প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

নতুন দিল্লিতে আইটিইউ ওয়ার্ল্ড টেলিকমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অ্যাসেম্বলি ২০২৪-এর উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর

Posted On: 15 OCT 2024 1:07PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির ভারত মন্ডপমে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন – ওয়ার্ল্ড টেলিকমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অ্যাসেম্বলি (ডব্লুটিএসএ) ২০২৪-এর উদ্বোধন করেন। এই অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেসের অষ্টম সংস্করণেরও সূচনা করেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। 


অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী শ্রী চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি, আইটিইউ-এর সাধারণ সচিব শ্রীমতি ডোরিন বোগদান-মার্টিন, অন্যান্য মন্ত্রী ও বিদেশী রাষ্ট্রের বিশিষ্টজনেরা, শিল্প মহলের নেতৃবৃন্দ, টেলিকম বিশেষজ্ঞ, স্টার্টআপ জগতের তরুণ, ডব্লুটিএসএ এবং ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস (আইএমসি)-এর ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহোদয়াগণকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, টেলিকম এবং প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত ক্ষেত্রগুলিতে ভারত এখন বিশ্বে অন্যতম চর্চিত দেশ। ভারতের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে এখন মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২০ কোটি বা ১২০০ মিলিয়নে পৌঁছে গিয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯৫ কোটি বা ৯০০ মিলিয়নে পৌঁছেছে এবং বিশ্বের ৪০ শতাংশ ডিজিটাল লেনদেন হয় ভারতে। তিনি আরও বলেন, শেষ স্তর পর্যন্ত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ডিজিটাল সংযোগ কীভাবে কার্যকরী হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে, তা দেখিয়েছে ভারত। তিনি বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান আন্তর্জাতিক মান এবং পরিষেবাকে এক মঞ্চে নিয়ে এসেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহমতের মাধ্যমে ডব্লুটিএসএ বিশ্বকে ক্ষমতায়ন করছে, অন্যদিকে যোগাযোগের মাধ্যমে বিশ্বকে শক্তিশালী করছে ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস। তাই, এই অনুষ্ঠান সহমত এবং যোগাযোগের মেলবন্ধন ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। আজকের সংঘাতে ভরা দুনিয়ায় মেলবন্ধনের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি। জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে ভারতের সভাপতিত্বের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং ‘এক বিশ্ব এক পরিবার এক ভবিষ্যৎ’-এর ওপর নির্ভরতার বার্তা দেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, প্রাচীনকালের সিল্ক রুট বা আজকের প্রযুক্তির পথ, যাই হোক না কেন, ভারতের একমাত্র লক্ষ্য হল, বিশ্বকে যুক্ত করা এবং অগ্রগতির নতুন দ্বার উন্মোচন করা। 

শ্রী মোদী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ২১ শতকে ভারতের মোবাইল এবং টেলি যোগাযোগ যাত্রা গোটা বিশ্বের কাছে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। তাঁর মতে, টেলি যোগাযোগ আজ গ্রাম ও শহর, ধনী ও গরিবের মধ্যে দূরত্ব ঘোচানোর সেতু হয়ে উঠেছে। সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে ভারতকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার চারটি স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এগুলি হল – কম দামের প্রযুক্তি, দেশের প্রতিটি প্রান্তে ডিজিটাল যোগাযোগ পৌঁছে দেওয়া, সহজলভ্য ডেটা এবং ‘ডিজিটাল সর্বাগ্রে’র লক্ষ্য। 


যোগাযোগ এবং টেলিকম সংস্কারের ক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যন্ত আদিবাসী, পার্বত্য এবং সীমান্ত এলাকায় হাজার হাজার মোবাইল টাওয়ার তৈরির কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। রেল স্টেশনের মতো সাধারণের ব্যবহৃত স্থানে দ্রুত ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা চালু এবং আন্দামান নিকোবর ও লাক্ষাদ্বীপের মতো দ্বীপগুলিতে সমুদ্রের নীচে তার বসিয়ে যোগাযোগ গড়ে তোলা সহ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ভারতের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন শ্রী মোদী। তিনি আরও বলেন, “ভারত দ্রুততার সঙ্গে ৫-জি প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে এবং দু বছর আগে এই প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। আজ প্রায় প্রতিটি জেলাকে তা সংযুক্ত করেছে এবং ৫-জির দুনিয়ায় ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হয়ে উঠেছে।” 


শ্রী মোদী বলেন, “ভারতের লক্ষ্য হল, ডেটা খরচ কমানো। ভারতে এখন ইন্টারনেট ডেটার খরচ বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় প্রতি জিবি-তে ১২ শতাংশ কম এবং বিশ্বের অনেক দেশে ডেটার খরচ ভারতের তুলনায় প্রতি জিবি-তে ১০ থেকে ১২ গুণ বেশি।”  জ্যাম ত্রয়ী অর্থাৎ জনধন, আধার এবং মোবাইলের রূপান্তরমূলক ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি অসংখ্য উদ্ভাবনের ভিত্তি স্থাপন করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের ডিজিটাল পরিকাঠামো ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ইচ্ছার কথাও উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। 


মহিলা পরিচালিত বিকাশের লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তাঁর সরকারের কাজ করার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বকালে এই ব্যাপারে অঙ্গীকার করা হয়েছে। ভারতের মহাকাশ মিশনে মহিলা বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, স্টার্টআপগুলিতে সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মহিলাদের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, “নমো ড্রোন দিদি কর্মসূচি কৃষিক্ষেত্রে ড্রোন বিপ্লব এনেছে। প্রতিটি বাড়িতে ডিজিটাল সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাঙ্ক সখী কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।” ভারতের প্রাথমিক স্বাস্থ্য মাতৃত্বকালীন ও শিশুদের পরিচর্যার ক্ষেত্রে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। মহিলা শিল্পোদ্যোগীদের জন্য অনলাইন বিপণন প্ল্যাটফর্ম মহিলা ই-হাট চালু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজকের ভারতে প্রতিটি গ্রামে মহিলারা এ ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন, যা অকল্পনীয়। 


ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি আন্তর্জাতিক কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জি-২০ সভাপতিত্বকালে ভারত এই বিষয়টি উত্থাপন করেছিল এবং আন্তর্জাতিক প্রশাসনিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এর গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল। ডিজিটাল প্রতারণা সহ অন্যান্য বিপদের মোকাবিলায় সীমারেখাহীন ডিজিটাল প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। সুরক্ষিত ডিজিটাল পরিমণ্ডল এবং টেলি যোগাযোগের নিরাপদ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে অতি সক্রিয় ভূমিকা পালন করার জন্য ডব্লুটিএসএ-এর কাছে আবেদন জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী। 


বর্তমানে প্রযুক্তিগত বিপ্লবের যুগে মানব-কেন্দ্রিক মাত্রা যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, আজ যে মান নির্ধারণ করা হবে, তা আগামীদিনের দিক নির্দেশ করবে। পাশাপাশি সুরক্ষা, মর্যাদা এবং ন্যায়নীতির ওপর জোর দেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, কোনও দেশ, কোনও অঞ্চল এবং কোনও সম্প্রদায় যেন এই ডিজিটাল পরিবর্তনের সুযোগ থেকে পিছিয়ে না থাকে।” 


অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী শ্রী চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি সহ শিল্পমহলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।   

 

PG/ MP /AG



(Release ID: 2065045) Visitor Counter : 9