সংখ্যালঘুবিষয়কমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

নভকার মহামন্ত্র দিবস : মহাবীর জয়ন্তী উদযাপন

Posted On: 10 APR 2025 10:09AM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১০ এপ্রিল ২০২৫

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী - "জৈন সাহিত্য ভারতের বৌদ্ধিক মহিমার মেরুদণ্ড। এই জ্ঞানকে সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব।"

ভারত শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপন করছে মহাবীর জয়ন্তী। জৈনদের ২৪তম তীর্থঙ্কর ভগবান মহাবীরের জন্মদিনটি গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য এবং প্রগাঢ় শান্তি  অনুরণিত করে।  উৎসবের থেকে বেশি, এটি সহমর্মিতা, আত্মসংযম এবং সত্যে নিবেদিত  এক জীবনের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধার্ঘ্য। দ্বন্দ্ব এবং কোলাহলপূর্ণ বিশ্বে ভগবান মহাবীরের অহিংসা, সত্য এবং আত্মজাগরণের চিরায়ত বাণী এখন আরও বেশি মানবিক এবং সম্প্রীতির অবস্থানের লক্ষ্যে  উজ্জ্বল পথ দেখাচ্ছে অগণিত মানুষকে।

এবছর মহাবীর জয়ন্তীর ভাবনাটি জোরালো ভাবে উঠে এসেছে ৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারা নভকার মহামন্ত্র দিবসের উদ্বোধনে। 

"নভকার মন্ত্র শুধুমাত্র একটি মন্ত্র নয়, বরং এটি আমাদের বিশ্বাসের কেন্দ্র এবং জীবনের সারমর্ম"

নভকার মন্ত্র , প্রাণশক্তি, স্থৈর্য এবং আলোর ছন্দোময় প্রবাহ। 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটে তাঁর নিজের শিকড়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, কীভাবে জৈন আচার্যরা খুব ছোট বয়স থেকে তাঁর ধারণাকে গড়ে তুলে ছিলেন। এই ব্যক্তিগত যোগাযোগটি তাঁর বার্তায় ফুটে উঠেছে যে, জৈনবাদ শুধুমাত্র ঐতিহাসিক নয়, বরং গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে, এমন এক ভারতে যে ভারত বেড়ে উঠতে চায় কিন্তু তার শিকড়ের সঙ্গে দৃঢ় সংযোগ না হারিয়ে। 

এই প্রাসঙ্গিকতা খচিত আছে আধুনিক ভারতের স্থাপত্য এবং সাংস্কৃতিক নক্সায়। সে নতুন সংসদ ভবনের প্রবেশ পথে সাম্মেদ শিখর হোক বা বিদেশ থেকে প্রাচীন তীর্থঙ্কর মূর্তিগুলি ফেরানোই হোক। এগুলি শুধুমাত্র স্মৃতি ভারের শিল্পবস্তু নয়, এরা ভারতের আধ্যাত্মিক চলমানতার জীবন্ত প্রতীক। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জলবায়ু পরিবর্তনকে আজকের দিনের সবচেয়ে বড় সঙ্কট বলে বর্ণনা করে বলেন, এর সমাধান আছে সুস্থায়ী জীবনযাপনে, যা জৈন সম্প্রদায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অভ্যাস করে এসেছে। জৈন সম্প্রদায় সারল্য, সংযম এবং সুস্থায়িত্বের নীতি মেনে জীবনযাপন করছে শতাব্দীর পর শতাব্দী । ভগবান মহাবীরের সময়ের  শিক্ষাগুলি সুন্দরভাবে মিশেছে মিশন লাইফ (পরিবেশের জন্য জীবনশৈলী)-এর সঙ্গে, সুস্থায়ী জীবনের জন্য দেশের আহ্বান। 

জৈনবাদের ফলকে লেখা আছে "পরস্পরোপগ্রাহো জীবনম", যার অর্থ সব জীবনে পারস্পরিক নির্ভরতা দেয় গভীর পরিবেশগত বিশ্ব চেতনা। 

নতুন ভারতের জন্য ৯টি সংকল্প -

ভারতীয় এবং জৈন প্রথায় নয়ের শক্তির প্রতি কাব্যিক শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নভকার মন্ত্রের ৯টি সংকল্পের কথা বলেন যার প্রতিটি জ্ঞান, কার্য, সম্প্রীতি এবং শিকড় না ভুলে অগ্রগতির প্রতি দায়বদ্ধতাকে বোঝায়। তিনি বলেন, কীভাবে একটি মন্ত্র ৯বার বললে বা এর গুণিতকে যেমন ২৭, ৫৪ অথবা ১০৮ বার পড়লে আধ্যাত্মিক সম্পূর্ণতা এবং বৌদ্ধিক স্বচ্ছতা প্রাপ্ত হয়। 

প্রথম সংকল্প :  জল সংরক্ষণ - প্রতিটি জলের ফোঁটাকে মূল্যদান এবং সঞ্চয় করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর। 

দ্বিতীয় সংকল্প : মায়ের নামে বৃক্ষ রোপণ - সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ১০০ কোটির বেশি বৃক্ষ রোপণ এবং প্রত্যেককে তাদের মায়ের নামে বৃক্ষ রোপণ এবং তাঁর আশীর্বাদের মতো লালন-পালন করার আহ্বান।

তৃতীয় সংকল্প : পরিচ্ছন্নতা মিশন - প্রতিটি রাস্তায়, পাড়ায় এবং শহরে পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব বোঝা এবং পরিচ্ছন্নতা রক্ষা।

চতুর্থ সংকল্প : ভোকাল ফর লোকাল - স্থানীয় স্তরে তৈরি পণ্যের প্রসার, তাদের আন্তর্জাতিক করে তোলা এবং ভারতের মাটির গন্ধ মেশা পণ্যকে সমর্থন।

পঞ্চম সংকল্প : ভারতকে আবিষ্কার করুন - বিদেশে যাওয়ার আগে ভারতের বৈচিত্র্যময় রাজ্যগুলি, সংস্কৃতি এবং অঞ্চলগুলি আবিষ্কার করা, দেশের প্রত্যেকটি কোণের অনন্যতা এবং মূল্যের ওপর জোর। 

ষষ্ঠ সংকল্প : প্রাকৃতিক চাষের ব্যবহার - জৈন নীতি "একটি জীবন্ত প্রাণীর উচিত নয় অন্যের ক্ষতি করা" এবং ধরিত্রী মাকে রাসায়নিক থেকে মুক্ত করার জন্য কৃষকদের সহায়তা এবং প্রাকৃতিক চাষের প্রসার। 

সপ্তম সংকল্প : স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা - মিলেট (শ্রী অন্ন) সহ ভারতীয় খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা, ১০ শতাংশ তেলের ব্যবহার কমানো এবং অভ্যাসের পরিবর্তন ও সংযমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য রক্ষা। 

অষ্টম সংকল্প : যোগা এবং ক্রীড়াকে অন্তর্ভুক্ত করা - যোগা এবং ক্রীড়াকে দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ করে তোলা সে বাড়িতে হোক বা কাজের জায়গায়, স্কুলে অথবা পার্কে দৈহিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক শান্তি নিশ্চিত করতে। 

নবম সংকল্প : দরিদ্রকে সাহায্য - সেবার মূল তাৎপর্য হিসেবে হাত ধরে অথবা থালা ভরে বঞ্চিতদের সাহায্য। 


এই সংকল্পগুলির সাযুজ্য আছে জৈনবাদের নীতি এবং সুস্থায়ী সম্প্রীতিপূর্ণ ভবিষ্যতের ভাবনার সঙ্গে। 

প্রাকৃত এবং পালি-তে রচিত জৈন সাহিত্য গভীর রত্নভাণ্ডার। এই ভাষাগুলিকে ধ্রুপদী মর্যাদা দান এবং জ্ঞান ভারতম মিশন-এর অধীনে জৈন পুঁথিগুলি ডিজিটাইজ করার সরকারি উদ্যোগ এই প্রাচীন প্রজ্ঞার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। 

২০২৪-এর মার্চে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক প্রধানমন্ত্রী জন বিকাশ কার্যক্রম (পিএমজেভিকে) কর্মসূচির অধীনে ইন্দোরে দেবী অহল্যা বিশ্ববিদ্যালয় (ডিএভিভি)-এ 'সেন্টার ফর জৈন স্টাডিজ'-এর প্রকল্প অনুমোদন করে। ২৫ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তায় তৈরি এই কেন্দ্রের লক্ষ্য জৈন ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং প্রসার, আন্তঃবিভাগীয় গবেষণা এবং জীবনশৈলী হিসেবে জৈনবাদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি। প্রাচীন জৈন পুস্তকের ডিজিটাইজেশনে সহায়তা করবে এটি, গবেষণায় সাহায্য করবে এবং জৈন শিক্ষা, প্রথা এবং আচারের সঙ্গে যুক্ত ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের জন্য হাব হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ এবং সচেতনতার প্রসারও ঘটাবে। 

সংকল্প বিষয়ক মন্ত্রক অতীতে পুঁথির ডিজিটাইজেশন, জ্ঞান আদান-প্রদান এবং জৈন প্রথা নিয়ে গবেষণার প্রসারের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। 

২০২৪-এ মহাবীর জয়ন্তীতে ২,৫৫০ তম ভগবান মহাবীর নির্বাণ মহোৎসব উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট এবং মুদ্রা প্রকাশ করা হয়েছিল। 

যখন ভারত উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, তখন আত্মজিজ্ঞাসা, সহমর্মিতা এবং সত্যের বিষয়ে ভগবান মহাবীরের বার্তা আলোকবর্তিতা হিসেবে কাজ করছে। নভকার মন্ত্রের সম্প্রীতি, সাধু সংঘ এবং আন্তঃনির্ভর জীবন যা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্য। 

সূত্র : 
https://www.pmindia.gov.in/en/news_updates/pm-to-inaugurate-2550th-bhagwan-mahaveer-nirvan-mahotsav-on-21st-april/
https://postagestamps.gov.in/newyearlycps24.aspx
https://pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2120278

 


SC/AP/AS


(Release ID: 2120714) Visitor Counter : 18