প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
বীর বায়ু সেনাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী
Posted On:
13 MAY 2025 5:13PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১৩ মে, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ পাঞ্জাবের আদমপুরের বায়ু সেনা ঘাঁটিতে গিয়ে বীর সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন। ‘ভারত মাতা কি জয়’ শ্লোগানের অন্তর্নিহিত শক্তির উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব এখন এটি উপলব্ধি করতে শুরু করেছে। এটি শুধুমাত্র একটি শ্লোগান নয়, এ এমন এক শপথ যা গ্রহণ করে প্রতিটি সৈনিক, মাতৃভূমির মর্যাদা রক্ষায় নিজেদের জীবন বাজিতে রাখে। যারা দেশের জন্য বাঁচেন এবং দেশকে কিছু দিতে চান, তেমন প্রতিটি নাগরিকের কণ্ঠস্বর হল এই শ্লোগান। যুদ্ধ ক্ষেত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ মিশনে এই শ্লোগান প্রতিধ্বনিত হয়। এই শ্লোগান শুনলে শত্রুদের মেরুদণ্ডে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়। ভারতীয় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র যখন শত্রুর দুর্গে নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানে, তখন শত্রুরা এই শ্লোগানই শুনতে পায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গভীর অন্ধকার রাতেও আকাশ উজ্জ্বল করে তোলার ক্ষমতা ভারতের রয়েছে। শত্রুরা ভারতের এই দুর্দমনীয় চেতনার সামনে অসহায় হয়ে পরে। ভারতীয় বাহিনী যখন পরমাণু হুমকি অনায়াসেই অগ্রাহ্য করে, তখন স্বর্গ-মর্ত জুড়ে একটি মন্ত্রই প্রতিধ্বনিত হয় - ‘ভারত মাতা কি জয়’।
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাহস ও সংকল্পের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের জন্য আজ লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের বুক গর্বে ভরে উঠেছে। তাঁদের অনন্য সাহসিকতা ও ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য আজ প্রতিটি ভারতীয়ের মাথা উঁচু হয়ে গেছে। আজ থেকে বহু দশক পরেও এই সেনাদের বীরত্বের কথা মানুষ মনে রাখবে। তারা শুধু বর্তমান প্রজন্মেরই নন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও অনুপ্রেরণা। প্রধানমন্ত্রী বায়ু সেনা, নৌ বাহিনী, সেনা বাহিনী এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বীর যোদ্ধাদের অভিবাদন জানিয়ে বলেন, অপারেশন সিঁদুরের প্রভাব আজ দেশ জুড়ে অনুরণিত হচ্ছে। এই অভিযান চলার সময়ে প্রতিটি ভারতীয় সর্বতোভাবে সেনাদের পাশে ছিলেন, সেনাদের জন্য তাঁরা প্রার্থনা করেছেন। সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তিনি সেনা এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুর শুধুমাত্র একটি সামরিক অভিযান ছিল না, এ ছিল ভারতের নীতি, উদ্দেশ্য এবং নির্ণায়ক সক্ষমতার এক ত্রিমূর্তি। ভারত ভগবান বুদ্ধ ও গুরু গোবিন্দ সিংজির দেশ। সেই গুরু গোবিন্দ সিংজি যিনি বলেছিলেন, ‘আমার একজন যোদ্ধা ১ লক্ষ ২৫ হাজার যোদ্ধার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। আমার তীর পাখিকেও হার মানাবে, তবেই আমাকে গুরু গোবিন্দ সিং বলা সঙ্গত হবে’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ভারতের চিরায়ত ঐতিহ্য। সন্ত্রাসবাদীরা যখন ভারতের মেয়েদের উপর হামলা করার সাহস দেখিয়েছে, তখন ভারতীয় বাহিনী তাদের ঘরে ঢুকে তাদের মেরেছে। এরা কাপুরুষের মতো এসেছিল, এরা জানতো না যে তারা ভারতীয় সেনা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। ভারতীয় সেনা বাহিনীর বীরত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করে দিয়েছে, ৯টি সন্ত্রাসবাদী আস্তানা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, ১০০-রও বেশি সন্ত্রাসবাদী মারা পরেছে। সন্ত্রাসের নেপথ্য নায়করা এখন বুঝতে পেরেছে যে ভারতকে উষ্কানি দেওয়ার অর্থ অবধারিত মৃত্যু। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাক সেনা বাহিনী যারা এই সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিয়েছে তারা ভারতীয় সেনা বাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনীর কাছে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়েছে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী গোটা পাকিস্তানে একটি স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে সন্ত্রাসবাদীদের জন্য কোনো সুরক্ষিত জায়গা নেই। ভারতের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পাকিস্তানের মধ্যে এমন ভয়ের সঞ্চার করেছে যে তারা একের পর এক বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য জাতির সংকল্পকে আরও সুদৃঢ় করেছে, দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে, ভারতের সীমান্তকে সুরক্ষিত করেছে এবং ভারতের গর্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। সেনা বাহিনীর কাজকে নজিরবিহীন, অকল্পনীয় ও অসাধারণ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনী যেভাবে নির্ভুল লক্ষ্যে পাকিস্তানের মধ্যে থাকা সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করেছে তার তুলনা নেই। এমন অভিযান কেবল মাত্র ভারতীয় সেনা বাহিনীর মতো আধুনিক, প্রযুক্তিসজ্জিত ও পেশাদার বাহিনীই চালাতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের ভেতরে থাকা সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করে দেওয়া। পাকিস্তান অসামরিক বিমানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল, কিন্তু ভারতীয় বাহিনী চূড়ান্ত সতর্কতা ও নির্ভুলতার সঙ্গে লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে। এই অভিযান কেবল পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ও বিমান ঘাঁটিগুলিকেই ধ্বংস করেনি, তাদের ঔদ্ধত্ব, মনোবল ও অপকীর্তির প্রয়াসকেও ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।
শ্রী মোদী বলেন, অপারেশন সিঁদুরের পর পাকিস্তান হতাশা থেকে ভারতের বিভিন্ন বিমান ঘাঁটি আক্রমণের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রতিটি আক্রমণই প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। পাক ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, মানবহীন বিমান যান, সব কিছুই ভারতের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সামনে নিষ্ফল হয়ে গেছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রতিটি যোদ্ধাকেই তাঁদের অসামান্য সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান এখন সুস্পষ্ট। ভারতে আর যদি কোনো সন্ত্রাসবাদী হানা হয়, সেক্ষেত্রে ভারত নির্ণায়কভাবে নিজের শক্তি ব্যবহার করবে। এর আগে সার্জিকাল স্ট্রাইক এবং বিমান হানার সময়েও ভারতীয় সেনার বীরত্বের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতকাল রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি তিনটি প্রধান নীতির কথা বলেছিলেন। প্রথমত, ভারত যদি আবার কোনো সন্ত্রাসবাদীর হামলার শিকার হয় সেক্ষেত্রে নিজের মতো করে ভারত তার জবাব দেবে। দ্বিতীয়ত, ভারত কোনো ধরনের পরমাণু হুমকি সহ্য করবে না। তৃতীয়ত, সন্ত্রাসবাদীদের মাস্টারমাইন্ড এবং তাদের মদত যোগানো সরকারের মধ্যে আর কোনো প্রভেদ ভারত করবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুরের প্রতিটি মুহূর্ত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর শক্তি ও সক্ষমতার নিদর্শন হয়ে রয়েছে। ভারতের আকাশ ও জমির সংযুক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের যৌথ প্রস্তুতি আজ ভারতের সামরিক ক্ষমতার নতুন বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে।
অপারেশন সিঁদুরে মানব শক্তি ও অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তির অসাধারণ সমন্বয়ের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রথাগত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। এবার দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আকাশ এবং এস-৪০০-এর মতো শক্তিশালী আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজে লাগানো হয়েছিল। পাকিস্তানের ক্রমাগত প্রয়াস সত্ত্বেও ভারতের বিমান ঘাঁটি ও সামরিক পরিকাঠামোর গায়ে কোনো আঁচর পরেনি।
ভারতের কাছে যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বর্তমানে রয়েছে, পাকিস্তান কখনই তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীও নিরবচ্ছিন্নভাবে কৌশলগত দক্ষতার সঙ্গে প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে চলেছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী আজ শুধু অস্ত্র দিয়েই প্রতিপক্ষকে প্রতিরোধ করে না, তার সঙ্গে তথ্য ও ড্রোনও থাকে।
ভারতের এই সামরিক অভিযান পাকিস্তানের আবেদনে স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে পাকিস্তান যদি কোনো সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মে অথবা সামরিক উষ্কানিতে ফের জড়িয়ে পরে সেক্ষেত্রে ভারত সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে প্রত্যাঘাত করবে। ভারত সম্পূর্ণভাবে নিজের শর্তে, নিজের পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। বিমান বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও নৌ বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ এক নতুন ভারত – এমন এক ভারত যে শান্তিকামী, কিন্তু মানবতা যদি হুমকির মুখে পড়ে, সেক্ষেত্রে ভারত প্রত্যাঘাত হানতে পিছপা হবে না।
SC/SD/SKD
(Release ID: 2128549)
Read this release in:
Tamil
,
Malayalam
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Bengali-TR
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Telugu
,
Kannada