প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

নতুন দিল্লিতে এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সামিট ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

Posted On: 21 OCT 2024 12:18PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২১  অক্টোবর, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লিতে আজ এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সামিট ২০২৪-এ ভাষণের শুরুতে  সম্মেলনে উপস্থিত অভ্যাগতদের শুভেচ্ছা জানান। এই সম্মেলনে  বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশ্ব নেতৃত্ব, তাঁদের সুচিন্তিত মত প্রকাশ করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন।  

বিগত ৪-৫ বছরের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতের স্বার্থ সম্বন্ধীয় বিষয় নিয়ে আলোচনার একটা অভিন্ন লক্ষ্য রয়েছে। সাম্প্রতিক কোভিড অতিমারী এবং কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংকটাবস্থা, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন, নানাদিকে যুদ্ধ, সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত, নিরীহ মানুষদের মৃত্যু, ভৌগলিক উত্তেজনা, সংঘর্ষ যাবতীয় শিখর সম্মেলনে মূল আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। বিশ্বজুড়ে অস্থিরতার মাঝেও ভারত এক আশার পথ দেখাচ্ছে। বিশ্ব যখন শঙ্কিত ভারত তখন আশার বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব পরিস্থিথিতে ভারতও প্রভাবিত তবে এই চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে এক সদর্থক চেতনা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্ত ক্ষেত্রেই ভারতে এক অভূতপূর্ব গতি সঞ্চারিত হয়েছে। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার ১২৫ দিন পূর্তির উল্লেখ করে এই শতাব্দীর নানা কাজের ওপরে আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ৩ কোটি পাকা বাড়ি নির্মাণে সরকার অনুমোদন দিয়েছে। ৯ লক্ষ কোটি টাকার পরিকাঠামোর সূচনা হয়েছে, ১৫টি নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রা সূচনা হয়েছে, ৮টি নতুন বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছে, যুব প্রজন্মের স্বার্থে ২ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা হয়েছে, কৃষকদের ব্যাঙ্ক আমানতে ২১,০০০ কোটি টাকার পাঠানো হয়েছে, ৭০ ঊর্ধ্ব নাগরিকদের জন্য নিখরচায় চিকিৎসা প্রকল্প চালু হয়েছে, প্রায় ৫ লক্ষ গৃহের ছাদে সৌর প্ল্যান্ট স্থাপনের সূচনা হয়েছে, এক পেড় মা কে নাম অভিযানে ৯০ কোটি চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে, ১২টি নতুন শিল্প নোডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেনসেক্স এবং নিফটি শেয়ার সূচক ৫-৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং অন্য সব কিছুর সঙ্গে ভারতে বিদেশী মুদ্রা ভাণ্ডারের সংগ্রহের পরিমান ৭০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে বলেও তিনি জানান। বিগত ১২৫ দিনে ভারতে যেসব বিশ্ব ঘটনাক্রম ঘটে চলেছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক এসএমইউ, বিশ্ব ফিনটেক উৎসব, বিশ্ব সেমি-কন্ডাক্টর নিয়ে আলোচনা, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি এবং অসামরিক বিমান পরিবহন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সমস্ত ঘটনাক্রমের তালিকায় ভারত বিশ্ব আশা পূরণের লক্ষ্যে কোন দিকে এগোচ্ছে, তার এক দিশা দেয়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় পর্বে তাঁর সরকারের ক্ষমতায় আসায় ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি যেভাবে প্রসারিত হয়েছে তাতে বিভিন্ন রেটিং সংস্থাগুলি তাদের পূর্বাভাসের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। মার্ক মোবিয়াসের মতন বিশেষজ্ঞ মানুষ ভারতের শেয়ার বাজারে বিশ্ব তহবিলের অন্তত ৫০ শতাংশ বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ  রকম একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি যখন ভারতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছেন, তার অর্থ ভারতের সক্ষমতার প্রতি এক প্রত্যয় ব্যক্ত করা। 

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আজকের ভারত একদিকে যেমন উন্নয়নশীল রাষ্ট্র, তার পাশাপাশি এক উদ্ভুত শক্তি হিসেবেও আশাপ্রকাশ করছে। তিনি বলেন, ভারত দারিদ্রের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল, তাই অগ্রগতির পথ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের দ্রুত নীতিগত সিদ্ধান্ত নতুন সংস্কার প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র সীমার ওপরে তুলে আনা হয়েছে, ১২ কোটি শৌচালয় তৈরি করা হয়েছে, ১৬ কোটি নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গত ১০ বছরে ভারতে ৩৫০টিরও বেশি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ হয়েছে, ১৫টিরও বেশি এইমস তৈরি হয়েছে, ১.৫ লক্ষ স্টার্টআপ গড়ে উঠেছে এবং ৮ কোটি যুবক-যবতীকে মুদ্রা ঋণ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তাও যথেষ্ট নয়। ভারতের যুব সম্প্রদায়ের স্বার্থে এই প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখার কথা বলেন তিনি। ভারতের শক্তিই হল যে সে বিশ্বের তরুণতম প্রজন্মের দেশ যা দেশের অগ্রগতিকে এক উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। 

দেশের মানসিকতার যে বদল হয়েছে, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতের সঙ্গে  বর্তমান সরকারের তুলনা টানলে দেখা যাবে গত ১০-১৫ বছরে কোন কোন দিকে দেশ এগিয়ে গেছে। ভারতের পরিবর্তিত অভিমুখ হল কতখানি সাফল্যের  পরিমাপ না করে বরং ভবিষ্যতের লক্ষ্যে গতি সঞ্চার করা। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হল ২০৪৭-এর মধ্যে বিকশিত ভারত গড়ে তোলা। তা কেবল সরকারের লক্ষ্য নয়, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্খা তার মধ্যে দিয়ে মূর্ত হয়ে উঠতে চায়। এটা এখন আর কেবল সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের অভিযান নয়, বরং তা জাতীয় আস্থার এক ভাস্বর আন্দোলন। তিনি বলেন, বিকশিত ভারতের ভিশন ডকুমেন্ট গড়ে তোলার সময় লক্ষ লক্ষ দেশবাসী তাদের মতামত জানিয়েছে। বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিতর্কসভা ও আলোচনা চক্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার থেকে যে নির্যাস ফুটে উঠেছে তার ওপর ভর করেই সরকার আগামী ২৫ বছরের লক্ষ্য স্থির করেছে। বিকশিত ভারত নিয়ে আজকের আলোচনা আমাদের জাতীয় চেতনার অংশ এবং জন ইচ্ছা যে জাতীয় শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে, এ তার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণস্বরূপ।

কৃত্রিম মেধা সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বলেন, এটা হল কৃত্রিম মেধার যুগ। বিশ্বের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এই কৃত্রিম মেধার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, ভারতে এই কৃত্রিম মেধার দ্বিগুণ সুবিধা রয়েছে। প্রথমত এআই অর্থে কৃত্রিম মেধা আর দ্বিতীয়ত এআই অর্থে সম্ভাবনাময় ভারত। শ্রী মোদী বলেন, যখন সম্ভাবনাময় ভারতের শক্তি কৃত্রিম মেধার সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই অগ্রগতির ক্ষেত্রে তা গতি সঞ্চার করে। তিনি বলেন, ভারতে কৃত্রিম মেধা কেবলমাত্র একটি প্রযুক্তি নয়, ভারতের তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুন সম্ভাবনার এক প্রবেশদ্বার। এ বছর ইন্ডিয়া এআই মিশনের সূচনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং স্টার্টআপ ক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধার ব্যবহার বাড়ানোর ওপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। ভারত কৃত্রিম মেধা ক্ষেত্রে বিশ্বস্তরীয় সমাধান সূত্রের পথ দেখাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এবং কোয়াডের মতো মঞ্চের মাধ্যমে আমরা এই লক্ষ্যে আরও এগিয়ে চলেছি। সম্ভাবনায় ভারত সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণী, সাধারণ নাগরিকের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, ছোট ব্যবসা ক্ষেত্রের সশক্তিকরণ এছাড়া এমএসএমই, যুব ও মহিলা তাদের সকলের উন্নয়ন প্রভৃতি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যে রয়েছে। জাতীয় আকাঙ্খা পূরণের ক্ষেত্রে সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবহারিক যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত গড়ে তোলার ওপরে জোর দিয়েছে। ভারতের মতো বিপুল ও বৈচিত্র্যময় দেশের উন্নয়নমূলক সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যা অত্যাবশ্যক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কারণেই বিমান যাত্রার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যাঁরা হাওয়াই চপ্পল পরেন তাঁরাও যাতে সুলভে বিমান যাত্রা করতে পারেন, উড়ান প্রকল্পে তারই উল্লেখ করা হয়েছে। টু-টিয়ার এবং থ্রি-টিয়ার শহরগুলিকে নতুন বিমানপথের সঙ্গে যুক্ত করে সাধারণ মানুষের জন্য বিমানযাত্রা অনেক সহজ এবং সাশ্রয়ী করে তোলা হয়েছে। উড়ান প্রকল্পের সাফল্যের উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ৬০০টির বেশি এমন যাত্রাপথ রয়েছে যা ছোট শহরগুলিকেও যুক্ত করে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ৭০টি বিমান বন্দরের জায়গায় ভারত এখন বিমানবন্দর ১৫০কেও ছাপিয়ে গেছে। 

বিশ্বের সমৃদ্ধিতে ভারতের যুব সম্প্রদায়কে গড়ে তুলতে তাদের সশক্তিকরণে সরকারের দায়বদ্ধতার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্যই শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, গবেষণা এবং কর্মসংস্থানের ওপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন,তা গত ১০ বছরে এসব ক্ষেত্রের ফলে স্পষ্টতই প্রতীয়মান। অতি সাম্প্রতিক টাইমস উচ্চশিক্ষা তালিকায় দেখা যাচ্ছে গবেষণার গুণগত ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ভারতে গত ১০ বছরে সব থেকে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। গবেষণা উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারত দ্রুত বিশ্বের হাব হয়ে উঠছে। বিশ্বের আড়াই হাজারেরও বেশি কোম্পানী ভারতে গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে এবং দেশের স্টার্টআপ পরিমণ্ডল অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশ্বজুড়ে বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে ভারতের সুখ্যাতিও প্রসারিত হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করে দিচ্ছে ভারত। কোভিড-১৯ অতিমারীর ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত অত্যাবশ্যক ওষুধ এবং টিকা ক্ষেত্রে নিজস্ব দক্ষতায় লক্ষ লক্ষ ডলার উপার্জন করতে পারতো। তাতে হয়তো ভারত আর্থিকভাবে উপকৃত হত তবে মানবতার দিকটা হারিয়ে যেত। আমাদের মূল্যবোধ তা বলে না। আমরা বিভিন্ন দেশে ওই কঠিন সময়ে জীবনদায়ী টিকা সরবরাহ করেছি। এই কঠিন সময়ে ভারত যে বিশ্বের সেবা কর্মে লাগতে পেরেছে তাতে আমি সন্তুষ্ট। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বাস ও নির্ভরশীলতায় হচ্ছে ভারতের সম্পর্কের মূল ভিত্তি। অবশিষ্ট বিশ্বের সঙ্গে ভারতের মৈত্রীর সম্বন্ধের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এমন এক দেশ যার অগ্রগতি কখনও কারও অসূয়ার কারণ হয় না। আমাদের অগ্রগতিতে সারা বিশ্ব আনন্দ পায় কারণ, তারাও তাতে উপকৃত হয়। বিশ্ব ক্ষেত্রে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে বিশ্ব সমৃদ্ধিতে ভারত সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনের মধ্যে থেকেও ভারত শিল্পের সুবিধা নিতে পারেনি। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারতের শিল্পের চতুর্থ প্রজন্মের সময় ভারত এখন আর দাস নয়। ৭৫ বছর হয়ে গেল আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি। ফলে এখন কিন্তু আমরা আমাদের নিজেদের বেল্টকে শক্তে করে বাঁধতে শিখেছি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ প্রজন্মের শিল্পক্ষেত্রে দক্ষতা বিকাশ এবং প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো উন্নয়নের ওপরে ভারত দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত দশকে জি-২০, জি-৭-এর মতো নানা শিখর সম্মেলনে তিনি অংশ নিয়েছেন যেখানে ভারতের জিডিটাল জন পরিকাঠামো নিয়ে  আলোচনা হয়েছে। বিশ্ব আজ ভারতের ডিপিআই-এর দিকে তাকিয়ে রয়েছে। পল রোমার-এর প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধার এবং ডিজি লকারের মতো ভারতের উদ্ভাবন ব্যবস্থার তিনি প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটের যুগে ফার্স্ট মুভারের সুবিধা ভারতের ছিল না। তিনি বলেন, প্রযুক্তির গণতন্ত্রীকরণের মাধ্যমে ভারত এক নতুন মডেল তৈরি করেছে। জ্যাম ট্রিনিটি অর্থাৎ জনধন, আধার এবং মোবাইল এই ত্রিমুখী ব্যবস্থা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ফাঁকমুক্ত একটা ব্যবস্থা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ইউপিআই-এর মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ কোটি ডিজিটাল লেনদেন সম্পন্ন হচ্ছে যা ছোট দোকানদার থেকে শুরু করে হকার পর্যন্ত সকলেরই কাজে লাগছে। তিনি আরও বলেন, পিএম গতিশক্তি মঞ্চ পরিকাঠামো প্রকল্প নির্মাণে সমস্ত ত্রুটিকে কাটিয়ে উঠে লজিস্টিক পরিমণ্ডের ক্ষেত্রে এক রূপান্তর সাধন ঘটিয়েছে। ঠিক তেমনি ওএনডিসি মঞ্চ এমন এক উদ্ভাবনী ক্ষেত্র যার মধ্যে দিয়ে অনলাইন রিটেল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বিধান করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল উদ্ভাবন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সমন্বয় যে ভাবধারা গড়ে তুলেছে তাতে অন্তর্ভুক্তি, স্বচ্ছতা এবং সশক্তিকরণের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। কোনোভাবেই তা নিয়ন্ত্রণ বা বিভাজনকে প্রশ্রয় দেয় না।    

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানব ইতিহাসে একবিংশ শতাব্দী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজকের যুগে আশু প্রয়োজন হল, সক্ষমতা, সুস্থায়িত্ব ও সমাধান। তিনি বলেন, মানবতার উন্নত ভবিষ্যতের স্বার্থে এগুলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভারতের জনগণ তৃতীয়বারের জন্য সরকারকে ক্ষমতায় এনে যে বার্তা দিতে চেয়েছে তা হল, বিগত ৬ দশকে এই প্রথমবার সুস্থায়িত্বের প্রতি তা এক স্পষ্ট বার্তা। হরিয়ানায় সাম্প্রতিক নির্বাচনে সাধারণ মানুষের এই মনোভাবও  জায়গা পেয়েছে। 

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বজোড়া সঙ্কটের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্ত মানুষই এই বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। পরিবেশ দূষণে ভারেতর ভূমিকা অত্যন্ত নগন্য হলেও এই সমস্যা দূরীকরণে ভারত নেতৃত্বের স্থানে এগিয়ে এসেছে। ভারতের বিভিন্ন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থা সুস্থায়িত্বের পথে মূল চালিকাশক্ত হয়ে উঠেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি পিএম সূর্যঘর নিখরচায় বিদ্যুৎ প্রকল্প, কৃষি ক্ষেত্রে সৌর পাম্প, বৈদ্যুতিক যানের ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধন, ইথানল মিশ্রণ কর্মসূচি,এলইডি আলো ব্যবস্থা, সৌরশক্তি চালিত বিমানবন্দর এবং জৈব গ্যাস কারখানারও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রত্যেকটি পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে ভারতের দায়বদ্ধতায় প্রতিফলিত হয়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের নানা চ্যালেঞ্জের সমাধানসূত্রের ওপর আলোকপাত করছে ভারত। তিনি বলেন, বিগত দশকে এইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নানা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যেমন আন্তর্জাতিক সৌরজোট, বিপর্যয় নিরোধক পরিকাঠামো নির্মাণ জোট, ভারত মধ্যপ্রাচ্য অর্থনৈতিক করিডর, বিশ্ব জৈব জ্বালানী জোটের পাশাপাশি যোগ, আর্য়ুবেদ, মিশন লাইফ এবং মিশন মিলেটের মতো নানান প্রয়াস। 

ভারতের আর্থিক শ্রীবৃদ্ধিতে গর্ব প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত যত উন্নতি করবে, বিশ্ব ততই উপকৃত হবে। তিনি এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখান যেখানে ভারতের শতাব্দী সমস্ত মানবতার জয় হিসেবে পরিগণিত হবে। তিনি বলেন, ভারতের শতাব্দী প্রত্যেকের প্রতিভা এবং উদ্ভাবন দ্বারা সমৃদ্ধ। বিশ্ব স্থায়িত্ব এবং শান্তির প্রসারের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য শেষে বলেন, এই শতাব্দীতে আরও স্থিতিশীল বিশ্ব এবং বিশ্বশান্তির প্রসারে ভারতের অবদান আরও বেশি করে পরিগণিত হবে।  

 

 

PG/AB/NS


(Release ID: 2067087) Visitor Counter : 34