর। ভারতকে প্রকৃত অর্থেই অত্যন্ত বড় দেখায়। আমরা মানচিত্রে যা দেখি, ভারত তার চেয়ে অনেক বড় এবং একাত্মতার অনুভূতি, বিশ্বের একাত্মতার অনুভূতি, যা আমাদের লক্ষ্যও বটে, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য, এর গুরুত্ব এমনভাবে অনুভব করা গেছে যে, যখন বাইরে থেকে দেখা হয়, তখন মনে হয়, কোনও সীমানা নেই, কোনও রাষ্ট্র নেই, কোনও দেশের অস্তিত্ব নেই, শেষ পর্যন্ত আমরা সবাই মানবতার একটি অংশ এবং পৃথিবী হল, আমাদের ঘর এবং আমরা সবাই এর নাগরিক।
প্রধানমন্ত্রী : শুভাংশু, আপনি হচ্ছেন মহাকাশ স্টেশনে যাওয়া প্রথম ভারতীয়। আপনি অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আপনি দীর্ঘ প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে গেছেন। কিন্তু এখন প্রকৃত অর্থে আপনি মহাকাশে রয়েছেন, সেখানকার পরিস্থিতি কতটা আলাদা? আপনি কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন?
শুভাংশু শুক্লা : প্রধানমন্ত্রী জি, এখানে সবকিছুই আলাদা। আমরা গত এক বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছি, আমি সমস্ত ব্যবস্থা সম্পর্কে জেনেছি, আমি সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনেছি, আমি সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু আমি যখন এখানে এসে পৌঁছলাম, তখন সবকিছুই হঠাৎ বদলে গেছে, কারণ পৃথিবীতে আমাদের দেহ মাধ্যাকর্ষণের মধ্যে ছিল এবং এর মাধ্যমে সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হত। কিন্তু এখানে আসার পর দেখলাম, মাধ্যাকর্ষণ নেই, এমনকি ছোট ছোট জিনিসও অত্যন্ত কঠিন হয়ে ওঠে। এই মুহূর্তে আমি যখন আপনার সঙ্গে কথা বলছি, তখন আমি আমার পা বেঁধে রেখেছি, তা না হলে আমি উপরের দিকে চলে যাব এবং মাইকও চলে যাবে। এগুলো হচ্ছে ছোট ছোট জিনিস, অর্থাৎ, আমি যদি এগুলিকে ছেড়ে যাই, এগুলিও আমার মতো ভাসতে থাকবে। জল খাওয়া, হাঁটা, ঘুমানো সবকিছুই অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের, কিন্তু আপনি ছাদে ঘুমাতে পারেন, আপনি দেয়ালে ঘুমাতে পারেন, আপনি মাটিতে ঘুমাতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী জি, সবকিছুই ঘটে, প্রশিক্ষণ ভালো, কিন্তু পরিবেশ বদলে যায়, তাই এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে একদিন বা দুইদিন সময় লাগে, তারপর সবকিছু ভালো লাগে, সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসে।
প্রধানমন্ত্রী : শুভ, বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা উভয়ের মধ্যে ভারতের শক্তি নিহিত রয়েছে। আপনি মহাকাশ যাত্রায় রয়েছেন, কিন্তু ভারতের যাত্রাও অবশ্যই চলতে থাকবে। আপনার মধ্যে দিয়ে ভারত এগোতে থাকবে। ওই পরিবেশে আপনি কি ধ্যান এবং একাগ্রতার উপকারিতা পাচ্ছেন?
শুভাংশু শুক্লা : হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী জি, আমি পুরোপুরি সহমত। আমি বিশ্বাস করি যে, ভারত ইতিমধ্যেই ছুটতে শুরু করেছে এবং এই মিশন হল, সেই লম্বা দৌড়ের প্রথম পদক্ষেপ মাত্র। আমরা নিশ্চিতভাবেই সামনের দিকে এগোচ্ছি এবং মহাকাশে আমাদের নিজেদের স্টেশন থাকবে, সেখানে অনেক মানুষ পৌঁছবে এবং একাগ্রতাও বড় পার্থক্য তৈরি করবে। সাধারণ প্রশিক্ষণ বা উৎক্ষেপণের সময় এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যা অত্যন্ত চাপের এবং এই রকম পরিস্থিতিতে একাগ্রতার সঙ্গে আপনাকে সময়ও দিতে হবে, আপনাকে ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপযোগী হতে হবে। বলা হয়ে থাকে, দৌড়নোর সময় কেউ খেতে পারে না, আপনি যত শান্ত থাকবেন, তত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন। তাই, আমি মনে করি, এই সব ক্ষেত্রে একাগ্রতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এই দুটি জিনিস যদি একসঙ্গে অনুশীলন করা যায়, তখন এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ বা চ্যালেঞ্জিং আবহাওয়ায় তা অত্যন্ত উপযোগী হবে বলে আমি মনে করি এবং মানুষকে দ্রুত মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী : আপনি মহাকাশে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। এই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ভবিষ্যতে কৃষি বা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উপকার হবে কি?
শুভাংশু শুক্লা : হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী জি, আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে, এই প্রথম ভারতীয় বিজ্ঞানীরা ৭টি অনন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছেন, যেগুলো আমি এখানে নিয়ে এসেছি এবং প্রথম যে পরীক্ষাটি আমি করতে যাচ্ছি, যা আজ করার কথা, তা হল স্টেম সেল। মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ থাকে না, ওজন কমে যায় এবং পেশীও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই, আমি যে পরীক্ষাটি করব, তা হল পরিপূরক খাদ্যের মাধ্যমে পেশীর এই দুর্বলতা বন্ধ করা বা আটকানো যায় কি না। পৃথিবীতে এর প্রত্যক্ষ প্রভাবও রয়েছে। এই সব বিকল্প খাদ্য সেই সব মানুষের ওপর প্রয়োগ করা যেতে পারে, বয়সের কারণে যাদের পেশীর শক্তি কমে আসে। তাই আমি মনে করি, এটি নিশ্চিত ভাবে কার্যকর হতে পারে। সেই সঙ্গে অন্য পরীক্ষাটি হল, আণুবিক্ষণিক শ্যাওলার বৃদ্ধি। এই সব শ্যাওলা অত্যন্ত ক্ষুদ্র হলেও অত্যন্ত পুষ্টিদায়ক। তাই সেগুলি যদি এখানে বৃদ্ধি করানো যায় এবং এমন এক প্রক্রিয়া যদি আবিস্কার করা যায়, যাতে এগুলি বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি করানো যায় এবং পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করা যায়, তখন বিশ্বে খাদ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত উপযোগী হবে। মহাকাশের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এখানে প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ঘটে। তাই, আমাদের মাসের পর মাস বা বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী : শুভাংশু, চন্দ্রযানের সাফল্যের পর, আমাদের দেশের শিশু এবং তরুণদের মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে নতুন উৎসাহ, মহাকাশ অভিযানের আগ্রহ বেড়েছে। এখন আপনাদের এই ঐতিহাসিক যাত্রা সেই অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করছে। আজকের শিশুরা শুধুমাত্র আকাশের দিকে তাকায় না, তারা ভাবে, আমিও সেখানে পৌঁছতে পারি। এই ভাবনা, এই অনুভূতি আমাদের ভবিষ্যৎ মহাকাশ মিশনের মূল ভিত্তি। ভারতের তরুণ প্রজন্মকে আপনি কী বার্তা দেবেন?
শুভাংশু শুক্লা : প্রধানমন্ত্রী জি, যদি আমি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বার্তা দিতে চাই, তবে সবার প্রথমে আমি তাদের বলব যে, ভারত যেভাবে এগোচ্ছে, আমরা অত্যন্ত সাহসী এবং উচ্চ স্বপ্ন দেখেছি, সেই সব স্বপ্ন পূরণ কর, সেই সব প্রয়োজন মেটানোর জন্য তোমাদের সকলকে আমাদের প্রয়োজন, আমি বলব যে, সাফল্যের শুধুমাত্র একটিমাত্র পথ নেই, কখনও কখনও কেউ অন্য পথও বেছে নিতে পারে। কিন্তু একটি জিনিস এক রাখতে হবে, তা হল চেষ্টা থেকে কখনও সরে আসা যাবে না, চেষ্টা কখনও থামাবে না। তুমি যদি এই মূল মন্ত্রটি গ্রহণ কর, যে পথই বেছে নাও না কেন, যেখানেই থাকো না কেন, তুমি কখনও হাল ছেড়ে দেবে না, তখন আজ বা কাল সাফল্য আসতে পারে, কিন্তু নিশ্চিতভাবেই তা আসবে।
প্রধানমন্ত্রী : আমি নিশ্চিত যে, দেশের তরুণরা আপনার এই বার্তা পছন্দ করবে এবং আপনি আমাকেও ভালোভাবে জানেন। আমি যখনই কারও সাথে কথা বলি, আমি সবসময় তাঁকে হোমওয়ার্ক দিই। মিশন গগনযানকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, আমাদের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি করতে হবে এবং ভারতীয় মহাকাশচারীকে চাঁদে অবতরণ করতে হবে। এই সব মিশনে আপনার পরীক্ষাগুলি অত্যন্ত উপযোগী হবে। আমি নিশ্চিত আপনি অবশ্যই পরীক্ষাগুলি রেকর্ডিং করছেন।
শুভাংশু শুক্লা : হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী জি, পুরোপুরি ঠিক, যখন প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এবং গোটা মিশনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি, তখন যে শিক্ষাটি আমি পেয়েছি, যে শিক্ষাটি আমি লাভ করেছি, আমি স্পঞ্জের মতো সেগুলিকে আত্মস্থ করছি এবং আমি নিশ্চিত যে এগুলি অত্যন্ত মূল্যবান হবে, আমি যখন ফিরে আসব, তখন আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই সব শিক্ষা আমাদের মিশনগুলিতে প্রয়োগ করতে পারব এবং যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে পারব। কারণ আমার বন্ধুরা, যাঁরা আমার সঙ্গে এসেছেল, তাঁরাও আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন, কখন আমরা গগনযান পাঠাচ্ছি, যা শুনে আমি অত্যন্ত আনন্দ পেয়েছি এবং আমি বলেছি, খুব শীঘ্রই। তাই, আমি মনে করি, এই স্বপ্ন খুব শীঘ্রই পূরণ হবে এবং আমি এখানে যে শিক্ষালাভ করছি, ফিরে আসার পর, আমাদের মিশনে সেগুলি ১০০% প্রয়োগ করার চেষ্টা করব এবং যত দ্রুত সম্ভব শেষ করব।
প্রধানমন্ত্রী : শুভাংশু, আমি নিশ্চিত যে আপনারএই বার্তা প্রেরণা জোগাবে এবং আপনি মহাকাশে যাওয়ার আগে আমরা যখন সাক্ষাৎ করেছিলাম, আমি তখন আপনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলাম, আমি দেখেছি যে, আপনার পরিবারের সদস্যরাও একই রকম আবেগপ্রবণ এবং উদ্দীপনায় ভরা। শুভাংশু, আজ আমি প্রকৃত অর্থে আপনার সঙ্গে এই কথা বলা উপভোগ করছি। আমি জানি আপনাকে অনেক কাজ করতে হবে এবং ২৮,০০০ কিলোমিটার বেগে কাজ করতে হবে। তাই আমি আর বেশি সময় নেব না। আজ আমি দৃঢ়বিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি যে, এটি হল ভারতের গগনযান মিশনের প্রথম অধ্যায়। আপনার এই ঐতিহাসিক যাত্রা শুধুমাত্র মহাকাশে সীমাবদ্ধ নেই, উন্নত ভারত গড়ার যাত্রাপথে এটি আমাদের গতি ও নতুন শক্তি যোগাবে। মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। এখন ভারত শুধু উড়বে না, ভবিষ্যতে নতুন উড়ানের জন্য প্ল্যাটফর্মও তৈরি করবে। আমি আপনার মনের আরও কিছু কথা শুনতে চাই, কারণ, আমি প্রশ্ন করতে চাই না। যদি আপনার মনে প্রকাশ করার মতো কোনও অনুভূতি আসে, দেশবাসী তা শুনবেন, দেশের তরুণ প্রজন্ম তা শুনবে এবং আমি নিজে আপনার কাছ থেকে আরও কিছু শুনতে অধীর আগ্রহে রয়েছি।
শুভাংশু শুক্লা : ধন্যবাদ, প্রধানমন্ত্রী জি! মহাকাশে আসার আমার এই গোটা যাত্রাপথ, এখানে প্রশিক্ষণ এবং এখানে পৌঁছনো, আমি অনেক কিছু শিখেছি, প্রধানমন্ত্রী জি, কিন্তু এখানে পৌঁছানোর পর, এটি আমার কাছে ব্যক্তিগত কার্যসিদ্ধি, কিন্তু কোথাও আমার মনে হয়েছে, এটি হল আমাদের দেশের কাছে একটি অত্যন্ত বড় সমষ্টিগত সাফল্য। যে সব শিশু এটি দেখছে, যে সব তরুণ এটি দেখছেন, তাঁদের আমি বলতে চাই যে, যদি তুমি চেষ্টা করো, তবে তুমি তোমার ভবিষ্যৎ ভালো করতে পারবে, তখন তোমার ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে এবং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ ভালো হবে। একটি মাত্র জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে, আকাশের কোনও সীমা নেই, তোমার জন্যও নেই, আমার জন্যও নেই, কিংবা ভারতের জন্যও নেই। যদি তুমি সর্বদা এই জিনিসটি মনের মধ্যে রাখো, তবে তুমি সামনের দিকে এগোতে পারবে, তোমার ভবিষ্যৎকে আলোকিত করতে পারবে এবং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎকে আলোকিত করতে পারবে, এটি আমার বার্তা, প্রধানমন্ত্রী জি। আমি অত্যন্ত আবেগাপ্লুত এবং অত্যন্ত খুশি যে, আমি আজ আপনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি এবং আপনার মাধ্যমে ১৪০ কোটি দেশবাসীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, যাঁরা এই তেরঙ্গা দেখতে পাচ্ছেন, যা আপনি আমার পিছনে দেখতে পাচ্ছেন, গতকালের আগে আমি যখন এখানে আসি, তখন এটি ছিল না, তখন প্রথমবারের জন্য আমরা এটিকে উত্তোলন করি। এটি আমাকে অত্যন্ত আবেগপ্রবণ করে তোলে এবং আমি উপলব্ধি করতে পারি যে, ভারত আজ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রী : শুভাংশু, আমি আপনার এবং আপনার সমস্ত সহকর্মীদের এই মিশনের সাফল্য কামনা করি। শুভাংশু, আমরা সবাই আপনার ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি। নিজের যত্ন নেবেন, মা ভারতীর সম্মানকে উচ্চে তুলে ধরুন। অনেক অনেক শুভেচ্ছা, ১৪০ কোটি দেশবাসীর শুভেচ্ছা। কঠোর পরিশ্রম এবং এই উচ্চতায় পৌঁছনোর জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভারত মাতা কি জয়!
শুভাংশু শুক্লা : আপনাকে ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী জি, ১৪০ কোটি দেশবাসীকে ধন্যবাদ এবং মহাকাশ থেকে প্রত্যেককে ভারত মাতা কি জয়!
SC/MP/AS
(Release ID: 2140678)