প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

ভারত এবং ব্রুনেই-এর মধ্যে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি নিয়ে যৌথ বিবৃতি

Posted On: 04 SEP 2024 6:25PM by PIB Kolkata

 নতুনদিল্লি ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪


মহামান্য সুলতান হাজি হাসালন বলকিয়া মুইজাদ্দিন ওয়াদ্দাউল্লা ইবনি আল-মারহুম সুলতান হাজি ওমর আলি সইফুদ্দিন সাদুল খাইরি ওয়াদ্দিনের আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারিভাবে ব্রুনেই সফর করলেন ৩ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪। এটি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম সফরের পাশাপাশি একজন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক ব্রুনেই সফর। 
ব্রুনেই পৌঁছলে শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানান ক্রাউন প্রিন্স এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উচ্চ পদস্থ মন্ত্রী প্রিন্স হাজি আল-মুহদাদি বিল্লা। মহামান্য সুলতান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং ইসতানা নুরুল ইমানে তাঁর জন্য সরকারি ভোজসভার আয়োজন করেন।
উভয় নেতাই সন্তোষ প্রকাশ করেন যে, এই ঐতিহাসিক সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে একইসঙ্গে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪০ তম বার্ষিকীতে। তাঁরা স্বীকার করেন যে, ব্রুনেই এবং ভারতের মধ্যে দৃঢ়মূল বন্ধুত্ব গত চার দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তিশালী হয়েছে।
দুই নেতাই মনে করেন, ব্রুনেই এবং ভারতের ঐতিহাসিক যোগাযোগ শতাব্দী প্রাচীন। এটি সম্ভব হয়েছে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং বাণিজ্যের জন্য। ১৯৮৪-তে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের আনুষ্ঠানিকতায় শুরু হয়েছে এক দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব।
মহামান্য সুলতান দেশের আর্থ সামাজিক এবং জাতীয় উন্নয়নে বিভিন্ন পেশার ক্ষেত্রে ভারতীয়দের মূল্যবান অবদানের প্রশংসা করেছেন।
বহু বছর ধরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অভাবনীয় অগ্রগতির প্রতিফলন হিসেবে দুই নেতাই পারস্পরিক স্বার্থ বিজড়িত সকল ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী, গভীর এবং বৃদ্ধি করতে তাঁদের দায়বদ্ধতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
আঞলিক এবং আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ, ব্যবসা ও লগ্নি, পুনর্নবীকরণযোগ্য সহ শক্তি, মহাকাশ, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও ঔষধ, শিক্ষা এবং ক্ষমতা বর্ধন, সংস্কৃতি, পর্যটন, যুব এবং মানুষে মানুষে সম্পর্ক সহ বিস্তীর্ণ বিষয়ে সহযোগি্তা বৃদ্ধির জন্য আলোচনা করেন দুই নেতা।
দুই নেতাই স্বীকার করেন চালু দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রমের মাধ্যমে নিবিড় যোগাযোগের গুরুত্ব এবং তাঁরা সম্মত হন নিয়মিত বৈঠক এবং পারস্পরিক স্বার্থ বিজড়িত দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করতে। একইসঙ্গে বিদেশ দফতর এবং নানা যৌথ কর্মীগোষ্ঠীর বৈঠকের নিয়মিত আয়োজন করার বিষয়ে সহমত হন উভয়ে।
দুই নেতাই পারস্পরিক স্বার্থ বিজড়িত ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ আরও প্রসার করতে সহমত হন। জয়েন্ট ট্রেড কমিটি(জেটিসি)-র পাশাপাশি অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক মঞ্চের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের মাধ্যমে নিয়মিত আলোচনা চালাবার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
দুই নেতাই উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণ, অর্থ, প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষমতাবৃদ্ধির আহ্বান জানান এবং দুই দেশেরই সুবিধা হয় এমন পথ খোঁজার কথা বলেন।
দুই নেতাই খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্বকে স্বীকার করে নেন এবং জ্ঞান, ব্যবহারিক প্রয়োগ এবং অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমে কৃষি এবং খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহমত হন।
প্রধানমন্ত্রী ব্রুনেই-এর গভীর প্রশংসা করেন ইসরোর টেলিমেট্রি ট্র্যাকিং অ্যান্ড টেলিকম্যান্ড স্টেশন বসানোয়। এর মাধ্যমে মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারতের প্রয়াসের সুবিধা হচ্ছে। দুই নেতাই দুই সরকারের মধ্যে সমঝোতাপত্র অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থার প্রশংসা করেন। সেইসঙ্গে আশা করেন যে, পুনর্নবীকৃত সমঝোতায় সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
দুই নেতাই প্রতিরক্ষা এবং সমুদ্র ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির গুরুত্ব স্বীকার করে নেন। এরজন্য দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত সফর, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, যৌথ মহড়া এবং নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনী, জাহাজ আসা-যাওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়।
দুই নেতাই দুই দেশ থেকেই নিয়মিত জাহাজ আসা যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দুই নেতা চেন্নাই এবং বন্দর সেরি বেগাওয়ানের মধ্যে পরিকল্পিত সরাসরি উড়ানকে স্বাগত জানান। এতে যেমন দুদেশের মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়বে, তেমনিই বাণিজ্য ও পর্যটন বৃদ্ধির সহায়ক হবে।
দুই নেতাই জাতীয় উন্নয়নে যুব সমাজের ভূমিকার গুরুত্ব স্বীকার করে দুদেশের মধ্যে আরও বেশি করে যুব প্রতিনিধিদল পাঠানোয় সম্মত হন।
মহামান্য সুলতান বিভিন্ন কর্মসূচিতে ভারতে ব্রুনেই-এর নাগরিকদের প্রশিক্ষণ ও বৃত্তির প্রশংসা করেন।
দুই নেতাই এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিরতা, সুরক্ষা, সমৃদ্ধি ধরে রাখার ব্যাপারে সহমত হন এবং রাষ্ট্রসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলি অনুসরণ করার গুরুত্বে সহমত হন।
দুই নেতাই আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহমত হন। দুই নেতাই মনে করেন, শান্তি এবং উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে নীতি নির্ভর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা অবশ্যম্ভাবী।
দুই নেতাই বাস্তব পরিস্থিতি অনুসরণে বহুপাক্ষিকতা বৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে সহমত হন।
দুই নেতাই আসিয়ান-ইন্ডিয়া সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করতে পারস্পরিক বোঝাপড়া আছে এমন ক্ষেত্রগুলিতে একসঙ্গে কাজ করতে তাঁদের দায়বদ্ধতা প্রকাশ করেন।
দুই নেতাই জলপথে সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা, শান্তি এবং স্থিরতার পাশাপাশি আাকশ পথে, জলপথে পূর্ণ স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রসংঘ ও আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক অবাধ আইন মাফিক বাণিজ্যে সহমত হন।
দুই নেতাই সবধরণের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করেন এবং এর মোকাবিলায় সব দেশকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তাঁরা জোর দিয়ে বলেন যে, কোনো দেশের উচিত নয় তাঁদের জমিকে সন্ত্রাববাদের কাজে ব্যবহার হতে দেওয়া; কোনো দেশের উচিত নয় সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেওয়া। জঙ্গিদের এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার করতে একযোগে কাজ করার সংকল্পের কথা জানান তাঁরা।
দুই নেতাই জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় দ্রুত অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে সহমত হন। প্যারিস চুক্তির মতো আন্তর্জাতিক লক্ষ্য অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনে কুপ্রভাব প্রশমনে প্রয়াস বৃদ্ধিতে সহমত হন। মহামান্য সুলতান আন্তর্জাতিক সৌরজোট, বিপর্যয় সহনশীল পরিকাঠামোর জন্য জোট এবং আন্তর্জাতিক জৈব জ্বালানী জোট স্থাপনে ভারতের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। ব্রুনেই-তে আসিয়ান সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জের আয়োজনে ভারতের সহায়তার প্রশংসা করেন মহামান্য সুলতান।
ভয়েস অফ দ্য গ্লোবাল সাউথ সামিটে ব্রুনেই-এ নিয়মিত অংশগ্রহণকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী মহামান্য সুলতানকে কৃতজ্ঞতা জানান আন্তরিক অভ্যর্থনা এবং আতিথেয়তার জন্য। প্রধানমন্ত্রী মহামান্য সুলতানকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান।


PG/AP/CS…



(Release ID: 2052116) Visitor Counter : 18