সংস্কৃতিমন্ত্রক
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেবী অহল্যাবাঈ-এর দর্শন পুনরায় ব্যক্ত করলেন যা মানুষের সেবা এবং তাঁদের জীবনের উন্নতির জন্য প্রকৃত প্রশাসনের নির্যাস
Posted On:
01 JUN 2025 11:59AM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ০১ জুন, ২০২৫
ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক মধ্যপ্রদেশ সরকারের সহযোগিতায় কিংবদন্তি দূরদর্শী নেতা এবং সাংস্কৃতিক সংস্কারক লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকর-এর ৩০০ তম জন্মবার্ষিকী পালন করল আড়ম্বরের সঙ্গে ৩১ মে, ২০২৫-এ ভোপালের জামবুরি ময়দানে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শুরুতে মা ভারতী এবং ভারতের ‘নারী শক্তি’র বল এবং সম্ভাবনার প্রতিরূপ ভারতের মহিলাদের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। তিনি লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকর-এর ভক্তি-পরম্পরা, সু-প্রশাসন এবং সমাজ সংস্কারে অদম্য দায়বদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, লোকমাতা দেবী অহল্যাবাঈ হোলকর-এর ৩০০ তম জন্মবার্ষিকী ১৪০ কোটি ভারতীয়ের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস এবং দেশগঠনে বিপুল প্রয়াসের অবদান রাখার মুহূর্ত। তিনি বলেন, “মাতা অহল্যাবাঈ দেশগঠনে আমাদের নারীশক্তির অমূল্য অবদানের প্রতীক”।
তিনি মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন, তার প্রভাব এবং এটির রূপায়ণে সরকারের ধারাবাহিক প্রয়াসের কথাও তুলে ধরেন।
• প্রধানমন্ত্রী – “বর্তমানে বিপুল সংখ্যায় মহিলা বিজ্ঞানীরা আমাদের সকল গুরুত্বপূর্ণ মহাকাশ অভিযানে কাজ করছেন”।
• প্রধানমন্ত্রী – “যখন একজন মহিলা নিজে উপার্জন করেন, বাড়িতে তাঁর আত্মমর্যাদা বাড়ে এবং পারিবারিক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাঁর অংশগ্রহণ আরও গুরুত্ব পায়। গত ১১ বছরে আমাদের সরকার ধারাবাহিকভাবে ভারতের মহিলাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে কাজ করেছে”।
• প্রধানমন্ত্রী – “নাগরিক দেব ভব – নাগরিকই ভগবান – আমাদের প্রশাসনের মন্ত্র হয়ে উঠেছে। আমাদের সরকার মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নের স্বপ্নকে উন্নতির সোপান হিসেবে তৈরি করছে”।
• প্রধানমন্ত্রী – “বর্তমানে সারা দেশে ১০ কোটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত এবং নানা অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্মে যুক্ত। সরকার এইসব মহিলাদের আয়ের নতুন উৎস খুঁজতে সাহায্য করছে। কয়েক লক্ষ টাকার সহায়তা দিচ্ছে”।
লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকর প্রত্যয় ও নিষ্ঠার প্রতীক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেবী লোকমাতা অহল্যাবাঈ সেই ধারণার প্রতীক যেখানে বলা হয় ইচ্ছাশক্তি এবং দৃঢ় সংকল্প থাকলে যতই প্রতিকূল পরিস্থিতি হোক না কেন, একজন উল্লেখযোগ্য ফল অর্জন করতে পারে”।
তিনি দেবী অহল্যাবাঈ-এর ভাবনা ও কাজের দীর্ঘ পরম্পরা, প্রভাব এবং প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে বলেন, যা নিয়ে আড়াই-তিন শতাব্দীর পরেও মানুষ আলোচনা করছে। লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকর-কে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী সু-প্রশাসন সম্পর্কে তাঁর ভাবনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন, “অহল্যাবাঈ বলতেন, প্রকৃত প্রশাসন মানে মানুষের সেবা এবং তাঁদের জীবনের উন্নতি করা”। তিনি আরও বলেন, “মাতা অহল্যাবাঈ একটি অনুকরণযোগ্য প্রশাসনিক মডেল গ্রহণ করেছিলেন, যাতে গরিব এবং প্রান্তিক মানুষকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হত”।
অনুষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকর-এর জীবন ও কাজ নিয়ে প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে ইতিহাস এবং কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। তার সঙ্গে ছিল শিল্পীদের আঁকা ছবি। এটি মধ্যপ্রদেশ সরকারের আয়োজনে তৈরি ক’রে সংস্কৃতি মন্ত্রকের স্মারক বিভাগ। প্রদর্শনীর চারটি মূল অংশ
• ১ : আলোকপাত করা হয়েছে তাঁর বেড়ে ওঠা দিনগুলির উপর : দেবী অহল্যাবাঈ-এর সঙ্গে তাঁর ভবিষ্যৎ শ্বশুর মলহার রাও-এর সাক্ষাৎকার ছাড়াও আছে প্রশাসন, অর্থ, হিসাব, রণশিক্ষা ইত্যাদি বিবিধ ক্ষেত্রে তাঁর প্রশিক্ষণের কথা।
• ২ : সু-প্রশাসন এবং নেতৃত্ব নিয়ে তাঁর ধারণার বর্ণনা : ভগবান শিব-কে নিবেদিত তাঁর শাসন এবং জনগণের রক্ষক হিসেবে নিজেকে তাদের সেবার জন্য নিয়োজিত করার উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
• ৩ : তাঁর কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির উপর আলোকপাত : মন্দিরের পুনরুজ্জীবন এবং পুনর্গঠনের কাজ এবং অন্যান্য পরিকাঠামো প্রকল্পকে তুলে ধরা হয়েছে।
• ৪ : বস্ত্র নিয়ে তাঁর কাজের উপর আলোকপাত করা হয়েছে : মাহেশ্বর দুর্গ এবং কাছাকাছি থাকা অন্যান্য মন্দিরকে মোটিফ করে মাহেশ্বরী বুননের সূত্রপাতের উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মাহেশ্বরী শাড়ির ষষ্ঠ প্রজন্মের বুননশিল্পী হেমলতাজী-র সঙ্গে কথা বলেন। সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিবকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গোটা প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন।
স্মারক ডাক টিকিট ও মুদ্রা প্রকাশ
লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকর-এর ৩০০ তম জন্মবার্ষিকীকে শ্রদ্ধা জানাতে এবং ভারতের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে তাঁর অমূল্য অবদানকে স্মরণ করতে অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয় স্মারক মুদ্রা এবং ডাক টিকিট।
লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকর-কে নিয়ে চলচ্চিত্র
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রকের স্মারক বিভাগ নির্মিত একটি ছোট চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এর শিরোনাম ‘অহল্যাবাঈ হোলকর : সংস্কৃতি কি সংরক্ষিকা, শাসন কি শিল্পকার’। এতে ধরা হয়েছে তাঁর দর্শন, সংস্কার এবং আধ্যাত্মিক নিষ্ঠা। তাঁর অসামান্য জীবনের প্রতি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শ্রদ্ধার্ঘ্য।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নগর পরিকাঠামো, সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং অঞ্চলের সাংস্কৃতিক পর্যটনের প্রসারে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন।
প্রধানমন্ত্রী – “আজ ইন্দোর মেট্রোর উদ্বোধন হল, সেইসঙ্গে দাতিয়া এবং সাতনার মধ্যে বিমান পরিষেবা চালু হল। এই প্রকল্পগুলি মধ্যপ্রদেশের গণ পরিষেবা বৃদ্ধি করবে, উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে”।
প্রধানমন্ত্রী জাতীয় দেবী অহল্যাবাঈ পুরস্কারও প্রদান করেন ডঃ জয়ামতী কাশ্যপকে – যিনি আদিবাসী, লোক এবং চিরাচরিত শিল্পে তাঁর ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য বন্দিত শিল্পী। এর থেকে প্রমাণিত হয় ভারতে বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল সংরক্ষণ এবং মহিলা নির্মাতাদের ক্ষমতায়নে সরকারের দায়বদ্ধতা।
ভারতের সমৃদ্ধ, সভ্যতার ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে এবং যাঁরা দেশের সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন সেইসব দূরদর্শীদের সম্মানিত করতে সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রচেষ্টার অংশ আজকের এই অনুষ্ঠান।
SC/AP/SKD
(Release ID: 2133278)