তথ্যওসম্প্রচারমন্ত্রক
iffi banner
0 4

মহাত্মা গান্ধীর শান্তি ও অহিংসার বার্তার পুনরুজ্জীবন : ৫৫তম ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মর্যাদাসম্পন্ন আইসিএফটি- ইউনেসকো গান্ধী মেডেলের জন্য প্রতিযোগিতায় ১০টি চলচ্চিত্র

IFFIWood, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

 

৫৫তম ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মর্যাদাসম্পন্ন আইসিএফটি- ইউনেসকো গান্ধী মেডেলের জন্য মনোনীত চলচ্চিত্রগুলির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। প্যারিসের ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ফিল্ম টেলিভিশন অ্যান্ড অডিও ভিস্যুয়াল কমিউনিকেশন (আইসিএফটি) এবং ইউনেসকো যৌথভাবে এই পুরস্কার দেয়। মহাত্মা গান্ধী অহিংসা, সহনশীলতা ও সামাজিক সম্প্রীতির  যে আদর্শ আমাদের সামনে রেখেছিলেন, তা অনুসরণ করে আন্তঃ সাংস্কৃতিক বার্তা ও শান্তির প্রসারের লক্ষ্যে যেসব চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, সেগুলির স্বীকৃতিদানই এই পুরস্কারের উদ্দেশ্য।

এই বছরে এই পুরস্কারের জন্য ১০টি ছবি মনোনীত হয়েছে। এই সিনেমাগুলি বিভিন্ন অঞ্চলের, এগুলির সংস্কৃতি ও গোত্রও আলাদা, কিন্তু গান্ধীবাদী নীতি ও আদর্শ এগুলিকে একসূত্রে বেঁধেছে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিক্স-এর সভাপতি ইসাবেল ড্যানেল, সিআইসিটি-আইসিএফটি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট সার্গে মিশেল, ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক কর্মসূচির প্রাক্তন প্রধান মারিয়া ক্রিস্টিনা ইগলেসিয়াস, আলজিয়ার্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শিল্প নির্দেশক ডঃ আহমেদ বেদজাউই এবং সিআইসিটি আইসিএফটি-র যুব শাখা - প্ল্যাটফর্ম ফর ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড ইনোভেশনের সুয়েয়ান হান-কে নিয়ে গঠিত জুরি এই চলচ্চিত্রগুলির বিচার করবেন। 

আইসিএফটি- ইউনেসকো গান্ধী মেডেল ২০২৪-এর  জন্য মনোনীত চলচ্চিত্রগুলি হল-

    ক্রসিং

অ্যাণ্ড দেন উই ডান্সড (২০১৯) চলচ্চিত্র খ্যাত  সুইডেনের পরিচালক লেভান আকিন-এর এই ছবিতে ইস্তানবুলের রূপান্তরকামী গোষ্ঠীকে ঘিরে এক চমৎকার কাহিনী উপস্থাপিত  হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক লিয়া-র চোখ দিয়ে শ্রেণী, লিঙ্গ ও যৌন চেতনার নানা ভাবনা ফুটে উঠেছে এই ছবিতে। এটি এ বছরের বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে টেডি জুরি পুরস্কার জিতেছে।

    ফর রানা

ইরানের পরিচালক ইমান ইয়াজদির প্রথম ছবি এটি। এবছরের বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এটি প্রথমবার দেখানো হয়। মেয়ের হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য এক দম্পতির মরীয়া প্রয়াসের মর্মস্পর্শী কাহিনী  এই ছবির উপজীব্য বিষয়। 
    লেসন লার্নড

 হাঙ্গেরির পরিচালক বেলিন্ট জিমলারের প্রথম ছবি এটি। এক অশান্ত শিশুর চোখ দিয়ে হাঙ্গেরির শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্কট দেখানো হয়েছে এই ছবিতে। এ বছরের লোকার্নো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এটি দর্শকদের প্রভূত প্রশংসা পেয়েছে। 

    মিটিং উইথ পল পট

এলিজাবেথ বেকারের “হোয়েন দ্য ওয়ার ওয়াস ওভার” থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কম্বোডিয়ার চিত্রনির্মাতা রিথি পান-এর এই সিনেমায় ৩ জন ফরাসী সাংবাদিক ১৯৭৮ সালে  কম্বোডিয়ায় পল পটের শাসনের সময়কার ভয়াবহ পরিস্থিতি  তুলে ধরেছেন। এটি চলতি বছরের কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হলে দর্শকদের প্রভূত সমাদর পায়। 

    সাতু- ইয়ার অফ দ্য র্যা বিট  

জোশুয়া ট্রিগ তাঁর এই প্রথম ছবির জন্য  চলতি বছরে লাওসে আয়োজিত  রেন ডান্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেয়েছেন। পরিত্যক্ত একটি শিশু কীভাবে তার মা-কে খুঁজে বেড়ায়, তারই কাহিনী ধরা পড়েছে এই ছবিতে। 

    ট্রান্সামাজোনিয়া

দক্ষিণ আফ্রিকার চলচ্চিত্র নির্মাতা পিয়া মারাইসে-এর এই ছবির ঘটনাস্থল ব্রাজিলের আমাজন এলাকা। এক চিকিৎসক কীভাবে কাঠের চোরাকারবারীদের হাত থেকে তাঁর গোষ্ঠীর অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ লড়াই করছেন, পরিবেশ রক্ষা ও সামাজিক ন্যায় কীভাবে তার পরতে পরতে মিশে যাচ্ছে – সেই  গল্প রয়েছে এই ছবিতে। এটি চলতি বছরে লোকার্নো এবং টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে।

    আনসিঙ্কেবল

ডেনমার্কের চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসেন-এর রোমহর্ষক এই ছবিটি ১৯৮১ সালের RF2 ট্রাজেডির  সত্য ঘটনার ওপর আধারিত। হেনরিক কীভাবে এই বিপর্যয়ে তার বাবার জড়িত থাকার বিষয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে তাই নিয়ে তৈরি এই ছবিতে দুঃখ, অপরাধবোধ এবং পারিবারিক ক্রিয়া – প্রতিক্রিয়া হাত ধরাধরি করে চলেছে।  

আমার বস 

নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এই ছবিতে কিংবদন্তী অভিনেত্রী রাখীকে দীর্ঘ ২০ বছর পরে আবার পর্দায় দেখা যাবে। এক মা ও ছেলে কীভাবে আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা করছে, তাদের সামনে পরিবার ও উচ্চাকাঙ্খার জটিলতা কীভাবে উন্মোচিত হচ্ছে, তার দলিল এই ছবি। 

জুইফুল 

অসমের অভিনেতা ও চিত্রনির্মাতা যদুমণি দত্তের পুরষ্কারপ্রাপ্ত এই সিনেমায় উত্তর- পূর্ব ভারতের রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘর্ষের মধ্যে দুই মায়ের হৃদয়ের বন্ধনকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সংঘর্ষ, সহানুভূতি ও মাতৃত্বের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক মাত্রা রূপ পেয়েছে এই ছবিতে। 

শ্রীকান্ত 

তুষার হীরানন্দানি পরিচালিত জীবনীমূলক এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন রাজকুমার রাও ও অহল্যা। দৃষ্টিহীন উদ্যোগপতি শ্রীকান্ত বোল্লা সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এম আই টি-তে যোগ দিয়ে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিলেন। তাঁর জীবন অবলম্বনে এই সিনেমাটি তৈরি হয়েছে।  

আই সি এফ টি ইউনেস্কো গান্ধী মেডেল সম্পর্কে 

৪৬ তম ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়েছে। এখানে সেইসব সিনেমাকেই বেছে নেওয়া হয়, যেগুলি শিল্প ও চলচ্চিত্র সংক্রান্ত নৈপুণ্যের পাশাপাশি সমাজের মূল সমস্যাগুলির প্রতিফলন ঘটায়। মানবতার অভিন্ন মূল্যবোধের অনুভবে সমাজের রূপান্তর ঘটানোর যে শক্তি সিনেমার রয়েছে, তাকেই উদযাপন করে এই পুরস্কার। 

এবারের  আই সি এফ টি ইউনেস্কো গান্ধী মেডেল জয়ী সিনেমার নাম ঘোষণা করা হবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে। বিজেতাকে পুরষ্কার হিসাবে দেওয়া হবে একটি শংসাপত্র এবং গান্ধী মেডেল। 

আরও জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন -  https://iffigoa.org/


PG/SS/SD/NS

iffi reel

(Release ID: 2072909) Visitor Counter : 29