প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

হরিয়ানার যমুনা নগরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 14 APR 2025 4:17PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

 

হরিয়ানার জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নায়েব সিং সাইনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী মনোহর লাল, শ্রী রাও ইন্দরজিৎ সিং এবং শ্রী কৃষণ পাল, হরিয়ানা সরকারের মন্ত্রীগণ, সাংসদ ও বিধায়কগণ এবং আমার ভাই ও বোনেরা। মোদীর তরফ থেকে হরিয়ানার ভাই ও বোনেদের শুভেচ্ছা।

বন্ধুগণ,

মা সরস্বতীর উৎসস্থল, মন্ত্রদেবীর আবাস, পঞ্চমুখী হনুমানের স্থল, যেখানে কপালমোচন সাহিবের আশীর্বাদধন্য হওয়া যায় এবং যা সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও ভক্তিধারার সঙ্গম আজ সেই ভূমিকে আমি প্রণাম জানাই। আজ বাবাসাহেব আম্বেদকরের ১৩৫তম জন্মবার্ষিকী। আমি আম্বেদকর জয়ন্তী উপলক্ষে দেশবাসীকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বাবাসাহেবের দিশা ও অনুপ্রেরণা ‘বিকশিত ভারত’ (উন্নত ভারত)-এর যাত্রায় আমাদের পথ দেখাচ্ছে। 

বন্ধুগণ,

যমুনা নগর কেবল একটি শহরই নয় - ভারতের শিল্প মানচিত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্লাইউড থেকে শুরু করে পিতল, ইস্পাত সমৃদ্ধ এই সমগ্র অঞ্চল ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে। বস্তুত, এই ভূমি কপালমোচন মেলা, ঋষি বেদব্যাসের পবিত্র স্থল এবং গুরু গোবিন্দ সিংজির অস্ত্রাগারের ঐতিহ্যমণ্ডিত। 

বন্ধুগণ,

এটা নিজেরই এক বিরাট গর্বের বিষয় এবং শ্রী মনোহর লাল এবং শ্রী সাইনি ঠিক যে কথা বলছিলেন, যমুনা নগরের সঙ্গে আমার অনেক পুরনো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। হরিয়ানার দায়িত্বে থাকাকালীন আমি ঘন ঘন এই জায়গা এবং পাঁচকুলার মধ্যে যাতায়াত করতাম। দলের অনেক পুরনো সময়ের নিষ্ঠাবান কর্মীদের সঙ্গে আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। কঠোর পরিশ্রমী কর্মীদের এই পরম্পরা আজও অব্যাহত।

বন্ধুগণ,

পর পর তিনবার হরিয়ানা ডবল-ইঞ্জিন সরকারের অধীন উন্নয়নের দ্বিগুণ গতিকে প্রত্যক্ষ করছে এবং বর্তমানে শ্রী সাইনি যা বললেন এটা অনেকটা ত্রি-সরকারের মতো। ‘বিকশিত হরিয়ানা’ (উন্নত হরিয়ানা) বিকশিত ভারত (উন্নত ভারত)-এর জন্য - এটাই আমাদের সংকল্প। যুবাদের স্বপ্ন পূরণে, হরিয়ানার মানুষের সেবায় এই সংকল্প পূরণে আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে অনেক বেশি গতিতে আমরা কাজ করছি। আজ যেসব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা হল তা এর এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত। আমি এইসব উন্নয়নমূলক উদ্যোগের জন্য হরিয়ানার মানুষদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,

আমি গর্বিত যে, আমাদের সরকার বাবাসাহেবের চিন্তাদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। বাবাসাহেব আম্বেদকর শিল্পোন্নয়নকে সামাজিক ন্যায় বিচারের পথ বলে মনে করতেন। ভারতে স্বল্প জমির সত্তাধিকারীদের বিষয়টি বাবাসাহেব চিহ্নিত করেছিলেন। বাবাসাহেব বলেছিলেন, দলিতদের চাষ করার মতো যথেষ্ট জমি নেই, ফলে শিল্পই তাদের সব থেকে বেশি কাজে লাগতে পারে। বাবাসাহেবের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল শিল্প দলিতদের জন্যে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তাঁদের জীবনধারনের মানোন্নয়ন ঘটাতে পারে। ভারতে শিল্পোন্নয়নের লক্ষ্যে বাবাসাহেব দেশের প্রথম শিল্পমন্ত্রী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর পাশে থেকে কাজ করেছেন।

বন্ধুগণ,

শিল্পোন্নয়ন এবং নির্মাণের মধ্যে সমন্বয়কে দীনবন্ধু চৌধুরী ছোটু রামজি গ্রামীণ সমৃদ্ধির ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে মনে করতেন। তিনি বলতেন গ্রামে তখনই প্রকৃত সমৃদ্ধি আসবে যখন কৃষকদের আয় কেবল কৃষি থেকেই নয়, ছোট শিল্প থেকেও বাড়বে। চৌধুরী চরণ সিং যিনি গ্রামের এবং কৃষকদের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এর থেকে আলাদা কিছু ছিল না। চৌধুরী সাহেব বলেছিলেন, শিল্পোন্নয়ন ও কৃষিকে পরিপূরক হতে হবে – এই দুই-ই আমাদের অর্থনীতির ভিত্তিস্বরূপ। 

বন্ধুগণ,

এইরূপ মানসিকতা, এই জাতীয় ধারণা, এই জাতীয় অনুপ্রেরণা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ (স্বনির্ভর ভারত)-এর হৃদয়স্থলে রয়েছে। এই কারণেই আমাদের সরকার ভারতের নির্মাণ ক্ষেত্রে এই জোর দিচ্ছে। এ'বছরের বাজেটে আমরা ‘মিশন ম্যানুফ্যাকচারিং’-এর ঘোষণা করেছি। এর লক্ষ্য হল দলিত, অনগ্রসর, বঞ্চিত এবং অনগ্রসর সম্প্রদায়কে বেশি করে কর্মসংস্থান যোগানো। যুব সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া, ব্যবসার খরচ হ্রাস করা, এমএসএমই ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তি মাধ্যমে শিল্পকে সমৃদ্ধ করা এবং আমাদের তৈরি পণ্য সামগ্রিকে বিশ্বে সর্বোৎকৃষ্ট করে তোলা। এইসব লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ হল আমাদের দেশ যাতে বিদ্যুতের ঘাটতির মুখোমুখি না হয় তা দেখা। শক্তিক্ষেত্রে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে হবে আমাদের। আজকের অনুষ্ঠান এইজন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীনবন্ধু চৌধুরী ছোটু রাম তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের তৃতীয় ইউনিটের কাজ আজ শুরু হয়েছে। এতে যমুনা নগর এবং তার শিল্প উপকৃত হবে। ভারতের প্লায় অর্ধেক প্লাইউড উৎপাদন হয় যমুনা নগরে। এখানে অ্যালুমিনিয়াম, তামা, পিতলের বৃহদায়তন উৎপাদন হয়। এখানে নির্মিত পেট্রো কেমিকেল কারখানার যন্ত্রাংশ বিদেশের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে এই সমস্ত ক্ষেত্রগুলি উপকৃত হবে এবং এখানকার ‘মিশন ম্যানুফ্যাকচারিং’-ও গতি পাবে।

বন্ধুগণ,

বিদ্যুৎ বিকশিত ভারত নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে। সমস্ত ক্ষেত্রে বিদ্যুতের যোগান বাড়াতে আমাদের সরকার কাজ করছে। তা এক দেশ এক গ্রিডই হোক বা নতুন তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বা  সৌরশক্তি অথবা পরমাণু ক্ষেত্রের প্রসারই হোক – আমাদের প্রয়াস হল বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রসার ঘটানো যাতে দেশ গঠনের কাজে বিদ্যুতের অভাব কোনো বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। 

তবে বন্ধুগণ,

আমাদের কংগ্রেস শাসনের দিনগুলি ভুললে চলবে না। ২০১৪-র পূর্বে কংগ্রেস সরকারের ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশজুড়ে আমরা ব্ল্যাকআউট প্রত্যক্ষ করেছি - সমগ্র এলাকা বিদ্যুৎবিহীন থাকতো। কংগ্রেস সরকার শাসন ক্ষমতায় থাকলে দেশকে আজও এই ব্ল্যাকআউট প্রত্যক্ষ করতে হত। কল-কারখানা কাজ করতো না, ট্রেন চলাচল করতো না, জমিতে জল পৌঁছত না। অন্যভাবে বলতে গেলে, কংগ্রেস এখনও শাসন ক্ষমতায় থাকলে এইসব সঙ্কট চলতেই থাকতো। দেশ বিভাজিত এবং সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়তো। তবে, বেশ কয়েক বছরের প্রচেষ্টার পর আজ পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। বিগত দশকে ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আজ ভারত কেবল  নিজের প্রয়োজনই মেটায় না, প্রতিবেশী দেশগুলিতেও বিদ্যুৎ রপ্তানি করে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রতি বিজেপি-র এই নজর হরিয়ানাকেও উপকৃত করেছে। আজ হরিয়ানা ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। অচিরেই এই বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াট করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

বন্ধুগণ,

একদিকে আমরা তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ করছি, অন্যদিকে দেশের মানুষ নিজেরাই যাতে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেন সেদিকেও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। আমরা পিএম সূর্যঘর মুফত বিজলি যোজনা চালু করেছি। বাড়ির ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপন করে মানুষ নিজেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তাদের বিদ্যুতের খরচ শূন্যে নামিয়ে আনতে পারবেন। কেবল তাই নয়, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে তা বিক্রি করে অতিরিক্ত আয়ও হবে। এপর্যন্ত ১ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই প্রকল্পে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। আমি একথা জানাতে পেরে খুশি, হরিয়ানার লক্ষ লক্ষ মানুষ এই উদ্যোগে সামিল হতে আবেদন করেছেন। এই প্রকল্পের প্রসার ঘটাকালীন একে ঘিরে পরিষেবা পরিমণ্ডলেরও প্রসার ঘটছে। সৌর বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে নতুন দক্ষতার উদ্ভব ঘটছে। এমএসএমই ক্ষেত্রগুলির জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাচ্ছে। যুব সম্প্রদায়ের জন্য অনেক সুযোগেরও সৃষ্টি হচ্ছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের ছোট শহরগুলিতে, ছোট শিল্পগুলিকে যথেষ্ট পরিমাণ বিদ্যুতের যোগান নিশ্চিত করার  সঙ্গে আমাদের সরকার যথেষ্ট পরিমাণ আর্থিক সম্পদ সুনিশ্চিত করার উপরেও জোর দিচ্ছে। কোভিড-এর সময়ে আমাদের সরকার এমএসএমই ক্ষেত্রগুলিকে বাঁচাতে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এমএসএমই-র সংজ্ঞাও আমরা বদল করেছি, যাতে ছোট ব্যবসাও নির্ভয়ে প্রসারলাভ করতে পারে। এখন ছোট শিল্পগুলি আর কোনোভাবে এই ভয়ে ভীত নয়, যে তারা প্রসারলাভ করলে সরকারি সহায়তা হারাতে হবে। এখন সরকার ছোট শিল্পগুলির জন্য বিশেষ ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে। ঋণ নিশ্চয়তা ক্ষেত্রও প্রসারলাভ করছে।  কয়েক দিন আগে মুদ্রা যোজনা ১০ বছর পূর্ণ করেছে। আপনারা খুশি হবেন – হয়তো বা অবাকও হবেন  একথা জেনে, গত ১০ বছরের বেশি সময়ে ৩৩ লক্ষ কোটি টাকা এই প্রকল্পে কোনোরকম অগ্রিম জামানত ছাড়াই ব্যবসা এবং শিল্পের কাজে এগিয়ে আসা মানুষদেরকে দেওয়া হয়েছে, এই ঘটনা এই প্রথম। ভেবে দেখুন কোনোরকম জামানত ছাড়া ৩৩ লক্ষ কোটি টাকা! এই প্রকল্পে ৫০ শতাংশেরও বেশি সুবিধাপ্রাপক, তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি এবং অনগ্রসর সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ। এর লক্ষ্য হল ছোট শিল্পকে আমাদের তরুণদের বৃহৎ স্বপ্ন পূরণে রূপ দেওয়ার এইসব ছোট উদ্যোগকে শক্তিশালী করা।

বন্ধুগণ,

হরিয়ানার কৃষক ভাই ও বোনেদের কঠোর পরিশ্রম দেশের প্রত্যেকটি প্রান্তে লক্ষ্য করা যায়। আমাদের কৃষকদের সুখে, দুঃখে বিজেপি-র ডাবল ইঞ্জিন সরকার বৃহত্তম সহযোগী। আমাদের প্রচেষ্টা হল হরিয়ানার কৃষকদের দক্ষতা ও সামর্থের প্রসার ঘটানো। আজ হরিয়ানায় বিজেপি সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে (এমএসপি) ২৪টি শস্য সংগ্রহ করে। হরিয়ানার লক্ষ লক্ষ কৃষক পিএম ফসল বীমা যোজনা থেকে উপকৃত। এই প্রকল্পে ৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি দাবি মেটানো হয়েছে। অনুরূপভাবে, ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পিএম-কিষান সম্মাননিধি মারফৎ হরিয়ানার কৃষকদের কাছে সরাসরি পৌঁছেছে।

বন্ধুগণ,

হরিয়ানা সরকার আবিয়ানা (খালের জল কর)-র বিলোপ ঘটিয়েছে। ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকে এই প্রথা চলে আসছিল। এখন আর আপনাদের খালের জলের কোনো কর দিতে হবে না। আবিয়ানার অধীন ১৩০ কোটি টাকারও বেশি বকেয়া মকুব করে দেওয়া হয়েছে। 

বন্ধুগণ,

কৃষক এবং গবাদি পশুপালকদের নতুন করে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রয়াসকে ধন্যবাদ। গোবরধন যোজনা বর্জ্যকে উপার্জন সৃষ্টিতে ব্যবহারে কৃষকদের সুযোগ করে দিচ্ছে। গোবর, ফসলের অবশিষ্টাংশ এবং অন্য জৈব বর্জ্য থেকে বায়ো গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। এবছরের বাজেটে দেশজুড়ে ৫০০ গোবরধন প্লান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। আজ যমুনা নগরে একটি গোরবধন প্লান্টের উদ্বোধন করা হল। এতে পৌরনিগমের বার্ষিক প্রায় ৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। গোরবধন যোজনা স্বচ্ছ ভারতের উদ্দেশ্যপূরণের লক্ষ্যেও কাজ করছে। 

বন্ধুগণ,

হরিয়ানা উন্নয়নের পথে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এখানে আসার আগে হিসার-এর মানুষদের সঙ্গে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে। অযোধ্যাধামে যাওয়ার বিমান পরিষেবা এখান থেকে শুরু হয়েছে। আজ রেওয়াড়ির জনসাধারণ নতুন বাইপাসের উপহার পেলেন। এতে মোড় এবং রেলওয়ে ক্রসিং-এ যানজটের হাত থেকে  মুক্তি ঘটবে। এই চার লেনের বাইপাসের ফলে শহরে যান চলাচলে স্বাচ্ছন্দ্য আসবে। দিল্লি থেকে নারনাউল-এর যাতায়াতের সময়সীমা এক ঘণ্টা কমে আসবে। এই উন্নয়নের জন্য আমি আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,

আমাদের কাছে রাজনীতি ক্ষমতা ভোগ করা নয়, বরং তা সেবার মাধ্যম – জনসাধারণকে সেবা এবং রাষ্ট্রকে সেবা। এই কারণেই বিজেপি জোরের সঙ্গে তার বক্তব্য জানায়। হরিয়ানায় তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠনের পর আমরা আপনাদের কাছে যে সংকল্প করেছি তা সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে ক্রমাগত কাজ করছি। তবে, কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে কি দেখা যাচ্ছে, জন আস্থার সঙ্গে সম্পূর্ণ বিশ্বাসঘাতকতা। প্রতিবেশী রাজ্য হিমাচলের দিকে তাকিয়ে দেখুন, জনসাধারণের কষ্টের শেষ নেই। সমস্তরকম উন্নয়ন এবং কল্যাণকর কর্ম স্তব্ধ হয়ে গেছে। কর্ণাটকেও বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে দুগ্ধ, বাসভাড়া থেকে শস্য - সমস্ত 
কিছুরই দাম বাড়ছে। সামাজিক মাধ্যমে আমি দেখলাম কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকার নানারকমের কর বসিয়েছে, ফলে সমস্ত স্তরেই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে জনসাধারণ সৃষ্টিশীলতার নমুনা দেখিয়ে এ থেকে জেড পর্যন্ত তালিকা তৈরি করে এই করের প্রভাব বুঝিয়েছে। প্রতিটি অক্ষরের সঙ্গে বিভিন্নরকম কর বৃদ্ধির নমুনাকে যুক্ত করে কংগ্রেস সরকারের শাসনের বাস্তব চিত্রকে তাঁরা তুলে ধরেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরা পর্যন্ত স্বীকার করেছেন কর্ণাটক দুর্নীতিতে এক নম্বর।

বন্ধুগণ,

তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস সরকার জনসাধারণের কাছে দেওয়া তাদের প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। সেখানে কংগ্রেস অরণ্যকে ধ্বংস করার কাজে ব্যস্ত। প্রকৃতিকে ধ্বংস করে বন্যপ্রাণকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়াই কংগ্রেস সরকারের কাজের শৈলী! আমরা এখানে যখন গোবরধন প্রকল্পে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে কঠোর পরিশ্রম করছি, আর ওখানে তারা বর্তমান অরণ্যকে ধ্বংসের পথে মেতেছে। আপনাদের সামনে দু ধরনের সরকারের কাজের স্পষ্ট নমুনা এতেই ফুটে ওঠে। একদিকে কংগ্রেস মডেল, যা নকল হিসেবে প্রতিপণ্য – কেবলমাত্র ক্ষমতা এবং পদ ধরে রাখার লক্ষ্যে নিযুক্ত। অপরটি হল বিজেপি মডেল – যা সত্যের পথে চলেছে। বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রদর্শিত পথ ধরে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে যারা কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য হল বিকশিত ভারত গড়ে তোলা। আর আজ এখানকার যমুনা নগরে আমরা দেখছি এই প্রয়াসের এগিয়ে চলাকে।

বন্ধুগণ, 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্বন্ধে আপনাদেরকে বলতে চাই। গতকাল দেশ বৈশাখী উৎসব উৎযাপন করেছে। গতকাল ছিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের ১০৬ বছর। এই হত্যাকাণ্ডে যাঁরা জীবন হারিয়েছেন, তাঁদের সেই স্মৃতি আজও আমাদের কাছে জীবন্ত। ব্রিটিশদের নিষ্ঠুরতা এবং জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডে আত্মবলিদান ছাড়া আরও একটা দিক দীর্ঘ সময় ধরে অন্ধকারে ঢেকে রাখা হয়েছিল। এই দিকটি হল মানবতা এবং দেশের জন্য অদম্য ভালোবাসা। এই উদ্যমের সঙ্গে যুক্ত নামটি হল শঙ্করণ নায়ার। আপনাদের অনেকেই এই নামের কথা শোনেন নি। তবে, আজকাল তাঁকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। শঙ্করণ নায়ার একজন খ্যাতনামা আইনজীবি ছিলেন এবং প্রায় ১০০ বছর আগে ব্রিটিশ সরকারের উচ্চ পদে তিনি আসীন ছিলেন। ক্ষমতার কাছাকাছি থেকে তিনি অনায়াস স্বাচ্ছন্দ্যের বিলাসবহুল জীবন কাটাতে পারতেন। তবে, জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনা বিদেশী শাসনের নিষ্ঠুরতা তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তোলেন তিনি। মর্যাদাপূর্ণ পদে তিনি পদত্যাগ করেন এবং দেশের হয়ে   গলা মেলান। তিনি কেরালাবাসী এবং ঘটনাটি পাঞ্জাবে ঘটলেও ব্যক্তিগতভাবে তিনি জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের মামলায় সোচ্চার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। নিজে তিনি এই লড়াই লড়েন, যাতে ব্রিটিশ শাসনের ভিত কেঁপে যায়। ব্রিটিশ শাসনে - সূর্য যেখানে অস্ত যায় না বলা হয়ে থাকে – শঙ্করণ নায়ার জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের মামলায় তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করেন। 

বন্ধুগণ,

এটা কেবলমাত্র মানবতার জন্য রুখে দাঁড়ানোই নয়, ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ (ওয়ান ইন্ডিয়া, গ্রেট ইন্ডিয়া)র- তা এক উজ্জ্বল উদাহরণও। দূরবর্তী কেরালার একজন মানুষ কিভাবে পাঞ্জাবে ঘটে যাওয়া এক হত্যাকাণ্ডের জন্য ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন – এই প্রকৃত নিষ্ঠাবোধ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে অনুপ্রাণিত করে। আজও অনুরূপ প্রেরণা বিকশিত ভারতের যাত্রা পথে এক বিরাট শক্তি। কেরালার শঙ্করণ নায়ারের অবদান থেকে আমরা শিক্ষা নেবো এবং পাঞ্জাব, হরিয়ানার ও হিমাচলের প্রতিটি শিশুরই তাঁর সম্বন্ধে জানা দরকার। 

বন্ধুগণ,

চারটি স্তম্ভের ক্ষমতায়নে – দরিদ্র, কৃষক, যুব সমাজ এবং মহিলা – ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। আপনাদের সকলের চেষ্টায়  হরিয়ানা নিশ্চিত উন্নতি করবে। আমি আমার নিজের চোখে দেখছি – হরিয়ানার বিকাশ, সমৃদ্ধি এবং দেশের জন্য তা গরিমা নিয়ে আসছে। এইসব অসংখ্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। দু হাত তুলে পূর্ণ উদ্যমের সঙ্গে আমার সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলুন:

ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!

আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণ হিন্দিতে।

 

SC/AB/SKD


(Release ID: 2121890) Visitor Counter : 8