নয়াদিল্লি, ২৩ জুন, ২০২৫

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং রাষ্ট্রপতির দেওয়া ৫১টি ভাষণের সংকলন ‘উইংস টু আওয়ার হোপস’-এর দ্বিতীয় খণ্ডের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছেন। এই সংকলন গ্রন্থটি হিন্দি ও ইংরাজিতে প্রকাশিত হয়েছে। সেইসঙ্গে এর একটি ই-সংস্করণও রয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভবনে এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী শ্রী এল মুরুগান উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দ্বিতীয় বছরে (আগস্ট ২০২৩ থেকে জুলাই ২০২৪) শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু এই ভাষণগুলি দিয়েছিলেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁর ভাবনাচিন্তা, দর্শন ও অগ্রাধিকারের একটি স্পষ্ট ছবি ফুটে ওঠে।

অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, সংকলিত ভাষণগুলির কোনওটি জাতির উদ্দেশে দেওয়া, আবার, কোনওটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া হয়েছিল। উদ্ভাবন, দেশের উন্নয়নে নারীশক্তির ভূমিকা, সাম্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রভৃতি বিষয়ে রাষ্ট্রপতি যা বলছেন, সেটাই ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকারের চিন্তাভাবনার নির্যাস। এই সংকলন গ্রন্থটি বিকশিত ভারত গঠনের এক দিশাপ্রদীপ। এতে প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার সঙ্গে আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্য সংরক্ষণের ভাবনার মেলবন্ধন ঘটেছে। আমাদের দেশে বৈচিত্র্যের গুরুত্ব সম্বন্ধে রাষ্ট্রপতি ওয়াকিবহাল। বঞ্চিতের ব্যথা তাঁর প্রাণে বেজেছে। এই বই সাম্যের চেতনাকে তুলে ধরেছে।

শ্রী সিং বলেন, সভ্যতা থেকে শুরু করে সংস্কৃতি, ধর্ম থেকে বিজ্ঞান, শিল্প থেকে সাহিত্য, শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, অতীত থেকে ভবিষ্যৎ - বৈচিত্র্যপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে রাষ্ট্রপতির ভাবনাচিন্তা ও গভীর প্রজ্ঞার সংকলন রয়েছে এই গ্রন্থে। 

রাষ্ট্রপতির কিছু ভাবনার বিশেষ উল্লেখ করে শ্রী সিং বলেন, এগুলি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের জাতীয় অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। এর মধ্যে রয়েছে –
*ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি উন্নয়ন আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির অভিজ্ঞান।
*নৈতিকতা আমাদের ব্যক্তিগত ও জনজীবনের ভিত্তি।
*প্রত্যেকের, বিশেষত সরকারি কর্মী ও আধিকারিকদের নিঃস্বার্থ সেবা এবং পরোপকারের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
*বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসনকে সাধারণ মানুষের প্রতি সংবেদনশীল হতে হবে।
*উন্নয়নের প্রতিটি মাত্রায় উদ্ভাবনকে উৎসাহ দিতে হবে।
*বসুধৈব কুটুম্বকমের চেতনা নিয়ে ভারত আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থার উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুকে ভারতের মহিলা নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন আখ্যা দিয়ে শ্রী সিং বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর এই সর্বাধিনায়কের নেতৃত্বেই ভারতীয় সেনা ঐতিহাসিক অপারেশন সিঁদুর চালিয়েছে। এই অভিযানের সব উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে এবং সন্ত্রাসবাদীদের মনে ভয় ঢুকেছে। রাষ্ট্রপতি ক্রমাগত সশস্ত্র বাহিনীর মনোবল বাড়িয়েছেন, একইসঙ্গে তিনি সমাজের বঞ্চিত শ্রেণীর ক্ষমতায়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তাঁর নিজের জীবন দিয়ে রাষ্ট্রপতি মুর্মু সকলের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন। সাহস, কঠোর পরিশ্রম, জনসেবা ও আধ্যাত্মিকতা তাঁর জীবনে মূর্ত হয়ে উঠেছে। এর প্রতিফলন তাঁর ভাষণেও পড়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, এই গ্রন্থ সমসাময়িক বিষয়গুলিকে দেশের ‘প্রথম নাগরিক’-এর দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বোঝার এক সুযোগ এনে দেয়। জনকল্যাণের যে ধারণা রাষ্ট্রপতির ভাষণের ছত্রে ছত্রে রয়েছে তা আগামী প্রজন্মকে প্রেরণা দেবে। 

রাষ্ট্রপতির জীবনের কিছু স্মরণীয় ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে শ্রী বৈষ্ণব গত ২০ জুন শ্রীমতী মুর্মুর জন্মদিনে দেরাদুনে একটি অনুষ্ঠানের কথা বলেন। সেখানে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর দ্য এমপাওয়ারমেন্ট অফ পার্সন্স উইথ ভিস্যুয়াল ডিসেবিলিটিজ আয়োজিত অনুষ্ঠানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের উপস্থাপনায় রাষ্ট্রপতি কিভাবে আবেগমথিত হয়ে পড়েছিলেন, তার বর্ণনা দেন তিনি। শ্রী বৈষ্ণব বলেন, রাষ্ট্রপতির সহজতা, সংবেদনশীলতা এবং জনসেবার চেতনা সবার কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। 

এই ভাষণগুলির সংকলন করেছে রাষ্ট্রপতি ভবন। এটি প্রকাশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রকাশন বিভাগ। 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব শ্রী প্রভাত এবং প্রকাশন বিভাগের মুখ্য মহানির্দেশক শ্রী ভূপেন্দ্র কাইন্থোলা প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

SC/SD/DM