প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের যাবতমল-এ ৪,৯০০ কোটি টাকা মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন

Posted On: 28 FEB 2024 7:44PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মহারাষ্ট্রের যাবতমল-এ ৪,৯০০ কোটি টাকা মূল্যের রেল, সড়ক এবং সেচ সংক্রান্ত একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। অনুষ্ঠানে তিনি পিএম কিষাণ এবং অন্য কর্মসূচির সুবিধা বিতরণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মহারাষ্ট্র জুড়ে ১ কোটি আয়ুষ্মান কার্ড বিতরণের সূচনা করেছেন এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর সুবিধাপ্রাপকদের জন্য মোদী আবাস ঘরকূল যোজনারও সূচনা করেছেন। তিনি দুটি ট্রেন পরিষেবার সূচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যাবতমল শহরে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেছেন। অনুষ্ঠানে দেশের বিপুল সংখ্যক কৃষক উপস্থিত ছিলেন। 

সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ছত্রপতি শিবাজীর ভূমিকে প্রণাম জানান এবং ভূমিপুত্র বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রতিও শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ এবং ২০১৯-এ ‘চায় পর চর্চা’-র জন্য যখন এসেছিলেন, তখন মানুষের আশীর্বাদের কথাও মনে করান। তিনি আরও একবার মানুষের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। তিনি মা-বোনদের আশীর্বাদের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

ছত্রপতি শিবাজীর শাসনের ৩৫০ বছর পূর্তির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর অভিষেকের কথা স্মরণ করান এবং বলেন, তিনি জাতীয় চেতনা এবং শক্তির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং তাঁর জন্য শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত কাজ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, বর্তমান সরকার তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে চলছে এবং নাগরিকদের জীবনে রূপান্তরের কাজে ব্যাপৃত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গত ১০ বছরে যে কাজ হয়েছে তা আগামী ২৫ বছরের ভিত্তিস্থাপন করে দিয়েছে। আমি দেশের প্রতিটি প্রান্তের উন্নতির সংকল্প নিয়েছি এবং আমার জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত এবং আমার শরীরের প্রতিটি কণা এই সংকল্পে উৎসর্গীকৃত।”

প্রধানমন্ত্রী চারটি সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকারের কথা বলেছেন- দরিদ্র, যুবা, মহিলা এবং কৃষক। তিনি বলেন, “এই চার শ্রেণীর ক্ষমতায়ন প্রতিটি পরিবার এবং সমগ্র সমাজে শক্তি নিশ্চিত করবে।” তিনি আজকের অনুষ্ঠানটি প্রকল্পগুলি এই চার শ্রেণীর ক্ষমতায়নের সঙ্গে যুক্ত বলে উল্লেখ করেন। তিনি কৃষকদের জন্য সেচের সুবিধা, দরিদ্রদের জন্য পাকা বাড়ি, গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক সহায়তা এবং যুবাদের ভবিষ্যতের জন্য পরিকাঠামোর উল্লেখ করেন। 

পূর্ববর্তী সরকারগুলির সময়ে কৃষক, আদিবাসী এবং দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ আর্থিক সহায়তার যথাযথ উপযোগ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই সূত্রে তিনি আজ যে বোতাম টিপে পিএম কিষাণ সম্মান নিধির ২১,০০০ কোটি টাকা সরাসরি কৃষকদের দেওয়ার মতো ঘটনা তার উল্লেখ করেন এবং সেটিকে মোদী কি গ্যারেন্টি হিসেবে বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “দরিদ্র মানুষ আজ তাঁদের প্রাপ্য অর্থ পাচ্ছে।”

মহারাষ্ট্রে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ডাবল গ্যারান্টির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, মহারাষ্ট্রের কৃষকরা আলাদা করে ৩,৮০০ কোটি টাকা পাচ্ছেন যাতে গোটা মহারাষ্ট্রের প্রায় ৮৮ লক্ষ কৃষক উপকৃত হবেন। 

প্রধানমন্ত্রী জানান যে দেশের ১১ কোটি কৃষক পিএম কিষাণ সম্মান নিধির অধীনে ৩ লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছে যার মধ্যে মহারাষ্ট্রের কৃষকরা পেয়েছেন ৩০,০০০ কোটি টাকা এবং যাবতমলের কৃষকরা পেয়েছেন ৯০০ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী আখের এফআরপি বাড়িয়ে কুইন্টাল প্রতি ৩২৪ টাকা করার কথাও জানান। ভারত মণ্ডপমে সম্প্রতি সূচনা হওয়া খাদ্য মজুতের জন্য বিশ্বের সর্ববৃহৎ কর্মসূচিরও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিকশিত ভারত তৈরি করতে গ্রামীণ অর্থনীতিকে জোরদার করা আবশ্যিক”। সেইসঙ্গে তিনি আর্থিক সহায়তা দিয়ে গ্রামে বসবাসকারী পরিবারগুলির সমস্যার মোকাবিলায় সরকারের প্রয়াসের কথা জানান। সে খাওয়ার জলই হোক বা সেচের, প্রধানমন্ত্রী পূর্ববর্তী সরকারগুলির আমলে গ্রামে গ্রামে খরা পরিস্থিতির উল্লেখ করেন এবং জানান ২০১৪-র আগে ১০০টি পরিবারের মধ্যে মাত্র ১৫টি পরিবার নলবাহিত জলের সুবিধা পেত। তিনি আরও বলেন, “অবহেলিত পরিবারগুলির বেশিরভাগই ছিল দরিদ্র, দলিত এবং জনজাতিভুক্ত।” তিনি মহিলাদেরও যে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হত জলের অভাবের জন্য তার কথা জানিয়ে ‘হর ঘর জল’ নিয়ে মোদীর গ্যারান্টির কথা স্মরণ করিয়ে দেন যাতে ৪-৫ বছরের ভিতর ১০০টি পরিবারের মধ্যে ৭৫টি পরিবার নলবাহিত জলের সুবিধা পাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে ৫০ লক্ষেরও কম থেকে নলবাহিত জলের সংযোগ ১.২৫ কোটি হওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মোদীর গ্যারান্টির অর্থ গ্যারান্টি পূর্ণ হওয়ার গ্যারান্টি।”

আগের আমল থেকে দীর্ঘদিন বকেয়া থাকা ১০০টি সেচ প্রকল্পের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের জানান যে তার মধ্যে ৬০টির কাজ শেষ হয়ে গেছে গত ১০ বছরে। বকেয়া প্রকল্পের মধ্যে ২৬টিই মহারাষ্ট্রের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিদর্ভের কৃষকদের জানতে হবে তাঁদের পরিবারের দুর্দশার জন্য কারা দায়ী।” তিনি জানান, ২৬টির মধ্যে ১২টির কাজ সম্পূর্ণ করেছে বর্তমান সরকার এবং অন্য প্রকল্পগুলির কাজও চলছে। প্রধানমন্ত্রী নীলওয়ান্দে বাঁধ পরিযোজনার উদাহরণ দেন যা সম্পূর্ণ হয়েছে ৫০ বছর পরে, কৃষ্ণা কোয়না এবং তেম্ভু প্রকল্প এবং গোসিখুর্দ প্রকল্প দিনের আলো দেখেছে বর্তমান সরকারের জন্য কয়েক দশকের বিলম্বের পরে। আজ পিএম কৃষি সিঁচাই এবং বলিরাজা কর্মসূচিতে ৫১টি প্রকল্প বিদর্ভ এবং মারাঠাওয়ারাড় প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।

গ্রামে গ্রামে লাখপতি দিদি তৈরি করার জন্য মোদীর গ্যারান্টির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান যে ইতিমধ্যেই ১ কোটি মহিলাকে লাখপতি দিদি বানানোর লক্ষ্য পূরণ হয়ে গেছে এবং এ বছরের বাজেটে পরিকল্পনা করা হয়েছে লাখপতি দিদির সংখ্যা ৩ কোটি করার। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ১০ কোটির বেশি মহিলা ব্যাঙ্ক থেকে ৮ লক্ষ কোটি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ তহবিল থেকে ৪০,০০০ হাজার কোটি টাকা পেয়েছেন। এতে মহারাষ্ট্রে কয়েক লক্ষ মহিলা উপকৃত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, যাবতমল জেলায় মহিলাদের অনেক ই-রিক্সাও দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই কাজের জন্য মহারাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি নমো ড্রোন দিদি কর্মসূচির উল্লেখ করেন যেখানে সরকার ড্রোন পাইলটের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মহিলাদের এবং কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্যও ড্রোন দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আজ পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেছেন। পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের অন্ত্যোদয় দর্শন থেকে প্রেরণা নিয়ে গত ১০ বছরে দরিদ্র মানুষদের জন্য যেসব প্রকল্প চালু করা হয়েছে সেগুলির সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত জানাতে গিয়ে বলেন, যেমন বিনামূল্যে রেশন এবং চিকিৎসার গ্যারান্টি। আজ মহারাষ্ট্রের ১ কোটি পরিবারকে আয়ুষ্মান কার্ড দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। দরিদ্রদের পাকা বাড়ি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর পরিবারগুলিকে পাকা বাড়ি দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে যা আজ থেকে শুরু হল তাতে ১০,০০০ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর পরিবার পাকা বাড়ি পাবেন। 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “যাদের কেউ কখনও দেখেনি মোদী তাঁদের শুধু দেখছে তাই নয়, মোদী তাঁদের পুজো করছে।” এই সূত্রেই প্রধানমন্ত্রী ১৩,০০০ কোটি টাকা মূল্যের হস্তশিল্পী ও কারুশিল্পীদের বিশ্বকর্মা যোজনা এবং ২৩,০০০ কোটি টাকা মূল্যের জনজাতির জন্য পিএম জনধন যোজনার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, পিএম জনধন যোজনায় কাটকারি, কোলাম এবং মাদিয়া সহ মহারাষ্ট্রের অনেক জনজাতির জীবন সহজ হবে। ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র, কৃষক, যুবা এবং নারীশক্তির ক্ষমতায়নের এই অভিযান আরও জোরদার হতে চলেছে এবং আগামী ৫ বছরে তা আরও গতি পাবে। বিদর্ভের প্রতিটি পরিবার আরও সুন্দর জীবন-যাপন করবেন।

মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী রমেশ বৈশ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে এবং উপমুখ্যমন্ত্রীগণ শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং শ্রী অজিত পাওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য সাংসদ, বিধায়ক, বিধান পরিষদ সদস্য, রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী অর্জুন মু্ন্ডা ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন। 


    


PG/AP/NS…


(Release ID: 2010077) Visitor Counter : 122